শুক্রবার, আগস্ট ০৯, ২০১৯

লিনাক্স মিন্ট ১৯.২ ‘টিনা’ – ফিচারপূর্ণ আরো একটি রিলিজ


লিনাক্সের স্ট্যাবল ডিস্ট্রো গুলোর তালিকা করলে যে নামটি শুরুর দিকে আসবে তার একটি হচ্ছে ‘লিনাক্স মিন্ট’। মুক্ত অপারেটিং সিস্টেমের স্বাদ নিতে যে কয়েকটি ডিস্ট্রোর সাজেশন মানুষ দিয়ে থাকে, সেখানেও একটা সম্মানজনক অবস্থান গড়ে নিয়েছে এই ‘লিনাক্স মিন্ট’। সাধারণ ব্যবহারকারীর ডেস্কটপ থেকে শুরু করে মধ্যম মানের ব্যবহারকারী কিংবা একজন ডেভেলপারের জন্যে জুতসই একটা অপারেটিং সিস্টেম চিন্তা করলেও ‘লিনাক্স মিন্ট’-কে তালিকাতে রাখতেই হয়।

যদিও লিনাক্স মিন্ট সরাসরি লিনাক্সের কোর লেভেল থেকে ডেভেলপ হয় না। আরেকটি লিনাক্সের ডিস্ট্রিবিউশন ‘উবুন্টু’ থেকে এটি ডেভেলপ করা হয়ে থাকে। অবশ্য এর আরও শাখা একটি ডিস্ট্রিবিউশন আছে, যা সরাসরি ডেবিয়ান থেকে ডেভেলপ করা হয়। তবে জনপ্রিয়তার এগিয়ে আছে উবুন্টু হতে ডেভেলপ করা ডিস্ট্রোটি।

লিনাক্স মিন্ট – সিনামন ডেক্সটপ পরিবেশ
লিনাক্স মিন্টের আরও রয়েছে আকর্ষণীয় একটি ডেক্সটপ এনভায়রনমেন্ট, যা ‘সিনামন’ নামে পরিচিত। লিনাক্স মিন্টের তত্বাবধায়নেই এই ডেক্সটপ পরিবেশ বা এনভারনমেন্টটি ডেভেলপ হয়ে থাকে। আর সত্যি বলতে লিনাক্স মিন্ট ব্যবহারের আসল স্বাদ আসলে সিনামন ডেক্সটপ পরিবেশেই পাওয়া যায়। যদিও মিন্টের অফিসিয়াল আরও দুইটি ডেক্সটপ পরিবেশ রয়েছে।

যাই হোক, লিনাক্স মিন্টের পরিচয় আপাতত এখানেই ইতি টানছি। পরে কোন এক সময় লিনাক্স কিংবা লিনাক্স মিন্ট নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে(অনিশ্চিত)। আপাতত চলে যাচ্ছি এর নতুন রিলিজ ‘টিনা’-র (Tina) বন্দনায়।

যদিও ডেভেলপার লোকজনকে মানুষ কাঠখোট্টা হিসেবেই চেনে। তারপরও লিনাক্স মিন্ট এর ডেভেলপারদের সেই ক্যাটাগরিতে ফেলে দেয়া সম্ভব না। তারা দারুণ রস-কস যুক্ত ডেভেলপার, তাই তো প্রতিটা ডিস্ট্রিবিউশনের নামকরণে তারা কোন না কোন একটা মেয়ের নামে ব্যবহার করে থাকে (ডেভ গুলু মনে হয় একটু ইয়ে। এদের মাথা শুধু মেয়েদের চিন্তায় বিভোর থাকে। তাই প্রতি রিলিজই এরা মেয়েদের নামে উৎসর্গ করে 😜 )।
    
 
    
 

নতুন কি পেলাম ‘টিনা’র নামে?

পর্ব অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলতে হয় তবে বলবো- লিনাক্স মিন্ট প্রতি রিলিজেই আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্রত্যেকটি রিলিজ ছিলো এর পূর্বেরটির তুলনায় আরও উন্নত, আরও শক্তিশালী। মিন্ট যেন প্রতি রিজিলেই তার পূর্বের রিলিজকে টক্কর দিয়ে ডেভেলপ করে থাকে। এছাড়া নতুন এই রিলিজ মানে ১৯.২ সংস্করণটি অফিসিয়াল সাপোর্ট পাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। সে হিসেবে যারা লং টার্মে একটি ডিস্ট্রোতে থাকতে চান, তারা অবশ্যই এটিকে নিজ নিজ তালিকায় রাখতে পারেন।

» উন্নত আপডেট ম্যানেজার

নতুন রিলিজের যে দুটো ব্যাপার আমার দারুণ ভালো লেগেছে তার মধ্যে একটি এই আপডেট ম্যানেজার। পূর্বের রিলিজ গুলোতে একটি নির্দিষ্ট কার্নেলের উপর ভিত্তি করে একে তৈরি এবং রিলিজ করা হতো। পরবর্তী রিলিজে কার্নেল আপডেট হবার আগ পর্যন্ত ঐ একই কার্নেল ব্যবহার করতে হতো। অন্যথায় নিজেকে পুরো কার্নেল কম্পাইল/বিল্ড করে ব্যবহার করা লাগতো। অনেকের জন্যে হয়তো এটি তেমন বড় ব্যাপার নয়। কিন্তু যারা নতুন কার্নেলসের সুবিধা আদায় করতে চায় তাদের কাছে এতদিন বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল এই সমস্যাটি। এখন চাইলে যে কেউ খুব সহজেই নতুন কার্ণেলটি আপডেট ম্যানেজার ব্যবহার করে ইন্সটল ও ব্যবহার করতে পারবে।

আপডেট ম্যানেজারের আরও একটা নতুন ফিচার ‘ব্লাকলিস্ট’। যারা লিনাক্স ব্যবহার করেছেন তারা সবাই লিনাক্সের সফটওয়্যার রিপো অথবা সফটওয়্যার ম্যানেজারের সাথে পরিচিত। যখন কেউ পুরো সিস্টেমটি আপডেট দেয় তখন সিস্টেমে ইন্সটল করা সকল সফটওয়্যারও একই সাথে আপডেট হয়ে যায়। কিন্তু এতে অনেক সময় কিছু কিছু সফটওয়্যার কম্পাবিলিটি ইস্যুতে পড়ে ইউজারকে নাজেহাল করে। ধরুন আপনি Darktable এর ২.৬.১ ভার্সনটি ব্যবহার করছিলেন। এর মধ্যেই এটির ২.৬.২ ভার্সন আসলো। কিন্তু তাতে কোন একটা বাগ বা সমস্যা থাকায় কাজের সমস্যা হচ্ছিলো। তাই আপনি আপডেট ভার্সনটি বাদ দিয়ে পুনরায় ২.৬.১ এ ফিরে গেলেন। কিন্তু যখন পুরো সিস্টেমটি আপডেট করতে দিবেন তখন Darktable পুনরায় আপডেট হয়ে ২.৬.২ তে আপডেট হয়ে গেলো।

এই সমস্যাটিরই সমাধান এসেছে এই নতুন আপডেট ম্যানেজারে। এখন আপনি চাইলে কোন একটা প্যাকেজ বা সফটওয়্যারের নির্দিষ্ট কোন ভার্সনকে ইচ্ছে হলে আপডেট হতে বাধা দিতে পারবেন এই ব্লাক লিস্ট ফিচার ব্যবহার করে।

তাছাড়া আপডেট ম্যানেজারকে আপডেট করার জন্যেও নতুন একটা ইন্টারফেস তৈরি করা হয়েছে!

» কার্যকর ‘রেসপন্স টাইম’

আপনি যদি লিনাক্স মিন্ট ১৯.১ ব্যবহার করে থাকেন আর, এখন ১৯.২ ব্যবহার করতে বসেন তাহলে এই ব্যাপারটি আপনার নজরে আসবেই। নতুন রিলিজে মিন্টের রেসপন্স টাইম অনেকটাই ইফেক্টিভ হয়েছে। আগের তুলনায় সফটওয়্যার লোড কিংবা সফটওয়্যার গুলো আরও দ্রুত গতি সম্পন্ন হয়েছে। এটা এই রিলিজের আরও একটি বিশাল প্লাস পয়েন্ট হিসেবে আমি ধরেছি।

» সফটওয়্যার সনাক্তকরণ পদ্ধতি

লিনাক্স মিন্ট -এ সফটওয়্যার সেন্টার থেকে সরাসরি এ্যাপ ইন্সটল করার পাশাপাশি ফ্লাট এ্যাপ গুলো ইন্সটল করার সুবিধা রয়েছে। লিনাক্স মিন্ট এর বিল্ট-ইন সফটওয়্যার ম্যানেজার হতে সরাসরি মূল এ্যাপ এবং সেই একই এ্যাপের ফ্লাটপ্যাক এ্যাপ ইন্সটল ও ব্যবহার করা যায়। কিন্তু মিন্ট-মেন্যুতে আগে এই দুটো গ্যাটাগরির এ্যাপ আলাদা করা যেতো না। কিন্তু বর্তমান রিলিজে ফ্লাট এ্যাপ গুলোকে এক ধরণের রঙ্গে রাঙ্গানো হয়, আর অর্গানিক এ্যাপ গুলো তার নিয়মিত ঢং-এই থাকে। তাছাড়া ফ্লাট এ্যাপ গুলোর নামের সাথেই ফ্লাটপ্যাক লিখা থাকে। তাই ফ্লাটপ্যাক এ্যাপ আর অর্গানিক এ্যাপ নিয়ে এখন আর তেমন জটিলতা পোহাতে হবে না। এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজের জেনারিক নামও এখন মিন্ট মেন্যুতে আলাদা করেই দেখানো হবে।

» লাইভ মুডেই থাকছে বুট রিপেয়ার


পূর্ববর্তী লাইভ মুড থেকে বুট রিপেয়ার করাটা দারুণ ঝামেলাপূর্ণ ছিলো। সেই ঝামেলা এই রিলিজে সমাপ্ত হলো। নতুন এই রিলিজ ‘টিনা’র লাইভ মুডেই এখন দেয়া হয়েছে বুট রিপেয়ার সফটওয়্যারটি। যারা ডুয়েল বুটে লিনাক্স চালাচ্ছেন তাদের যে কত বড় উপকার হয়েছে এই ফিচারটি যুক্ত হওয়ায় তা বোধ করি আলাদা করে আর বলার অপেক্ষায় থাকে না।


» ডুপ্লিকেট সোর্স রিমোভ অপশন

যারা অতিরিক্ত রেপো থেকে প্যাকেজ/সফটওয়্যার ইন্সটল করে থাকেন তাদের জন্যে এই সুবিধাটি দারুণ কাজের হবে। এবারে কোন রেপো একের অধিকবার যুক্ত হলে কিংবা রেপো ডুপ্লিকেট হবার কারণে আপডেটে ঝামেলা হলে খুব সহজেই সোর্স কনফিগার অপশন থেকে ডুপ্লিকেট রেপো গুলো রিমুভ করার সুযোগ পাবেন।

» গোছানো সিস্টেম রিপোর্ট

নতুন রিলিজ টিনার সাথে আসছে নতুন করে ডিজাইন করা সিস্টেম রিপোর্ট। পূর্বের তুলনায় এটি বেশ গোছানো সিস্টেম রিপোর্ট ভিউ তৈরি করা হয়েছে। অন্তত এখন দেখে কিছুটা মনে হয় সিস্টেম রিপোর্টটা আসলে মানুষের পড়ার যোগ্য কিছু একটা জিনিষ।

আরও আপডেট হয়েছে সিস্টেমের আর্টওয়ার্ক। অবশ্য এটা বরাবরই আমার কাছে বোনাস বলেই মনে হয়।




লিনাক্স মিন্ট ১৯.২ ‘টিনা’-র জন্য আবশ্যক হার্ডওয়্যার

  • অন্তত ১ গিগাবাইট র‍্যাম (২ গিগাবাইট র‍্যাম হলে মোটামুটি পর্যায়ে চালানো সম্ভব)
  • ইন্সটল করার জন্যে ১৫ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস (২০ গিগাবাইট হলে ভালো হবে)
  • ১০২৪×৭৬৮ রেজ্যুলুশনের ডিসপ্লে সিস্টেম


ডাওনলোড

নতুন রিলিজটি অফিসিয়াল ISO ইমেজটি এই লিংক থেকে সংগ্রহ করা যাবে। তবে আপনি যদি বাংলাদেশে অবস্থান করেন, আর আপনার যদি একটি ব্রডব্যান্ড কানেকশন থাকে, তাহলে ঢাকাকম লিমিটেড বা জিওনবিডি উচ্চগতির-সার্ভার থেকেও নতুন রিলিজটি সংগ্রহ করতে পারবেন।

আর আপনি যদি লিনাক্স মিন্টের পুরাতন রিলিজ হতে নতুন রিলিজে আপগ্রেড করাতে চান, তাহলে অফিসিয়াল এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করে দেখুন।







আপাতত এতটুকুই। এক রাতে এই জিনিষ গুলোই ডিসকোভার করলাম লাইভ মুডে। তবে কথা হচ্ছে কোন রিলিজই একদম সয়ংসম্পূর্ণ রিলিজ হবে না, এটিও নয়। এখনও কোন কোন ব্যাপারে এই রিলিজটি সমস্যা করতে পারে। কোন কারণে আপনার কাঙ্খিত আউটপুট হয়তো পেতে ব্যর্থ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিস্টেম রিপোর্ট খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। এতে পরবর্তী আপডেটে এটি ফিক্স হবার সম্ভাবনা বহুগুন বেড়ে যায়। কেউ যদি সত্যিই নতুন ডিস্ট্রো কিংবা লিনাক্স সম্পর্কে ধারণা পেতে চান তাহলে অবশ্যই লিনাক্স মিন্ট একটি আদর্শ ডিস্ট্রো। তবে আমার পরামর্শ থাকবে- হুট করে সিস্টেমে ইন্সটল করার আগে তা লাইভ মুডে ব্যবহার করে দেখুন। এরপর মোটামুটি একটা ধারণা হয়ে গেলে সাহস করে সিস্টেমে ইন্সটল করে দেখতে পারেন।

 
 
 
 
 
    

Creative Commons License 
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ০৮, ২০১৯

লেখার ফরম্যাট নষ্ট না করেই ব্লগে লেখা কপি-পেস্ট করা


ব্লগে একটা লেখা পড়ছিলাম। লেখার কন্টেন্ট চমৎকার হলেও লেখাটা পড়ার সময় বিরক্ত বোধ হচ্ছিলো। আর বিরক্তির উৎপত্তি করছিলো ব্লগের বডিতে থাকা অক্ষরগুলোর বিন্যাস আর অবস্থা দেখে। যারা ব্লগ লিখেন কিংবা ব্লগ পড়েন তাদের অনেকের অনেকেই এই ব্যাপারটি লক্ষ করেছেন। কিছু কিছু ব্লগে কোন একটা লেখা পড়তে গেলে দেখা বাকি সব লেখার তুলনায় এই লেখাটির অক্ষরগুলো বেশ ছোট বা কিম্ভুতকিমাকার আকৃতির। আবার অন্য সকল লেখা ঝকঝকে-তকতকে হলেও নির্দিষ্ট কয়েকটি লেখা কেমন যেন এলোমেলো। মাঝ থেকে লাইন ভাঙ্গা, কিংবা লাইনের মাঝে হঠাৎই বিশাল আকারের গ্যাপ। তা ছাড়া আরও একটা বড় সমস্যা হলো লেখার ব্যাকগ্রাউন্ড কালার(রঙ)। দেখা যায় বাকি সকল লেখার পেছনে ব্লগের যে সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মেইনটেইন করছিল, এই লেখাটির বেলায় তেমন না। লেখাটির পেছনে ভিন্ন রকমের রঙ এর জন্যে দেখতে বিচ্ছিরি লাগছে, বিরক্তির উদ্রেক হচ্ছে।

মূলত অবস্থা হয় যখন কেউ কোন একটা লেখা কোথাও থেকে কপি করে সরাসরি ব্লগে পোষ্ট করে। আমাদের মাঝে অনেকেই নিজেদের ড্রাফট লেখা গুলো কোন একটা ওয়ার্ড প্রসেসর যেমন মাইক্রসফট ওয়ার্ড, লিব্রে অফিস রাইটার, ওপেন অফিস রাইটার কিংবা কোরাল ওয়ার্ড পার্ফেক্ট সহ ভিন্ন ভিন্ন ওয়ার্ড প্রসেসর প্রোগ্রামে লিখে সংরক্ষণ করে থাকেন। আর ব্লগে পোষ্ট করবার সময় সেখান থেকে কপি করে ব্লগের টেক্সট ইনপুট বডিতে পেস্ট করে দেন।

আবার অনেকেই রয়েছে যারা বেশ কয়েকটি ব্লগ মেইনটেইন করে। একাধিক ব্লগে লেখালেখির সময় যে কোন একটি ব্লগে প্রথমে লেখাটি সাজিয়ে তারপর বাকি ব্লগ গুলোতে সরাসরি ঐ সাজানো লেখাটি কপি-পেস্ট করে পোষ্ট করে থাকেন।

এরকম পরিস্থিতি গুলোতে ব্লগের নিয়মিত ভঙ্গি (স্টাইল) বাদ দিয়ে লেখা গুলো ভিন্ন রকম ভঙ্গিতে প্রদর্শিত হচ্ছে। হয়তো ব্যাকগ্রাউন্ডের রঙ ভিন্ন রকম কিংবা লেখাটির বর্ণের আকারগত সমস্যা। কিংবা লেখাটি যেভাবে প্যারাগ্রাফ আকারে দেখানোর কথা তা সেভাবে না দেখিয়ে অযথাই মাঝ থেকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেখাচ্ছে।

আর এমন হবার কারণ ঐ দুষ্ট ‘কপি-পেস্ট’ নামক ফিচারটির। মূলত ওয়ার্ড-প্রসেসর কিংবা ফরম্যাটেড কোন টেক্সট বা ইলিমেন্ট যখন আমরা কপি করি তখন শুধুমাত্র ঐ ইলিমেন্ট বা লেখা গুলো কপি না হয়ে লেখাটি যে ভঙ্গিমাতে (স্টাইলে) লেখা আছে ঐ ভঙ্গীমা সহকারে আমাদের সিস্টেম (ডেক্সপট, ল্যাপটপ, কিংবা স্মার্টফোন) কপি করে নেয়। আর যখন আমরা তা কোথাও পেষ্ট করি তখন সরাসরি লেখাগুলো ঐ ভঙ্গিমা সহকারে পেস্ট করে ফেলে।

মূলত এটি আধুনিক কম্পিউটিং এর একটি ফিচার। যারা প্রকাশনার কাজ করেন কিংবা ওয়ার্ড প্রসেসিং এ একই ধরণের কাজ যেখানে বার বার করে করতে হয় (যেমন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির নামে সনদপত্র ছাপানো, জন্মনিবন্ধন, অফিসের নির্দিষ্ট ফরম্যাটে কাজ করা, অথবা একই স্টাইল মেইনটেইন করে এসাইনমেন্ট করা) সেই সব ক্ষেত্রে লেখার এই ভঙ্গি সহ পেস্ট করার ব্যাপারটি একটি ফিচার হিসেবে কাজ করে থাকে।

কিন্তু আপনি চাইলে এই ফিচারটি ব্যবহার না করেও শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কন্টেন্ট বা লেখা ব্লগে ‘কপি-পেস্ট’ করতে পারবেন। আর এটি করার দু’টি উপায় রয়েছে। আসুন উপায় গুলো জেনে নেয়া যাক-






সহজ কার্যকর পদ্ধতি

  • যে সোর্স হতে লেখাটি কপি করবেন তার সম্পূর্ণ কন্টেন্ট টুকু প্রথমে সিলেক্ট করুন। এরপর তার উপর মাউসের রাইট ক্লিক করে কপি করুন অথবা কিবোর্ড হতে Ctrl + C চাপুন।
  • এরপর যেখানে আপনার লেখাটি পেষ্ট করতে চান সেখানে টেক্সট ইনপুট নেবার জায়গায় ক্লক করে কিবোর্ড হতে Ctrl + Shift + V একত্রে চাপুন।দেখবেন লেখার ফরম্যাট কপি না হয়ে সরাসরি যে লেখাগুলো সিলেক্ট করেছেন তা প্লেইন টেক্সট হিসেবে চলে এসেছে।





ব্লগে (ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে নির্মিত ব্লগ) কপি-পেস্ট করার পদ্ধতি

উপরে বর্ণিত পদ্ধতি ব্যবহার করেও আপনি ওয়ার্ডপ্রেস নির্ভর ব্লগে কপি-পেস্ট করতে পারবেন। কিন্তু শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস তাদের ব্যবহারকারীদের কথা চিন্তা করে তাদের এডিটরে অতিরিক্ত একটি ফিচার যুক্ত করে দিয়েছে। 
  • আপনার ব্লগ একাউন্টে লগইন করে ‘নতুন ব্লগ লিখুন’ বা ‘নতুন এ্যাড করুন’ লেখাটিতে ক্লিক করুন। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওয়ার্ডপ্রেস এডিটর চালু হয়ে যাবে।
  • এখন ওয়ার্ডপ্রেস এডিটরের ভিজ্যুয়াল মুড এর টুলসেট থেকে ‘Paste as text’ বা বোর্ডের মধ্যে ইংরেজী T বর্ন লেখা আইকনটিতে ক্লিক করুন।

    এতে স্ক্রিনে একটি মেসেজ দেখা যাবে। যেখানে লেখা থাকবে-
    পেস্ট এখন প্লেইন টেক্সট মোডে আছে। সবকিছু এখন প্লেইন টেক্সড মোডে পেস্ট হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি এই আপশনটি টগল করে বন্ধ করেন। If you’re looking to paste rich content from Microsoft Word, try turning this option off. The editor will clean up text pasted from Word automatically.
      
  • ডিসপ্লে বক্সটির ক্রসে ক্লিক করে আপনি আপনার এডিটরে ক্লিক করুন। এরপর সোর্স ফাইল থেকে টেক্স বা যা কপি করা প্রয়োজন তা কপি করে এডিটরের এই লেখার বক্সে সাধারণ নিয়মে পেস্ট করে দিন।এতে কেবলমাত্র আপনার কপিকৃত সোর্স হতে শুধুমাত্র টেক্সট কপি হয়ে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এডিটরে পেস্ট হবে।
      
  • এরপর পেস্ট করা শেষে পুনরায় ঐ বোর্ডের উপর ইংরেজী T অঙ্কিত আইকনে ক্লিক করে ফিচারটি বন্ধ করে নিন।



উপরে বর্ণিত যে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে যে কোন সোর্স থেকে আপনি আপনার পছন্দসই লেখা খুব সহজেই ঝামেলা এড়িয়ে আপনার ব্লগে কপি-পেস্ট করতে পারবেন। এতে ব্লগে আপনার লেখার গঠন এবং সৌন্দর্য উভয়ই তার নিয়মিত ভঙ্গি (স্টাইল) অনুসরণ করবে। আর আপনার লেখাটি পড়বার সময় ব্লগ পাঠকেরও এধরণের সমস্যা নিয়ে কোন বিরক্তির উদ্রেক ঘটবে না।
  
  
  

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরের লেখা নিজের ব্লগে কপি-পেস্ট বা আরও সহজ করে বললে চুরি করা থেকে বিরত থাকুন। ব্লগের প্রতিটি লেখা বা কন্টেন্টই লেখকের মেধাস্বত্ত সম্পত্তি। একান্তই যদি কারও লেখা নিজের ব্লগে প্রকাশ করতে হয় তবে লেখাটি প্রকাশের পূর্বেই লেখকের কাছে অনুমতি আদায় করে নিন। অন্যথায় লেখক প্রয়োজন অনুভব করলে আপনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল এক্ট এর আলতায় আইন-আনুগ ব্যবহস্থা গ্রহণ করতে পারবে। তাতে আপনার ও ব্লগের উপভয়ের সম্মানই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

 
 
 
 
   
 
  




Creative Commons License 
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।

মঙ্গলবার, আগস্ট ০৬, ২০১৯

ঝামেলা ছাড়াই বড় ফাইল গুলো পাঠিয়ে দিন তার গন্তব্যে

ইন্টারনেটে কাউকে কোন কিছু পাঠাবার সবচেয়ে জনপ্রিয় আর গ্রহণযোগ্য মাধ্যম হলো ইলেকট্রনিক মেইল ওরফে ই-মেইল। এখনো জরুরী যে কোন জিনিষেরই আদান প্রদাণ হয় এই ই-মেইল মাধ্যমে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে ই-মেইলের সাথে এটাচমেন্ট হিসেবে পাঠানো ফাইল সাইজের লিমিট। অধিকংশ মেইল প্রোভাইডর মেইলের সাথে এটাচমেন্ট হিসেবে ২০ মেগাবাইট থেকে ১০০ মেগাবাইট পর্যন্ত সাইজের ফাইল পাঠাবার সুযোগ দিয়ে থাকে। এর চেয়ে বড় সাইজের ফাইল হলে তখন বিপাকে পড়তে হয়।

আবার অধিকাংশ ক্লাউড সার্ভিস ব্যবহার করে ফাইল প্রেরণের পূর্বে তাদের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। অনেক সময় এই বাড়তি ঝামেলাটা পোহাতে ইচ্ছে হয় না।

আর এই সমস্যা গুলো থেকে উত্তরণের জন্যে আজকের এই লেখাটি। এখানে এমন কয়েকটি ফাইল-শেয়ারিং সার্ভিস নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো ব্যবহারের জন্যে আপনাকে কোন ধরণের সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে না। প্রয়োজন হবে না কোন ধরণের বাড়তি রেজিস্ট্রেশনের। আর সার্ভিস ভেদে আপনি ১ গিগাবাইট থেকে ৫ গিগাবাইট পর্যন্ত ফাইল আদান-প্রদাণ করতে পারবেন একদম বিনামূল্যে।

তো চলুন ঝটপট এমন কিছু সার্ভিস দেখে নেয়া যাক!


Firefox Send

মোজিলা ফায়ারফক্স এর একটি অতিরিক্ত সুবিধা এই Firefox Send। এই সুবিধাটি ব্যবহার করে আপনি যে কোন ধরণের ফাইল অতি সহজেই আদান প্রদান করতে পারবেন। Firefox Send ব্যবহার করে আপনি নিরাপদে আপনার ফাইলটি দ্রুততর সময়ের মধ্যে আদান-প্রদাণ করতে পারবেন।
  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ১ গিগাবাইট / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে ২.৫ গিগাবাইট বিনামূল্যে।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ফাইল আপলোডের সময় হতে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা থেকে ৭ দিন পর্যন্ত।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ ১ হতে ১০০ সংখ্যক নির্ধারিত করে দেয়া ডাওনলোড।

We Transfer

২০০৯ সাল থেকে We Transfer তাদের এই সেবাটি প্রদাণ করে আসছে। সহজে কোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই সরাসরি আপনি আপনার ফাইলটি এই পরিষেবার মাধ্যমে আদান-প্রদান করতে পারবেন।
  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ২ গিগাবাইট।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ফাইল আপলোডের দিন হতে পরবর্তী ৭ দিন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ প্রযোজ্য নয়।


Transfernow ফাইল শেয়ারিং সার্ভিসটি ২০১৩ সাল থেকে তাদের এই সেবা দিয়ে আসছে। Transfernow বিনামূল্যে এবং মূল্য পরিশোধিত – দু’ধরণের সার্ভিসই প্রদাণ করে থাকে। তবে সাধারণ ব্যবহারকারী বিনামূল্যেই Transfernow এর মাধ্যমে তার ফাইলটি পাঠাতে পারবে। Transfernow ব্যবহার করে ফাইল ডাওনলোড করার জন্যে আপনি সরাসরি লিংক নিতে পারেন, অথবা তাদের সাইট থেকেই প্রাপকের কাছে মেইলটি পাঠাতে পারবেন।

  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ৪ গিগাবাইট।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ফাইল আপলোডের দিন হতে পরবর্তী ৭ দিন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ প্রযোজ্য নয়।


pCloud Transfer


২০১৩ সাল থেকে এই সুইস সার্ভিসটি ফাইল শেয়ারিং এবং ব্যকাআপ করার সুবিধা দিয়ে আসছে। বিনামূল্যের সার্ভিসের সাথে এদের রয়েছে আকর্ষণীয় সব পেইড সার্ভিস। তবে দ্রুত ফাইল আদান-প্রদাণের জন্যে বিনামূল্যে এই সার্ভিসটিও ব্যবহার যোগ্য। পাশাপাশি ফাইল আদান-প্রদাণের অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে আপনি আপনার ফাইল গুলো এনক্রিপ্ট করে পাঠাতে পারবেন।

  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ৫ গিগাবাইট / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে ১০ গিগাবাইট বিনামূল্যে।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ অপ্রকাশিত / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে লিমিট বিহীন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ প্রযোজ্য নয়।


Mediafire

ফাইল শেয়ারিং এবং ব্যাকআপ হিসেবে খুব পরিচিত একটি নাম হলো Mediafire। যারা ইতোপূর্বে অনলাইনে ফাইল সংরক্ষণ কিংবা শেয়ার করেছেন তারা অবশ্যই Mediafire সম্পর্কে ধারণা রাখেন। ২০০৬ সাল থেকে Mediafire তাদের সার্ভিস প্রদাণ করে আসছে। যদিও Mediafire এর মূল সেবা পেতে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবুও রেজিস্ট্রেশন ব্যতিতই দ্রুত ফাইল আদান প্রদানের জন্যে আপনি Mediafire ব্যবহার করতে পারবেন।

  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ১ গিগাবাইট / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে ১০ গিগাবাইট বিনামূল্যে।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ১৪ দিন / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে লিমিট বিহীন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ উক্ত সময়ের মধ্যে অগুনিত বার।


  
  
   
      


Creative Commons License
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।

বুধবার, জুলাই ৩১, ২০১৯

ডেঙ্গু বন্দনা


শহর জুড়ে এডিস উড়ে ভন ভন,
ডেঙ্গু মোদের আকড়ে ধরছে জনে জন,
মরছি মোরা লাইন ধরে একে একে,
ভাবছি সবাই উপায় কি আর বসে বসে।

তুমি বাবু চালাক মানুষ জানি জানি,
পরিবারের নিরাপত্তা তোমার দারুন ভারী।
তাই তো তুমি পেয়েছ উপায় বেশ বেশ,
পাড়ি দিচ্ছো স্বদেশ ছেড়ে দূর বিদেশ!

আমরা নাহয় মরবো স্বদেশে ভুখা নাঙ্গা,
বাবু তুমি বাঁচবে জানি পেরিয়ে গঙ্গা।
তবু যেদিন হিসেব হবে কড়া-গণ্ডা,
খোদারে তুমি দিও হিসেব পাপী-গুণ্ডা!
  
   
     
      
   

মঙ্গলবার, জুলাই ১৬, ২০১৯

GIMP ব্যবহার করে Facebook এর জন্যে 3D ইমেজ তৈরি

Facebook প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করে এর ব্যবহারকারীদের চমকে দিচ্ছে। তেমনি একটি ফিচার 3D ইমেজ। এখন নিউজ ফিড জুড়ে প্রায়ই 3D ইমেজের দেখা মেলে। মাউসের কার্সর নাড়াচাড়া করলে ইমেজটিও কেমন করে নড়াচড়া করে উঠে।


চাইলেই আমরা আমাদের ছবি গুলোকে Facebook এ 3D ইমেজ হিসেবে আপলোড করতে পারি। আর কিভাবে সেই কাজটি করা যায় সেটিই আজকের আলোচনা।

ফেসবুকে 3D ইমেজ তৈরি করার জন্যে আমাদের ২টি ইমেজ ফাইলের প্রয়োজন। একটি ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ ফাইল, আর অন্যটি হচ্ছে অবজেক্ট ইমেজ ফাইল। মূলত এই অবজেক্ট ইমেজ ফাইলটিই আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ ফাইলের উপর নড়াচড়া করবে।

কাজটি করার জন্যে আমি মুক্ত ও বিনামূল্যের ইমেজ ইডিটর GIMP ব্যবহার করেছি।
 
 
   
   

3D ইমেজ তৈরির পদ্ধতি


  • ধাপ ১ঃ GIMP চালু করে প্রথমে File মেন্যু থেকে File > Open… সিলেক্ট করুন। তারপর আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ ফাইলটি সিলেক্ট করে Open বাটন চাপুন।
  • ধাপ ২ঃ অবজেক্ট ইমেজটি লোড করতে File মেন্যু থেকে File > Open as Layers… সিলেক্ট করুন। এখন আপনি যে ইমেজটিকে অবজেক্ট ইমেজ হিসেবে ব্যবহার করবেন সেটি সিলেক্ট করে Open বাটন চাপুন। আপনার অবজেক্ট ইমেজটির ব্যাকগ্রাউন্ডে কোন কিছু থাকা চলবে না। মানে অবজেক্ট ইমেজটিতে কেবল অবজেক্ট ইমেজটাই থাকবে, আর তার ব্যাকগ্রাউন্ড হবে ট্রান্সপারেন্ট ধরণের। উদাহরণ হিসেবে এই ছবিটি দেখুন।
  • ধাপ ৩ঃ আপনার অবজেক্ট ইমেজটি ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজের কোন স্থানে থাকবে তা নির্ধারন করুন। প্রয়োজনে আপনার অবজেক্ট ফাইলটি Resize করে নিন। যাতে অবজেক্ট ইমেজটি 3D ইমেজ তৈরির পর চারপাশ থেকেই দেখা যায়।
  • ধাপ ৪ঃ এরপর নতুন একটি লেয়ার তৈরি করুন। লেয়ারের নাম দিন “image_depth”, আর এটির Fill with হিসেবে ‘Transparency’ সিলেক্ট করুন।
  • ধাপ ৫ঃ কালার প্যালেট হতে Foreground কালার হিসেবে সেট করুন ‘606060‘। এরপর কালারটি ধরে এনে “image_depth” লেয়ারের উপর ছেড়ে দিন।
  • ধাপ ৬ঃ এরপর আপনার অবজেক্ট লেয়ারটি সিলেক্ট করে মাউজের রাইট ক্লিক করুন। এরপর মেন্যু থেকে Alpha to Selection অপশনটি সিলেক্ট করুন। এতে আপনার অবজেক্ট ইমেজটির আকার অনুযায়ী একটি সিলেকশন এরিয়া তৈরি হবে।
  • ধাপ ৭ঃ এখন মেন্যুবার এর Select > Grow… অপশনটি ক্লিক করুন। স্ক্রিনে Grow Selection এর ইনপুট বক্স দেখা যাবে। এখানে Grow selection ভেল্যু হিসেবে ‘3’ সেট করে Ok বাটনে চাপুন। এতে পূর্বের অবজেক্ট সিলেকশন এরিয়া হতে সিলেকশন এরিয়ার পরিধি বৃদ্ধি পাবে।
  • ধাপ ৮ঃ সিলেকশন থাকা অবস্থায় পুনরায় “image_depth” লেয়ারটিতে ক্লিক করুন। এরপর কালার প্যালেট এর Background কালার হিসেবে ‘bbbbbb‘ সেট করুন। এরপর ব্যাকগ্রাউন্ড প্যালেটটি টেনে ধরে “image_depth” এর সিলেক্ট থাকা অংশের উপর ছেড়ে দিন।
  • ধাপ ৯ঃ মেন্যুবার থেকে Select > None অপশনটিতে ক্লিক করুন। এরপর “image_depth” এর ভিজিবিলিটি (চোখের আইকন) বন্ধ করুন।
  • ধাপ ১০ঃ অবজেক্ট ইমেজ লেয়ারটিতে ক্লিক করুন, এর উপর মাউজের রাইট ক্লিক করুন। মেন্যু থেকে Merge Down সিলেক্ট করুন। এতে আপনার অবজেক্ট লেয়ার এবং ব্যাকগ্রাউন্ড লেয়ার দুটো একত্রে যুক্ত হয়ে একটি লেয়ারে পরিণত হবে।
  • ধাপ ১১ঃ মেন্যুবার থেকে File > Export As… সিলেক্ট করুন। এরপর ফাইলটির নাম দিন ‘image.png’ । খেয়াল করুন ফাইলটির এক্সটেনশন অবশ্যই png হতে হবে।
  • ধাপ ১২ঃ পুনরায় “image_depth” লেয়ারটির ভিজিবিলিটি চালু (চোখের আইকনে আবার ক্লিক) করুন। তারপর মেন্যুবার থেকে File > Export As… সিলেক্ট করুন। ফাইলটির নাম দিন ‘image_depth.png’। এই ক্ষেত্রেও ফাইলটির এক্সটেনশন অবশ্যই png হতে হবে।





3D হিসেবে উপস্থাপনের জন্যে আমাদের ইমেজ ফাইল তৈরি। এখন একে Facebook এ ব্যবহারের পালা-


  • ফেসবুকে ব্যবহারের জন্যে আপনার ফেসবুকে লগইন করুন। তারপর নতুন পোষ্ট লেখার স্থানে গিয়ে Photo/Video বাটনে ক্লিক করুন।
  • নতুন যে দুটো ফাইল তৈরি করে সেভ করেছিলেন সেই ডাইরেক্টরি/স্থান -তে প্রবেশ করুন। এরপর পর্যায়ক্রমে কী-বোর্ড থেকে Ctrl (কন্ট্রোল) কী চেপে ধরে ‘image.png’ ও ‘image_depth.png’ ফাইল দুটো একত্রে সিলেক্ট করে Ok চাপুন।
  • Facebook এ ইমেজ দুটো আপলোড হলে সয়ংক্রিয় ভাবেই ফেসবুক ইঞ্জিন উক্ত ইমেজ ফাইল দুটো নিয়ে 3D ইমেজ তৈরির কাজ শুরু করবে। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। কিছু সময়ের মধ্যেই আপনার আপলোড কৃত ইমেজ ফাইলের পরিবর্তে আপনি একটি 3D ইমেজ পেয়ে যাবেন।



এভাবেই আপনি আপনার যে কোন ছবিকে 3D ইমেজ হিসেবে ফেসবুকে প্রকাশ করতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখবেন সোর্স ফাইল হিসেবে আপনি যে ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ এবং অবজেক্ট ইমেজ ব্যবহার করছেন তাদের ইমেজ রেজ্যুলুশন যাতে প্রায় একই রকম হয়। ভিন্ন ভিন্ন রেজুল্যুশনের ছবি ব্যবহার করলে আউটপুট হিসেবে 3D ইমেজ আপনার মনঃপুত হবে না।
   
     
পুরো প্রক্রিয়াটি এখানে এই ছোট্ট ভিডিওতে দেখানো হয়েছে। বুঝতে সমস্যা হলে এই ভিডিওর সহায়তা নিতে পারেন।


এখানে ব্যবহৃত ইমেজ ফাইল গুলো এই লিংক থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
  
   
    
     
      
       


শুক্রবার, জুলাই ০৫, ২০১৯

hosts ফাইলের সাহায্যে আপনার সিস্টেমকে আরও সুরক্ষিত রাখুন


কম্পিউটারে বসে ব্রাউজিং করতে বসলেই দেখা যায় এক একটা সাইটে শ'খানেক করে এডভারটাইজ ভেসে বেড়াচ্ছে। আবার কোন কোন সময় জরুরী কিছু একটা সার্চ ইঞ্জিনে খোজার চেষ্টা করছেন, কিন্তু যা খুঁজছেন তা রেখে সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকেই রয়েছে কিছু এড। আবার এমনও সময় হয় যখন বাধ্য হয়েই কোন কোন সাইটে এডে ক্লিক করতে হয়।

এ তো গেলো এক যন্ত্রণা। কিন্তু এর থেকেও বড় যন্ত্রণা হচ্ছে এই এড গুলোর পিছনে লুকিয়ে থাকা নানা ধরণের ম্যালওয়্যার কিংবা ওয়ার্ম। এগুলো খুব সন্দুর করে ঘাপটি মেরে থাকে নানা সাইটে অথবা লিংকে। মাঝে মাঝে দেখা যায় অযথাই এক সাইট থেকে আরেক সাইটে ঘুরে বেড়াচ্ছে ব্রাউজারটি। কিংবা এক ক্লিকেই ১০ খানা ট্যাব খুলে বসে আছে।

কাজের সময় এইসব যেমন বিরক্তিকর, তেমনি পিসির জন্যেও ক্ষতিকর বটে। আর আজকের লেখাটি সেই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টাতেই লেখা।

এই সব সমস্যার জন্যে অবশ্য একটা সহজ সমাধান হচ্ছে AdBlock এক্সটেনশন কিংবা এড-অন। কিন্তু একটা এক্সটেনশন কিংবা এড-অনও কিন্তু একটা সিস্টেমের দারুণ পরিমান রিসোর্স ব্যবহার করে থাকে। আমি যখন ব্রাউজারে একই সাথে ৮টি ট্যাব খুলে কাজ করি তখন এই ৮টি ট্যাবের জন্যেই কিন্তু ঐ এড-অনটি কাজ করতে থাকে পেছন থেকে। আর সেই হিসেবই রিসোর্স ব্যবহার করতে থাকে সে। ফলাফল হিসেবে মাঝে মধ্যেই ক্রাশ করে ব্রাউজার। শুধুমাত্র একটি AdBlock এক্সটেনশনই একবার ১০০০ মেগাবাইট র‍্যাম আর ৪৮% সিপিইউ এর ব্যবহার করে একসময় আমার ব্রাউজার ক্রাশ করতে বাধ্য করেছিল।

তাই এর থেকে সহজ সমাধানের খোঁজ করছিলাম আমি। আর সেই সহজ সমাধানটি আমাদের সকলেরই অপারেটিং সিস্টেমের সাথে বিল্ট-ইন অবস্থাতেই রয়েছে।

সমাধানটি হলো আমাদের সিস্টেমের hosts ফাইল। আমাদের সিস্টেম এর হোস্ট নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে এই hosts ফাইলটি কাজ করে থাকে। এখানে কিছু ভ্যালু পরিবর্তন করে আর কিছু ভ্যালু যোগ করলেই আমরা অনাকাঙ্খিত এই সব সাইট আর এড এর হাত থেকে মুক্তি পেতে পারি।

আমার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আমি একটি হোস্ট ফাইল তৈরি করে নিয়েছি। এই হোস্ট ফাইলটি তৈরিতে আমার সহায়তা নিতে হয়েছে বেশ কয়েকটি সাইট আর হোস্ট ফাইল তৈরি করে এমন নির্মাতাদের। এখানে আমি মোট ১২ রকমের ফিল্টার কিংবা ১২টি আলাদা আলাদা ফাইল একত্র করে তা ব্যবহার করেছি। আর এটি ব্যবহারের উপলদ্ধি কেমন ছিল তা আপনি নিজে যতক্ষণ ব্যবহার না করবেন ততক্ষণ বুঝতে পারবেন না।

এই হোস্ট ফাইলটিতে Ad-block, Malware Domain List, Spam, Fake News, Gambling, Porn সহ আরও বেশ কিছু ফিল্টার লিস্ট এড করা আছে। হোস্ট ফাইলটি ডাওনলোড করতে এই লিংকে ক্লিক করুন।




কিভাবে hosts ফাইলটি পরিবর্তন করবো?


  • Windows অপারেটিং সিস্টেমে hosts ফাইলটির অবস্থান %windir%\System32\drivers\etc\ ফোল্ডারে। আরও সহজ করে বললে এই লোকেশনটি হলো- C:\Windows\System32\drivers\etc\
    (এই লোকেশন সরাসরি ব্রাউজ করতে না পারলে Folder Option থেকে Show hiden files, folders, and drives অপশনটি চালু করে নিতে হবে)



  • উক্ত ফোল্ডারে থাকা hosts ফাইলটি কপি করে ডেক্সটপে রাখুন।
  • এখন আমার দেয়া লিংক থেকে ডাওনলোড করা hosts ফাইলটি Notepad ব্যবহার করে চালু করুন। তারপর এর সবকিছু Ctrl + A চেপে সিলেক্ট করুন। এরপর মাউজের রাইট ক্লিক করে কপি করুন অথবা Ctrl + C চাপুন।
  • এরপর ডেক্সটপে থাকা hosts ফাইলটি Notepad ব্যবহার করে চালু করুন। এরপর এর শেষ লাইনে গিয়ে মাউসের রাইট ক্লিক করে Paste করুন অথবা Ctrl + V চাপুন।
  • এখন ফাইলটি Save করুন।
  • ডেক্সটপে থাকা hosts ফাইলটি পুনরায় C:\Windows\System32\drivers\etc\ ফোল্ডারে পেস্ট করুন। (এটি করার জন্যে আপনার কাছে Administrator এর অনুমতি কিংবা পাসওয়ার্ড চাইতে পারে)
  • কপি হয়ে গেলে সিস্টেমটি Restart করুন।



Linux মেশিনে hosts ফাইলটি রয়েছে /etc/hosts লোকেশনে।hosts ফাইলটির পরিবর্তন করতে আপনার root এক্সেসের প্রয়োজন পড়বে।root এক্সেস ব্যবহার করে যে কোন Text editor ব্যবহার করে উপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে কপি-পেস্ট করে আপনার লিনাক্সের hosts ফাইলটি পরিবর্তন করতে পারবেন।




Windows এ hosts ফাইলটি কিভাবে পরিবর্তন করতে হবে তা বুঝতে এই ভিডিও টিউটোরিয়ালটি ফলো করতে পারেন।








বিশেষ কথাঃ hosts ফাইল যে কোন অপারেটিং সিস্টেমের জন্যেই খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে অপারেটিং সিস্টেম এর কাজে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তাই একে পরিবর্তন কিংবা পরিমার্জন করতে হলে অবশ্যই খুব খেয়ালের সাথে করা উচিৎ হবে। এই লেখাটি পড়ে কারও সিস্টেমটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে তার দায়ভার লেখক বহন করবে না।

বুধবার, জুন ২৬, ২০১৯

Firefox-এ দেখুন ঝকঝকে বাংলা


ওয়েবের জগতে যে কয়েকটি ব্রাউজার দাপটের সাথে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ব্রাউজার হচ্ছে Firefox । বর্তমানে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন লোক ফায়ারফক্স ব্রাউজারটি তাদের প্রধান ব্রাউজার হিসেবে ব্যবহার করছে। নিরাপত্তা, মেমরি-ম্যানেজমেন্ট আর এর দারুণ সব Ad-ons এর কারণে এটি বেশ জানপ্রিয়। তাছাড়া এটি সম্পূর্ণ ওপেন-সোর্স ওয়েব ব্রাউজার হবার কারণে অনেক ওয়েব ডেভেলপারদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ফায়ারফক্স

চমৎকার সব ফিচারে পরিপূর্ণ হলেও বাংলা ফন্ট দেখানোর কিছু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে এই জনপ্রিয় ব্রাউজারটিতে। যদিও বর্তমান অপারেটিং সিস্টেম গুলোতে বাংলা'র জন্যে চমৎকার সব সাপোর্ট তৈরি হয়েছে। তারপরও কিছু কিছু ওয়েব সাইট ব্রাউজ করতে গেলে এখনো বাংলা ফন্ট ভেঙ্গে যায় কিংবা লেখা গুলো অতিরিক্ত ছোট কিংবা বড় দেখায়। আর এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যেই আজকের এই লেখাটি।

বাংলায় কোন সাইট দেখার জন্যে প্রাথমিক যে জিনিষটির প্রয়োজন তা হচ্ছে 'বাংলা ফন্ট'। পুরাতন অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে বাংলা ফন্টের সাপোর্ট খুবই নিন্মপর্যায়ে রয়েছে। তবে আশার ব্যাপার হচ্ছে আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম গুলোতে দারুণ সব বাংলা ফন্ট দেয়া আছে। তারপরও ঝকঝকে আর পরিস্কার ফন্ট হিসেবে যে সব বাংলা ফন্ট রয়েছে তাদের মধ্যে 'কালপুরুষ' কিংবা 'সোলাইমান লিপি' ফন্ট দুটো উল্লেখযোগ্য।

আপনার অপারেটিং সিস্টেমটি যদি Windows XP হয়ে থাকে তাহলে সিস্টেমে বাংলা সাপোর্ট এর জন্যে প্রথমে আপনি iComplex ইন্সটল করে নিন। Windows 7, 8 কিংবা 10 এর জন্যে iComplex ইন্সটল করার প্রয়োজন নেই।

বাংলা লেখবার জন্যে জনপ্রিয় বাংলা সফটওয়্যার অভ্র ইন্সটল করে নিতে পারেন। অভ্র ইন্সটল করার সাথে সাথে আপনার সিস্টেমে কয়েকটি বাংলা ইউনিকোড ফন্ট ইন্সটল হয়ে যাবে। তারপরও 'কালপুরুষ' কিংবা 'সোলাইমান লিপি' ফন্ট দুটো আলাদা করে ডাওনলোড করে আপনার সিস্টেমে ইন্সটল করে নিন।

ফন্ট ইন্সটল করতে উক্ত ফন্ট দুটো windows অপারেটিং সিস্টেমে " C:\Windows\Fonts\ " ফোল্ডারে কপি-পেস্ট করুন। Linux মেশিনে " ~/.local/share/fonts " ফোল্ডারে কপি-পেস্ট করুন।


পদ্ধতি -১ (সহজ পদ্ধতি)

ধাপ-১: Firefox ব্রাউজারটি চালু করুন। এরপর Menu থেকে Preference এ ক্লিক করুন।

ধাপ-২: Preference লোড হলে এর General ট্যাব থেকে Language and Appearance এ আসুন। এখানে 'Fonts and Colors' এর পাশে থাকা 'Advanced...' বাটনে ক্লিক করুন। 

ধাপ-৩: Fonts সেটিং বক্স আসলে এখানে -
- Fonts for এর লিস্ট থেকে 'Bengali'  সিলেক্ট করুন।
- Serif ফন্ট এর ড্রপডাওন লিস্ট হতে 'Kalpurush' সিলেক্ট করুন।
- Sans-serif ফন্ট এর ড্রপডাউন লিস্ট হতে 'Kalpurush' সিলেক্ট করুন।
- Monospace ফন্ট এর ড্রপডাওন লিস্ট হতে 'Kalpurush' সিলেক্ট করুন।

পরিবর্তনের পর Font সেটিং-টি দেখতে এমন হবে।

এখন নিচে থাকা OK বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনি আপনার ফায়াফক্স ব্রাউজারটি বন্ধ করে পুনরায় চালু করুন।

পুরো প্রকৃয়াটি এখানে দেখুন-



পদ্ধতি -২ (ঝামেলাপূর্ণ পদ্ধতি)

ধাপ-১: Firefox ব্রাউজারটি চালু করুন। এরপর ব্রাউজারের এড্রেসবারে about:config লিখে এন্টার চাপুন।

ধাপ-২: পর্দায় একটি সতর্কতাসূচক বিজ্ঞপ্তি ভেসে উঠবে। এখন এখান থেকে 'I accept the risk!' লেখা বাটনটিতে ক্লিক করুন।

ধাপ-৩: নতুন একটি পেইজ লোড হবে। এখানে অসংখ্য ফিচারের লিস্ট আর তাদের অবস্থা দেখতে পাবেন। ফিচার লিস্টের উপরের দিকেই Search bar রয়েছে। সেই Search bar এর বক্সে লিখুন 'beng'

ধাপ-৪: সার্চ বারে beng লেখার সাথে সাথেই নিচের লিস্টে বাংলা ফন্টের ফিচার কনফিগ চলে আসবে। এখন এই ভেল্যু গুলোর পরিবর্তন করতে হবে।

যেমন আমি font.default.x-beng এ ডাবল ক্লিক করলাম। নতুন যে ইনপুট বক্স এসেছে তাতে  Kalpurush লিখে Ok বাটনে ক্লিক করলাম।

এমন করে আরও কিছু ভেল্যু পরিবর্তন করতে হবে। নিচে ঐসব প্রিফারেন্সের নাম দেয়া হলো-
font.default.x-beng
font.name-list.monospace.x-beng
font.name-list.sans-serif.x-beng
font.name-list.serif.x-beng
font.name.cursive.x-beng
font.name.monospace.x-beng
font.name.sans-serif.x-beng
font.name.serif.x-beng
     

পরিবর্তনের পর দেখতে কিছুটা এমন হবে।

এরপর আপনি আপনার ফায়াফক্স ব্রাউজারটি বন্ধ করে পুনরায় চালু করুন।

পুরো প্রকৃয়াটি এখানে দেখুন-


এখন যে কোন বাংলা সাইট ব্রাউজ করে দেখুন পরিস্কার ঝকঝকে বাংলা লেখা!

 
 
 
 
 

  

শুক্রবার, জুন ২১, ২০১৯

চাঁদের পথে...



চাঁদের সাথে পথ ধরে হেটে যেতে নেই কোন বাধা। বরং যুগে যুগে বহু মানুষ এই চাঁদের মায়ায় ডুবে সংসার ছেড়ে পথ হেঁটেছে চাঁদের পেছনে পেছনে। কেউ হয়েছে বৈরাগি, কেউ সন্যাসী আবার কেউ গিয়ে ঠেকেছে নির্জনে-মৃত্যুতে। গল্পে, কবিতায়, ভালোবাসা কিংবা অক্ষমতার আক্ষেপের বিক্ষিপ্ত বহিঃপ্রকাশে চাঁদ বরাবরই মানুষকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে। সেই অনাদিকাল থেকে এখন অব্দি মানুষ চাঁদকে দেখে নিজের ভেতরকার উদাসীনতা অনুভব করে। নিজের মনের কোমলতাকে চাঁদের কোমল আলোর সাথে তুলনায় মেপে দেখে। ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৮৫৫ মাইল দূরে থেকেও কি অদ্ভুত মায়াতেই না চাঁদ আমাদের বিমুগ্ধ করে রেখেছে।

সবার মত আমিও চাঁদের সাথে পথ হেটে হারাতে চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম চাঁদের মায়ায় ডুবে লোকান্তর ত্যাগ করে সন্যাসী হতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, চাঁদ তার নেশা ধরিয়ে তার পিছু পিছু হাটিয়ে নিলেও কখনো হারিয়ে যাবার পথ বলে দেয় না। সে যেখানে নিয়ে যায় তারও একটা না একটা পরিচয় থাকে। সেখানেও কোন না কোন ভাবে অন্য কারও পৌছবার পথ জানা থাকে। ভিন পথে হাটিয়ে ভিন্ন করেও শেষ পর্যন্ত আবারও মিলের খাতায় ঠিকই জুড়ে দেয় সে। চাই তার ঠিকানা হোক মরু কিংবা মেরুতে। কেউ না কেউ ঠিকই সেখানে পৌছে যাবে। এই ভেবেই আর শেষ পর্যন্ত চাঁদের পেছনে আমার হারানো হয়নি।

তবে কি তাই ভেবে চাঁদের পিছু ছোটায় মানুষ খ্যান্ত দিবে? না, তা মোটেই হবার নয়। চাঁদে যে পথে হাটিয়ে নিয়ে যায় সে পথ সে প্রতিটা মানুষের জন্যেই আলাদা করে রাখে। দু'জন মানুষ একই পথে চাঁদের পিছু হেঁটেও কখনো এক পথের পথিক হয় না। তার প্রতিটি পথেই দেখা মেলে নতুন কোন নক্ষত্রের, যার প্রজ্বলনে মুসাফিরের অন্তর প্রজ্জলিত হয়। পথের প্রতিটা মোড়েই কোন না কোন কৃষ্ণগহবর তার গল্প নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। যারা শোনার, তারা ঠিকই সেই গল্প শুনতে পায়। সেই গল্পের ভাব তাদের অন্তরকে আরও প্রসস্ত করে, করে তোলে আরও গভীরতর।  আর ঐ গল্প ঐ একটি মাত্র মানুষ ছাড়া দ্বিতীয় কেউ কোনদিন কোনকালে শুনতে পায় না।

এখানেই কি শেষ? না, এখানেও তাদের অন্তর তৃষ্ণা তৃপ্ত হয় না। তারা ছুটে যায় চাঁদের কাছে। খুব কাছ থেকে, একদম নিবিড় ভাবে তারা অনুভব করতে চায় চাঁদকে। কিন্তু সেখানেও নিয়েও চাঁদ মুচকি হাসে। তারা তো চাঁদে ছুয়ে দেখে ঠিকই, কিন্তু তার কোমলতার পেছনে যে রহস্য, তার আকর্ষণের পেছনে যে হাতছানি; তার হিসেব তারা কোন ক্যালকুলেশনেই মিলাতে পারে না। শেষ পর্যন্ত মনে আরও বেশি আক্ষেপ নিয়ে, অভিমানে মনকে পূর্ণ করে ফিরে আসে ধরণীর বুকে। অথচ নিজের বুকের মাঝে তখনও চাঁদের পিছুনে ছুটে যাবার ইচ্ছাকে দমন রাখতে পারে না।

তবুও আমি কিংবা আমরা বেহায়াপনার চুড়ান্ত করে বারংবার চাঁদের পিছনে হেঁটেছি। চাঁদের পূর্ণতায় নিজের পূর্ণতার রূপ খুঁজেছি, চাঁদের হারিয়ে যাওয়ায় নিজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেখেছি। ফের যখন গোস্বা ছেড়ে চাঁদ আবারও আকাশের বুকে উঁকি দিয়েছে, আমরাও আমাদের মাঝে হারিয়ে ফেলা আসল আমিটাকে খুঁজে ধরে আবারও চাঁদের সাথে মিলিয়ে দেখেছি। আর বারংবারই নতুন চাঁদের মত নিজের মধ্যে নতুন কিছুই খুঁজে পেয়েছি। অবাক হয়েছি, যেমন করে প্রতিবারই পুরানো চাঁদকে নতুন করে দেখেও কিছু দেখা অপূর্ণ রয়ে গেছে, তেমনি নিজের মধ্যে নিজেকে আবিস্কার করতে গিয়ে প্রতিবারই বুঝতে শিখেছি আমার মধ্যে আমাকে দেখাও এখনো অপূর্ণই রয়ে গেছে।

তারপর? তারপর চাঁদের কাছে শিখেছি জীবনটার জোয়ার-ভাটার প্রয়োজনীয়তা। চাঁদ যেমন করে জোড়ারে দুনিয়ার সবকিছু নিজের দিকে টেনে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তেমনি আমরাও আনন্দ আর উল্লাসের তিব্রতায় আমাদের সবকিছু নিয়েই ব্যাকুল হয়ে পড়ি। আমাদের জোয়ারের ঐ সময়টাতে সবচেয়ে তুচ্ছ ব্যাপারও আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। অযথাই হাসি ঠাট্টায় সব দুরুত্ব ঘুচিয়ে কাছে টেনে নিতে থাকি প্রিয়জনদেরকে। আবার ঠিক ভাটার মত করে তার উল্টোটাও করতে থাকি। তখন মনের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা বিদ্বেষে সব দূর-দূর করে তাড়িয়ে দিতে থাকে। গোছানো সব জিনিষই তখন ছুড়ে দিয়ে তছনছ করার ইচ্ছে জেগে উঠে। হয়তো মাঝে মাঝে মনের ভাটার পরিমানও বেড়ে যায়। আর তখন ইচ্ছেটা কেবল ইচ্ছেতে সীমাবদ্ধ থাকে না, তখন সেই ইচ্ছে আমাদের রাগ, আমাদের বদমেজাজ রূপে প্রকাশ পেতে থাকে। ছুড়ে ছিটিয়ে কটু কথার বানে দূর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় প্রিয় মুখ গুলোকে।

এরপর? এরপর হয়তো কোনদিন সকল পিছুটান উপেক্ষা করে একদিন চাঁদের পিছু তার পথে হেঁটে বেড়াবো। কিংবা বাকি সবার মতই আমৃত্যু আক্ষেপ নিয়ে সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাবো...