ছোটবেলায় কার্টুন নেটওয়ার্ক চ্যানেলে The Jetsons কার্টুন সিরিজটা দেখতাম। অত্যান্ত মজার কার্টুন গুলির মধ্যে সেটি ছিল একটি। কেউ যদি আমাকে তখন বলত নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে সারাদিন কার্টুন দেখতে হবে, সম্ভবত তার সেই শর্ত মেনে নিয়ে আমি সারাদিনই কার্টুন দেখতাম।
এ পৃথিবীতে অনেকেই এখন পর্যন্ত এমন অনেক ধারণা দিয়ে গেছে যার প্রয়োজন এবং বাস্তবায়ন বুঝতে আমাদের শতবছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। তেমনই দুজন মানুষ হলেন উইলিয়াম হান্না এবং জোসেফ বারবারা।
The Jetsons কার্টুন সিরিজটি যারা দেখেছেন তারা মনে করতে পারবেন কার্টুনে দেখানো তাদের জীবন যাপনের অবস্থা এবং ব্যবস্থা গুলি। সেখানে অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভাসমান যান, অটোমেটেড লোকেশন ট্রাকিং ডিভাইস, ভয়েস কমান্ড বেস্ড মডিউল, উড়ন্ত ডিসপ্লে সমেত কম্যুনিকেশন মডিউল, রোবট সেক্রেটারি এবং হোমকিপার, রোবট জন্তু সহ নানান ধরণের কাল্পনিক (ঐ সময় এসবের সবই শুধু কাল্পনিক নয়, অতিকাল্পনিক ছিল) জিনিষ দেখানো হয়েছে। অথচ ঐসব কাল্পনিক বস্তু গুলি ধীরে ধীরে আমাদের কাছে টেক-টয়(প্রযুক্তির খেলনা) হিসেবে চলে এসেছে। অল্প ক’দিন বাদেই হয়তো আমরা ঘরের কাজ করার জন্যে ইন্টিলিজেন্ট (অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা/সিদ্ধান্ত নিতে পারে এমন) রোবটও পেয়ে যাবো।
তবে সেখানে দেখানো সবচেয়ে সাধারণ একটা বস্তু ছিল তাদের বাড়ি। আমাদের সাধারণ বিল্ডিং গুলোর মত সেখানে দেখানো বিল্ডিং গুলি একদম গ্রাউন্ড থেকে শুরু হতো না। বরং গ্রাউন্ড থেকে লম্বা দুটো দন্ডের উপর একটি বেস এবং সেই বেসের উপর তাদের বিল্ডিং গুলি দেখা যেত।
হান্না-বারবারা নিশ্চিত ভাবেই দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। আমরা আমাদের এই পৃথিবীটাকে যেভাবে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছি দিনকে দিন, তাতে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ভূমির কাছাকাছি কোথাও মানুষের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে উঠবে। আর সেই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যে আমাদেরও জেটসন কার্টুনের মত বেছে নিতে হবে ভূমি থেকে অনেক উঁচুতে বাড়ির মডেল।