কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় অগ্রণী বাঙালি কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক। তিনি ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫মে (জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতামহ কাজী আমিন উল্লাহর পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল “দুখু মিয়া"। ছোটকালে মক্তবে কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯০৮ সালে তার পিতার মৃত্যু হলে পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে শিক্ষাজীবনের ইতি টেনে মাত্র দশ বছর বয়সে জীবিকা অর্জনের জন্যে কাজ করতে নামেন। এ সময়ে তিনি মক্তবের শিক্ষকতা করার পাশাপাশি হাজী পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। এর ফলশ্রুতিতে খুব অল্প বয়সেই ইসলামের মৌলিক আচার অনুষ্ঠানের সাথে সে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হবার সুযোগ লাভ করেন এবং পরবর্তীতে এই জ্ঞান তার সাহিত্যকর্মে বিপুল ভাবে প্রভাবিত করে। বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার শুরু তার হাত ধরেই একরকম শুরু হয়।
বাল্য বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ‘লটো’ নামের এক নাট্যদলে যোগ দেন। তার চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লটো দলের বিশিষ্ট ওস্তাদ ছিলেন এবং আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় তার দখল ছিল। ধারণা করা হয় বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল ইসলাম লটো দলে যোগ দিয়েছিলেন। লটো দলেই সাহিত্য চর্চা চলতে থাকে। একই সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্যে গান ও কবিতা লিখতেন। নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতার আলোকে ইনি বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্য অধ্যয়ন শুরু করেন। এর সাথে সুযোগ পান হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়ন করার। একদিকে মসজিদ ও মক্তবের শিক্ষা অপর দিকে লোটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুল ইসলামের সাহিত্যজ্ঞানকে বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ করে দেয়।
১৯১০ সালে নজরুল ইসলাম লটো দল ছেড়ে আবারও শিক্ষা জীবনে ফিরে আসেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যা এবারেও তাকে বেশিদিন পড়ালেখা করার সুযোগ দেয়নি।
যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয়। এরপর তিনি যোগ দেন বাসুদেবের কবিদলে। সেখান থেকে যান খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামার কাজে এবং সবশেষে আসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে।
বাল্য বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ‘লটো’ নামের এক নাট্যদলে যোগ দেন। তার চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লটো দলের বিশিষ্ট ওস্তাদ ছিলেন এবং আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় তার দখল ছিল। ধারণা করা হয় বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল ইসলাম লটো দলে যোগ দিয়েছিলেন। লটো দলেই সাহিত্য চর্চা চলতে থাকে। একই সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্যে গান ও কবিতা লিখতেন। নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতার আলোকে ইনি বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্য অধ্যয়ন শুরু করেন। এর সাথে সুযোগ পান হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়ন করার। একদিকে মসজিদ ও মক্তবের শিক্ষা অপর দিকে লোটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুল ইসলামের সাহিত্যজ্ঞানকে বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ করে দেয়।
১৯১০ সালে নজরুল ইসলাম লটো দল ছেড়ে আবারও শিক্ষা জীবনে ফিরে আসেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যা এবারেও তাকে বেশিদিন পড়ালেখা করার সুযোগ দেয়নি।
যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয়। এরপর তিনি যোগ দেন বাসুদেবের কবিদলে। সেখান থেকে যান খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামার কাজে এবং সবশেষে আসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে।
কালের পরিক্রমায় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এসময় তিনি কলকাতাতেই থাকতেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবং ভাঙার গানের মত কবিতা; ধূমকেতুর মত সাময়িকী। জেলে বন্দী হলে পর লিখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী, এই সব সাহিত্যকর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তার সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল, এর পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামাসংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা "নজরুল গীতি” নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়। মধ্যবয়সে তিনি “পিক্স ডিজিজে” আক্রান্ত হন। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন।
বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবর্তনে তাকে এই উপাধি প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। একুশে পদক বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানসূচক পদক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট তারিখে এই বিদ্রোহী চেতনার কবি মৃত্যুবরণ করেন।
নজরুল ইসলাম তার একটি গজলে লিখেছেন-
মসজিদেরই কাছে আমায় কবর দিয়ো ভাইযেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই
কবির এই ইচ্ছার বিষয়টি বিবেচনা করে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং সে অনুযায়ী তাঁর সমাধি রচিত হয়।
══════════════════════════════════════════
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং তথ্য জালিকা ▐
চিত্র সত্বঃ ব্লগ, গুগল ইমেজ সার্চ এবং উইকিপিডিয়া ▐
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন