মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৯, ২০১৬

সোমবার, নভেম্বর ২৮, ২০১৬

কমিকঃ আপন আলয়ের ভিন্নরূপ








────────────────────────────
♦ কমিক : আপন আলয়ের ভিন্নরূপ | A Place Like Home
♦ সংগ্রহ : Stumbleupon.com Stream
♦ জঘন্য অনুবাদে : আমি 😛

শুক্রবার, নভেম্বর ২৫, ২০১৬

উদভ্রান্ত আগন্তুক



          মন খারাপ হলে কিংবা খুব বেশি পরিমাণে একাকীত্ব বোধ জেগে উঠলে আমি প্রায় এখানে আসি। এখানে বলতে এই পার্কটাতে। শহরের এই দালান কোঠার মাঝে অল্প কিছু জায়গা ঘের দিয়ে তৈরি হয়েছে এই শহুরে পার্ক। শহুরে জীবন থেকে কিছুটা সময় ধার নিয়ে আমার মত কিছু মানুষ চলে আসে এখানে তাদের দুরন্ত আর ছটফটে মনটাকে শান্ত করতে। তবে এমন করে ঠিক কতটুকু পরিমাণে মন শান্ত হয় তার হিসেব কখনোই কেউ করতে যায় না।

অবশ্য শুধু দুরন্তপনাকে শান্ত করতেই যে সকলে আসে তাও নয়। অনেকে সকাল বিকেল ওয়াকে আসে, কেউ কেউ সমবয়সীদের সাথে আড্ডা জমাতে একত্রিত হয় এখানে, ছেলেরা আসে নিজেদের মত দৌড়াদৌড়ি করে সময় কাটাতে। কালেভদ্রে ছেলেগুলি একসাথে ফুটবল, ক্রিকেটও খেলে ঘটা করে। আর আসে ভাসমান চা-বিস্কিট-বাদাম আর সিগারেট বিক্রেতারা। এদের কোলাহলেই বুঝি মাঝে মাঝে এই পার্ক নামের মাঠটা তার প্রাণ ফিরে পায়।

একবার এক প্রবীণ ব্যক্তির সাথে দিন কয়েক আলাপ হয়েছিল। অল্প কিছুদিনেই শহুরে এই জীবনে হাঁপিয়ে যাওয়াদের একজন ছিলেন তিনি। চিকিৎসা করানোর নাম করে তার ছেলেমেয়েরা গ্রাম থেকে জোড় করে ধরে নিয়ে এসেছিল এখানে। নিয়ম করে ক'দিন পর পর গাদা গাদা টেস্ট করিয়ে আর ডাক্তার দেখিয়ে রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা চালাচ্ছিল। আর এসবের সাথে অত্যাচার হিসেবে যোগ হয়েছিল বাহারি ধরনের ঔষধ; যা তাকে ততোধিক নিয়ম মেনে গিলতে হতো তিন বেলা। একবার তিনি বেশ আক্ষেপ করে বলেছিলেন- "এই যে এত-শত ঝামেলা করছি দু'টো দিন বেশি বেঁচে থাকবার জন্যে, তাতেও কি জীবনের কোন তৃপ্তি আছে?" বড় কঠিন প্রশ্ন ছিল ওটা। তার উত্তর আজও আমি খুঁজে পাই নি। তবে ভদ্রলোক খুব দ্রুতই তার এই 'ঝামেলা' থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। আর তার মুক্তিটা ছিল চিরকালের জন্যে। ঐ মুক্তি ছাপিয়ে কখনোই এ দুনিয়ার কোন ঝামেলা আর তাকে বন্দী করতে পারবে না। কষ্ট পাওয়ার বিপরীতে তার জন্যে আমি কিছুটা খুশিই হয়েছিলাম।

এরপর আবারও আমি একেলা হয়ে পড়লাম। ঠিক কি কারণে জানা নেই, শহুরে এই লোকগুলি আমাকে এড়িয়েই চলতো সবসময়। আর তা নিয়ে কোনদিনই আমার কোন অভিযোগ ছিল না। বরং তাতেই আমি বেশ স্বস্তি পেতাম। অন্তত ঘেঁটে-ঘেঁটে অতীত মনে করতে হতো না ওসব আলাপের তালবাহানায়। আর আমি নির্বিকারেই আমার মনকে শান্ত রাখার সুযোগ পেতাম তাদের এই অনাকাঙ্ক্ষিত দয়ায়।

একদিন এক উদভ্রান্তকে দেখলাম পার্কের এক কোনায় হাতে এক লাঠি নিয়ে দাড়িয়ে হাসছে। মানসিক ভারসাম্য যে সে হারিয়েছে তা আর আলাদা করে কেউ কাউকে বলল না। কিছু লোক তার এমন কর্মকাণ্ডে কিছু বিনোদিত হল; আর মনে মনে এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল এমন করে মুখোশ ছেড়ে প্রাণ খুলে হাসতে না পারার অপারগতায়। সমাজের এই মুখোশটাও বেশ অদ্ভুত; সামাজিক তো তাকে করে তোলে ঠিকই, কিন্তু কেড়ে নেয় তার প্রকৃতি প্রদত্ত স্বভাব। চাইলেই এই উন্মাদের মত হাতে লাঠি নিয়ে কোন মাঠের কোনায় একাকী বসেও নির্লজ্জ হাসিতে মেতে উঠতে পারে না। সামাজিক মুখোশ তাকে অমন উন্মাদনার স্বাদ আহরণ করার অনুমতি দেয় না।

পরপর কয়েকদিন ঐ উদভ্রান্ত পার্কের ঐ কোনাতেই বসে থাকল। ক্ষণে ক্ষণে আপন ইচ্ছেতে হেসে উঠে কারও কারও বিরক্তির কারণ হল। আবার ঠিক ঐভাবেই হঠাৎ শান্ত হয়ে তাদের বিরক্ত হওয়া থেকে মুক্তি দিল। আমিও আর সবার মতই দূর থেকে তাকে দেখলাম কেবল।

এক বিকেলে পার্কে গিয়ে দেখলাম যে স্থানটাতে বসে আমি সময় কাটাই ঠিক সেখানেই ঐ উদভ্রান্তটা বসে আছে। নিশ্চিত নই, তবে মনে হল সে আমাকে দেখে মিটিমিটি হাসছে। যেন বলছে, দেখো বাপু আমি তোমার জায়গাতে এসেছি এখন তুমি আবার ঝামেলা করতে এসো না, লক্ষ্মী ছেলেটার মত আমার যায়গাতে গিয়ে বস। আমি অবশ্য তার মিটিমিটি হাসির বিপরীতে কোন প্রতিক্রিয়া দেখালাম না; কিংবা তার এমন কাজে বিরক্তও হলাম না। আমি আমার মত হেটে গিয়ে ওখানেই একটু দূরত্ব রেখে একপাশে বসে পড়লাম।

একটু বাদে পাগলটা আমার দিকে মুখ করে বসে জিজ্ঞাস করল, "তোর মনে রাগ ধরেনি?"

নিতান্ত পরিচিত ছাড়া এ শহরের ভদ্র সমাজ কেউ কাউকে 'তুই' বলে সম্বোধন করে না, আর অনভ্যাসে আমিও কিছুটা বিরক্ত হলাম অপরিচিত এক উদভ্রান্তের মুখে 'তুই' সম্বোধন শুনে। তাই আর ও প্রশ্নের জবাব দিতে গেলাম না। তাছাড়া কেন জানি মনে হচ্ছে ঝামেলা করার জন্যেই ব্যাটা এখানে এসে বসেছে। আমি নির্বিকার বসে রইলাম।

জবাব না পেয়ে একটু অপেক্ষা করে বলল, "এবারে তোর মনে রাগ ধরেছে। আর ভদ্রতা করে তুই তোর রাগ লুকাতে চাইছিস। কি চাচ্ছিস না?"

আমি নির্বিকার। কথায় কথা বাড়ে। আমি মোটেও তা করতে চাইছি না। আর এমন উদভ্রান্তের সাথে তো ভুল করেও না।

তবে তাতে ঐ উদভ্রান্তের উৎসাহে কোন ভাটা পড়ল না। নিজে নিজেই কথা চালিয়ে যেতে লাগল। বলল-
"তোর মুক্ত হওয়া নেশা তোরা ছাড়ে না। খাঁচায় আটকা পাখির মত তুই খালি ছটফটাস। ছটফটাশ মনে মনে, আর শান্তি খোজস এই শহরের বনে।"

এইটুকু বলেই সে তার মত চিৎকার করে হাসতে লাগল। যেন চরম কোন রসিকতা করেছে সে এ মুহূর্তে। দূর থেকে ক'জন খুব বিরক্ত নিয়ে একবার তাকাল, তারপর আবার নিজেদের মত আবার আলাপ জুড়ে দিল।

এমন কথার পরেও আমি খুব একটা বিচলিত হলাম না। শহরের হাজার হাজার মানুষের ভীরে এমন কিছু মানুষও আছে যারা মন দুর্বল করা কিছু আবেগী কথার দ্বারা মানুষকে সম্মোহিত করেতে জাল ফেলে। মানুষ তাদের কথার জালে আকটে যায়। যারা আটকে যায় তারাও জানে এটা তাদের ভ্রম। কিন্তু আজব এইসব মানুষের মন সেই ভ্রম কেটে বাইরে বের হয়ে আসতে চায় না। মাঝে মাঝে সর্বোস্ব খুইয়ে তারপর নিজের করে যাওয়া এই বোকামিকে গালমন্দ করতে থাকে। আমি তার সম্মোহনের এমন জালতে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে নিজের মত বসে রইলাম।

এরপর লোকটা উঠে দাড়িয়ে একদম আমার সামনে এসে দাঁড়াল। ঝুঁকে একদম মুখের সামনের দিকে এসে বলল, "যাবি? তোর মুক্তি যেইখানে, ঐখানে যাবি?"

এরকম মুখের সামনে এসে দাড়িয়ে এমন করে বললে সেটাকে আর আমলে না নিয়ে পারা যায় না। লোকটাকে কিছু না বলে চলে যাবার জন্যে উঠে দাঁড়ালাম। দেখাদেখি লোকটাও সোজা হয়ে একদম সামনে দাঁড়াল। এরপর বলল- "পলাইবি? কই পলাইবি? এইখানে পলানির জায়গা কই? আয় আমি তোরে মুক্তি দেখাই, তোরে তোর মুক্তির কাছে লইয়া যাই।"

এরপর আচমকা তার হাতের লাঠিটা বিপদজনক ভাবে খুব দ্রুত মাথার উপর উঠিয়ে মুখে মুখে কিছু একটা বিড়বিড় করতে লাগল। আমি ওসব গ্রাহ্য না করে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু হঠাতই লোকটার লাঠি একদম আমার সামনে দিয়ে মাথার উপর হতে নিচের দিকে দ্রুত নামিয়ে নিলো। কাজটা আরও একটু অসাবধানে করলে নির্ঘাত লাঠিটি আমার মাথায় আঘাত করত। এবারে বেশ খানিকটা বিরক্ত হয়ে লোকটিকে একচোট ধমকে দেবার উদ্দেশ্যে ওদিকে ঘুরতেই বুঝলাম কিছু একটা পরিবর্তন হয়ে গেছে এর মধ্যে।

হঠাৎ করেই আমি অনেক পরিচিত একটা স্থানে যেন চলে এসেছি, যে স্থানটাকে শেষ এরকম দেখেছিলাম প্রায় ২৪/২৫ বছর আগে। যে জায়গাটাতে ফিরে যাবার জন্যে আমার মনটা প্রায় ব্যকুল হয়ে থাকে, এটা ঠিক ঐ জায়গাটা। অবাক হওয়ার চেয়েও অনেক বেশি পরিমাণে স্মৃতি-কাতর হয়ে উঠলাম নিমিষেই। বুক ভরে শ্বাস টানলাম, এই নির্মল বাতাস পাবার জন্যে ফুসফুসটাও আকুতি জানাচ্ছিল সেই কত বছর আগ থেকে। চোখ বুজতেও কেন জানি ভয় করছিল। মনে হচ্ছিল চোখ বুজলেই হঠাৎ চোখের সামনে এই স্থানটা যেমন করে উপস্থিত হয়েছে, ঠিক তেমনি হারিয়ে যাবে।

কতটুকু সময় ওভাবে বিমুঢ় হয়েছিলাম তার হিসেব দিতে পারব না, তবে বেশ অনেকটা সময় বিমুঢ় হয়ে ছিলাম তা নিশ্চিত। চোখের কোন দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল তা নিয়ে মোটেই বিচলিত হলাম না। অনা-প্রাপ্তির মরুতে যেন হঠাৎই বৃষ্টির পরশে সবুজ উদ্যান গড়ে উঠেছে মনে। পাশে দাড়িয়ে ঐ উদভ্রান্তটা দাঁত কেলিয়ে হাসছে, কিন্তু এবারে তার হাসিতে উল্লাসের চিৎকার অনুপস্থিত। সে হাসছিল যেমন করে হাসে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানকে চমকে দিয়ে। আমি কোনরকম শুধু বলতে পারলাম, 'কিভাবে?'

এবারে আর তার মুখে আর কোন শব্দ নেই, নেই কোন উত্তর। শুধু ঠোটে লেগে আছে এক টুকরো হাসি। সত্যিই সে আমাকে আমার মুক্ত আরণ্যে নিয়ে এসেছে, দিয়েছে মুক্তির স্বাদ। জায়গাটা ঠিক ২৪/২৫ বছর পূর্বে যেমন ছিল, এখনো ঠিক তেমন দেখাচ্ছে। কিন্তু এটা যে সত্যি নয় তা আমি খুব ভালো করেই জানি। এও জানি যে আমি মোহে আটকে গেছি। সত্যিটাকে আমার মন অস্বীকার করে যাচ্ছে, চোখের সামনে যে মায়াজাল দেখছে তাকেই সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে প্রাণপণ।

একসময় লোকটি তার মাথাটা একটু নাড়িয়ে ইশারা দিল। এ ইশারা না বোঝার কিছু নেই। সময় ফুরিয়ে এসেছে, মোহ ভঙ্গ হবে এখুনি। ব্যকুল হয়ে বলতে চাইলাম, 'আর একটু...."। কিন্তু তার আগেই দৃশ্যপট পাল্টে গেল। দেখলাম অনেকগুলি মুখ আমার দিকে তাকিয়ে আতঙ্ক আর উৎসাহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। চোখ মেলতেই পাশ থেকে কেউ একজন একটু চিৎকারের মত করেই বলল, "মরে নি! বেঁচে আছে এখনো"। আমি হুড়মুড় করে উঠে বসলাম, আশে পাশে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলাম ঐ উদভ্রান্ত লোকটিকে। কিন্তু তাকে দেখলাম না কোথাও।

যে লোকটি বলেছিল আমি এখনো মরি নি সম্ভবত সে এগিয়ে আসল। বলল, 'কি? কিছু দিয়েছিল নাকি আপনাকে খাওয়ার জন্যে?"। আমি তার উত্তর দেবার আগে জিজ্ঞাস করলাম, "ঐ লোকটা কই?"। সে খুব কৃতিত্বের কণ্ঠে বলতে লাগল, "প্রথম দিন থেকেই দেখছিলাম ঐ ব্যাটার নজর আপনার উপর। তারপর আজ যখন আপনাকে দেখলাম হঠাৎ টলে পড়তে তখনই দৌড়ে এসে ধরলাম ব্যাটাকে। দুটো ঘা দিতেই ব্যাটা দিল আমার হাতে একটা কামড় বসিয়ে"। নিজের হাতটা সামনে নিয়ে এসে উৎসুক জনতাকে দেখাতে লাগল। "তারপর দিল এক ভো-দৌড়! এরপর আমার চিৎকার শুনে এরা সবাই এগিয়ে আসল। তা আপনার কিছু খোয়া গেছে নাকি দেখেন তো।"

কি করে এদের বোঝাই আমার কিছুই খোয়া যায় নি। বরং যা খুইয়েছিল অনেক অনেক বছর আগে তাকেই ফিরে পেয়েছিলাম এক মুহূর্তের জন্যে। আমি জানি আমার এই গল্প এদের বিশ্বাস করানো যাবে না। তাই সে চেষ্টাতেও গেলাম না। লোকটার ব্যাপারে কোন সাফাইও গাইলাম না, আর করলেও সেটা কোন কাজে আসত না। বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। যে লোকটি খুব আগ্রহ নিয়ে ঘটনা বলছিল সবাইকে তাকে ছোট করে একটা ধন্যবাদ দিয়ে বের হয়ে এলাম পার্ক থেকে।


এরপর শুধুমাত্র আর মনকে শান্ত করার জন্যে কখনোই পার্কে যেতে পারি নি। যতবার গিয়েছি, ততবারই গিয়েছি ঐ উদভ্রান্তের খোঁজে। কিন্তু উদভ্রান্তদের কোন ঠিকানা নেই, তারা হুট করেই আসে আর হুট করেই হারিয়ে যায়। হারায়, একদম চিরতরে......






বুধবার, নভেম্বর ১৬, ২০১৬

Jetsons এবং হান্না-বারবারা


ছোটবেলায় কার্টুন নেটওয়ার্ক চ্যানেলে The Jetsons কার্টুন সিরিজটা দেখতাম। অত্যান্ত মজার কার্টুন গুলির মধ্যে সেটি ছিল একটি। কেউ যদি আমাকে তখন বলত নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে সারাদিন কার্টুন দেখতে হবে, সম্ভবত তার সেই শর্ত মেনে নিয়ে আমি সারাদিনই কার্টুন দেখতাম।


এ পৃথিবীতে অনেকেই এখন পর্যন্ত এমন অনেক ধারণা দিয়ে গেছে যার প্রয়োজন এবং বাস্তবায়ন বুঝতে আমাদের শতবছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। তেমনই দুজন মানুষ হলেন উইলিয়াম হান্না এবং জোসেফ বারবারা।


The Jetsons কার্টুন সিরিজটি যারা দেখেছেন তারা মনে করতে পারবেন কার্টুনে দেখানো তাদের জীবন যাপনের অবস্থা এবং ব্যবস্থা গুলি। সেখানে অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভাসমান যান, অটোমেটেড লোকেশন ট্রাকিং ডিভাইস, ভয়েস কমান্ড বেস্‌ড মডিউল, উড়ন্ত ডিসপ্লে সমেত কম্যুনিকেশন মডিউল, রোবট সেক্রেটারি এবং হোমকিপার, রোবট জন্তু সহ নানান ধরণের কাল্পনিক (ঐ সময় এসবের সবই শুধু কাল্পনিক নয়, অতিকাল্পনিক ছিল) জিনিষ দেখানো হয়েছে। অথচ ঐসব কাল্পনিক বস্তু গুলি ধীরে ধীরে আমাদের কাছে টেক-টয়(প্রযুক্তির খেলনা) হিসেবে চলে এসেছে। অল্প ক’দিন বাদেই হয়তো আমরা ঘরের কাজ করার জন্যে ইন্টিলিজেন্ট (অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা/সিদ্ধান্ত নিতে পারে এমন) রোবটও পেয়ে যাবো।


তবে সেখানে দেখানো সবচেয়ে সাধারণ একটা বস্তু ছিল তাদের বাড়ি। আমাদের সাধারণ বিল্ডিং গুলোর মত সেখানে দেখানো বিল্ডিং গুলি একদম গ্রাউন্ড থেকে শুরু হতো না। বরং গ্রাউন্ড থেকে লম্বা দুটো দন্ডের উপর একটি বেস এবং সেই বেসের উপর তাদের বিল্ডিং গুলি দেখা যেত।

হান্না-বারবারা নিশ্চিত ভাবেই দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। আমরা আমাদের এই পৃথিবীটাকে যেভাবে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছি দিনকে দিন, তাতে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ভূমির কাছাকাছি কোথাও মানুষের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে উঠবে। আর সেই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যে আমাদেরও জেটসন কার্টুনের মত বেছে নিতে হবে ভূমি থেকে অনেক উঁচুতে বাড়ির মডেল।








বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ০৩, ২০১৬

বদি এণ্ড রঞ্জুর কথোপকথন —৭



বদি ভাইঃ রঞ্জু, ইংরেজিতে Ironic নামে একটা একটা শব্দ আছে। জানিস তো?

রঞ্জুঃ উউম্মম্মম্মম্ম..... কি জানি; মনে পড়ছে না।

বদি ভাইঃ এদ্দিন স্কুল-কলেজ করে কি শিখলি যে সাধারণ কিছু ইংরেজি শব্দ তোর মাথায় থাকে না?

রঞ্জুঃ ইয়ে..... মানে...... সে যাই হোক। এখন বলেন ঐটা কি।

বদি ভাইঃ তোমারে দিয়া কিস্যু হবে না রঞ্জু। বুজলা! তোমার ভবিষ্যৎ পুরাই বাঁশের বিল্ডিং এর মত।

রঞ্জুঃ আচ্ছা হইল সেটা। এখন বলেন Ironic এর অর্থ।

বদি ভাইঃ Ironic এর অর্থ হইল 'বিদ্রূপাত্মক'

রঞ্জুঃ বিদ্রূপাত্মক! এটা আবার কি জিনিষ!

বদি ভাইঃ বুঝলা না?

রঞ্জুঃ না তো।

বদি ভাইঃ ধর কোন একটা ঘটনা বা কারো কথা যদি তারেই ব্যঙ্গ করে কিংবা টিপ্পনী কাটে তখন ঐটারে বলা যায় বিদ্রূপাত্মক ঘটনা।

রঞ্জুঃ তো এইটারে সোজা করে বললেই পারতেন যে কাউরে নিয়ে মজা করার অর্থই Ironic। হুদাই প্যাচ-গোচ লাগাই এতকিছু বললেন।

বদি ভাইঃ আরেহ্‌ নাহ। শুধু শুধু কাউরে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা বা মজা করার অর্থ Ironic না। Ironic হইতে হইলে ঘটনাটারে এমন হইতে হবে যাতে মনে হয় ঘটনাটা নিজেই ঘটনাটারে বা কোন লোকের কথা বা কাজ ঐ লোকটারেই পরিহাস করতেছে।

রঞ্জুঃ আচ্ছা, বুঝলাম।

বদি ভাইঃ কি বুঝলা!

রঞ্জুঃ ঐ তো, যা বুঝাইলেন। তাই বুঝলাম।

বদি ভাইঃ তাই নাকি? তাহলে পরে Ironic ঘটনার একটা উদাহরণ দেও দেখি।

রঞ্জুঃ উউম্মম্মম্ম...................
ইয়ে... মানে.... বদি ভাই। মাথা চুলকায়, একটু হিন্ট দেন না!

বদি ভাইঃ বুঝলা রঞ্জু, তোমারে নিয়ে আমি পুরাই হতাশ। কোন কিছুই একটু ভালো করে চিন্তা কর না তুমি। তার আগেই হাল ছেড়ে দেও। এইটা বড়ই পরিতাপের কথা।

রঞ্জুঃ আচ্ছা! হল তো। এখন একটু হিন্ট দেন। তারপর না পারলে যা খুশি বইলেন।

বদি ভাইঃ নাই, কোনে হিন্ট নাই। গুগল করে বুঝে নিও।

রঞ্জুঃ গুগল! আরে হ্যাঁ, তাই তো।

বদি ভাইঃ কি হইলো?

রঞ্জুঃ পেয়ে গেছি Ironic এর উদাহরণ।

বদি ভাইঃ তাই নাকি? কি? বল শুনি।

রঞ্জুঃ হ্যাঁ, এই যে গুগল করতে বললেন। তখনই পেয়েছি।
ধরেন কেউ Google.com এ গিয়ে সার্চ বক্সে যদি 'Best alternative of google search engine' লিখে সার্চ করে। আর গুগল যদি সেই সার্চ কোয়েরির ৩ লাখ উত্তর দেখায় তবে সেইটা হল একটা Ironic ঘটনা।

বদি ভাইঃ আরে বাহ! দারুণ উদাহরণ দিলা তো!
নাহ, ভুল বলছি। তোমারে দিয়েও হবে। ঠিকমত টিউনিং করতে পারলে তোমারে দিয়েও আলেকজেণ্ডারের মত বিশ্ব জয় করা যাবে।

রঞ্জুঃ থেংকু বদি ভাই!





আত্মহত্যার প্রভাবন



কথায় মানুষ খুব দ্রুত প্রভাবিত হয়, তবে সবার কথায় না। কিছু কিছু মানুষ আজীবন শুধু বলেই যায়, তাদের কথা কেউ বিশেষ কর্ণপাত পর্যন্ত করে না। কিন্তু এই কিছু মানুষের বাইরে আরও অল্প কিছু মানুষ থাকে, যাদের দীর্ঘশ্বাসও মানুষের মনে বিশেষ অর্থ জাগিয়ে তোলে। ঠিক কী কারণে কিংবা কেন এমনটা হয় তার সঠিক কোন ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব না। এমন না যে তারা দেখতে সুদর্শন কিংবা তাদের কণ্ঠ সুমধুর বলেই এমনটা হয়। অথবা তাদের চিন্তাভাবনা অন্য সকলের তুলনায় অনেক অনেক ভিন্নতর হয়, এমনও নয়। তারাও আর দশজন সাধারণের মতই চিন্তাভাবনা করে একদম সাধারণ কথাই বলে। তবুও এই সাধারণ কথাই অন্য সকলের কাছে অসাধারণ কিছু হয়ে উঠে।

এরকম একটা হিসেব কষে যদি ভাবা হয় তবে আমাকেও সে তালিকার একজন ধরা যেতে পারে। অবশ্য এর কৃতিত্ব একক ভাবে আমার নয়। এই ব্যাপারটার সাথে বংশানুক্রমিক জিনের কোন একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। একদম নিশ্চিত না হলেও আমার জন্যে এমনটা ভাবা একদম অমূলক বলা যাবে না। কারণ জ্ঞান হবার পর থেকেই দেখেছি আমার বাবার কথায়ও মানুষ খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তার কোন একটা সিদ্ধান্ত বিনাবাক্যে সকলে মেনে নেয়। তার উত্তরসূরী হিসেবে আমার কথাতেও মানুষের গুরুত্ব কিংবা প্রভাবিত হবার ব্যাপারটা আমাকে কখনোই তেমন অবাক করত না।

হ্যাঁ, একটা সময় পর্যন্ত সত্যিই এই ব্যাপারটা আমায় মোটেই অবাক করত না। কিন্তু সব পরিবর্তন হয়ে গেল ছোট একটা দুর্ঘটনা ঘটবার পর। ঠিক কি কারণে জানা নেই, একদিন বিকেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবার সময় শিমুল যখন ওর গার্লফ্রেন্ডের প্যারা নিয়ে আক্ষেপ করছিল তখন বলেছিলাম- 'তোর উচিৎ সিলিং ফ্যানের তিন পাখায় তিনটা গামছা বেধে ঐ তিনটা একত্রে করে একটা ফাঁস বানিয়ে তারপর তা গলায় গলিয়ে ঝুলে পরা'। 

ব্যাস ঐ ওটুকুই কথা, আসলে আমরা প্রতিদিন ওর ঐ এক ঘ্যান ঘ্যান শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তাই কিছুটা বিরক্ত আর মজা করার জন্যেই ও কথা বলেছিলাম। বাকি সবাইও ঐ মজার কথাটাকে মজা ধরে নিয়েই ওকে ক্ষেপাচ্ছিল। কেউ কেউ ঐ অবস্থাতে সেল্ফি তুলে ওর গার্লফ্রেন্ডকে পাঠানোর আইডিয়া দিচ্ছিল, আবার কেউ বলছিল গার্লফ্রেন্ডকে উদ্দেশ্য করে সুসাইড নোট লিখে তারপর ঝুলে যাবার জন্যে।

এরপরই দ্বিতীয় ভুলটা করলাম; অবশ্য তখন ওটাকে কোনভাবেই আমার ভুল মনে হচ্ছিল না। বললাম- 'সবচেয়ে ভালো হয় তুই যদি ঝুলে যাবার পুরো ব্যাপারটা লাইভ করে দেখাস, তাতে জনগনের সাপোর্ট আর গার্লফ্রেন্ডের উপর প্যারার রিভেঞ্জ নেয়া, দুটোই হয়'। আর যায় কোথায়, সকলেই আমার আইডিয়াকে বাহ্‌বা দিতে দিতে শিমুলকে এই কাজ করার জন্যেই কথার খোঁচা মেরে যাচ্ছিল।

তারপর সন্ধ্যাটা ওভাবে শেষ করে যে যার বাসায় কিংবা মেসে ফিরে গেলাম। খুব ঘুম পাচ্ছিল বলে ফিরে এসে ফ্রেশ হয়েই বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সেই ঘুম ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে একদম রাত আড়াইটা! মোবাইলটা সাইলেন্ট করা ছিল, তাই কিছুই টের পাই নি। স্ক্রিনে দেখলাম মিসকলের বিশাল এক নোটিফিকেশন লিস্ট দেখা যাচ্ছে। ৮৬টা মিস কল সেখানে! এক একজন গড়ে ৬~৭ বার করে কল করেছে। সবার উপরের নাম্বারটা ছিল সুমনের। তাই ওকেই কল ব্যক করলাম। রিং পুরোটা হবার আগেই ও প্রান্ত থেকে কলটা রিসিভ হয়ে গেল!

খুব উত্তেজিত ভঙ্গিতে সুমন বলল- 'দেখেছিস?'। সুমনের এই উত্তেজনার জন্যে ওর সাথে কথা বলাই দুস্কর। ছোটখাটো থেকে শুরু করে গুরুতর সব কিছুতেই ওর সীমাহীন উত্তেজনা কাজ করে। তাই বোঝা দুস্কর কোনটা আসলে উত্তেজিত হবার মত ঘটনা, আর কোনটা সাধারন। তাই প্রশ্নের বিপরীতে ওকে প্রশ্নই করতে হল-'কী?'
- কী মানে? তুই এখনো দেখিসনি? কোথায় তুই? কই ছিলি এতক্ষণ?
- আরে ব্যাটা ঘুমাচ্ছিলাম। এখন বল কি দেখবো? হয়েছে টা কি?
- তার মানে তুই কিচ্ছু জানিস না?
- আরে এত্ত না পেঁচিয়ে কি দেখব, আর কি জানতে হবে সেটা বলতে পারিস না?
- তুই দ্রুত ফেসবুকে লগইন কর, আর শিমুলের ওয়ালে ঢু মেরে আমাদের গ্রুপ চ্যাটে দেখ।
বলেই কলটা কেটে দিল। ব্যাটা আহাম্মকের আহাম্মক, কি হয়েছে সেটা না বলে আমাকে বলে কিনা ফেসবুকে ঢুকতে। তবে শিমুলের কথা বলায় একটু আগ্রহ হল। বিকেলেই গার্লফ্রেন্ডের প্যারা নিয়ে কান্নাকাটি করছিল। মনে হয় এবারে ব্যাটা ব্রেকআপ-ট্রেকআপ কিছু একটা করে ফেলেছে। আর সেটা নিয়েই সুগভীর কোন পোষ্ট দিয়ে বসে আছে ফেসবুকে। অবশ্য এমনিতেও এখন আমি ফেসবুকেই ঢু মারতাম।

ফেসবুক এ্যাপটা চালু করে শিমুল নামটা সার্চ দিয়ে ওর প্রোফাইলে গলাম। সেখানে একটা লাইভ ভিডিওর পোষ্ট রয়েছে। অবশ্য এখন আর লাইভ নেই, প্রায় ঘন্টাখানিক আগে সেটা শেষ হয়েছে। এখন ওটার ভিডিওটা পোষ্ট হিসেবে রয়ে গেছে। ব্যাটা নিশ্চিত গার্লফ্রেন্ডের প্যারার বর্ণনা দিয়ে কান্নাকাটি করতে করতে বিশাল কোন ইমোশনাল লাইভ ভিডিও করেছিল। ক্লিক করলাম ভিডিওটাতে, কিন্তু ক্লিক করে যা দেখলাম সেটার জন্যে আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না।

শিমুল প্রথমে ক্যামেরাটা ওর রুমের বুকসেলফের কোথাও সেট করল, মোটামুটি ঐ পজিশন থেকে ওর রুমের বিশাল একটা অংশ তাতে স্ক্রিনে চলে আসে। এরপর একটু দুরত্বে দাড়িয়ে শুরু করল ওর গার্লফ্রেন্ডের প্যারার বন্দনা। এতটুকু অবশ্য আমি আশা করেই রেখেছিলাম। কিন্তু ঐ অবস্থাটা বেশিক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হল না, কথার মোড় ঘুরে গেল আমার নাম উচ্চারণের সাথে সাথে। নাম ধরেই বলল আজ বিকেলে কি আইডিয়া দিয়েছিলাম ওকে, আর সেই আইডিয়াই সে এখন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বলে ঘোষনা করল!!

তারপর বিছানার উপর হতে কিছু একটা তুলল, হাতে নেবার পর বুঝলাম ওগুলি আসলে গামছা। ওর স্টাডির চেয়ারটা বিছনার উপর তুলে তার উপর ও দাড়াল। এরপর ঠিক যেভাবে বলেছিলাম ওভাবেই তিনটি গামছা সিলিং ফ্যানের তিন পাখায় বাধল। আর তারপর গামছা গুলি একত্র করে ওটা দিয়ে একটা ফাঁস তৈরি করল। আমি নিশ্বাস চেপে ওর কাণ্ডকারখানা দেখছি। তবে মনে মনে ক্ষীণ একটা আশা চেপে ধরে আছি যে শেষ পর্যন্ত ও আসলে ওরকম কিছু করবে না।

তারপর আবার চেয়ার হতে বিছানা আর বিছানা হতে নেমে স্ক্রিনের সামনে এসে দাড়াল। সত্যি সত্যি এর পরে যা কিছু ঘটবে তার জন্যে সকল দায়ভার ও ওর গার্লফ্রেন্ডের উপর দিল আর আমাদের সবাইকে বিদায় জানাল।
এবার আমি সত্যি সত্যি ঘামতে শুরু করলাম। অন্য মোবাইলটা দিয়ে ততক্ষনে আবারও সুমনকে ফোন করতে শুরু করেছি। রিং হচ্ছে কিন্তু ব্যাটা এখন আর ফোন উঠাচ্ছে না। আর এদিকে মোবাইল স্ক্রিনে দেখছি শিমুল আবারও বিছানার উপর দাড় করানো চেয়ারটাতে উঠে দাড়িয়েছে। এরপর কাঁপা কাঁপা হাতে তিন গামছা দিয়ে তৈরি ফাসটা গলায় পড়ে নিচ্ছে।

গামছার ফাসটা গলায় গলিয়ে দেবার পর ঐ অবস্থাতেই চিৎকার করে বলল- "দোস্ত তোকে ধন্যবাদ চমৎকার এই আইডিয়াটা দেবার জন্যে"। এরপর বাকিটুকু আর দেখা হল না, হাত থেকে মোবাইলটা খসে পড়ল আপনা-আপনি।



তারপর কিভাবে কি হয়েছে তা আর আমি তেমন পরিস্কার ভাবে বলতে পারছি না। ঘোরের মাঝে সময়টা পার হয়েছে আমার। মাথাটা পুরো ঝিম মেরে ছিল পরের পুরোটাা সময়। তবে এখন মাথাটা আবার পরিস্কার ভাবে কাজ করতে শুরু করেছে। আর কিছুক্ষন পরেই কয়েকজন গার্ড আসবে আমাকে এই সেলটা থেকে নিয়ে যেতে।

ঠাণ্ডা মাথায় উদ্দেশ্যপ্রনেদিত ভাবে বন্ধুকে আত্মহত্যা করার নিমিত্তে প্রভাবিত করার জন্যে কোর্টে বিজ্ঞ বিচারক আমার 'মৃত্যুদণ্ডাদেশ' কার্যকর করার রায় দিয়েছেন.....