রবিবার, আগস্ট ১১, ২০১৯

মজার ছবি-ব্লগঃ ভাস্কর্যের সাথে তাহারা! (দ্বিতীয় পর্ব)

জীবনে আনন্দের সঙ্গা ব্যক্তি  ভেদে ভিন্ন। কেউ আনন্দে জীবনটাই কাটায়, তাকে বাইরে আর নতুন কিছুর খোঁজ করতে হয় না। আর কেউ আনন্দের অপেক্ষায় জীবনটা পার করে দেয়। আর কেউ কেউ নিজের আনন্দটাকে নিজেই তৈরি করে নেয়। এমনই কিছু ব্যক্তি যারা নিজেদের আনন্দ নিজেরাই খুঁজে নিতে জানে তাদের কিছু ছবি ছড়িয়ে আছে আর্ন্তজালিকার নানা কোন জুড়ে। আজকের আয়োজন তেমনি কিছু আনন্দময় দুষ্টামিতে ভরপুর ছবি নিয়ে। ভালোকথা, এই মানুষগুলোর সাথে ছবিতে অংশগ্রহণ করেছে বেশ কিছু ভাস্কর্য। চলুন দেখে নেয়া যাক তাদের সম্মিলিত দুষ্টুমি যুক্ত প্রতিভা...

চলো আমরা আমাদের ডান্স মুভ দেখিয়ে দেই!

ফের যদি স্কুল ফাঁকি দিয়ে পার্কে বসতে দেখি, তোমার আম্মুকে একদম পুরো ঘটনা বলে দিবো। হুহ্‌

জিগরি দোস্ত! কত্ত দিন পর তোর সাথে দেখা!! আয় বুকে আয় ভাই... 

দেখলা দেশের অবস্থা! দেশটা পুরোই রসাতলে যাচ্ছে...

অনেক ফাঁকিবাজি করেছিস। বাসায় চল, আজ তোর একদিন কি আমার একদিন...

আইনস্টাইন সাহেব, চলেন একটা সেল্ফি নেই। কাল ইন্সটাগ্রামে আপলোড দিবো!

দুষ্ট মেয়েদের সাথে আর মিশবি? বল! মিশবি?

উম্ম্ম্ম্ম্ম্ম্ম্মআ! 😝

প্লিজ! প্লিজ!! আমি আর কোনদিন ডিম খাবো না, প্লিজ! আমাকে ছাড়ো!!

প্রিয়তমা, কেবল তোমার অপেক্ষায় অপেক্ষায় পাথর বনেছি...

এরপর থেকে পপকর্ণ গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে না ফেলে এক জায়গায় ফেলবি,
আর আমার ভাগে যেন ভুলেও কম না পড়ে...

চল, তোমাকে শপিং-এ নিয়ে যাই...

দূরবিনে খুঁজে লাভ নেই, আমি এখানেই, তোমার পাশে...

বুঝলে! ঐ যে দিনের ঘটনাটা বললাম না। তারপর কি হয়েছে জানো....

লেটস্‌ ফাইট! ভিসুম...!

লেডিস, আই ক্যান হোল্ড ইয়্যু বোথ ইন মাই আর্ম!

তারপর দাদু, তারপর কি হয়েছিলো..?

আআআআআআআআআআ.........

না! তোমাকে ওদের সাথে যেতে হবে না। তুমি আমার সাথেই খেলা কর!

হা হা হা ‍হা! আজ পেয়েছি বাগে....!

এই যে, এইভাবে জোড়ে ঘুসি দিবা একদম

আই লাভ চিকেন 😁

হাই ফাইভ!!










 ………………………………………………………
পিক কার্টেসিঃ স্ব-স্ব ফটোগ্রাফার
পিক সোর্সঃ Google Image Search
Pinterest.com
imgur.com

শুক্রবার, আগস্ট ০৯, ২০১৯

লিনাক্স মিন্ট ১৯.২ ‘টিনা’ – ফিচারপূর্ণ আরো একটি রিলিজ


লিনাক্সের স্ট্যাবল ডিস্ট্রো গুলোর তালিকা করলে যে নামটি শুরুর দিকে আসবে তার একটি হচ্ছে ‘লিনাক্স মিন্ট’। মুক্ত অপারেটিং সিস্টেমের স্বাদ নিতে যে কয়েকটি ডিস্ট্রোর সাজেশন মানুষ দিয়ে থাকে, সেখানেও একটা সম্মানজনক অবস্থান গড়ে নিয়েছে এই ‘লিনাক্স মিন্ট’। সাধারণ ব্যবহারকারীর ডেস্কটপ থেকে শুরু করে মধ্যম মানের ব্যবহারকারী কিংবা একজন ডেভেলপারের জন্যে জুতসই একটা অপারেটিং সিস্টেম চিন্তা করলেও ‘লিনাক্স মিন্ট’-কে তালিকাতে রাখতেই হয়।

যদিও লিনাক্স মিন্ট সরাসরি লিনাক্সের কোর লেভেল থেকে ডেভেলপ হয় না। আরেকটি লিনাক্সের ডিস্ট্রিবিউশন ‘উবুন্টু’ থেকে এটি ডেভেলপ করা হয়ে থাকে। অবশ্য এর আরও শাখা একটি ডিস্ট্রিবিউশন আছে, যা সরাসরি ডেবিয়ান থেকে ডেভেলপ করা হয়। তবে জনপ্রিয়তার এগিয়ে আছে উবুন্টু হতে ডেভেলপ করা ডিস্ট্রোটি।

লিনাক্স মিন্ট – সিনামন ডেক্সটপ পরিবেশ
লিনাক্স মিন্টের আরও রয়েছে আকর্ষণীয় একটি ডেক্সটপ এনভায়রনমেন্ট, যা ‘সিনামন’ নামে পরিচিত। লিনাক্স মিন্টের তত্বাবধায়নেই এই ডেক্সটপ পরিবেশ বা এনভারনমেন্টটি ডেভেলপ হয়ে থাকে। আর সত্যি বলতে লিনাক্স মিন্ট ব্যবহারের আসল স্বাদ আসলে সিনামন ডেক্সটপ পরিবেশেই পাওয়া যায়। যদিও মিন্টের অফিসিয়াল আরও দুইটি ডেক্সটপ পরিবেশ রয়েছে।

যাই হোক, লিনাক্স মিন্টের পরিচয় আপাতত এখানেই ইতি টানছি। পরে কোন এক সময় লিনাক্স কিংবা লিনাক্স মিন্ট নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে(অনিশ্চিত)। আপাতত চলে যাচ্ছি এর নতুন রিলিজ ‘টিনা’-র (Tina) বন্দনায়।

যদিও ডেভেলপার লোকজনকে মানুষ কাঠখোট্টা হিসেবেই চেনে। তারপরও লিনাক্স মিন্ট এর ডেভেলপারদের সেই ক্যাটাগরিতে ফেলে দেয়া সম্ভব না। তারা দারুণ রস-কস যুক্ত ডেভেলপার, তাই তো প্রতিটা ডিস্ট্রিবিউশনের নামকরণে তারা কোন না কোন একটা মেয়ের নামে ব্যবহার করে থাকে (ডেভ গুলু মনে হয় একটু ইয়ে। এদের মাথা শুধু মেয়েদের চিন্তায় বিভোর থাকে। তাই প্রতি রিলিজই এরা মেয়েদের নামে উৎসর্গ করে 😜 )।
    
 
    
 

নতুন কি পেলাম ‘টিনা’র নামে?

পর্ব অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলতে হয় তবে বলবো- লিনাক্স মিন্ট প্রতি রিলিজেই আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্রত্যেকটি রিলিজ ছিলো এর পূর্বেরটির তুলনায় আরও উন্নত, আরও শক্তিশালী। মিন্ট যেন প্রতি রিজিলেই তার পূর্বের রিলিজকে টক্কর দিয়ে ডেভেলপ করে থাকে। এছাড়া নতুন এই রিলিজ মানে ১৯.২ সংস্করণটি অফিসিয়াল সাপোর্ট পাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। সে হিসেবে যারা লং টার্মে একটি ডিস্ট্রোতে থাকতে চান, তারা অবশ্যই এটিকে নিজ নিজ তালিকায় রাখতে পারেন।

» উন্নত আপডেট ম্যানেজার

নতুন রিলিজের যে দুটো ব্যাপার আমার দারুণ ভালো লেগেছে তার মধ্যে একটি এই আপডেট ম্যানেজার। পূর্বের রিলিজ গুলোতে একটি নির্দিষ্ট কার্নেলের উপর ভিত্তি করে একে তৈরি এবং রিলিজ করা হতো। পরবর্তী রিলিজে কার্নেল আপডেট হবার আগ পর্যন্ত ঐ একই কার্নেল ব্যবহার করতে হতো। অন্যথায় নিজেকে পুরো কার্নেল কম্পাইল/বিল্ড করে ব্যবহার করা লাগতো। অনেকের জন্যে হয়তো এটি তেমন বড় ব্যাপার নয়। কিন্তু যারা নতুন কার্নেলসের সুবিধা আদায় করতে চায় তাদের কাছে এতদিন বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল এই সমস্যাটি। এখন চাইলে যে কেউ খুব সহজেই নতুন কার্ণেলটি আপডেট ম্যানেজার ব্যবহার করে ইন্সটল ও ব্যবহার করতে পারবে।

আপডেট ম্যানেজারের আরও একটা নতুন ফিচার ‘ব্লাকলিস্ট’। যারা লিনাক্স ব্যবহার করেছেন তারা সবাই লিনাক্সের সফটওয়্যার রিপো অথবা সফটওয়্যার ম্যানেজারের সাথে পরিচিত। যখন কেউ পুরো সিস্টেমটি আপডেট দেয় তখন সিস্টেমে ইন্সটল করা সকল সফটওয়্যারও একই সাথে আপডেট হয়ে যায়। কিন্তু এতে অনেক সময় কিছু কিছু সফটওয়্যার কম্পাবিলিটি ইস্যুতে পড়ে ইউজারকে নাজেহাল করে। ধরুন আপনি Darktable এর ২.৬.১ ভার্সনটি ব্যবহার করছিলেন। এর মধ্যেই এটির ২.৬.২ ভার্সন আসলো। কিন্তু তাতে কোন একটা বাগ বা সমস্যা থাকায় কাজের সমস্যা হচ্ছিলো। তাই আপনি আপডেট ভার্সনটি বাদ দিয়ে পুনরায় ২.৬.১ এ ফিরে গেলেন। কিন্তু যখন পুরো সিস্টেমটি আপডেট করতে দিবেন তখন Darktable পুনরায় আপডেট হয়ে ২.৬.২ তে আপডেট হয়ে গেলো।

এই সমস্যাটিরই সমাধান এসেছে এই নতুন আপডেট ম্যানেজারে। এখন আপনি চাইলে কোন একটা প্যাকেজ বা সফটওয়্যারের নির্দিষ্ট কোন ভার্সনকে ইচ্ছে হলে আপডেট হতে বাধা দিতে পারবেন এই ব্লাক লিস্ট ফিচার ব্যবহার করে।

তাছাড়া আপডেট ম্যানেজারকে আপডেট করার জন্যেও নতুন একটা ইন্টারফেস তৈরি করা হয়েছে!

» কার্যকর ‘রেসপন্স টাইম’

আপনি যদি লিনাক্স মিন্ট ১৯.১ ব্যবহার করে থাকেন আর, এখন ১৯.২ ব্যবহার করতে বসেন তাহলে এই ব্যাপারটি আপনার নজরে আসবেই। নতুন রিলিজে মিন্টের রেসপন্স টাইম অনেকটাই ইফেক্টিভ হয়েছে। আগের তুলনায় সফটওয়্যার লোড কিংবা সফটওয়্যার গুলো আরও দ্রুত গতি সম্পন্ন হয়েছে। এটা এই রিলিজের আরও একটি বিশাল প্লাস পয়েন্ট হিসেবে আমি ধরেছি।

» সফটওয়্যার সনাক্তকরণ পদ্ধতি

লিনাক্স মিন্ট -এ সফটওয়্যার সেন্টার থেকে সরাসরি এ্যাপ ইন্সটল করার পাশাপাশি ফ্লাট এ্যাপ গুলো ইন্সটল করার সুবিধা রয়েছে। লিনাক্স মিন্ট এর বিল্ট-ইন সফটওয়্যার ম্যানেজার হতে সরাসরি মূল এ্যাপ এবং সেই একই এ্যাপের ফ্লাটপ্যাক এ্যাপ ইন্সটল ও ব্যবহার করা যায়। কিন্তু মিন্ট-মেন্যুতে আগে এই দুটো গ্যাটাগরির এ্যাপ আলাদা করা যেতো না। কিন্তু বর্তমান রিলিজে ফ্লাট এ্যাপ গুলোকে এক ধরণের রঙ্গে রাঙ্গানো হয়, আর অর্গানিক এ্যাপ গুলো তার নিয়মিত ঢং-এই থাকে। তাছাড়া ফ্লাট এ্যাপ গুলোর নামের সাথেই ফ্লাটপ্যাক লিখা থাকে। তাই ফ্লাটপ্যাক এ্যাপ আর অর্গানিক এ্যাপ নিয়ে এখন আর তেমন জটিলতা পোহাতে হবে না। এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজের জেনারিক নামও এখন মিন্ট মেন্যুতে আলাদা করেই দেখানো হবে।

» লাইভ মুডেই থাকছে বুট রিপেয়ার


পূর্ববর্তী লাইভ মুড থেকে বুট রিপেয়ার করাটা দারুণ ঝামেলাপূর্ণ ছিলো। সেই ঝামেলা এই রিলিজে সমাপ্ত হলো। নতুন এই রিলিজ ‘টিনা’র লাইভ মুডেই এখন দেয়া হয়েছে বুট রিপেয়ার সফটওয়্যারটি। যারা ডুয়েল বুটে লিনাক্স চালাচ্ছেন তাদের যে কত বড় উপকার হয়েছে এই ফিচারটি যুক্ত হওয়ায় তা বোধ করি আলাদা করে আর বলার অপেক্ষায় থাকে না।


» ডুপ্লিকেট সোর্স রিমোভ অপশন

যারা অতিরিক্ত রেপো থেকে প্যাকেজ/সফটওয়্যার ইন্সটল করে থাকেন তাদের জন্যে এই সুবিধাটি দারুণ কাজের হবে। এবারে কোন রেপো একের অধিকবার যুক্ত হলে কিংবা রেপো ডুপ্লিকেট হবার কারণে আপডেটে ঝামেলা হলে খুব সহজেই সোর্স কনফিগার অপশন থেকে ডুপ্লিকেট রেপো গুলো রিমুভ করার সুযোগ পাবেন।

» গোছানো সিস্টেম রিপোর্ট

নতুন রিলিজ টিনার সাথে আসছে নতুন করে ডিজাইন করা সিস্টেম রিপোর্ট। পূর্বের তুলনায় এটি বেশ গোছানো সিস্টেম রিপোর্ট ভিউ তৈরি করা হয়েছে। অন্তত এখন দেখে কিছুটা মনে হয় সিস্টেম রিপোর্টটা আসলে মানুষের পড়ার যোগ্য কিছু একটা জিনিষ।

আরও আপডেট হয়েছে সিস্টেমের আর্টওয়ার্ক। অবশ্য এটা বরাবরই আমার কাছে বোনাস বলেই মনে হয়।




লিনাক্স মিন্ট ১৯.২ ‘টিনা’-র জন্য আবশ্যক হার্ডওয়্যার

  • অন্তত ১ গিগাবাইট র‍্যাম (২ গিগাবাইট র‍্যাম হলে মোটামুটি পর্যায়ে চালানো সম্ভব)
  • ইন্সটল করার জন্যে ১৫ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস (২০ গিগাবাইট হলে ভালো হবে)
  • ১০২৪×৭৬৮ রেজ্যুলুশনের ডিসপ্লে সিস্টেম


ডাওনলোড

নতুন রিলিজটি অফিসিয়াল ISO ইমেজটি এই লিংক থেকে সংগ্রহ করা যাবে। তবে আপনি যদি বাংলাদেশে অবস্থান করেন, আর আপনার যদি একটি ব্রডব্যান্ড কানেকশন থাকে, তাহলে ঢাকাকম লিমিটেড বা জিওনবিডি উচ্চগতির-সার্ভার থেকেও নতুন রিলিজটি সংগ্রহ করতে পারবেন।

আর আপনি যদি লিনাক্স মিন্টের পুরাতন রিলিজ হতে নতুন রিলিজে আপগ্রেড করাতে চান, তাহলে অফিসিয়াল এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করে দেখুন।







আপাতত এতটুকুই। এক রাতে এই জিনিষ গুলোই ডিসকোভার করলাম লাইভ মুডে। তবে কথা হচ্ছে কোন রিলিজই একদম সয়ংসম্পূর্ণ রিলিজ হবে না, এটিও নয়। এখনও কোন কোন ব্যাপারে এই রিলিজটি সমস্যা করতে পারে। কোন কারণে আপনার কাঙ্খিত আউটপুট হয়তো পেতে ব্যর্থ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিস্টেম রিপোর্ট খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। এতে পরবর্তী আপডেটে এটি ফিক্স হবার সম্ভাবনা বহুগুন বেড়ে যায়। কেউ যদি সত্যিই নতুন ডিস্ট্রো কিংবা লিনাক্স সম্পর্কে ধারণা পেতে চান তাহলে অবশ্যই লিনাক্স মিন্ট একটি আদর্শ ডিস্ট্রো। তবে আমার পরামর্শ থাকবে- হুট করে সিস্টেমে ইন্সটল করার আগে তা লাইভ মুডে ব্যবহার করে দেখুন। এরপর মোটামুটি একটা ধারণা হয়ে গেলে সাহস করে সিস্টেমে ইন্সটল করে দেখতে পারেন।

 
 
 
 
 
    

Creative Commons License 
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ০৮, ২০১৯

লেখার ফরম্যাট নষ্ট না করেই ব্লগে লেখা কপি-পেস্ট করা


ব্লগে একটা লেখা পড়ছিলাম। লেখার কন্টেন্ট চমৎকার হলেও লেখাটা পড়ার সময় বিরক্ত বোধ হচ্ছিলো। আর বিরক্তির উৎপত্তি করছিলো ব্লগের বডিতে থাকা অক্ষরগুলোর বিন্যাস আর অবস্থা দেখে। যারা ব্লগ লিখেন কিংবা ব্লগ পড়েন তাদের অনেকের অনেকেই এই ব্যাপারটি লক্ষ করেছেন। কিছু কিছু ব্লগে কোন একটা লেখা পড়তে গেলে দেখা বাকি সব লেখার তুলনায় এই লেখাটির অক্ষরগুলো বেশ ছোট বা কিম্ভুতকিমাকার আকৃতির। আবার অন্য সকল লেখা ঝকঝকে-তকতকে হলেও নির্দিষ্ট কয়েকটি লেখা কেমন যেন এলোমেলো। মাঝ থেকে লাইন ভাঙ্গা, কিংবা লাইনের মাঝে হঠাৎই বিশাল আকারের গ্যাপ। তা ছাড়া আরও একটা বড় সমস্যা হলো লেখার ব্যাকগ্রাউন্ড কালার(রঙ)। দেখা যায় বাকি সকল লেখার পেছনে ব্লগের যে সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মেইনটেইন করছিল, এই লেখাটির বেলায় তেমন না। লেখাটির পেছনে ভিন্ন রকমের রঙ এর জন্যে দেখতে বিচ্ছিরি লাগছে, বিরক্তির উদ্রেক হচ্ছে।

মূলত অবস্থা হয় যখন কেউ কোন একটা লেখা কোথাও থেকে কপি করে সরাসরি ব্লগে পোষ্ট করে। আমাদের মাঝে অনেকেই নিজেদের ড্রাফট লেখা গুলো কোন একটা ওয়ার্ড প্রসেসর যেমন মাইক্রসফট ওয়ার্ড, লিব্রে অফিস রাইটার, ওপেন অফিস রাইটার কিংবা কোরাল ওয়ার্ড পার্ফেক্ট সহ ভিন্ন ভিন্ন ওয়ার্ড প্রসেসর প্রোগ্রামে লিখে সংরক্ষণ করে থাকেন। আর ব্লগে পোষ্ট করবার সময় সেখান থেকে কপি করে ব্লগের টেক্সট ইনপুট বডিতে পেস্ট করে দেন।

আবার অনেকেই রয়েছে যারা বেশ কয়েকটি ব্লগ মেইনটেইন করে। একাধিক ব্লগে লেখালেখির সময় যে কোন একটি ব্লগে প্রথমে লেখাটি সাজিয়ে তারপর বাকি ব্লগ গুলোতে সরাসরি ঐ সাজানো লেখাটি কপি-পেস্ট করে পোষ্ট করে থাকেন।

এরকম পরিস্থিতি গুলোতে ব্লগের নিয়মিত ভঙ্গি (স্টাইল) বাদ দিয়ে লেখা গুলো ভিন্ন রকম ভঙ্গিতে প্রদর্শিত হচ্ছে। হয়তো ব্যাকগ্রাউন্ডের রঙ ভিন্ন রকম কিংবা লেখাটির বর্ণের আকারগত সমস্যা। কিংবা লেখাটি যেভাবে প্যারাগ্রাফ আকারে দেখানোর কথা তা সেভাবে না দেখিয়ে অযথাই মাঝ থেকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেখাচ্ছে।

আর এমন হবার কারণ ঐ দুষ্ট ‘কপি-পেস্ট’ নামক ফিচারটির। মূলত ওয়ার্ড-প্রসেসর কিংবা ফরম্যাটেড কোন টেক্সট বা ইলিমেন্ট যখন আমরা কপি করি তখন শুধুমাত্র ঐ ইলিমেন্ট বা লেখা গুলো কপি না হয়ে লেখাটি যে ভঙ্গিমাতে (স্টাইলে) লেখা আছে ঐ ভঙ্গীমা সহকারে আমাদের সিস্টেম (ডেক্সপট, ল্যাপটপ, কিংবা স্মার্টফোন) কপি করে নেয়। আর যখন আমরা তা কোথাও পেষ্ট করি তখন সরাসরি লেখাগুলো ঐ ভঙ্গিমা সহকারে পেস্ট করে ফেলে।

মূলত এটি আধুনিক কম্পিউটিং এর একটি ফিচার। যারা প্রকাশনার কাজ করেন কিংবা ওয়ার্ড প্রসেসিং এ একই ধরণের কাজ যেখানে বার বার করে করতে হয় (যেমন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির নামে সনদপত্র ছাপানো, জন্মনিবন্ধন, অফিসের নির্দিষ্ট ফরম্যাটে কাজ করা, অথবা একই স্টাইল মেইনটেইন করে এসাইনমেন্ট করা) সেই সব ক্ষেত্রে লেখার এই ভঙ্গি সহ পেস্ট করার ব্যাপারটি একটি ফিচার হিসেবে কাজ করে থাকে।

কিন্তু আপনি চাইলে এই ফিচারটি ব্যবহার না করেও শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কন্টেন্ট বা লেখা ব্লগে ‘কপি-পেস্ট’ করতে পারবেন। আর এটি করার দু’টি উপায় রয়েছে। আসুন উপায় গুলো জেনে নেয়া যাক-






সহজ কার্যকর পদ্ধতি

  • যে সোর্স হতে লেখাটি কপি করবেন তার সম্পূর্ণ কন্টেন্ট টুকু প্রথমে সিলেক্ট করুন। এরপর তার উপর মাউসের রাইট ক্লিক করে কপি করুন অথবা কিবোর্ড হতে Ctrl + C চাপুন।
  • এরপর যেখানে আপনার লেখাটি পেষ্ট করতে চান সেখানে টেক্সট ইনপুট নেবার জায়গায় ক্লক করে কিবোর্ড হতে Ctrl + Shift + V একত্রে চাপুন।দেখবেন লেখার ফরম্যাট কপি না হয়ে সরাসরি যে লেখাগুলো সিলেক্ট করেছেন তা প্লেইন টেক্সট হিসেবে চলে এসেছে।





ব্লগে (ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে নির্মিত ব্লগ) কপি-পেস্ট করার পদ্ধতি

উপরে বর্ণিত পদ্ধতি ব্যবহার করেও আপনি ওয়ার্ডপ্রেস নির্ভর ব্লগে কপি-পেস্ট করতে পারবেন। কিন্তু শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস তাদের ব্যবহারকারীদের কথা চিন্তা করে তাদের এডিটরে অতিরিক্ত একটি ফিচার যুক্ত করে দিয়েছে। 
  • আপনার ব্লগ একাউন্টে লগইন করে ‘নতুন ব্লগ লিখুন’ বা ‘নতুন এ্যাড করুন’ লেখাটিতে ক্লিক করুন। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওয়ার্ডপ্রেস এডিটর চালু হয়ে যাবে।
  • এখন ওয়ার্ডপ্রেস এডিটরের ভিজ্যুয়াল মুড এর টুলসেট থেকে ‘Paste as text’ বা বোর্ডের মধ্যে ইংরেজী T বর্ন লেখা আইকনটিতে ক্লিক করুন।

    এতে স্ক্রিনে একটি মেসেজ দেখা যাবে। যেখানে লেখা থাকবে-
    পেস্ট এখন প্লেইন টেক্সট মোডে আছে। সবকিছু এখন প্লেইন টেক্সড মোডে পেস্ট হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি এই আপশনটি টগল করে বন্ধ করেন। If you’re looking to paste rich content from Microsoft Word, try turning this option off. The editor will clean up text pasted from Word automatically.
      
  • ডিসপ্লে বক্সটির ক্রসে ক্লিক করে আপনি আপনার এডিটরে ক্লিক করুন। এরপর সোর্স ফাইল থেকে টেক্স বা যা কপি করা প্রয়োজন তা কপি করে এডিটরের এই লেখার বক্সে সাধারণ নিয়মে পেস্ট করে দিন।এতে কেবলমাত্র আপনার কপিকৃত সোর্স হতে শুধুমাত্র টেক্সট কপি হয়ে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এডিটরে পেস্ট হবে।
      
  • এরপর পেস্ট করা শেষে পুনরায় ঐ বোর্ডের উপর ইংরেজী T অঙ্কিত আইকনে ক্লিক করে ফিচারটি বন্ধ করে নিন।



উপরে বর্ণিত যে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে যে কোন সোর্স থেকে আপনি আপনার পছন্দসই লেখা খুব সহজেই ঝামেলা এড়িয়ে আপনার ব্লগে কপি-পেস্ট করতে পারবেন। এতে ব্লগে আপনার লেখার গঠন এবং সৌন্দর্য উভয়ই তার নিয়মিত ভঙ্গি (স্টাইল) অনুসরণ করবে। আর আপনার লেখাটি পড়বার সময় ব্লগ পাঠকেরও এধরণের সমস্যা নিয়ে কোন বিরক্তির উদ্রেক ঘটবে না।
  
  
  

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরের লেখা নিজের ব্লগে কপি-পেস্ট বা আরও সহজ করে বললে চুরি করা থেকে বিরত থাকুন। ব্লগের প্রতিটি লেখা বা কন্টেন্টই লেখকের মেধাস্বত্ত সম্পত্তি। একান্তই যদি কারও লেখা নিজের ব্লগে প্রকাশ করতে হয় তবে লেখাটি প্রকাশের পূর্বেই লেখকের কাছে অনুমতি আদায় করে নিন। অন্যথায় লেখক প্রয়োজন অনুভব করলে আপনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল এক্ট এর আলতায় আইন-আনুগ ব্যবহস্থা গ্রহণ করতে পারবে। তাতে আপনার ও ব্লগের উপভয়ের সম্মানই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

 
 
 
 
   
 
  




Creative Commons License 
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।

মঙ্গলবার, আগস্ট ০৬, ২০১৯

ঝামেলা ছাড়াই বড় ফাইল গুলো পাঠিয়ে দিন তার গন্তব্যে

ইন্টারনেটে কাউকে কোন কিছু পাঠাবার সবচেয়ে জনপ্রিয় আর গ্রহণযোগ্য মাধ্যম হলো ইলেকট্রনিক মেইল ওরফে ই-মেইল। এখনো জরুরী যে কোন জিনিষেরই আদান প্রদাণ হয় এই ই-মেইল মাধ্যমে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে ই-মেইলের সাথে এটাচমেন্ট হিসেবে পাঠানো ফাইল সাইজের লিমিট। অধিকংশ মেইল প্রোভাইডর মেইলের সাথে এটাচমেন্ট হিসেবে ২০ মেগাবাইট থেকে ১০০ মেগাবাইট পর্যন্ত সাইজের ফাইল পাঠাবার সুযোগ দিয়ে থাকে। এর চেয়ে বড় সাইজের ফাইল হলে তখন বিপাকে পড়তে হয়।

আবার অধিকাংশ ক্লাউড সার্ভিস ব্যবহার করে ফাইল প্রেরণের পূর্বে তাদের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। অনেক সময় এই বাড়তি ঝামেলাটা পোহাতে ইচ্ছে হয় না।

আর এই সমস্যা গুলো থেকে উত্তরণের জন্যে আজকের এই লেখাটি। এখানে এমন কয়েকটি ফাইল-শেয়ারিং সার্ভিস নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো ব্যবহারের জন্যে আপনাকে কোন ধরণের সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে না। প্রয়োজন হবে না কোন ধরণের বাড়তি রেজিস্ট্রেশনের। আর সার্ভিস ভেদে আপনি ১ গিগাবাইট থেকে ৫ গিগাবাইট পর্যন্ত ফাইল আদান-প্রদাণ করতে পারবেন একদম বিনামূল্যে।

তো চলুন ঝটপট এমন কিছু সার্ভিস দেখে নেয়া যাক!


Firefox Send

মোজিলা ফায়ারফক্স এর একটি অতিরিক্ত সুবিধা এই Firefox Send। এই সুবিধাটি ব্যবহার করে আপনি যে কোন ধরণের ফাইল অতি সহজেই আদান প্রদান করতে পারবেন। Firefox Send ব্যবহার করে আপনি নিরাপদে আপনার ফাইলটি দ্রুততর সময়ের মধ্যে আদান-প্রদাণ করতে পারবেন।
  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ১ গিগাবাইট / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে ২.৫ গিগাবাইট বিনামূল্যে।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ফাইল আপলোডের সময় হতে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা থেকে ৭ দিন পর্যন্ত।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ ১ হতে ১০০ সংখ্যক নির্ধারিত করে দেয়া ডাওনলোড।

We Transfer

২০০৯ সাল থেকে We Transfer তাদের এই সেবাটি প্রদাণ করে আসছে। সহজে কোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই সরাসরি আপনি আপনার ফাইলটি এই পরিষেবার মাধ্যমে আদান-প্রদান করতে পারবেন।
  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ২ গিগাবাইট।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ফাইল আপলোডের দিন হতে পরবর্তী ৭ দিন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ প্রযোজ্য নয়।


Transfernow ফাইল শেয়ারিং সার্ভিসটি ২০১৩ সাল থেকে তাদের এই সেবা দিয়ে আসছে। Transfernow বিনামূল্যে এবং মূল্য পরিশোধিত – দু’ধরণের সার্ভিসই প্রদাণ করে থাকে। তবে সাধারণ ব্যবহারকারী বিনামূল্যেই Transfernow এর মাধ্যমে তার ফাইলটি পাঠাতে পারবে। Transfernow ব্যবহার করে ফাইল ডাওনলোড করার জন্যে আপনি সরাসরি লিংক নিতে পারেন, অথবা তাদের সাইট থেকেই প্রাপকের কাছে মেইলটি পাঠাতে পারবেন।

  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ৪ গিগাবাইট।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ফাইল আপলোডের দিন হতে পরবর্তী ৭ দিন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ প্রযোজ্য নয়।


pCloud Transfer


২০১৩ সাল থেকে এই সুইস সার্ভিসটি ফাইল শেয়ারিং এবং ব্যকাআপ করার সুবিধা দিয়ে আসছে। বিনামূল্যের সার্ভিসের সাথে এদের রয়েছে আকর্ষণীয় সব পেইড সার্ভিস। তবে দ্রুত ফাইল আদান-প্রদাণের জন্যে বিনামূল্যে এই সার্ভিসটিও ব্যবহার যোগ্য। পাশাপাশি ফাইল আদান-প্রদাণের অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে আপনি আপনার ফাইল গুলো এনক্রিপ্ট করে পাঠাতে পারবেন।

  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ৫ গিগাবাইট / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে ১০ গিগাবাইট বিনামূল্যে।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ অপ্রকাশিত / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে লিমিট বিহীন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ প্রযোজ্য নয়।


Mediafire

ফাইল শেয়ারিং এবং ব্যাকআপ হিসেবে খুব পরিচিত একটি নাম হলো Mediafire। যারা ইতোপূর্বে অনলাইনে ফাইল সংরক্ষণ কিংবা শেয়ার করেছেন তারা অবশ্যই Mediafire সম্পর্কে ধারণা রাখেন। ২০০৬ সাল থেকে Mediafire তাদের সার্ভিস প্রদাণ করে আসছে। যদিও Mediafire এর মূল সেবা পেতে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবুও রেজিস্ট্রেশন ব্যতিতই দ্রুত ফাইল আদান প্রদানের জন্যে আপনি Mediafire ব্যবহার করতে পারবেন।

  • ফাইল সাইজ লিমিটঃ ১ গিগাবাইট / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে ১০ গিগাবাইট বিনামূল্যে।
  • ফাইল সংরক্ষণের মেয়াদঃ ১৪ দিন / রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে লিমিট বিহীন।
  • ডাওনলোড লিমিটঃ উক্ত সময়ের মধ্যে অগুনিত বার।


  
  
   
      


Creative Commons License
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।