সোমবার, আগস্ট ৩১, ২০১৫

বদি এণ্ড রঞ্জুর কথোপকথন‬ —  ৩



বদি ভাইঃ রঞ্জু, বলত শুভাকাঙ্ক্ষী কারে বলে?

রঞ্জুঃ কাকে আবার! যারা আমার ভালো চিন্তা করে তারাই আমার শুভাকাঙ্ক্ষী।

বদি ভাইঃ আচ্ছা, তাহলে এখন বল তো তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী কারা কারা?

রঞ্জুঃ কারা আবার! আপনি, বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী এরাই তো..

বদি ভাইঃ একটু ভুল বললা। বাবা-মা ঠিক আছে, কিন্তু তার বাইরে বাকি কেউই আসলে তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী না, আমিও না।

রঞ্জুঃ কি বলেন বদি ভাই! আপনি আবার আমার শুভাকাঙ্ক্ষী না কিভাবে?

বদি ভাইঃ এইটাই তো তোমার সমস্যা রঞ্জু। বুঝায় না বললে তুমি কিছুই বুঝতে চাও না।

রঞ্জুঃ এই কারণেই তো বললাম, আপনি আমার শুভাকাঙ্ক্ষী। এইবার দ্রুত করে বুঝায় বলেন তো ব্যাপারটা।

বদি ভাইঃ আচ্ছা বলছি, ভালো করে মন দিয়ে শোন। তোমার এক চাচাত ভাই আছে না, ঐ যে শান্ত না কি যেন নাম। এই যে কিছুদিন আগে সরকারী মেডিক্যালে প্রফেসর হিসেবে চান্স পেয়েছিল।

রঞ্জুঃ হুম। শান্ত ভাই। কিছুদিন আগেই তার সরকারী একটা হসপিটালে পোস্টিং হয়েছে। কেন? তার কথা কেন বলছেন?

বদি ভাইঃ সে তো ডাক্তার, তার উপর তোমার আত্মীয় আর বড় ভাই। সেই হিসেবে তো তোমার শান্ত ভাই তোমার বেশ বড় ধরণের শুভাকাঙ্ক্ষী হবার কথা। তাই না?

রঞ্জুঃ হুম। সেটাই তো হবে।

বদি ভাইঃ এখানেই তুমি ভুল করলা রঞ্জু। ডাক্তার মানুষ হইলেও সে আসলে মোটেই তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী না। সে আসলে মনে মনে আশা করে কবে তুমি কিংবা তোমার পরিবারের কেউ বড় ধরণের অসুস্থ হবে। আর অপেক্ষা করে, কবে তোমরা তার বুদ্ধি আর পরামর্শের জন্যে তার দ্বারস্থ হবে।

রঞ্জুঃ ধুর! কি যে বলেন না বদি ভাই। শান্ত ভাই মোটেই ঐরকম লোক নয়।

বদি ভাইঃ আবারও ভুল করলে তুমি রঞ্জু। তুমি শুধু তোমাকে নিয়েই চিন্তাটা করেছ। তোমার ভাই শান্ত আসলে তোমার বা তার আত্মীয়দের ব্যাপারে এমন চিন্তা সরাসরি না করলেও পেশাগত কারণে তার মনে কিন্তু এই ব্যাপারটাই কাজ করে।

রঞ্জুঃ বুঝলাম, কিন্তু সেইটা তো নিশ্চই আর অপরাধ না।

বদি ভাইঃ তুমি কিন্তু সরাসরি কনক্লুশনে চলে যাচ্ছ রঞ্জু। আমি কিন্তু মোটেও বলি নাই যে শান্ত ভাই কিংবা ডাক্তারদের এইটা অপরাধ। আচ্ছা এইটা বাদ দেও, আরেকটা বলি। শোন।

রঞ্জুঃ বলেন।

বদি ভাইঃ তোমার পাশের বাসায় ইশতিয়াক আঙ্কেলরা থাকে না? সে তো তোমার আব্বুর খুব ভালো বন্ধু। ঠিক বললাম না?

রঞ্জুঃ হ্যাঁ। আমাদের পাশেই ইশতিয়াক আঙ্কেলদের বাসা। আর পাশাপাশি থাকার কারণেই আব্বার সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। সেই হিসেবে বন্ধুই তারা।

বদি ভাইঃ সে তো নিশ্চই তোমাদের খুবই শক্ত একজন শুভাকাঙ্ক্ষী, তাই না?

রঞ্জুঃ তা তো অবশ্যই। কয়েক বছর পূর্বেই তো আমাদের গ্রামের বাড়িটা নিয়ে একটা বিশ্রি ধরণের ঝামেলা হয়েছিল। তখন ইশতিয়াক আঙ্কেলের পরামর্শেই সেই সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেয়েছিলাম।

বদি ভাইঃ হুম। আমিও যতটুকু জানি তাতে সে বেশ হাসি-খুশি আর ‘মাই ডিয়ার’ টাইপের লোক। কিন্তু এত কিছুর পরেও কিন্তু সে তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী না।

রঞ্জুঃ কি বলেন!

বদি ভাইঃ ঠিকই বলছি। যেভাবে তোমার শান্ত ভাই অবচেতনে আশা করে বেশি বেশি রোগী, আর তার পরামর্শের। তেমনি তোমার ইশতিয়াক আঙ্কেলও আশা করে আইনি ঝামেলায় পড়ে যেন সবাই তার দ্বারস্থ হয়। হাজার হলেও পেষায় তো সে একজন উকিল। হা হা হা!

রঞ্জুঃ বুঝলাম আপনার কথা। আপনার এই লজিক অনুযায়ী তো আসলে আমরা কেউই কারও শুভাকাঙ্ক্ষী না।

বদি ভাইঃ লজিক অনুসারে চিন্তা করলে এক টাইপের লোক তুমি পাবা, যারা আসলেই মানুষের শুভাকাঙ্ক্ষী।

রঞ্জুঃ কোন টাইপের লোক?

বদি ভাইঃ চোর

রঞ্জুঃ চোর! কি যে যা তা বলেন না বদি ভাই। চোর তো কারও অনিষ্ঠ করা ছাড়া ভালো করে এমন শুনি নাই। তাহলে সে কিভাবে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়?

বদি ভাইঃ জানতাম রঞ্জু, তুমি এমন কিছুই বলবা।

রঞ্জুঃ এখন আপনি বলেন কিভাবে চোর আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়।

বদি ভাইঃ বলছি, মন দিয়ে শোন। দেশের প্রেসিডেন্ট হতে শুরু করে রাস্তার মুচি পর্যন্ত চায় তার আশে পাশের বাকি সব মানুষ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সমস্যায় পড়ুক। ডাক্তার যেমন চায় সবাই বেশি বেশি অসুস্থ হোক, তার পরামর্শ নিতে আসুক। তেমনি কোম্পানির মালিক চায় আজীবন শ্রমিক তার নির্দেশ মত কাজ করে যাক, তাদের ভাগ্যের চাকা আজীবন এমনই থাকুক। পুলিশ চায় দেশের মানুষ বেশি বেশি বেআইনি কাজ করুক, আর পক্ষ বিপক্ষ সবাই তার দ্বারস্থ হোক। সবজির দোকানদার চায় সবাই বেশি দাম দিলে হলেও তার পচে যাওয়া সবজি কিনুক। বাড়িওয়ালা চায় আজীবন তার ভাড়াটিয়ারা তার বাসায় ভাড়া থাকুক, আর বছর ঘুরতেই সে তার ইচ্ছে মত বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে নিতে থাকুক। মুচি চায় তোমার পায়ের নতুন স্যান্ডের দু’দিন পরপর ছিঁড়ে যাক আর তুমি বার বার সাহায্যের জন্যে তার কাছে তোমার ছেড়া স্যান্ডেল নিয়ে যাও।

কিন্তু একমাত্র চোরই এইসব আশা করে না।

রঞ্জুঃ চোর কিভাবে এইসব আশা করবে। ও তো সবসময় ফন্দি ফিকিরে থাকে কিভাবে চুরি অন্যের জিনিষ চুরি করা যায়।

বদি ভাইঃ সেটা তুমি ভুল বল নাই। প্রয়োজনের খাতিরেই সে অন্যের বাড়িতে চুরি করে। কিন্তু মনে মনে কিন্তু সে ঠিকই সকলের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়।

রঞ্জুঃ বলেন, এইটাই বুঝিয়ে বলেন।

বদি ভাইঃ চোর চুরি করলেও মনে মনে আশা করে দেশের সবাই যেন ধনী হয়ে যায়, দামী দামী জিনিষপত্র দিয়ে যেন তারা বাড়ি-ঘর ভরে ফেলে। টাকা-পয়সা, সোনা-দানা আর হীরের গহনা যাতে বাড়ি বাড়ি আলমারিতে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকে। আর সে যেন এইসবই অবলীলায় চুরি করতে পারে।

আর একমাত্র চোরই এমন ব্যক্তি যে তোমার খারাপ অবস্থার জন্যে দুঃখ পায়। কারণ তোমার খারাপ অবস্থাই মানে তার চুরি করার পরিমাণ কমে যাওয়া।

রঞ্জুঃ তার মানে হল যে কারও শুভাকাঙ্ক্ষী হতে চাইলে অবশ্যই আমাকে চোর কিংবা ডাকাত হতে হবে।

বদি ভাইঃ না, তোমাকে ঠিক চোর কিংবা ডাকাত হতে হবে না রঞ্জু। শুধু যদি মন থেকে সত্যিকারে সকলের জন্যে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে পারো তাহলে যেখানে যেই পেষাতেই থাক না কেন, সেখানে সেই অবস্থাতেই সকলের শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারবা।

রঞ্জুঃ উক্কে বদি ভাই। সকলের জন্যেই মন থেকে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করার ট্রাই করব।








রবিবার, আগস্ট ৩০, ২০১৫

বদি এণ্ড রঞ্জুর কথোপকথন‬ — ২



বদি ভাইঃ রঞ্জু বলত, একটা বই, সেটা ভালো না মন্দ তা কিভাবে বোঝা যায়?

রঞ্জুঃ এ আর এমন কি কাজ। ভালো বই মানেই পড়ার বই, গল্পের বই, কবিতার বই, এইসব। আর খারাপ বই মানে ঐ যে ইয়ে আর কি.. উল্টা পাল্টা সব কথা বার্তা থাকে যে ঐসব।

বদি ভাইঃ রঞ্জু, তোমাকে কি জিজ্ঞাস করলাম আর তুমি কি বললা। আমি বললাম একটা ভালো বই সেটা তুমি কিভাবে বুঝবে আর তুমি বলছ কি সব বাজে কথা।

রঞ্জুঃ তাহলে বদি ভাই! কিভাবে বুঝবো ভালো বই আর মন্দ বইয়ের পার্থক্য?

বদি ভাইঃ বুঝলা রঞ্জু, তোমারে নিয়ে সত্যিই বড় দুশ্চিন্তা হয়। সাধারণ এই জিনিষ গুলিও এতদিন পরে বুঝে উঠতে পারলে না।

রঞ্জুঃ আপনি আছেন না! আপনি বুঝিয়ে বলবেন। এইবার বলেন না বদি ভাই, কিভাবে ভালো আর মন্দ বইয়ের পার্থক্য বোঝা যায়?

বদি ভাইঃ বলছি, মন দিয়ে শোন।

বইটা ভালো বুঝবে তখন, যখন তুমি বইটা পড়তে শুরু করলে তোমার গার্ল-ফ্রেন্ডের কথা মনে থাকবে না। কত পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়েছ সেইটা মনে থাকবে না। পড়তে পড়তে গল্পের আসল ঘটনা চোখের সামনে ভেসে আসবে, টেনশন অনুভব করবে সেইটাকে ঘিরে। আর প্রতিবার বইটা পড়া থেকে বিরতি নেবার সময় মনে হবে- “ইশ! এত দ্রুত পড়া শেষ হয়ে যাচ্ছে!!” আবার পড়তে শুরু করলে মনে হবে- “ইশ! এরপর কি! এরপর কি!! দ্রুত পড়তে হবে”

কিংবা যদি কোন কবিতার বই হয় তখন দেখবে প্রতিটা কবিতাই তোমাকে এক ধরণের শিহরণ দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটা কবিতার কিছু লাইনেই তুমি তোমাকে খুঁজে যাবে। কিছু কিছু লাইন তোমাকে টেনে ধরে নিয়ে যাবে সুদূর অতীত। সেখানকার হাসি কান্না তোমাকে আলোড়িত করে যাবে প্রতি চরণে চরণে। দেখা যাবে একই কবিতা তুমি ঘুরে ফিরে পড়ছ।

তারপর বইটা যখন এমন করতে করতে শেষ হয়ে যাবে তখন তোমার আফসোসের সীমা থাকবে না। বার বার মনে হবে- ‘কেন যে এত দ্রুত পড়া শেষ করতে গেলাম’ আর ‘কেন যে আরও একটু লিখল না’ -এইসব। আবার মাঝে মাঝে আক্ষেপও হবে এরপর কি হবে সেইটা জানলে না বলে।

রঞ্জুঃ ও আচ্ছা। তাই বলেন। কিন্তু এইসবই তো প্রায় সব বই পড়তে গেলে হয়। কিন্তু ভালো বইয়ের ব্যাপারে এমন হলে খারাপ বই হবে কোনগুলি?

বদি ভাইঃ এখনো বুঝতে পারো নাই খারাপ কোনগুলি? আফসোস রঞ্জু, তোমারে নিয়া বড়ই আফসোস হয় এইসব কারণেই।

রঞ্জুঃ আহ্! বলেন না বদি ভাই। জিনিষটা বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে।

বদি ভাইঃ খারাপ বই বলতে আসলে তেমন কিছু নাই। তারপরও যেইসব বই পড়তে গেলেই বার বার তোমার গার্ল-ফ্রেন্ডের কথা মনে পড়ে যাবে। পড়া শুরু করলেই মনে হবে যেন তুমি বই না পড়ে তোমার গার্ল-ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করছ। আর এমন অযৌক্তিক ঝগড়া তোমার গার্ল-ফ্রেন্ড কোন ব্যাপারকে কেন্দ্র করে করছে তার উপর তোমার বিন্দুমাত্র ধারণা নাই। ভেতর ভেতর এই ঝগড়া দ্রুত শেষ করার তাগিদ অনুভব করবা, আর সেটা সম্ভব না হলে মাঝ পথেই ঝগড়া কিভাবে থামানো যায় তার চিন্তা চলতে থাকবে। যদি এমন সব চিন্তা ধারা যদি কোন বই পড়ার সময় সামনে আসে তখনই বুঝতে পারবে যে তুমি আসলে একটা বাজে ধরণের বই পড়ছ।

রঞ্জুঃ কিন্তু বদি ভাই, আমার যে কোন গার্ল-ফ্রেন্ড নেই। তাহলে কিভাবে এই অনুভূতি আসবে?

বদি ভাইঃ গার্ল-ফ্রেন্ড নেই! এইবার বুঝলাম কেন তুমি ভালো বই আর মন্দ বইয়ের মাঝে পার্থক্য করতে পারো না। ভালোই হয়েছে, সামনের দিকেও আর গার্ল-ফ্রেন্ড জুটাবা না। তাহলেই বই পড়ার আসল স্বাদ অনুভব করতে পারবা। নয়তো সবই বই_ই বাজে মনে হবে।

রঞ্জুঃ উক্কে বদি ভাই।








শনিবার, আগস্ট ২৯, ২০১৫

বদি এণ্ড রঞ্জুর কথোপকথন — ১



বদি ভাইঃ বলত রঞ্জু, ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে গুলির সাথে সবচেয়ে বড় অন্যায় অবিচার করছে কারা?

রঞ্জুঃ কারা বদি ভাই?

বদি ভাইঃ বিজ্ঞানী আর আবিষ্কারকেরা..

রঞ্জুঃ কি বলেন বদি ভাই! কিভাবে??

বদি ভাইঃ নাহ্‌ রঞ্জু, তুমি সাধারণ কথাটাও বুঝো না। তোমারে নিয়া বড়ই শঙ্কা হয়, বুঝলা।

রঞ্জুঃ বলেন না বদি ভাই, কিভাবে বিজ্ঞানী আর আবিষ্কারকেরা এই ছেলে-মেয়েদের উপর অন্যায় করল।

বদি ভাইঃ ছোট বেলা থেকে এখন পর্যন্ত কিন্তু তুমিও তাদের অবিচারের স্বীকার।
প্রথমেই তারা কিছু একটা আবিষ্কার করবে। তারপর তাদের সেই আবিষ্কার দিয়ে সবাইকে তাক লাগাবে। কিন্তু প্রেশারটা পড়বে সেই ছোট ছোট বাচ্চাদের উপরই।

রঞ্জুঃ বুঝলাম না বদি ভাই। বুঝিয়ে বলেন না একটু।

বদি ভাইঃ এই হইল এক সমস্যা। পুরো ঘটনা বিস্তারিত না বললে তোমরা কিছু বুঝতে পারো না। আচ্ছা, ঠিক আছে বলছি, ভালো করে খেয়াল দিয়ে শুনবা।
ধর কাল তুমি একটা কিছু আবিষ্কার করলা। দুনিয়া জুড়ে তোমার নাম-ডাক হল। তারপর? তারপর তোমার সেই আবিষ্কার নিয়ে দীর্ঘ কয়েক অধ্যায় রচনা করা হবে। তারপর সেটাকে গিলতে বাধ্য করা হবে এই ছোট ছোট বাচ্চাদের।

রঞ্জুঃ ও আচ্ছা! এই ব্যাপার।

বদি ভাইঃ না। শুধুই এই ব্যাপার না।

রঞ্জুঃ তাহলে!

বদি ভাইঃ শুধু যে তোমার আবিষ্কার নিয়েই পড়িয়েই ক্ষ্যান্ত দিবে তা কিন্তু না।
এরপর উঠে পড়ে লাগবে এই আবিষ্কার নিয়ে একগাদা সমস্যা সমাধান করানোর জন্যে। এর সাথে শুরু করবে তুমি এই আবিষ্কারের আগে কেমন ছিলা, কিভাবে এই আবিষ্কার করার চিন্তা তোমার মাথায় আসল। কোন জায়গায় বসে বসে তুমি এই আবিষ্কারের থিম রচনা করেছিলে। এই যে আমি তোমার সাথে এই প্যাঁচাল দিচ্ছি এই প্যাঁচালও তাদের খুব গুরুত্ব সহকারে শিখাতে বাধ্য করা হবে।
তারপর তোমার সম্বন্ধে শেষ হলেই শুরু করবে তোমার আব্বা-আম্মা আর তাদের আত্মীয়দের নিয়ে ইতিহাসের চ্যাপটার।
এই গুলি তো গেলোই, সাথে আরও যুক্ত হবে কিভাবে তোমার এই আবিষ্কারকে আরও বিস্তৃত ভাবে ব্যবহার উপযোগী করা যায় তার উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা।
এত কিছুর পরেও কি মনে হয় না রঞ্জু তোমার এই আবিষ্কারই বাচ্চাগুলির ভবিষ্যৎ নষ্টের একটা বড় কারণ?

রঞ্জুঃ কিন্তু বদি ভাই, আমি তো এখনো কিছু আবিষ্কার করি নাই।

বদি ভাইঃ ভালো করছ। ভবিষ্যতে করার চেষ্টাও করো না। আইডিয়া আসলে আমার মত চুপচাপ চিন্তা করে তারপর সেইটা ভুলে যাবা। বাচ্চাদের মেধার চাপ মুক্ত রাখার সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকবা।

রঞ্জুঃ উক্কে বদি ভাই।