এলোমেলো লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
এলোমেলো লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, জুন ২৩, ২০১৬

পথের নির্ণয়...



পথটা দু'দিকেই যায়, সামনে কিংবা পেছনে। আমি বহুদূর হতে এরই উপর ভর করে এসেছি, ভেসে এসেছি। দু'চাকার বাহন আমাকে উড়িয়ে নিয়ে এসেছে এই এখানে। 

এখানে? এটা কোথায়?
জানি না! জানা নেই।
কিংবা উত্তরটা হতে পারে- এটাই ঐ স্থান যেখানে ঠিক এই মুহূর্তে আমার থাকবার কথা। ঠিক এই মুহূর্তটাতেই আমার ভাবার কথা কেন আমি এখানে -এই নিয়ে। কোন ঘটনাই বিচ্ছিন্ন নয়, উদ্দেশ্যহীন নয়। প্রতিটা কাজ আর ঘটনার পেছনেই রয়েছে যুক্তিপূর্ণ আর অর্থবহ কোন কারণ, কোন উদ্দেশ্য। 

আমার কোথায় যাওয়া উচিৎ?
সামনের দিকে? যার সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই? নাকি পেছনের দিকে? যাকে ছেড়ে ছুড়ে ছুটে এসেছি এই এতদূর, এত ক্রোশ? আর যদি ফিরেই যাই, তবে কেন ফিরে যাবো? আছে কি কোন পিছুটান? ছিল কি কোন অপেক্ষা আমার জন্যে?

পিচ ঢালা পথ কি এক অদ্ভুত বিভ্রম তৈরি করে রেখেছে। দু'প্রান্ত হতেই হাত নেড়ে ডাকছে আমায়। আমি একাকী দুই বিভ্রমের মাঝে আটকে। এগিয়ে যাওয়া যায়, আবার যায় একই ভাবে পিছিয়ে আসা। একঘেয়ে জীবনকে বেঁছে নেয়া যায়, কিংবা যায় প্রতিযোগিতা করে বিপরীত স্রোতকে ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়া।

ছুটতে আমাকে হবেই, এটাই নিয়তি। 

দু'চাকায় ভর করা সহজ, সহজ ছুটিয়ে চলা। 
যত সমস্যা তা কেবলই দিক নির্ণয়ে। তুমি কেবল একবারই তোমার দিক নির্দিষ্ট করতে পারবে, তারপর যতই চেষ্টা কর সেই নির্ণীত দিক হতে আর পিছু হটতে পারবে না....






বুধবার, মে ২৫, ২০১৬

"কাজী নজরুল ইসলাম" - বিদ্রোহ বিজেতা একজন দুখু মিয়া

কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় অগ্রণী বাঙালি কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক। তিনি ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫মে (জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতামহ কাজী আমিন উল্লাহর পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল “দুখু মিয়া"। ছোটকালে মক্তবে কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯০৮ সালে তার পিতার মৃত্যু হলে পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে শিক্ষাজীবনের ইতি টেনে মাত্র দশ বছর বয়সে জীবিকা অর্জনের জন্যে কাজ করতে নামেন। এ সময়ে তিনি মক্তবের শিক্ষকতা করার পাশাপাশি হাজী পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। এর ফলশ্রুতিতে খুব অল্প বয়সেই ইসলামের মৌলিক আচার অনুষ্ঠানের সাথে সে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হবার সুযোগ লাভ করেন এবং পরবর্তীতে এই জ্ঞান তার সাহিত্যকর্মে বিপুল ভাবে প্রভাবিত করে। বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার শুরু তার হাত ধরেই একরকম শুরু হয়।

বাল্য বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ‘লটো’ নামের এক নাট্যদলে যোগ দেন। তার চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লটো দলের বিশিষ্ট ওস্তাদ ছিলেন এবং আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় তার দখল ছিল। ধারণা করা হয় বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল ইসলাম লটো দলে যোগ দিয়েছিলেন। লটো দলেই সাহিত্য চর্চা চলতে থাকে। একই সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্যে গান ও কবিতা লিখতেন। নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতার আলোকে ইনি বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্য অধ্যয়ন শুরু করেন। এর সাথে সুযোগ পান হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়ন করার। একদিকে মসজিদ ও মক্তবের শিক্ষা অপর দিকে লোটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুল ইসলামের সাহিত্যজ্ঞানকে বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ করে দেয়।

১৯১০ সালে নজরুল ইসলাম লটো দল ছেড়ে আবারও শিক্ষা জীবনে ফিরে আসেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যা এবারেও তাকে বেশিদিন পড়ালেখা করার সুযোগ দেয়নি।

যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয়। এরপর তিনি যোগ দেন বাসুদেবের কবিদলে। সেখান থেকে যান খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামার কাজে এবং সবশেষে আসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে।



কালের পরিক্রমায় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এসময় তিনি কলকাতাতেই থাকতেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবং ভাঙার গানের মত কবিতা; ধূমকেতুর মত সাময়িকী। জেলে বন্দী হলে পর লিখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী, এই সব সাহিত্যকর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তার সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল, এর পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামাসংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা "নজরুল গীতি” নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়। মধ্যবয়সে তিনি “পিক্‌স ডিজিজে” আক্রান্ত হন। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন।




বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবর্তনে তাকে এই উপাধি প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। একুশে পদক বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানসূচক পদক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
















১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট তারিখে এই বিদ্রোহী চেতনার কবি মৃত্যুবরণ করেন। 
নজরুল ইসলাম তার একটি গজলে লিখেছেন-

মসজিদেরই কাছে আমায় কবর দিয়ো ভাই
যেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই



কবির এই ইচ্ছার বিষয়টি বিবেচনা করে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং সে অনুযায়ী তাঁর সমাধি রচিত হয়।












══════════════════════════════════════════
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং তথ্য জালিকা ▐
চিত্র সত্বঃ ব্লগ, গুগল ইমেজ সার্চ এবং উইকিপিডিয়া ▐

মঙ্গলবার, মে ২৪, ২০১৬

নাটাই ঘুড়ি, আর কিছু আক্ষেপ..


দূর থেকে কে যেন হাত নাড়ছিল, আমার ডিঙ্গি তখনও অনেক দূরে। ডিঙ্গিতে আপন খেয়ালেই নাটাই হাতে ঘুড়িটাকে উড়িয়ে দিয়েছিলাম সেই কবে। আর ঘুড়িটাও বাতাসের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করে উড়তে লাগল ভিন দিশাতে। দাড় ছিল না আমার। ডিঙ্গিটাকে অনেক চেষ্টাতেও এগিয়ে নিতে পারি নি পাড়ের দিশায়। অসহায়ের মত অপেক্ষা করছিলাম ঘুড়িটার মত পালটাবার, অপেক্ষা ছিল স্রোতের দিক পাল্টে যাবার।

তারপর একটা সময় সত্যি সত্যি ঘুড়িটা তার মত পালটাল। বাতাসকে বলে কয়ে পাড়ের দিশাতেই ছুট লাগাল। এই দেখে স্রোতের মনও বোধ করি গলতে শুরু করল। সেও ঘুড়ির মত দিক পাল্টে ডিঙ্গিটাকে মৃদু ধাক্কায় পাড়ের দিকে নিয়ে চলল। ধীরে ধীরে স্রোতের ধাক্কায় যখন ডিঙ্গিটা পাড়ে ভিড়ল, দিন গড়িয়ে তখন সন্ধ্যা প্রায়। পাড়ের দিকে যতই এগিয়ে যাচ্ছিলাম, আহবানের হাত গুলি ততই পরিষ্কার হচ্ছিল। কিন্তু আলো কমে যাওয়াতে সবই মলিন লাগছিল তখন। একদম পাড়ে যখন ডিঙ্গি ভিড়ল, তখন দেখলাম আহ্বানের সেই সে হাত, সে তো আর ভিন কিছুই নয়, আমার মনে আকটে থাকা সেই পুরাতন মরীচিকাই ছিল!

আক্ষেপ ছিল আমার অনেক অনেক বেশি! আহ্বানের হাতকে ঘিরে নয়, তাকে না পাওয়াতেও নয়। বরং ঘুড়িটার উপরেই যত আক্ষেপ ছিল আমার। উড়েছিলিই যখন তখন মাঝ পথে কেন আবার মত পাল্টে এ পথে এলি? ভিন দিশাতেই উড়ে চলতি। আমি না হয় মনের ভেতর ঐ মরীচিকার ডাক ধরে রেখেই সান্ত্বনা দিতেম নিজেকে। তাকে না দেখার আফসোসেই না হয় মরতাম বাকিটা জীবন...





শুক্রবার, মে ০৬, ২০১৬

অসম্ভব কল্পনা - গেটস্‌ এবং জব্‌স এর অলীক গল্প!



ধরুন মাইক্রোসফট এর প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং এ্যাপল ইন্‌ক এর প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জব্‌স একদম প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের আইডিয়া গুলি নিয়ে একত্রে কাজ করতে শুরু করল। তারপর ব্যাপারটা কি ঘটতে পারত?

তাহলে দুইটি ব্যাপার ঘটতে পারত-

১ম ঘটনাঃ
মাইক্রোসফট এর বিল গেটস এবং এপল এর স্টিভ জব্‌স মিলে তাদের আইডিয়া প্রতিষ্ঠা করতে পারল। এবং তারা তাদের আইডিয়ার ব্যবসায়িক নাম দিল "মাইক্রো এ্যাপল"। প্রযুক্তি দুনিয়াতে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ কোনভাবেই টিকতে পারল না!

২য় ঘটনাঃ
মাইক্রোসফট এর বিল গেটস এবং এপল এর স্টিভ জব্‌স মিলে তাদের আইডিয়া প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করতে শুরু করল। কিছুদিন পর স্টিভ জবস বিল গেট্‌স এর একটা কোর প্রোগ্রামের ডিজাইন বাতিল করে তার কোর ডিজাইন তাদের সিস্টেমে ইনপ্লান্ট করল। এর কিছুদিন পর বিল গেটস স্টিভ জবস এর তৈরি করা ইন্টারফেস প্রোগ্রামটা ফেলে দিয়ে তার পছন্দের ইন্টারফেস প্রোগ্রাম ইন্টিগ্রিট করল।
ফলাফল, বছর না ঘুরতেই তাদের মাঝে প্রচণ্ড দ্বন্দ্ব দেখা দিল। এবং অবস্থা এমন দাঁড়াল যে তাদের কোন আইডিয়াই তারা বাস্তবায়ন করতে না পেরে সব ছেড়ে ছুড়ে নতুন করে ভিন্ন কিছুর দিকে ঝুঁকে পড়ল।



উভয় ঘটনার ফলাফল হচ্ছে-
"বিশ্ব বঞ্চিত হল চমৎকার দুই অপারেটিং সিস্টেমের প্রাপ্তি হতে"




আরও একটি ঘটনা হতে পারত। তবে সেই ঘটনাটা ঘটিবার জন্যে তাদের উভয়কে জন্মসূত্রে বাঙ্গালী হওয়া প্রয়োজন। যেহেতু তারা কেউই জন্মসূত্রে বাংলাদেশী নন, তাই আপাতত সেই কল্পনা শেয়ার করা থেকে বিরত থাকলাম।






সোমবার, এপ্রিল ১১, ২০১৬

পাঠ প্রতিক্রিয়া - যে প্রহরে নেই আমি



গতকাল শেষ করলাম লেখক/ব্লগার 'রাসায়াত রহমান' এর লেখা "যে প্রহরে নেই আমি" বইটি।

গল্পটা বেশ ইন্টারেস্টিং। গল্পের মূল চরিত্র 'রাজু' তারচেয়েও বেশি ইন্টারেস্টিং। প্রথম দিকে অতি-ভৌতিক কিছু একটা ব্যাপার তার মাঝে আছে, এমন মনে হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত যার দেখা মিলল সেটাও কম চমৎকৃত করেনি। উত্তেজনাপূর্ণ ছিল "ইদ্রিস খা" এর প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবার অংশটুকু। আর অবশ্যই আলাদা করে বলতে হবে 'নায়লা' চরিত্রটির ঘুরে দাঁড়াবার ব্যাপারটাকে। রাজুর জ্বালিয়ে দেয়া প্রেরণার প্রদীপ আর নিজের ইচ্ছাশক্তিকে ভর করে সে কতদূর পর্যন্ত এগিয়েছে তা জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পড়তে হবে গল্পটি।

তবে গল্পটা শেষ করার পরও ঠিক বুঝতে পারিনি গল্পগ্রন্থের নাম করণের উদ্দেশ্য বা সার্থকতা :(






রবিবার, ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০১৬

পাঠ প্রতিক্রিয়া - জলেশ্বরী



ইব্রাহীম গাজীর খোঁজে বের হয়েছিল কাজল, গন্তব্য ছিল জলেশ্বরীর পানে। সেই খোঁজ দীর্ঘ এক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা এনে দেয় তাকে। সেখানে সে সভ্যতার মুখোশের আড়ালে আদিম মানুষের প্রকৃত রূপ খুঁজে পায়। খুঁজে পায় লাজ, ইজ্জত আর অহংকার চূর্ণ হবার একমাত্র কারণ ‘ক্ষুধা’ কে। খুঁজে পায় তপসী নামের এক মানবীকে, খুঁজে পায় প্রাণের রক্ষাকারী বুজিকে। পরিচয় ঘটে এমন এক মানুষের সঙ্গে যে গোর খোঁড়ার জন্যে হন্যে হয়ে গ্রামের পর গ্রাম ছুটে বেড়াচ্ছে।

অতঃপর সেই গোর খোদক আসাদ উদ্দীনকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় মহামারির দিকে। সেখানে পৌঁছে দেখে তপসীর ভিন্ন আরেক রূপ। খুঁজে পায় ভিন্ন আরেক তপসীকে, জানতে পারে প্রকৃত তপসীকে। কত পরম মমতায় তপসী তাদের আপন হয়ে গিয়েছে সেখানে। আবার সেই প্রাণের আত্মীয়ই কিভাবে 'ধর্ম'কে ভর করে কুৎসিত রূপে রূপ লাভ করে, তা সে সেখানেই দেখতে পায়।

এত কিছুর পর যখন সে ইব্রাহীম গাজীকে খুঁজে পায় তখন বুঝতে পারে, কতই  মিথ্যে পরিচয়ে বেঁচে ছিল এতকাল….





বুধবার, জুলাই ০৮, ২০১৫

অন্ধকারের আলোয় ডেকে যাওয়া কাক



শহর জুড়ে অন্ধকারের আলো বিস্তৃত, 
তুমি কি দেখো?
একা কাক ডেকে যায় বিরামহীন,
তুমি কি শোন?

এখানে এক আকাশ জুড়ে কৃত্রিম আলোয় আলোকিত মহল,
এখানে ছুটে বেড়ায় মৃত যত লোভী মানুষের দল,
এখানে বিরামহীন চাহিদার নেই কোন ক্লান্তি,
এখানে আত্মারা পায় না কখনো যে শান্তি...

তবুও ছুটে চলা,
তবুও লাইনের পর লাইন ধরে 
নিয়ম মেনে এগিয়ে চলা..
তবুও উপেক্ষা করা,
তবুও স্বপ্নের হাতছানি 
দেখেও না দেখার ভান করা...

এখানে কারও হয় না সময়,
এক পলক এই অন্ধকারের আলো দেখায়।
এখানে কারও আসে না বিরক্তি,
বিরামহীন কর্কশ কাকের ডান শোনায়।






বুধবার, আগস্ট ১৩, ২০১৪

অনুগল্পঃ দিনের শুরুর ব্যস্ততার গল্পের খোঁজে.....



রাত্রিটা স্বস্তি আর অস্থিরতা পার করে দ্রুত পায়ে ভোরের দিকে ছুটে চলে, সাথে আমার হেটে চলা পথটাও অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ধাবিত হয়। একটা দিনের শুরুর আলোকিত হবার প্রক্রিয়াটাও বেশ জটিল। হুট করেই আলো চলে আসে না কিংবা খুব ধীরেও আসতে পারে না। মনে হয় কিছু সময় পরপর আকাশের কালো পর্দাটা আস্তে আস্তে কেউ শুভ্র একটা পর্দা দিয়ে পরিবর্তন করে দিচ্ছে। আর প্রতিবারই এই অন্ধকারটা একটু একটু করে কমে যাচ্ছে তাতে।

রবিবার, আগস্ট ০৩, ২০১৪

তুমিও কি..... বন্ধু!



○ তুমি কে?
● আমি মানুষ।

○ এর বাইরে?
● এর বাইরে একটা মন আছে আমার, যা সব মানুষেরই থাকে।

○ আর তার বাইরে?
● তার বাইরে আমার চিন্তা করার শক্তি আছে। মুক্তচিন্তা,বদ্ধ-চিন্তা, ভাল চিন্তা, খারাপ চিন্তা সব ধরনের চিন্তা করতে পারি আমি। এখানে আমি স্বাধীন। আমার চিন্তায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে কেউ কেউ তার প্রতিচ্ছবি ফেলতে পারে মাত্র।

○ তারও বাইরে কিছু আছে কি?
● হ্যাঁ! তারও বাইরে আরও একটা জিনিষ আছে। একটা শক্তি আছে। শক্তিটা হচ্ছে অন্যকে আপন করে নেবার কিংবা তাদের সবার আপন হয়ে যাবার। যে শক্তির বলে মানুষ মানুষের আপন হয়, বন্ধুত্ব তৈরি হয়, হয় ভাল কিছু সম্পর্কের।

আচ্ছা, এবার আমকে তুমি বল তো,
তোমার ভেতরেও কি আছে এই বৈশিষ্ট্য গুলি??
তুমিও কি আমারই মত মানুষ?
তোমার মনটাও কি প্রায় আমারই মতন করে চিন্তা করতে পারে??
বন্ধু হবার আর সেই বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখার মত প্রচণ্ড রকমের মানুষিক শক্তি কি আছে তোমার ভেতরে??



বন্ধু দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর শুভকামনা সকলের জন্যে…..



মঙ্গলবার, জুলাই ২২, ২০১৪

অদৃশ্য সুতোর টানে অদ্ভুত ঐ লাইনটার দিকে এগিয়ে চলা....



কে জানি একজন! কিছু বোঝার আগেই একটা অদৃশ্য সুতো হাতটায় বেধে দিল। সুতোটা সারাক্ষণ আমায় সামনের দিকে টেনে নিয়ে চলেছে। মাঝে মাঝে যখন সুতো টানে এগিয়ে চলায় বিরক্ত হয়ে দাড়িয়ে পড়তে চাই তখন বুঝতে পারি, এই সুতোটার টানের ক্ষমতা। আমার সর্বশক্তির প্রয়োগের পরও সে সেটা উপেক্ষা করে সে তার দিকে আমাকে টেনে হেঁচড়ে ঠিকই নিয়ে যায়। এর বিরুদ্ধে টানাটানিকরতে করতেক্লান্ত হয়ে এখন এর টানেই সামনে এগিয়ে চলেছি।

এই টানাটানির মাঝেই পথের বেশ কিছু জিনিষ দেখার বাকি থেকে যায়। অনেক প্রয়োজনীয় জিনিষও হাতছাড়া হয়ে তার টানের তাল সামলাতে গিয়ে। একটু দাড়িয়ে কোথাও বিশ্রাম নিয়ে নিবো, সেই অবস্থাটাও থাকে না। কত প্রিয়জনকে এই টানের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে যেতে দেখেছি। কত মানুষকে দেখেছি এর কাছে হার মেনে নিতে। কিন্তু কি জানেন? খুব ভয়ানক পরিস্থিতি দেখেও এই সুতোর টান এক বিন্দু পরিমাণ পর্যন্ত কমে না।

আবার কেউ কেউ আছে এই অদৃশ্য সুতোর টান সইতে না পেরে এর থেকে পরিত্রাণের রাস্তা খুঁজে বেড়ায়। জানি না, তারা কিভাবে চিন্তাও করতে পারে এই অসম্ভব কাজটার কথা। যা দেখা যায় না, যার কোন অস্তিত্ব নেই, তাকে ঠিক কোন উপায়ে বাধা দেব? পিছুই বা ছুটবো কেমন করে?

শেষে না পেরে তারা ভিন্ন উপায় খুঁজে বের করে। তারা তাদের সকল আক্ষেপ সুতোর উপর না দেখিয়ে নিজের উপর দেখানো শুরু করে। কারো কারো আক্ষেপের পরিমাণ এত বেশি থাকে যে, সুতোটা শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে তাকে ঐ লাইনটাকে পার করিয়ে দেয়।

ওহ! বলা তো হয়নি। সুতোটা কিন্তু সবাইকে ঐ লাইনের দিকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে। লাইনটা বড়ই অদ্ভুত। সবার জন্যে এক সমান নয়। কারো কারো দু’কদম এগুতেই লাইনের দেখা মিলছে তো আবার কারো কারো কদমের পর কদম ছুটে চলেছে, লাইনের দেখা আর মিলছে না। তবে লাইন ঠিকই আছে।

কেউ কেউ আবার এই লাইনের দিকে ছুটে চলার ভীতিকে বিভিন্ন উপায়ে পিছু ছাড়াতে ব্যস্ত। হরেক রকম পদ্ধতি তারাও প্রয়োগ করে যাচ্ছে। কিন্তু লাভের লাভ কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। সুতো ঠিকই তাদেরকেও ঐ লাইন বরাবর ছুটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

সুতোটার মত এই লাইনটাও আরেক রহস্য। এদিক থেকে লাইনটাকে কেউ যতই দ্রুত কিংবা দেরিতে পার করার চেষ্টা করুক না কেন, এই সুতোর টানের সাহায্য ছাড়া কেউ লাইনটাকে পার করতে পারে না। আবার কেউ একবার লাইনটাকে অতিক্রম করলে, তাকে এই ছুটে চলার পথটায় দেখাও যায় না। একেবারে অদৃশ্য হয়ে যায় লাইনটা অতিক্রম করার পরপরই।

মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে। লাইনটা পেরুনোর পরও কি এই অদৃশ্য সুতোর টানে টানে এগিয়ে চলে তারা? নাকি মুক্তি মেলে এই টান থেকে??

জানা হয় না...

এই প্রশ্নের জবাব সবাই একমাত্র আর কেবল মাত্র জানতে পারবে অদ্ভুত ঐ লাইনটাকে অতিক্রম করার পরেই.....








রবিবার, জুলাই ২০, ২০১৪

গল্পঃ শহুরে প্রশান্তির গল্পের খোঁজে…



সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে আর সবার মত আমার রাত হয় না। আমার খোঁজের শুরুটাই হয় ঐ সময়টাতে। আমি প্রশান্তির গল্প গুলি খুঁজে বেড়াই এই শহরের কোলাহলের ভীরে। পরিচিত মুখ গুলি যখন আপন আলয়ে ফিরে যাবার জন্যে ব্যাকুল হয়ে ছুটাছুটি লাগায় তখন আমি তাদের মাঝেই দাড়িয়ে সময় কাটাই। আমার তো আপন আলয় বলতে কিছু নেই। যা আছে তাকে বড়জোর একটা মাথা গোজার ঠাই বলা চলে। অবশ্য আমার মত অনেকেই সেই মাথা গোজার ঠাইয়ের দিকেই ছুট লাগায়। আমি তাদেরও ব্যস্ততা দেখি। একবার কোনোমত আপন ঠিকানায় পৌছাতে পারলেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচে এরা।

সন্ধ্যার পর রাতটা কেউ আর উপভোগ করে না। সবাই সেই সময়টাতে বিশ্রাম জিনিষটাকে খুঁজে বেড়ায় নিজ নিজ ঘুমের দেশে। যদিও এই শহরে কেউ সত্যিকার অর্থে ঘুমাতে পারে কি না তা নিয়ে আমর যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি এদের ঘুম নামের সেই অভিনয়। যে অভিনয় করে এরা নিজেকে বুঝ দেয় যে, এরাও শান্তিতে রয়েছে।

মাস শেষে যখন সবাই যখন হিসেব করতে ব্যস্ত সময় পার করে, আমি তখনও তাদের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখি। কি নিপুণ ভাবে কষ্ট সহ্য করে এরা সঞ্চয় করে চলেছে। আধ বেলা খেয়ে পূর্ণ এক বেলার শান্তি কি করে যোগায়! তা দেখলে আশ্চর্য হওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না। যখন আপনজনদের সাথে দূরালাপনিতে তারা যোগাযোগ করে, তাদের আবদার আর বায়না গুলি শোনে, তা নিয়ে কথা বলে। তখন কিন্তু তাদের চোখে মুখে একটা বিরক্তির ছাপ দেখা যায়। তবে সেই বিরক্তিটাকেও আমি তাদের উপভোগ করতে দেখি। এরা প্রতিটা জিনিষই উপভোগ করার এক অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।

এরপর যাদের এই শহরে একটা ছোট্ট হলেও আপন ঠিকানা বলতে কিছু আছে, আমি তাদেরও দেখে সময় পার করি। ক্লান্তিতে পরিশ্রান্ত হয়েও এরা আপন আলয়ে প্রবেশ করে সেই বিশাল একটা করে হাসি দেয়। সেই হাসির মূল্য এদের আজীবন কষ্টের পারিশ্রমিক থেকেও বেশি মনে হয়। ছোট্ট ছেলেটা কিংবা মেয়েটাকে কোলে জড়িয়ে সকল ক্লান্তি থেকে কেমন করে যেন পিছু ছাড়িয়ে নেয় এরা। চোখের পলকে যেন এদের শক্তি ফিরে আসে। নতুন উদ্যম নিয়ে এরা আনন্দে মেতে উঠে সেই ছোট্ট আলটার মধ্যে।

আমি চেয়ে চেয়েই দেখি। হাজারও ঝঞ্ঝা পেরিয়ে যখন কোন অপরিচিত রিকশাওয়ালা তার ছাউনিতে ফিরে যায়। আধো অন্ধকার আধো আলোর ঘরগুলিতে কেমন যেন একটা খুশির আমেজ ফিরে আসে। আমি দেখি তার সাত কি আট বছরের মেয়েটা কেমন করে তাকে জড়িয়ে ধরে। তার জন্যে কিছু একটা বোধয় আনার কথা বলেছিল, সেটা নিয়ে এসেছে কিনা তা জানতে চায়। রিকশাওয়ালা ক্লান্তির চেহারায় উজ্জ্বলতা ভরে সেই কাঙ্ক্ষিত বস্তুটা মেয়েটার হাতে তুলে দেয়। আর মেয়েটা সেই বস্তু নিয়ে ছুটে গিয়ে মা কিংবা পরিচিত কাউকে দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর রিকশাওয়ালা সেই ছুটাছুটি দেখেই কেমন করে যেন তার ক্লান্তিকে ভুলে যায়।

আমি দেখতে দেখতে সামনে এগিয়ে যাই। কোন এক ক্রসিঙের সামনে কিছু সময় অপেক্ষা করে দেখি পাশের ছাউনিটাতে লাইন ম্যান টেবিলটাতে মাথা রেখে ঘুমানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। আর সেখানেও এক প্রশান্তির ছাপ। যেন এভাবে ঘুমিয়েই শ্রেষ্ঠ ঘুমটা অর্জন করা যায়। তারপর যখনই একটা হুইসিল কিংবা ঘণ্টার শুনতে পায় ওমনি ছুট লাগায় ক্রসিঙের দিকে। আশে পাশে চেয়ে দেখে নেয় কোন লাইনটা থেকে ট্রেনটা ছুটে আসছে। কি বিরক্তিটাই না থাকে তার চেহারাটায় তখন। কিন্তু যখনই আবার ফুরসুত পায় সেই টেবিলটাতে মাথা রাখার। ওমনি তার সকল বিরক্তি কোথায় যেন ঢাকা পড়ে যায়।

আমি ক্রসিং পেড়িয়ে সামনে এগিয়ে চলি। এবার মাথা উঁচু কোন বিল্ডিং এর ছোট্ট বারান্দায় চোখ আটকে যায় আমার। সেখানে কেউ একজন জ্বলন্ত সিগার হাতে নিয়ে দোল কেদারায় বসে আছে। একটু একটু দুলছে আর একটু একটু করে আগুনে সিগার পুরিয়ে নিচ্ছে। আমি তার চেহারা দেখতে পাই না, শুধুমাত্র একটা ছায়া চোখে পড়ে। কিন্তু সেই ছায়াটাতে কোন প্রশান্তির ছাপ খুঁজে পাই না। আমি অপেক্ষা করি, অপেক্ষা করতেই থাকি একটা প্রশান্তি সেই ছায়ামূর্তিটাতে দেখার জন্যে। ওদিকে ভোর প্রায় হয়ে আসে। মসজিদের মুয়াজ্জিন “আল্লাহু আঁকবার” বলে মুসুল্লিদের ডাকতে শুরু করে। কিন্তু ঐ ছায়ামূর্তিটার ছায়ায় আমি প্রশান্তির ছাপ দেখতে পাই না......






মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০১৪

গল্পঃ ধ্বংসস্তূপে সব হারিয়ে


ইব্রাহীম, বয়স ৭ বছর। দুষ্ট দুষ্ট চেহারার চমৎকার মিশুক একটা ছেলে। তার বাবার বাজারে একটা ফলের দোকান আছে। মসজিদের সামনে যে খেলার মাঠটা রয়েছে তার দক্ষিণ দিকে তাদের কলোনি। রোজ বিকেলে আজিজ চাচার ছেলে ফারুকের সাথে ঐ মাঠেই খেলে সে। আজিজ চাচাও তাকে অনেক আদর করে। মাঝে মাঝে বাজার থেকে ফিরে আসার সময় ফারুক আর তাকে চকলেট দেয়।

সকালে মাদ্রাসা শেষ করে সে এখন স্কুলেও যায়। সেখানে কত মজার মজার জিনিষ শেখায়। আর খেলার জন্যে কত ধরনের ব্যবস্থা আছে। সময়টা হুট করেই শেষ হয়েযায়। ফিরে এসে তার ছোট বোনটার কাছে সারাদিন স্কুলে কি দিয়ে কেমন করে খেলে সেটা নিয়ে গল্প করে। তার বোনটা বড় বড় চোখ করে সেই গল্প শোনে আর আম্মুর কাছে গিয়ে বায়না করে তাকেও স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবার জন্যে। আম্মু ওকে বলে আগামী বছরই ওকে ভর্তি করিয়ে দিবে। তারপর দুই ভাই বোন মিলে একসাথে স্কুলে যাবে।

গত কয়েকদিন ধরে স্কুল যাওয়া বন্ধ, বাড়ি থেকেও বাইরে যাওয়া বন্ধ ঘোষণা করেছে ইব্রাহীমের বাবা। বাইরে নাকি বেশ ঝামেলা চলছে এখন। ঝামেলার ব্যাপারটা ইব্রাহীম ঘরে থেকেও বুঝতে পারে। প্রায়ই বেশ জোরে জোরে শব্দ হয় দূর কোথাও। শব্দের সাথে অল্প অল্প ভূমিকম্প অনুভব করে সে। তার বাবা আর আজিজ চাচা বাইরে বসে কি সব খারাপ সময়ের কথা আলোচনা করে। ঐ ধুপ ধুপ শব্দের সাথে নাকি অনেকের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে। অনেকে নাকি মারাও যাচ্ছে। হসপিটালে নাকি আহতদের জায়গা দিতে পারছে না ঠিক ভাবে। আশে পাশের অনেকেই নাকি তাদের স্কুলটাতে জায়গা নিয়েছে।

চাচা আরও বলল বাবা যাতে সময় থাকতে সবাইকে নিয়ে আমাদের স্কুলটাতে উঠে আসে। আমাদের কলোনিটা নাকি আর নিরাপদ না। বাবা বলে, সবার যা হবে আমাদেরও তাই হবে। দেখা যাক আর কয়টা দিন। এদিকে নাকি ওরা নাও নজর দিতে পারে। আজিজ চাচা বাবার কথায় তত আশ্বস্ত হতে পারে না। চিন্তিত মুখে বিদায় নিয়ে ফিরে যায়।

আম্মাও আজিজ চাচার কথা গুলি শুনেছে ঘরের ভেতর থেকে। বাবাকে বলল আজিজ চাচার কথা শোনার জন্যে। কয়দিন স্কুলে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হলে আবার ফিরে আসার কথা। বাবা বলে আরও কয়েকদিন দেখে তারপর একটা সিদ্ধান্ত নিবে। এরপর রাতের খাবার খেয়ে আমরা সবাই শুয়ে পড়লাম।

প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় ইব্রাহীমের। তার বাবার সাথে ঘুমায় সে। বাবা তাকে জাপটে ধরে বাইরে নিয়ে আসে। কলোনির ভেতরে অনেক কোলাহল, সবাই যার যার মত ছুটে বাইরে যাবার চেষ্টা করছে। এরই মাঝে আজিজ চাচা আর তার পরিবারকে দেখে বাবা আমাকে আজিজ চাচার কাছে দিয়ে তাকে বলল, “ওকে নিয়ে এগুতে থাকেন। আমি আপনার ভাবিকে নিয়ে আসছি।” চাচা বাবার কথায় সম্মতি দিয়ে একহাতে ইব্রাহীম আর অন্য হাতে ফারুককে নিয়ে ভীর ঠেলে সামনের দিকে এগুতে থাকে।

খুব বেশি দূর এগুতে পারলো না তারা। তার আগেই প্রচণ্ড শব্দের সাথে ধাক্কা অনুভব করে ইব্রাহীম। চাচার হাতটা খুব জোড়ে ধরার চেষ্টা করে সে। কিন্তু কেমন করে জানি ছুটে যায়। এর পরপরই আরও একটা শব্দ, সেটা আগের টা থেকেও খুব জোরে। তারপর শুধু উল্টে পড়ে যাওয়ার কথাই মনে আছে তার।

চোখ মেলে দেখে ফারুকের আম্মু তার দিকে ঝুঁকে তাকিয়ে আছে। মাথার বাম পাশে যন্ত্রণা হচ্ছে অনেক। ঝি ঝি একটা শব্দ এখনো কানে লেগে আছে। চোখ মেলতেই আন্টি জোরে চিৎকার দিয়ে বললও “জ্ঞান ফিরেছে!” আজিজ চাচাকে আন্টির চিৎকার শুনে এক কোন থেকে ছুটে আসলো। কপালে হাত দিয়ে দেখল, বলল আরও কিচ্ছুক্ষণ শুয়ে থাকতে।

চোখ ঘুরিয়ে চেয়ে দেখল তাদের স্কুলের দোতালার সিঁড়ির পাশে যে বড় রুমটা ছিল, ওটাতে আছে তারা। তারা একা নই, কলোনির অনেকেই আছে। সবাই কেন জানি কান্না করেই চলেছে। গুমোট একটা পরিবেশ এখানে। তার পাশেই আন্টিকে জড়িয়ে ধরে ফারুকও ভয় পাওয়া চোখে তাকিয়ে দেখছে সবাইকে। ফারুকের গালে কালো একটা দাগ দেখতে পেলো সে। তারপর হুট করেই আবার কেমন যেন সব অন্ধকার হয়ে আসলো চারপাশে।

এরপর আবার চোখ মেলে দেখে দিনের আলো দেখা যাচ্ছে। সে এখনো আন্টির কোলেই শুয়ে আছে। আর আন্টি দেয়ালে ঘেঁষে ফারুককে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে। আস্তে করে উঠে বসলো, আশে পাশে যারা ছিল তাদের প্রায় সবাই ঘুমাচ্ছে। বাইরে কয়েকজন আছে, তাদের ফিসফিসে আওয়াজের কথা শোনা যাচ্ছে। উঠে দিয়ে দরজার সামনে দাড়ায় ইব্রাহিম। তাকে দেখেই আজিজ চাচা ছুটে এসে সামনে হাঁটু মুড়ে বসলো। জিজ্ঞাস করলো খারাপ লাগছে কিনা। উত্তরে বলল “এখন আর মাথায় যন্ত্রণাটা হচ্ছে না”। এদিক সেদিক তাকিয়ে চাচাকে জিজ্ঞাস করল “আব্বু আম্মু ওনারা কোথায়?” আজিজ চাচা ইব্রাহীমকে জাপটে ধরে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ল শুধু…..






রবিবার, জুলাই ০৬, ২০১৪

হিজিবিজি ভাবনাঃ অপেক্ষমাণ



অন্ধকার এই রাত্রি যাপন, কার অপেক্ষাতে?
– জানা নেই।
জানা আছে এই মহাকালকে সাক্ষী রেখে এমনই লক্ষ কোটি যুবক জেগে জেগে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। বিসর্জন দিয়েছে চোখের বিশ্রাম আর মনের শান্তিটাকে। অজানা কোন উদ্ভট ইশারার অপেক্ষায় প্রহর গুনেছে, এই অন্ধকার কোনে বসে।

কিন্তু হায়!
অপেক্ষা শুধু অপেক্ষার প্রহরই বাড়িয়ে দিয়ে গেছে, দিয়ে গেছে যন্ত্রণা অশান্ত এই মনটা জুড়ে। কেউ এগিয়ে আসেনি তার সেই যন্ত্রণা ঘোচাতে কিংবা একটু সান্ত্বনা দিতে। উল্টো “আতেল” আর “বোকা” বলে খেতাব দিয়ে গেছে যখনই পেয়েছে সুযোগ ঐ দিনের আলোতে।

নেই, সত্যিই কিছু বলার নেই।
কারণ, এখনো সেই যুবক অপেক্ষা করে।
অপেক্ষা, মহাকালকে সাক্ষী রেখে সেই দীর্ঘ অপেক্ষা……






শনিবার, মে ১০, ২০১৪

চশমা ঘিরে ভুলগুলি




ভুলে যাই গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই। এর কারণে কথাও কম শুনতে হয়নি এই জীবনের পার করা সময় গুলিতে। প্রতিবার ভুল যাবার পরপরই নানা কথা শুনতে শুনতে এখন সব গা'সওয়া হয়ে গেছে। তবুও কিছু জিনিষ ভুলে যাবার পর যখন মনে পড়ে কিংবা ভুল হবার পর যখন বুঝতে পারি তখন নিজেকেই অনেকটা অবাক হতে হয় সেই ভুলটার জন্যে।


সবচেয়ে বেশি ভুল হয় আমার চোখের সামনে, নাকের ডগায় বসে থাকা চশমাটাকে নিয়ে। বেশ অনেকটা সময় ধরে এই বস্তুটার উপর নির্ভর করার কারণে এখন এইটাকে আর শরীরের বাইরে আলাদা কিছু মনে হয় না। বরং নিজের অংশ বলেই বিশ্বাস করে মন। আর তাই ভুলটাও একেই নিয়ে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে করে।


মাঝে মাঝে বিছানায় যাবার পরও ভুলে যাই এটা চোখ থেকে খুলে রাখার কথা। এমনও হয়েছে অনেক যে রাতভর ঘুম ভেঙ্গে সকালে যখন মুখের উপর হাত রেখেছি তখন সেখানে আমার চশমার অবস্থান জানতে পেরেছি। আমি ঘুম দিলেও তাকে ঘুমোতে দিতে পারি নি রাত ভরে। তারপর যখন ব্রাশ করে চোখ মুখে পানি ছুড়ে দিচ্ছি তখন তার গ্লাস ভেজার পর তাকে তার কাজ থেকে অব্যাহতি না দেয়া আর আমার কাজের খামখেয়ালিপনা নজরে পড়েছে। আর গোসল করার সময়ের কথা আর নাই বা বললাম। এই ভুলটা তো অন্যগুলির চেয়ে বেশি বেশি ঘটে।


আমার এই খামখেয়ালিপনার জন্যে ভুগতেও হয়েছে বেশ অনেকবার। প্রথম যেই চশমাটা ব্যবহার করতাম সেটা হ্যারি পটারের চশমার মত ছিল। প্রথম জিনিষের মূল্যায়ন একটু অন্যরকমই থাকে সকলের কাছে। আমার কাছেও ছিল। পড়তে বসার আগে কিংবা যখন মাথা ব্যথা হবে বা চোখে জ্বালা করছে বুঝতে পারতাম তখন সেই ব্যথা বা চোখ জ্বালা নিয়েই তাকে খুব সুন্দর করে চশমার সাথে দেয়া কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতাম। তারপর সেটা নাকের ডগায় বসাতাম খুব সাবধানে। বারবার এদিক সেদিক করে তাকিয়ে দেখতাম সব ঠিকঠাক মত হয়েছে কিনা।


বহু সাধের সেই চশমাটাও একদিন অসাবধানতায় ভেঙ্গে ফেলি বইয়ের চাপা দিয়ে। আর ভেঙ্গে ফেলেই নিজের ভেতর অপরাধ বোধ আর ভয় কাজ করতে শুরু করে। কাকে বলে বকা শুনতে হবে সেই চিন্তা করে আমি আর সেটা কাউকে জানাই নি। প্রথমে কিছুদিন চুপচাপ করেই থাকতাম। মাথা ব্যথা আর চোখ জ্বালা হলে যতটা সম্ভব সহ্য করে থাকার চেষ্টা করতে থাকি। কিন্তু এভাবে বেশি দিন থাকা যায় না, ধরা পড়তেই হয়। আমিও ধরা পড়লাম। আব্বা খুব রাগ হলেও কিছু বলেনি। ভাঙ্গা চশমাটা নিয়ে দু'দিন বাদে নতুন চশমা নিয়ে এসেছিল (তখন ২ দিন সময় লাগাত একটা চশমার অর্ডার ডেলিভারি দেবার জন্যে)। সে যাত্রায় আব্বা কিছু না বললেও আম্মা প্রচুর বকা দিয়েছিল।


মাঝে অল্প কিছুদিন আমাকে হোস্টেল কিংবা ছাত্র-মেসে থাকতে হয়েছে। সেখানেও সমবয়সী রুমমেট আমার এই চশমা পড়ে ঘুমিয়ে যাওয়া আর আনুষঙ্গিক খামখেয়ালি ব্যাপার গুলি দেখে বার বার অবাক হয়েছে, মাঝে মাঝে বিরক্ত ও হয়েছে। এখন যখন মাঝে মাঝে তাদের কারো সাথে দেখা হয় কিংবা কথা হয় তখনও কথার এক পর্যায়ে জিজ্ঞাস করে ফেলে "তুমি কি এখনো চশমা চোখেই ঘুমাও"। নিজের ভুল গুলির জন্যে ঐ সময়টাতে খুব মজা পাই।


জানিনা এই ভুল গুলি শোধরাতে পারবো কি না। কিন্তু এখন এই ভুল গুলির জন্যেই মনে হয় বেঁচে আছি, ভালো আছি.....







শুক্রবার, মে ০৯, ২০১৪

প্রতীয়মান জীবনের কথা


চারপাশে তাকিয়ে দেখুন, হাজার কোটি মানুষ আপনার চারপাশ জুড়ে। হাঁটছে, চলছে, অপেক্ষা করছে, ছুটছে, খেলছে। সবাই ব্যস্ত, কারো কোন ফুরসুত নেই। বিছানা ছেড়ে জগিং করা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাবার আগ পর্যন্ত সবাই কিছু না কিছু করেই চলেছে। সকলের কাজই তার নিজ নিজ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে অন্যের দিকে নজর দেবার সময় নেই কারো।


এই মানুষ গুলির মধ্যেও আবেগ-বিবেক সবকিছুরই অবস্থান রয়েছে। যখনই কোন দুর্যোগ কিংবা খারাপ সময় দেখা দিবে তখন এদের সবার বিচলিত চেহারাই দেখা যায়। যখন বড় ধরণের কোন প্রাপ্তির সন্ধান মিলে তখন সবার মধ্যে একটা উল্লাসিত ভাব লক্ষ্য করা যায়। একজন বিপদে পড়লে এদেরই একশত জনের একজন কেউ সাহায্যের জন্যে এগিয়ে আসে, বাকি নিরানব্বই জন দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যায়। এরা সকলেই সেই ব্যস্ত, ছুটন্ত মানুষ।


আর এই ব্যস্ত ছুটন্ত মানুষ গুলিই আমি, আপনি, আমরা সকলে। ছোটার ধরণ, প্রকৃতি, গতি ভিন্ন হলেও সবাই ছুটছি উন্নতির আশা করে, উন্নতির শেখরে পৌঁছানোর জন্যে। যদিও জানা নেই ছুটে ঠিক কোন স্থানে থামতে হবে আমাদের।


নির্দিষ্ট করে কারো কথা নয়, সকলের মাঝেই এই একই কথা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রতীয়মান।






বৃহস্পতিবার, মে ০১, ২০১৪

সভ্য সমাজের আধুনিক দাস



পৃথিবী এগিয়েছে, মানুষ দিনে দিনে আরও বেশি সভ্য হয়েছে। আগে অন্ধকার যুগে বসবাস করতো আর এখন আধুনিকতার যুগে বসবাস করে। সত্যিই অনেক উন্নতি হয়েছে মানব সমাজের।

কিন্তু এখনো দাস প্রথা এই সভ্য মানব সমাজ থেকে বিলুপ্ত হয়নি। যদিও আজকাল কেউ এটাকে আর দাস প্রথা বলে না। আর বলবেই বা কেন? আজ কাল তো আর সেই অন্ধকার যুগের মত মানুষ হাট বাজারে বিক্রি করা যায় না। তারা এখন বিক্রি হয় তাদের শ্রমের দ্বারা, হাড় ভাঙ্গানি খাটুনির দ্বারা, আর লোক ঠকানো পারিশ্রমিকের দ্বারা।

কিন্তু বিক্রি হয়, হাতে পায়ে লোহার শিকলের বদলে এখন অদৃশ্য দারিদ্রের বাধনে বন্ধী হয়।



জয় হোক!
আজকের সভ্য সমাজের এই নতুন দাশ প্রথারই জয় হোক.......







বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০১৪

একটা অসম্ভব ভালবাসাকে জয় করার গল্প.....

বর্ষণমুখর কোন এক রাতে গল্পের শুরু.....

 
 
 
 
 
 
 
 
 
      
 
 
 
 
 
 



...... আর তারপর কাছাকাছি থাকা সকল সমস্যার অবসান ঘটিয়ে, সবটা সময়ের জন্যে।









বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০১৪

পছন্দের কার্টুনঃ Popeye



I'm Popeye the Sailor Man,
I'm Popeye the Sailor Man.
I'm strong to the finich, cause I eats me spinach.
I'm Popeye the Sailor Man....


কি! কারো কথা মনে পড়ে? নাবিকের পোশাক গায়ে পেশিবহুল একটা ক্যারেক্টারের কথা?? শক্তির প্রয়োজন পড়া মাত্র Spinach খেয়ে শক্তি জোগাড় করা কার্টুনটার কথা?

হ্যাঁ, আমি Popeye এর কথাই বলছি, এটা জনপ্রিয় কার্টুন ক্যারেক্টার পপাই (Popeye) এর থিম সং। খুব ছোট বেলায় যেই কার্টুন সিরিজ গুলি নিয়মিত অনেক আগ্রহ নিয়ে দেখতাম এবং এখনো সময় পেলে যা দেখতে বসে যাই তাদের মধ্যে একটা এই Popeye। এখনো মনে পড়ে, সকালে স্কুলে যাবার আগে রেডি হতে হতে আর নাস্তা করতে করতে এই কার্টুনটা দেখতাম তখন। 

Popeye এর বয়স কত হতে পারে একটু ধারনা করুন তো! 
হুম, Popeye কিন্তু বয়সে অনেক অনেক বয়স্ক। একে প্রথমে দেখা যায় ১৯২৯ সালের ১৭ই জানুয়ারি "দৈনিক কিং" পত্রিকায় কমিক থাম্বলাইন হিসেবে। মার্কিন কার্টুনিস্ট এলিজে ক্রিসলার সেগার [Elzie Crisler Segar] এর হাত ধরে আমাদের সামনে আসে এই Popeye। তখন অবশ্য Popeye শিরোনামে ছিল না থাম্বলাইনটি, তবে অল্প কিছুদিনের মাঝেই সেটি শিরোনামে চলে আসে। 

এলিজে ক্রিসলার সেগার একাধারে কার্টুনিস্ট, স্ক্রিপ্ট লেখক, নাট্য ও টেলিভিশন এনিমেটেড কার্টুন নির্মাতা। ১৯১৯ সাল থেকে প্রকাশিত Thimble Theatre কার্টুন ধারাবাহিকের দশ বছর বয়সে Segar এর হাত ধরে Popeye পত্রিকার পাতা থেকে থিয়েটারে উঠে আসে। পরে ১৯৩৮ এ Segar এর মৃত্যুর পর তার সহকারী Bud Sagendorf হাত ধরে এগিয়ে চলে Popeye। সে সময় পত্রিকায় প্রতি রবিবার Hy Eisman এর লেখা আর অঙ্কনে থাম্বলাইন আকারে প্রকাশ পেতে থাকে কার্টুন টি। 

১৯৩৩ সালে Max এবং Dave Fleischer এর Fleischer Studios, Thimble Theatre এর কার্টুন কারেক্টর গুলিকে শর্ট সিরিজে কার্টুনে রূপা দান করে Paramount Pictures এর জন্যে। ৩০ শতকের জনপ্রিয় কার্টুন শো গুলির একটিতে পরিণত হয় এই Popeye। ১৯৫৭ পর্যন্ত Paramount Pictures এর অধীনেই কার্টুনটি প্রকাশিত হতে থাকে, পরে এর সত্ত্বাধিকারী নিয়ে নেয় Time Warner এর সহায়ক প্রতিষ্ঠান Turner Entertainment। পরে Warner Bros. Entertainment অধীনে এটি প্রকাশিত হতে থাকে।

এই সময়ের মাঝে Popeye কমিক বই, টেলিভিশনের কার্টুন, বিভিন্ন সামগ্রীর উপস্থাপনের চরিত্র, ভিডিও গেম সহ অসংখ্য জিনিষের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমাদের সামনে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮০ সালে জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা রবিন উইলিয়ামস [Robin Williams] কে Popeye এর চরিত্রে রূপায়িত করে Robert Altman একটি মুভি তৈরি করেন, যা এই সময়ও ৫৭% রেটিং পেয়ে অবস্থান করছে বিভিন্ন ক্রিটিকদের তালিকায়। ২০০২ এর টিভি গাইড তালিকা অনুসারে "50 Greatest Cartoon Characters of All Time" এর ২০ তম অবস্থানে রয়েছে প্রিয় Popeye কার্টুন ক্যারেকটারটি।

অনেক কথা বললাম, এবার Popeye এর থিম সং টি শুনে নিন দ্রুত। আরো থাকলো রবিন উইলিয়ামস অভিনিত মুভি থেকে গানটির আংশবিশেষ ইউটিউভ থেকে।




শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০১৪

মজার স্মৃতি..... "ঢাকা কলেজ"

একবার এক দূর-সম্পর্কের ফুপাত বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি। আমরা গিয়ে পৌঁছলাম গায়ে হলুদের বেশ কিছু সময় আগে। আরও ক'জন ফুপাত ভাই ইতোমধ্যে সেখানে চলে এসেছে ততক্ষণে, অবশ্য তারা সবাই আমার চেয়ে বয়সে ঢের বড় :| ঐ ফুপুর বাসায় হাতে গোনা কয়েকবার গিয়েছি মাত্র। তাই ঐ রকম ভাবে কাউকে চিনি না এই ফুপাত ভাইয়েদের ছাড়া। আর এই ফুপাত ভাই গুলির সাথেও আমার দারুণ খাতির। আসলে বোকা বোকা বলে সবাই একটু অন্যরকম আদর করতো আর কি :P

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষে যখন পরের দিন বিয়ের খুব তোড়জোড় ভাবে প্রস্তুতি চলছে তখন একজন জানালো বিয়ে বাড়ির পানের স্টক শেষ হয়ে এসেছে। পান আনতে হবে, নতুবা যারা কাজে এসেছে তারা কাজ করবে না। কাজ করবে না সেটা আসলে মজা করে বলা, তবে তাদের রাত ভর কাজ আর তার ফাকে গল্পগুজব করার জন্যে পান লাগবেই লাগবে।

তো বড় ফুপাত ভাইটাকে বলা হল বাজার থেকে পান নিয়ে আসতে। রাত তখন মাত্র সাড়ে ন'য়টা। কিন্তু গ্রাম, সেখানে রাত ৮টা মানেই অনেক রাত। বলার জন্যে বলছি না। বিয়ে বাড়ি আর কয়েক ঘর বাদ দিয়ে বাকি সবাই ইতোমধ্যে নাই হয়ে গেছে। আর বাজারটা বাড়ি থেকে হাটা পথে আধঘণ্টার দূরত্বে। ফুপাত ভাই যখন রেডি হয়ে যখন পান আনতে রওনা হচ্ছে তখন বাকি আরও দুই ফুপাত ভাই তারাও বললও যাবে তার সাথে। আর সবাই যখন চলে যাবে তখন আমি একা একা কি করবো ভেবে আমিও তাদের সাথে রওনা দিলাম।

আড্ডা আর দুষ্টামি করতে করতে সবাই যাচ্ছি বাজারের দিকে। বাজারের খুব কাছাকাছি এসে দেখি RAB এর একটা গাড়ি, আর যতদূর মনে পড়ে RAB তখন একেবারেই নতুন আর একটা তাদের ঘিরে ভীতিকর একটা অবস্থা সবার মনেই আছে। আরও কিছুদূর এগুনোর পর পেছন থেকে ডাক পড়লো। ঘুরে দেখলাম দুজন এগিয়ে আসছে। কাছাকাছি এসে জিজ্ঞাস করলো-

- এত রাতে কোথায় যান আপনারা?
বড় ফুপাত ভাই উত্তরে বলল,
- স্যর বিয়ে বাড়িতে পান লাগবে। বাজারে যাচ্ছি পান আনার জন্যে।
- এত রাতে পান? দোকান-পাট তো সব বন্ধ হয়ে গেছে। নাকি অন্য কিছুর জন্যে যাচ্ছেন?
- না স্যার, আপনারা চাইলে সাথে আসতে পারেন। পানের জন্যেই এসেছি।
- আচ্ছা, তা আপনি কি করেন?

ভাইয়া তখন তার ডিগ্রী কলেজের নাম বলল, জানাল কোন বিভাগে পড়ছে। তারপর অপর আরেক ভাইকে জিজ্ঞাস করলো সে কি করে। সেও উত্তরে কলেজের নাম আর তার বিভাগের কথা জানালো। এবার তৃতীয় ভাইকে জিজ্ঞাস করলো, আপনি?

সে উত্তরে বলল "ঢাকা কলেজ"।

এইবার RAB সদস্যদের ২য় লোকটি (ইনি এত সময় কোন কথা বলেন নি) বলল,
"ঢাকা কোথায় সেটা বল।"

সম্বোধন হঠাৎ "আপনি" থেকে "তুই" তে নেমে আসায় ভাইটা একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল সে আবারও বলল "ঢাকা কলেজ"। এই উত্তর শুনে দ্বিতীয় লোকটা এগিয়ে এসে তার হাতে ধরল। প্রথম জন জিজ্ঞাস করলো, ঢাকায় কোন কলেজে? ( ঠিক তখন ও বুঝি নি তারা ঢাকা কলেজকে কেন চিনতে পারছিল না )

এবার প্রথমে যেই ভাইয়া কথা বলছিল তাদের সাথে সে বুঝিয়ে বলল, "স্যার ঢাকার অবস্থিত ঢাকা কলেজে পড়ছে সে"। প্রথম জন না চিনলেও বুঝতে পারলো কথাটা কিন্তু ২য় লোকটা কোন কারণে কথাটা বিশ্বাস করতে চাইছিল না। তাই সে ভাইয়ের আইডি কার্ড দেখাতে বলল। ওয়ালেট থেকে আইডি কার্ড দেখানোর আগ পর্যন্ত ঐ ভাইয়ের হাত ছাড়লই না লোকটা। অবশেষে যখন আইডি কার্ড দেখে প্রথম জন ছাড়তে বলল তখন ছাড়ল।

সব শেষে আমাকে জিজ্ঞাস করলো, তুমি? ( আমি বয়সে ছোট সেটা এখানেও প্রমাণিত :( :P )
আমি স্কুলের নাম বললাম। সেটা নিয়ে আর কোন কথা বলল না তারা। যদিও ভয় পাচ্ছিলাম আমাকে না আবার বলে স্কুলের আইডি কার্ড দেখাও :P কারণ তখন আমার কাছে কোন আইডি কার্ড ছিল না।

এবার ২য় লোকটি সবাইকে সার্চ করা শুরু করলো। এবারও হতাশ হল সে। তার মনের মত কিছু না পেয়ে আবার প্রথম লোকটার পেছনে গিয়ে অবস্থান নিলো। তারপর ১ম লোকটা বলল, দ্রুত ফিরে আসবেন। আমরা এখানেই আছি।

দ্রুত পান নিয়েই ফিরে আসলাম আমরা সবাই। হাটতে হাটতে আড্ডা যদিও হচ্ছিল, তবুও সবার মাঝে একটা আতঙ্ক কাজ করছিল তখন। যদিও ফেরার পথে তাদের সাথে আর দেখা হয়নি।

কলেজে উঠার পর কোন একটা অনুষ্ঠানে আবার সেখানে গেলাম। সেই ফুপাত ভাইয়েরাও আসলো। সন্ধ্যার দিকে আমরা কোন কারণে সেই মার্কেটে গিয়েছিলাম। কিন্তু ফিরতে ফিরতে মোটামুটি ভাল রাত হয়ে গেল। ফেরার সময় যেখানে RAB সদস্যরা জিজ্ঞাসা বাদ করেছিল সেখানে এসেই "ঢাকা কলেজে" পড়া ভাইটা "ভাইয়ে, ঢাকা কলেজ" বলেই হাসতে শুরু করলো। বাকি দুইজনও তার কথা শুনে হাসছে।


আজ সকালে Ask.fm এ একটা প্রশ্ন করা হয়েছে "Have you ever got into trouble with the police?"
প্রশ্নটা পড়েই এই "ঢাকা কলেজ" এর এই ঘটনাটা মনে পড়ে গেল B-)








রবিবার, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০১৪

সাধারণ একটা গল্প, আর কিছু বিষয় অনুধাবন......

একটা গল্প বলি, আহামরি কোন গল্প না। ছোটবেলায় ঘুমতে যাবার আগে কাকা'র কাছে শোনা গল্প। সাধারণ গল্প, আশা করি অনেকেই জানে এটা।

এক লোক কাজের সন্ধানে আরেক জন লোকের নিকটে গেল। কাজ চাইতে আসা লোকটিকে নিয়োগ দিলো অপর লোকটি তবে শর্ত এটা যে তার সমুদয় কাজের পারিশ্রমিক নিয়োগকর্তা মারা যাবার পর পাবে। নিয়োগ কর্তা বলল যে "তুই সারাজীবন বসে খেতে পারবি ঐরকম পারিশ্রমিক পাবি"
কাজ চাইতে আসা লোকটি মনের আনন্দে কাজ করতে লাগলো। প্রচুর সেবা-যত্ন করতে লাগলো নিয়োগকর্তাকে। দেখতে দেখতে একটা সময় নিয়োগকর্তা মৃত্যুশয্যাতে পৌঁছল। ঐ সময় নিয়োগকর্তা সেই লোকটাকে একটা বক্স দেখিয়ে বললেন এটা যেন সে তার মৃত্যুর পর খোলে। এটাতেই তার এত বছরের পারিশ্রমিক রয়েছে, যা সে আজীবন বসে খেতে পারবে।

নিয়োগকর্তা অল্প কিছুদিনেই মারা গেল। আর লোকটা তার পারিশ্রমিকের বাক্স সামনে নিয়ে বসে আছে।


এখন বাকি অংশটা পড়ার আগে একটা প্রশ্ন করছি  (যেমনটা গল্পটা শোনার সময় অতি আগ্রহে আমি আমার কাকাকে জিজ্ঞাস করেছিলাম, তেমন)। এই বাক্সের ভেতরে কি থাকতে পারে? এমন কত পরিমাণের টাকা থাকতে পারে যা তার আজীবন বসে খাবার মত যোগাড় হবে? বা এমন কি জিনিষ হতে পারে যা এই নিশ্চয়তা দিতে পারে। (স্বাভাবিক ভাবেই আমার তখনকার প্রশ্নটা এত বড় ছিল  না, তখন প্রশ্নের পেছনে বিস্ময় কাজ করেছে আর প্রশ্নের বিপরীতে আমার উত্তরের চাওয়াটা  ছিল সাধারণ কিছু। হিন্ট হিসেবে বলবো- বাক্স ভর্তি টাকা, অথবা অনেক মূল্যবান কিছু যেমন দামী হীরা কিংবা এমন কিছু।)

উত্তরটা বলার আগে আরও কিছু কথা বলি। এই গল্পটার সারমর্ম বা মূল কথা গুলি ঐ বয়সে আমি বুঝি নি, বুঝেতে পেরেছি অনেক পরে। কিংবা হয়তো এখনো পুরোটা বুঝে উঠতে পারি নি। তবে বুঝে উঠতে না পারলেও এখন কিছু করার নেই। কারণ, গল্প বলা লোকটা হারিয়ে গেছে। জিজ্ঞাস করে জেনে নিব সে উপায় নেই......

লোকটা কাঁপা কাঁপা হাতে বক্সের র‍্যাপিং খুলল। বক্সের মুখ খুলে ভেতরে উকি দিলো। ভেতরে দুইটা মাত্র জিনিষ দেখতে পেলো। প্রথমটা একটা কাগজ আর দ্বিতীয়টা একটা পিড়ি (মোড়া)। লোকটা কাগজ হাতে নিলো, তাতে কিছু লিখা আছে-

আমি বলেছিলাম এমন একটা জিনিষ দিব, যা তুমি আজীবন বসে খেতে পারবে। তুমি যে পিড়ি (মোড়া) টা দেখছ তার উপর বসে তুমি আজীবন খেতে পারবে। এটাই তোমার পারিশ্রমিক।


এখন নিয়োগকর্তাকে আমি ঠগ আর কাজ চাইতে আশা লোকটাকে আমি লোভী বা বোকা বলবো না। নিয়োগকর্তা তাকে দেয়া কথা ঠিকই রেখেছে। শুধু কাজ করতে আসা লোকটা যা আশা করেছে তা সে দিতে পারে নি, বা দেয়নি। কিন্তু সে তার কথা রেখেছে। আর কাজ চাইতে আশা লোকটাকে এই কারণে লোভী বা বোকা বলবো না কারণ আমরা প্রতিনিয়ত বর্তমান অবস্থা থেকে ভালো, আরও ভালো, অনেক ভালো থাকার আশাতেই কাজ করি, আর তার কারণে অনেক মানুষকেই বিশ্বাস করি। অনেক সময় সব হারাতে হতে পারে জেনেও বিশ্বাস করতে হয়।

এই গল্পটার অনেক রকম মূলকথা আমি ভিন্ন ভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বুঝতে পেরেছি। তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে-

 ♦ কাউকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে তার পিছু ছুটা উচিৎ না, নিজের চিন্তাশক্তি আর বিবেক কাজে লাগাতে হবে।

 ♦ চাইতে হলে তা পরিষ্কার ভাবে চাইতে হবে, আংশিক প্রকাশ করে বাকিটুকু মনের ভেতরে দাবিয়ে রেখে নয়।

 ♦ কোন কাজ সেটা কার জন্যে করছ, কি জন্যে করছ আর কেন করছ তার পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে।

 ♦ নিজের অবস্থান, চাহিদা কে নিজের গণ্ডীর ভেতর থেকে দেখতে হবে। "আরও বেশি, আরও বড়, অনেক অনেক বেশি" এটা যথা সম্ভব পরিত্যাগ করতে হবে। তাই বলে বড় আশা করতে মানা করছি না। বলছি এমন আশা না করতে, যা গণ্ডিতে দাড়িয়ে অসম্ভব আর গণ্ডির বাইরে গিয়ে করার পর তা গণ্ডিতে ফিরে আসতে বাধা তৈরি করে। নিজের অবস্থানে চাহিদা গুলিকে যথাসম্ভব পরিপূর্ণ ভাবার মত মানুষিক শক্তি থাকতে হবে।

 ♦ কোন কাজে কথা দেবার আগে তা ভালো করে বুঝে নিতে হবে, কারণ কথা দেবার পর একটা প্রত্যাশা কাজ করবে সেই কথার উপর। সেটা সাধারণও হতে পারে আবার অনেক জটিল কিছুও হতে পারে। তাই এই ব্যাপারে বুঝে শুনে পরে সিদ্ধান্তে আসতে হবে।

 ♦ কাজ জানলে আর করতে পারলে সেটা তোমাকে আজীবন বসিয়েই খাওয়াতে পারবে। কারো উপর নির্ভর করতে হবে না।



যখন গল্পটা শুনেছি তখন কিন্তু মজা পেয়েছি। মজা পেয়েছি কারণ ছোট বাচ্চারা অল্পতেই মজা খুঁজে নিতে পারে। আজীবন কাজ করে কেউ কাউকে পিড়ি(মোড়া)  দিতে পারে সেটা জানতে পেরে মজা পেয়েছি। কিন্তু আমার মত এখনও অনেকে গল্পটা শুনে এই বড় বেলায় মজা নেয় কিংবা তার চেয়েও খারাপ ভাবে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে। গল্পের এদিকে দাড়িয়ে গল্পটা শুনতে যতটা মজাদার মনে হয় গল্পের ভেতরে দাড়িয়ে গল্পটাকে ততটাই কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা হিসেবে পাওয়া হয়।