দূর থেকে কে যেন হাত নাড়ছিল, আমার ডিঙ্গি তখনও অনেক দূরে। ডিঙ্গিতে আপন খেয়ালেই নাটাই হাতে ঘুড়িটাকে উড়িয়ে দিয়েছিলাম সেই কবে। আর ঘুড়িটাও বাতাসের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করে উড়তে লাগল ভিন দিশাতে। দাড় ছিল না আমার। ডিঙ্গিটাকে অনেক চেষ্টাতেও এগিয়ে নিতে পারি নি পাড়ের দিশায়। অসহায়ের মত অপেক্ষা করছিলাম ঘুড়িটার মত পালটাবার, অপেক্ষা ছিল স্রোতের দিক পাল্টে যাবার।
তারপর একটা সময় সত্যি সত্যি ঘুড়িটা তার মত পালটাল। বাতাসকে বলে কয়ে পাড়ের দিশাতেই ছুট লাগাল। এই দেখে স্রোতের মনও বোধ করি গলতে শুরু করল। সেও ঘুড়ির মত দিক পাল্টে ডিঙ্গিটাকে মৃদু ধাক্কায় পাড়ের দিকে নিয়ে চলল। ধীরে ধীরে স্রোতের ধাক্কায় যখন ডিঙ্গিটা পাড়ে ভিড়ল, দিন গড়িয়ে তখন সন্ধ্যা প্রায়। পাড়ের দিকে যতই এগিয়ে যাচ্ছিলাম, আহবানের হাত গুলি ততই পরিষ্কার হচ্ছিল। কিন্তু আলো কমে যাওয়াতে সবই মলিন লাগছিল তখন। একদম পাড়ে যখন ডিঙ্গি ভিড়ল, তখন দেখলাম আহ্বানের সেই সে হাত, সে তো আর ভিন কিছুই নয়, আমার মনে আকটে থাকা সেই পুরাতন মরীচিকাই ছিল!
আক্ষেপ ছিল আমার অনেক অনেক বেশি! আহ্বানের হাতকে ঘিরে নয়, তাকে না পাওয়াতেও নয়। বরং ঘুড়িটার উপরেই যত আক্ষেপ ছিল আমার। উড়েছিলিই যখন তখন মাঝ পথে কেন আবার মত পাল্টে এ পথে এলি? ভিন দিশাতেই উড়ে চলতি। আমি না হয় মনের ভেতর ঐ মরীচিকার ডাক ধরে রেখেই সান্ত্বনা দিতেম নিজেকে। তাকে না দেখার আফসোসেই না হয় মরতাম বাকিটা জীবন...
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন