বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০১৪

পছন্দের কার্টুনঃ Popeye



I'm Popeye the Sailor Man,
I'm Popeye the Sailor Man.
I'm strong to the finich, cause I eats me spinach.
I'm Popeye the Sailor Man....


কি! কারো কথা মনে পড়ে? নাবিকের পোশাক গায়ে পেশিবহুল একটা ক্যারেক্টারের কথা?? শক্তির প্রয়োজন পড়া মাত্র Spinach খেয়ে শক্তি জোগাড় করা কার্টুনটার কথা?

হ্যাঁ, আমি Popeye এর কথাই বলছি, এটা জনপ্রিয় কার্টুন ক্যারেক্টার পপাই (Popeye) এর থিম সং। খুব ছোট বেলায় যেই কার্টুন সিরিজ গুলি নিয়মিত অনেক আগ্রহ নিয়ে দেখতাম এবং এখনো সময় পেলে যা দেখতে বসে যাই তাদের মধ্যে একটা এই Popeye। এখনো মনে পড়ে, সকালে স্কুলে যাবার আগে রেডি হতে হতে আর নাস্তা করতে করতে এই কার্টুনটা দেখতাম তখন। 

Popeye এর বয়স কত হতে পারে একটু ধারনা করুন তো! 
হুম, Popeye কিন্তু বয়সে অনেক অনেক বয়স্ক। একে প্রথমে দেখা যায় ১৯২৯ সালের ১৭ই জানুয়ারি "দৈনিক কিং" পত্রিকায় কমিক থাম্বলাইন হিসেবে। মার্কিন কার্টুনিস্ট এলিজে ক্রিসলার সেগার [Elzie Crisler Segar] এর হাত ধরে আমাদের সামনে আসে এই Popeye। তখন অবশ্য Popeye শিরোনামে ছিল না থাম্বলাইনটি, তবে অল্প কিছুদিনের মাঝেই সেটি শিরোনামে চলে আসে। 

এলিজে ক্রিসলার সেগার একাধারে কার্টুনিস্ট, স্ক্রিপ্ট লেখক, নাট্য ও টেলিভিশন এনিমেটেড কার্টুন নির্মাতা। ১৯১৯ সাল থেকে প্রকাশিত Thimble Theatre কার্টুন ধারাবাহিকের দশ বছর বয়সে Segar এর হাত ধরে Popeye পত্রিকার পাতা থেকে থিয়েটারে উঠে আসে। পরে ১৯৩৮ এ Segar এর মৃত্যুর পর তার সহকারী Bud Sagendorf হাত ধরে এগিয়ে চলে Popeye। সে সময় পত্রিকায় প্রতি রবিবার Hy Eisman এর লেখা আর অঙ্কনে থাম্বলাইন আকারে প্রকাশ পেতে থাকে কার্টুন টি। 

১৯৩৩ সালে Max এবং Dave Fleischer এর Fleischer Studios, Thimble Theatre এর কার্টুন কারেক্টর গুলিকে শর্ট সিরিজে কার্টুনে রূপা দান করে Paramount Pictures এর জন্যে। ৩০ শতকের জনপ্রিয় কার্টুন শো গুলির একটিতে পরিণত হয় এই Popeye। ১৯৫৭ পর্যন্ত Paramount Pictures এর অধীনেই কার্টুনটি প্রকাশিত হতে থাকে, পরে এর সত্ত্বাধিকারী নিয়ে নেয় Time Warner এর সহায়ক প্রতিষ্ঠান Turner Entertainment। পরে Warner Bros. Entertainment অধীনে এটি প্রকাশিত হতে থাকে।

এই সময়ের মাঝে Popeye কমিক বই, টেলিভিশনের কার্টুন, বিভিন্ন সামগ্রীর উপস্থাপনের চরিত্র, ভিডিও গেম সহ অসংখ্য জিনিষের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমাদের সামনে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮০ সালে জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা রবিন উইলিয়ামস [Robin Williams] কে Popeye এর চরিত্রে রূপায়িত করে Robert Altman একটি মুভি তৈরি করেন, যা এই সময়ও ৫৭% রেটিং পেয়ে অবস্থান করছে বিভিন্ন ক্রিটিকদের তালিকায়। ২০০২ এর টিভি গাইড তালিকা অনুসারে "50 Greatest Cartoon Characters of All Time" এর ২০ তম অবস্থানে রয়েছে প্রিয় Popeye কার্টুন ক্যারেকটারটি।

অনেক কথা বললাম, এবার Popeye এর থিম সং টি শুনে নিন দ্রুত। আরো থাকলো রবিন উইলিয়ামস অভিনিত মুভি থেকে গানটির আংশবিশেষ ইউটিউভ থেকে।




মঙ্গলবার, মার্চ ১৮, ২০১৪

Prisoners :: অসাধারণ থ্রিলার মুভি



প্রতিবেশী ব্রিচ পরিবারের নিমন্ত্রণে তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় ডোভার পরিবার। নিজেদের সমবয়সী ছেলে মেয়েদের ছেড়ে দিয়ে হাত পা ছাড়িয়ে আড্ডায় বসে তারা। আড্ডার ফাকে এনা ডোভার প্রতিবেশীর মেয়ে জয় ব্রিচকে তার খেলনা দেখাতে তাদের বাড়ি নিয়ে যাবার বায়না ধরে। মানা করেও তাদের বড় ভাই-বোনকে নিয়ে অবশেষে বাড়ি যাবার অনুমতি পায় তারা। রাস্তায় নেমে বাড়ি যাবার পথে রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা অপরিচিত এক RV ভ্যান দেখে বাচ্চারা দৌড়ে সেটার কাছে যায় আর স্বভাব সুলভ দুষ্টামি জুড়ে দেয়। এনা এক পর্যায়ে ভ্যানের পেছনে থাকা সিঁড়ি ধরে উপরে উঠতে শুরু করে। কিন্তু পেছন থেকে তার বড় ভাই এসে তাকে নামিয়ে নিয়ে আবার ফিরে যায় ব্রিচদের বাড়িতে। আড্ডার ফাকে হঠাৎ খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারে বাচ্চারা ফিরে এসেছে কিন্তু ছোট এনা আর জয়কে খুঁজে না পেয়ে কেলার তার বাড়িতে গিয়ে খুঁজে আসে তাদের। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারে তারা এখানে আসে নি, ফিরে গিয়ে ব্রিচদের বাসায় আবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে তখন। এক পর্যায়ে রালফ ডোভার জানায় রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা সেই RV ভ্যানটার কথা। কিন্তু খুঁজতে গিয়ে সেটার আর দেখা পায়নি তারা।

পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের লোকি'র উপর দায়িত্ব পড়ে কেসটার। ভ্যানের তথ্য অনুযায়ী খুব দ্রুতই সেটার অবস্থান জানতে পেরে সেটা থেকে গ্রেফতার করে এলেক্স নামের এক তরুণকে। কিন্তু জিজ্ঞাসা বাদের এক পর্যায়ে বুঝতে পারে এলেক্স একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তার বয়স বেড়ে গেলেও তার বুদ্ধির বিকাল একজন ১০ বছরের বাচ্চার মত। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে লোকি ফাদার পেট্রিকের বাড়ি থেকে একটা অর্ধ-গলিত লাস উদ্ধার করে। ফাদারকে সে ব্যাপারে চার্জ করা হলে ফাদার জানায় লোকটা তার কাছে কনফেস করতে এসেছিলো, এবং কনফেস করার সময় সে জানায় এই পর্যন্ত সে মোট ১৬ টা বাচ্চাকে খুন করেছে এবং এর পরও আরও করবে। ফাদার লোকটাকে ট্রিক করে বন্দী করে এবং তার বাড়ির বেসমেন্টে হাত-পা, মুখ বেধে ফেলে রাখে। ওদিকে এলেক্সের কাছ থেকে কোন তথ্য আদায় করতে না পেরে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, আর তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় এলেক্সের আন্টি। এটা জনতে পেরে কেলার ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং জনসম্মুখেই এলেক্সকে হামলা করে বসে। ডিটেকটিভ লোকি পুলিশের সহায়তায় সেই পরিস্থিতি সামাল দেয় তখন।

মেয়ে হারিয়ে ক্ষোভে অন্ধ পিতা খুব সন্তর্পণে কিডন্যাপ করে এলেক্সকে। পরে সে আর তার প্রতিবেশী ফ্রাংলিন ব্রিচকে নিয়ে ছেলেটার কাছ থেকে মেয়েদের তথ্য আদায় করতে তাকে নির্যাতন শুরু করে। এদিকে পাড়া প্রতিবেশী সবাই হারানো বাচ্চাদের মঙ্গল কামনা আর পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে একত্রিত হয় এক সন্ধ্যায়। সেখানে ডিটেকটিভ লোকির নজর এক অচেনা লোকের উপর গিয়ে পড়ে। লোকটি সেটা বুঝতে পেরে দ্রুত ঘটনা স্থল ত্যাগ চাইলেও লোকি তার পিছু নেয় এবং অবশেষে ডিটেকটিভকে ধোঁকা দিয়ে পালাতে সক্ষম হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ডিটেকটিভ লোকি একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কর্মরত এক মহিলার থেকে জানতে পারে একটি লোক সম্বন্ধে, যে কিনা প্রায় কিছুদিন পরপর ছোট ছেলে-মেয়েদের কাপড় কিনতে আসে কিন্তু প্রতি বারই কাপড়ের সাইজের ভিন্নতা থাকে। মহিলার তথ্য অনুযায়ী সে একটি ঠিকানায় গিয়ে পৌঁছে আর সেখান থেকে ঐ রাতের সন্দেহভাজন লোকটিকে গ্রেফতার করে আর উদ্ধার করে বাক্সে ভরা নানা প্রজাতির সাপ এবং ভিন্ন ভিন্ন সাইজের ছোটদের কাপড়চোপড় আর একটি ডায়েরী। কিন্তু বিধি বাম, লোকটিকে জিজ্ঞাসা কালের এক পর্যায়ে কর্তব্যরত এক পুলিশের বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে সেটি দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

প্রায় সকল পথ যখন অবরুদ্ধ তখন হুট করেই খোঁজ মেলে নিখোঁজ জয় ব্রিচের। হাসপাতালে তাকে দেখতে জায় কেলার ডোভার আর তার স্ত্রী। কেলার খুব অশান্ত ভাবেই বার বার জিজ্ঞাস করতে থাকে কোথায় ছিল তারা। ছোট জয়ের শারীরিক অবস্থা অনেক খারাপ আর স্মৃতি গুলি এলোমেলো থাকাতে সে ঐভাবে কিছুই বলতে পারে না, তবুও একটা বাড়ির কথা বলে যেখান থেকে সে পালিয়ে এসেছে। তবে সেটা কোথায় তার বিশেষ কিছু বলতে পারে  না সে। কেলার তার কথা শুনেই বুঝে যায় বাড়িটির অবস্থান, আর দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করে। তার হাসপাতাল ত্যাগ করার মুহূর্তেই সেখানে পৌঁছে ডিটেকটিভ লোকি। কিন্তু ডিটেকটিভের কোন কথা কানে না তুলেই কেলার একা হাসপাতাল ত্যাগ করে। ডিটেকটিভ তার পিছু নিয়েও হারিয়ে ফেলে কিন্তু মনে মনে  তার অবস্থান আন্দাজ করে এক পরিত্যক্ত বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে। বাড়ি তল্লাসি চালিয়ে কিডন্যাপ সন্দেহে আটক করা সেই এলেক্স  এর দেখা পায়, যদিও তার অবস্থা চরম গুরুতর সেই মুহূর্তে।

পুলিশ চিফ ডিটেকটিভ লোকিকে অনুরোধ করে ছেলেটার আন্টিকে তার প্রাপ্তি সংবাদ পৌঁছে দেবার জন্যে। মানা করেও পরে ডিটেকটিভ এলেক্সের আন্টির বাসায় গিয়ে পৌঁছে রাতে। কিছু সময় ডাকাডাকির পড় কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায় লোকি, আর সেখান থেকেই উদ্ধার করে হারিয়ে যাওয়া এনা ডোভারকে।


চরম একটা থ্রিলার ক্যাটাগরির মুভি এই Prisoners। প্রতি মিনিটেই মনে হবে একটি সম্ভাবনার কথা আবার পর মুহূর্তেই সেটা পাল্টে যাবে। সন্দেহের তীর একদিক থেকে ছুটে গিয়ে অবস্থান নিবে অন্যদিকে। আর পরিচালক Denis Villeneuve প্রতিটা মুহূর্তকে আরও বেশি রহস্যের চালে চেপে আটকে দিয়েছে। ক্যামেরার কাজ আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিল এক কথায় অসাধারণ। স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই রহস্যের সমুদ্রে ডুবিয়ে দিবে আপনাকে। যারা থ্রিলার মুভি পছন্দ করেন আর এখনো এটা দেখেন নি মুভিটা তারা দ্রুতই দেখে নিন। আপনার ২ঘন্টা ৩৩ মিনিট সময়টা একেবারেই বৃথা যাবে না :D












শনিবার, মার্চ ১৫, ২০১৪

এক শব্দে ফেসবুক প্রোফাইলের নামকরণ করার পদ্ধতি



ফেসবুকের সাধারণ নিয়ম অনুসারে দুই শব্দের নাম দিতে হয়, যা আমরা সবাই দিয়ে থাকি। কিন্তু আপনি খেয়াল করলেই দেখবেন, কিছু আইডিতে এক শব্দের নাম দিয়ে ব্যবহার করছে অনেকেই। এটি ফেসবুকের একটি বিশেষ সুবিধা যা নির্দিষ্ট একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে কাজ করার পরই তা ব্যবহারের উপযোগী হয়। যদি আপনার একান্তই ইচ্ছে থাকে তবে চলুন দেখে নেই কিভাবে এই এক শব্দে ফেসবুকের নাম নির্ধারণ করা যায়। ধরুন আপনার নাম দেয়া আছে “শুভ্র নূর“, কিন্তু আপনি তা পরিবর্তন করে শুধুই “শুভ্র” রাখতে চাচ্ছেন। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে ফেসবুকের নতুন নাম নির্ধারণের নিয়মানুসারে এইসকল এক শব্দের নাম তাদের ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে ধরা পড়ে। পরে নাম মিলানোর পদ্ধতির গরমিলের কারণে আইডি হারানোর সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন যে, ভেরিফিকেশন প্রসেসে পড়লে আপনি তা রিকোভার করতে পারবেন কি না। এরপরও যদি আপনার আইডির নাম পরিবর্তন করে এক শব্দের মধ্যে নিয়ে আসতে চান তাহলে পরবর্তী ধাপ গুলি দেখুন। আপনাকে এই পদ্ধতিতে কাজ করতে হলে Firefox ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে। অন্য ব্রাউজার দিয়েও করা যাবে, কিন্তু সেটি এর থেকে আরও একটু ঝামেলা যুক্ত বিধায় আমরা এখানে Firefox ব্রাউজারকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।

  • ধাপ ১ঃ প্রথমে আপনি Facebook.com সাইটে গিয়ে আপনার Email / Phone / UserName এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।


  • ধাপ ২ঃ এরপর লগইন হয়ে যাবার পর আপনার Firefox ব্রাউজারের Menu থেকে Option মেনুতে ক্লিক করুন।


  • ধাপ ৩ঃ এরপর Options মেনু থেকে Advanced ট্যাবের Network সাবট্যাব থেকে Connection এর পাশে থাকা Settings… বাটনে ক্লিক করুন।


  • ধাপ ৪ঃ এরপর Connection Settings থেকে প্রথমে “Manuel Proxy Configuration” এবং “Use this porxy server for all protocols” এই দুইটি অপশন সিলেক্ট করুন। এরপর HTTP Proxy এর প্রথম বক্সে আপনার Proxy IP এবং দ্বিতীয় বক্সে Proxy Port নম্বর লিখুন।


এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে আমাদের এখানে কাজ করার জন্যে প্রয়োজন পড়বে ইন্দোনেশিয়ান Proxy IP এবং Port । তাই এই ধাপে আসার পূর্বেই আপনাকে ইন্দোনেশিয়ান প্রক্সি এবং পোর্ট সংগ্রহ করে নিতে হবে। আপনি Google এর সহায়তায় কিংবা spys.ru, gatherproxy.com, hidemyass.com, proxynova.com, xroxy.com থেকে ইন্দোনেশিয়ান প্রক্সি পোর্ট সংগ্রহ করতে পারেন।


প্রক্সি পোর্ট বসানোর পর “OK” বাটন চেপে কনফার্ম করুন।


  • ধাপ ৫ঃ এবারে আবার আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে ফিরে চলুন। নোটিফিকেশন বারের একবারে শেষ মাথার মেনু হতে Settings সিলেক্ট করুন।



  • ধাপ ৬ঃ এরপর Language এর পাশে Edit বাটনে ক্লিক করুন। কিছুক্ষণ পরেই সেখানে একটি ড্রপ ডাউন বক্স আসবে। বক্স হতে Bahasa Indonesia সিলেক্ট করুন। এরপর “Save Changes” বাটনে ক্লিক করুন।


  • ধাপ ৭ঃ আপনার পেইজ রিলোড হবার পর সম্পূর্ণ ভাষা পরিবর্তন হয়ে যাবে। এবারে আবার “Nama” এর পাশে থাকা “Sunting” এ ক্লিক করুন।



  • ধাপ ৮ঃ কিছুক্ষণের মাঝেই স্ক্রিনে ৩টি বক্স দেখতে পাবেন, যা ধারাবাহিক ভাবে Fist Name, Middle Name, Last Name নির্দেশ করে। এবারে আপনি যে নামে আপনার আইডি নামকরণ করতে চান তা প্রথম বক্সে বা “Depan” এর বক্সে লিখুন। এরপর “Tengah” এবং “Belakang” বা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বক্স হতে সকল লেখা মুছে দিন। এরপর “Tinjau Perubahan” লেখা নীল বাটনে ক্লিক করুন।






  • ধাপ ৯ঃ প্রদত্ত নাম কনফার্ম করার পূর্বে আপনাকে আপনার Password আবার ইনপুট দিতে হবে। “Kata sandi” এর বক্সে আপনার পাসওয়ার্ড টাইপ করে “Simpan Perubahan” এর নীল বাটনে ক্লিক করুন।


  • ধাপ ১০ঃ নতুন পেইজ রিলোড হবার পর আপনার প্রোফাইলের নাম আপনার নির্ধারণ করা এক শব্দের নামে পরিবর্তিত হবে। এরপর আবারও ৬ নং ধাপ অনুসরণ করে আপনার ভাষা English (US) কিংবা আপনার ব্যবহৃত ভাষায় পরিবর্তন করে নিন।



এবার আপনার প্রোফাইলে কিংবা ভিজিট করে দেখে নিন আপনার প্রদত্ত এক শব্দের নাম।

পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে এই সুবিধাটি বিশেষ একটি পদ্ধতি (ইন্দোনেশিয়া প্রক্সি সেটিংস্‌) ব্যবহার করে উপভোগ করা যাবে। কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে যে উক্ত সুবিধাটি শুধুই নির্দিষ্ট দেশের জন্যে দেয়া হয়েছিল। আমরা সেই সুবিধাটি ব্যবহার করেই এই “এক শব্দের নাম” সুবিধাটি নিচ্ছি। কিন্তু ফেসবুক পলিসি অনুসারে এটি আপনার সত্যিকারের নাম হলেও তা গ্রহনযোগ্য নয়। তাই এই সকল Single Name বা এক শব্দের নামের আইডি গুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফেসবুক ভেরিফিকেশন এর মধ্যে পড়ে যায়। আর সেখান থেকে নামের সঠিক মিল খুঁজে পাওয়া যায় না বলেই রিকোভার করা সম্ভব হয় না। তাই এই পদ্ধতি অনুসরণ করে আইডির নাম করলে তা নিজ দায়িত্বে করবেন।







শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০১৪

মজার স্মৃতি..... "ঢাকা কলেজ"

একবার এক দূর-সম্পর্কের ফুপাত বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি। আমরা গিয়ে পৌঁছলাম গায়ে হলুদের বেশ কিছু সময় আগে। আরও ক'জন ফুপাত ভাই ইতোমধ্যে সেখানে চলে এসেছে ততক্ষণে, অবশ্য তারা সবাই আমার চেয়ে বয়সে ঢের বড় :| ঐ ফুপুর বাসায় হাতে গোনা কয়েকবার গিয়েছি মাত্র। তাই ঐ রকম ভাবে কাউকে চিনি না এই ফুপাত ভাইয়েদের ছাড়া। আর এই ফুপাত ভাই গুলির সাথেও আমার দারুণ খাতির। আসলে বোকা বোকা বলে সবাই একটু অন্যরকম আদর করতো আর কি :P

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষে যখন পরের দিন বিয়ের খুব তোড়জোড় ভাবে প্রস্তুতি চলছে তখন একজন জানালো বিয়ে বাড়ির পানের স্টক শেষ হয়ে এসেছে। পান আনতে হবে, নতুবা যারা কাজে এসেছে তারা কাজ করবে না। কাজ করবে না সেটা আসলে মজা করে বলা, তবে তাদের রাত ভর কাজ আর তার ফাকে গল্পগুজব করার জন্যে পান লাগবেই লাগবে।

তো বড় ফুপাত ভাইটাকে বলা হল বাজার থেকে পান নিয়ে আসতে। রাত তখন মাত্র সাড়ে ন'য়টা। কিন্তু গ্রাম, সেখানে রাত ৮টা মানেই অনেক রাত। বলার জন্যে বলছি না। বিয়ে বাড়ি আর কয়েক ঘর বাদ দিয়ে বাকি সবাই ইতোমধ্যে নাই হয়ে গেছে। আর বাজারটা বাড়ি থেকে হাটা পথে আধঘণ্টার দূরত্বে। ফুপাত ভাই যখন রেডি হয়ে যখন পান আনতে রওনা হচ্ছে তখন বাকি আরও দুই ফুপাত ভাই তারাও বললও যাবে তার সাথে। আর সবাই যখন চলে যাবে তখন আমি একা একা কি করবো ভেবে আমিও তাদের সাথে রওনা দিলাম।

আড্ডা আর দুষ্টামি করতে করতে সবাই যাচ্ছি বাজারের দিকে। বাজারের খুব কাছাকাছি এসে দেখি RAB এর একটা গাড়ি, আর যতদূর মনে পড়ে RAB তখন একেবারেই নতুন আর একটা তাদের ঘিরে ভীতিকর একটা অবস্থা সবার মনেই আছে। আরও কিছুদূর এগুনোর পর পেছন থেকে ডাক পড়লো। ঘুরে দেখলাম দুজন এগিয়ে আসছে। কাছাকাছি এসে জিজ্ঞাস করলো-

- এত রাতে কোথায় যান আপনারা?
বড় ফুপাত ভাই উত্তরে বলল,
- স্যর বিয়ে বাড়িতে পান লাগবে। বাজারে যাচ্ছি পান আনার জন্যে।
- এত রাতে পান? দোকান-পাট তো সব বন্ধ হয়ে গেছে। নাকি অন্য কিছুর জন্যে যাচ্ছেন?
- না স্যার, আপনারা চাইলে সাথে আসতে পারেন। পানের জন্যেই এসেছি।
- আচ্ছা, তা আপনি কি করেন?

ভাইয়া তখন তার ডিগ্রী কলেজের নাম বলল, জানাল কোন বিভাগে পড়ছে। তারপর অপর আরেক ভাইকে জিজ্ঞাস করলো সে কি করে। সেও উত্তরে কলেজের নাম আর তার বিভাগের কথা জানালো। এবার তৃতীয় ভাইকে জিজ্ঞাস করলো, আপনি?

সে উত্তরে বলল "ঢাকা কলেজ"।

এইবার RAB সদস্যদের ২য় লোকটি (ইনি এত সময় কোন কথা বলেন নি) বলল,
"ঢাকা কোথায় সেটা বল।"

সম্বোধন হঠাৎ "আপনি" থেকে "তুই" তে নেমে আসায় ভাইটা একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল সে আবারও বলল "ঢাকা কলেজ"। এই উত্তর শুনে দ্বিতীয় লোকটা এগিয়ে এসে তার হাতে ধরল। প্রথম জন জিজ্ঞাস করলো, ঢাকায় কোন কলেজে? ( ঠিক তখন ও বুঝি নি তারা ঢাকা কলেজকে কেন চিনতে পারছিল না )

এবার প্রথমে যেই ভাইয়া কথা বলছিল তাদের সাথে সে বুঝিয়ে বলল, "স্যার ঢাকার অবস্থিত ঢাকা কলেজে পড়ছে সে"। প্রথম জন না চিনলেও বুঝতে পারলো কথাটা কিন্তু ২য় লোকটা কোন কারণে কথাটা বিশ্বাস করতে চাইছিল না। তাই সে ভাইয়ের আইডি কার্ড দেখাতে বলল। ওয়ালেট থেকে আইডি কার্ড দেখানোর আগ পর্যন্ত ঐ ভাইয়ের হাত ছাড়লই না লোকটা। অবশেষে যখন আইডি কার্ড দেখে প্রথম জন ছাড়তে বলল তখন ছাড়ল।

সব শেষে আমাকে জিজ্ঞাস করলো, তুমি? ( আমি বয়সে ছোট সেটা এখানেও প্রমাণিত :( :P )
আমি স্কুলের নাম বললাম। সেটা নিয়ে আর কোন কথা বলল না তারা। যদিও ভয় পাচ্ছিলাম আমাকে না আবার বলে স্কুলের আইডি কার্ড দেখাও :P কারণ তখন আমার কাছে কোন আইডি কার্ড ছিল না।

এবার ২য় লোকটি সবাইকে সার্চ করা শুরু করলো। এবারও হতাশ হল সে। তার মনের মত কিছু না পেয়ে আবার প্রথম লোকটার পেছনে গিয়ে অবস্থান নিলো। তারপর ১ম লোকটা বলল, দ্রুত ফিরে আসবেন। আমরা এখানেই আছি।

দ্রুত পান নিয়েই ফিরে আসলাম আমরা সবাই। হাটতে হাটতে আড্ডা যদিও হচ্ছিল, তবুও সবার মাঝে একটা আতঙ্ক কাজ করছিল তখন। যদিও ফেরার পথে তাদের সাথে আর দেখা হয়নি।

কলেজে উঠার পর কোন একটা অনুষ্ঠানে আবার সেখানে গেলাম। সেই ফুপাত ভাইয়েরাও আসলো। সন্ধ্যার দিকে আমরা কোন কারণে সেই মার্কেটে গিয়েছিলাম। কিন্তু ফিরতে ফিরতে মোটামুটি ভাল রাত হয়ে গেল। ফেরার সময় যেখানে RAB সদস্যরা জিজ্ঞাসা বাদ করেছিল সেখানে এসেই "ঢাকা কলেজে" পড়া ভাইটা "ভাইয়ে, ঢাকা কলেজ" বলেই হাসতে শুরু করলো। বাকি দুইজনও তার কথা শুনে হাসছে।


আজ সকালে Ask.fm এ একটা প্রশ্ন করা হয়েছে "Have you ever got into trouble with the police?"
প্রশ্নটা পড়েই এই "ঢাকা কলেজ" এর এই ঘটনাটা মনে পড়ে গেল B-)








বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০১৪

রক্ত দেবেন? নাকি বিদায় বলবেন?

রবিন, চেহারায় শঙ্কা আর একটা পরাজিত ভাব নিয়ে BRTC বাসের জানালার পাশের সিটে বসে আছে। লাল চোখে পানি টলটল, কিন্তু সেটা গড়িয়ে ফেলতে পারছে না। এয়ারপোর্ট পেরিয়ে দ্রুতই সামনে এগিয়ে চলছে বাস, কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছে কি করবে সেটা মাথায় কাজ করছে না তার। মাত্র এক ব্যাগ রক্তের জন্যে কি তাহলে বাবার অপারেশনটা করাতে পারবে না? উত্তরা পর্যন্ত আসলো রক্তের জন্যে, কিন্তু এখানেও তাদের কাছে রক্ত নেই। আজ বিকেলের মধ্যে যে করেই হোক রক্ত যোগাড় করতে বলেছিল ডাক্তার। দুপুর তো শেষ প্রায় এখন কি করবে? প্রয়োজনে টাকা দিয়েই কিনবে সে রক্ত, কিন্তু আগে পেতে তো হবে আগে।

পাশে বসা তরুণ হঠাৎ করেই জিজ্ঞাস করলো-
- ভাই কোন সমস্যা
- না ভাই, বাবাকে বিদায় জানাতে যাচ্ছি হসপিটালে। এক ব্যাগ রক্তের জন্যে বিদায় জানাবো। কোন সমস্যা নেই ভাই, কোন সমস্যাই নেই..
- কি বলছেন? এক মাত্র ব্যাগ রক্ত, ব্লাড ব্যাংকে যোগাযোগ করেছেন?
- করেছি ভাই, উত্তরার একটা হসপিটালে থাকতে পারে জানালো। এখন সেখান থেকেই আসছি, নেই তাদের স্টকে।
- কি গ্রুপের রক্ত?
- AB নেগেটিভ।
- কখন লাগবে ভাই?
- আজ বিকেলের মধ্যে যোগাড় করতে বলেছিল।
- চলেন তাহলে :)
- কোথায়? আপনার জানাশোনায় কোথাও পাওয়া যাবে?
- হ্যাঁ, আমিই দিবো। চলেন :)


হ্যাঁ, উপরের লিখাটা নিছকই গল্প। তবে এমন যে হচ্ছে না তা কিন্তু নয়। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কিছু সময় কাটালে রোগীদের রক্তের জন্যে হাহাকার কিছুটা নজরে পড়বে আপনার। এমন কি বিভিন্ন ব্লাড-ব্যাংক আর ছোটখাটো ক্লিনিক সেন্টার গুলতেও একই চিত্র দেখতে পারবেন একটু খেয়াল করলে। ভাবতেই কষ্ট লাগে রক্তের অভাবে রোগী মারা যায়। টাকা নিয়ে দাড়িয়ে থেকেও কোন কিছু করতে পারে না আত্মীয়-স্বজনেরা। অথচ এই জীবন বাঁচানো রক্ত গায়ে নিয়ে ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি আমরা। এই পরাজিত মুখগুলির পাশে বসেই হয়তো আড্ডা দিচ্ছি কোথাও কোথাও।

একটু সচেতন হলেই আমরা মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়ানো এমন হাজারো মানুষকে জীবনের আলোর পথ দেখাতে পারি। তাহলেই উপরের গল্পটার মত করে জীবনের গল্পেও পাব "Happy ending"







রবিবার, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০১৪

সাধারণ একটা গল্প, আর কিছু বিষয় অনুধাবন......

একটা গল্প বলি, আহামরি কোন গল্প না। ছোটবেলায় ঘুমতে যাবার আগে কাকা'র কাছে শোনা গল্প। সাধারণ গল্প, আশা করি অনেকেই জানে এটা।

এক লোক কাজের সন্ধানে আরেক জন লোকের নিকটে গেল। কাজ চাইতে আসা লোকটিকে নিয়োগ দিলো অপর লোকটি তবে শর্ত এটা যে তার সমুদয় কাজের পারিশ্রমিক নিয়োগকর্তা মারা যাবার পর পাবে। নিয়োগ কর্তা বলল যে "তুই সারাজীবন বসে খেতে পারবি ঐরকম পারিশ্রমিক পাবি"
কাজ চাইতে আসা লোকটি মনের আনন্দে কাজ করতে লাগলো। প্রচুর সেবা-যত্ন করতে লাগলো নিয়োগকর্তাকে। দেখতে দেখতে একটা সময় নিয়োগকর্তা মৃত্যুশয্যাতে পৌঁছল। ঐ সময় নিয়োগকর্তা সেই লোকটাকে একটা বক্স দেখিয়ে বললেন এটা যেন সে তার মৃত্যুর পর খোলে। এটাতেই তার এত বছরের পারিশ্রমিক রয়েছে, যা সে আজীবন বসে খেতে পারবে।

নিয়োগকর্তা অল্প কিছুদিনেই মারা গেল। আর লোকটা তার পারিশ্রমিকের বাক্স সামনে নিয়ে বসে আছে।


এখন বাকি অংশটা পড়ার আগে একটা প্রশ্ন করছি  (যেমনটা গল্পটা শোনার সময় অতি আগ্রহে আমি আমার কাকাকে জিজ্ঞাস করেছিলাম, তেমন)। এই বাক্সের ভেতরে কি থাকতে পারে? এমন কত পরিমাণের টাকা থাকতে পারে যা তার আজীবন বসে খাবার মত যোগাড় হবে? বা এমন কি জিনিষ হতে পারে যা এই নিশ্চয়তা দিতে পারে। (স্বাভাবিক ভাবেই আমার তখনকার প্রশ্নটা এত বড় ছিল  না, তখন প্রশ্নের পেছনে বিস্ময় কাজ করেছে আর প্রশ্নের বিপরীতে আমার উত্তরের চাওয়াটা  ছিল সাধারণ কিছু। হিন্ট হিসেবে বলবো- বাক্স ভর্তি টাকা, অথবা অনেক মূল্যবান কিছু যেমন দামী হীরা কিংবা এমন কিছু।)

উত্তরটা বলার আগে আরও কিছু কথা বলি। এই গল্পটার সারমর্ম বা মূল কথা গুলি ঐ বয়সে আমি বুঝি নি, বুঝেতে পেরেছি অনেক পরে। কিংবা হয়তো এখনো পুরোটা বুঝে উঠতে পারি নি। তবে বুঝে উঠতে না পারলেও এখন কিছু করার নেই। কারণ, গল্প বলা লোকটা হারিয়ে গেছে। জিজ্ঞাস করে জেনে নিব সে উপায় নেই......

লোকটা কাঁপা কাঁপা হাতে বক্সের র‍্যাপিং খুলল। বক্সের মুখ খুলে ভেতরে উকি দিলো। ভেতরে দুইটা মাত্র জিনিষ দেখতে পেলো। প্রথমটা একটা কাগজ আর দ্বিতীয়টা একটা পিড়ি (মোড়া)। লোকটা কাগজ হাতে নিলো, তাতে কিছু লিখা আছে-

আমি বলেছিলাম এমন একটা জিনিষ দিব, যা তুমি আজীবন বসে খেতে পারবে। তুমি যে পিড়ি (মোড়া) টা দেখছ তার উপর বসে তুমি আজীবন খেতে পারবে। এটাই তোমার পারিশ্রমিক।


এখন নিয়োগকর্তাকে আমি ঠগ আর কাজ চাইতে আশা লোকটাকে আমি লোভী বা বোকা বলবো না। নিয়োগকর্তা তাকে দেয়া কথা ঠিকই রেখেছে। শুধু কাজ করতে আসা লোকটা যা আশা করেছে তা সে দিতে পারে নি, বা দেয়নি। কিন্তু সে তার কথা রেখেছে। আর কাজ চাইতে আশা লোকটাকে এই কারণে লোভী বা বোকা বলবো না কারণ আমরা প্রতিনিয়ত বর্তমান অবস্থা থেকে ভালো, আরও ভালো, অনেক ভালো থাকার আশাতেই কাজ করি, আর তার কারণে অনেক মানুষকেই বিশ্বাস করি। অনেক সময় সব হারাতে হতে পারে জেনেও বিশ্বাস করতে হয়।

এই গল্পটার অনেক রকম মূলকথা আমি ভিন্ন ভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বুঝতে পেরেছি। তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে-

 ♦ কাউকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে তার পিছু ছুটা উচিৎ না, নিজের চিন্তাশক্তি আর বিবেক কাজে লাগাতে হবে।

 ♦ চাইতে হলে তা পরিষ্কার ভাবে চাইতে হবে, আংশিক প্রকাশ করে বাকিটুকু মনের ভেতরে দাবিয়ে রেখে নয়।

 ♦ কোন কাজ সেটা কার জন্যে করছ, কি জন্যে করছ আর কেন করছ তার পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে।

 ♦ নিজের অবস্থান, চাহিদা কে নিজের গণ্ডীর ভেতর থেকে দেখতে হবে। "আরও বেশি, আরও বড়, অনেক অনেক বেশি" এটা যথা সম্ভব পরিত্যাগ করতে হবে। তাই বলে বড় আশা করতে মানা করছি না। বলছি এমন আশা না করতে, যা গণ্ডিতে দাড়িয়ে অসম্ভব আর গণ্ডির বাইরে গিয়ে করার পর তা গণ্ডিতে ফিরে আসতে বাধা তৈরি করে। নিজের অবস্থানে চাহিদা গুলিকে যথাসম্ভব পরিপূর্ণ ভাবার মত মানুষিক শক্তি থাকতে হবে।

 ♦ কোন কাজে কথা দেবার আগে তা ভালো করে বুঝে নিতে হবে, কারণ কথা দেবার পর একটা প্রত্যাশা কাজ করবে সেই কথার উপর। সেটা সাধারণও হতে পারে আবার অনেক জটিল কিছুও হতে পারে। তাই এই ব্যাপারে বুঝে শুনে পরে সিদ্ধান্তে আসতে হবে।

 ♦ কাজ জানলে আর করতে পারলে সেটা তোমাকে আজীবন বসিয়েই খাওয়াতে পারবে। কারো উপর নির্ভর করতে হবে না।



যখন গল্পটা শুনেছি তখন কিন্তু মজা পেয়েছি। মজা পেয়েছি কারণ ছোট বাচ্চারা অল্পতেই মজা খুঁজে নিতে পারে। আজীবন কাজ করে কেউ কাউকে পিড়ি(মোড়া)  দিতে পারে সেটা জানতে পেরে মজা পেয়েছি। কিন্তু আমার মত এখনও অনেকে গল্পটা শুনে এই বড় বেলায় মজা নেয় কিংবা তার চেয়েও খারাপ ভাবে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে। গল্পের এদিকে দাড়িয়ে গল্পটা শুনতে যতটা মজাদার মনে হয় গল্পের ভেতরে দাড়িয়ে গল্পটাকে ততটাই কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা হিসেবে পাওয়া হয়।








শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ২১, ২০১৪

হঠাৎ স্বপ্নে ছোট্ট ধাক্কা.....

শুভ আজ রাতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে যাবে বন্ধুদের সাথে। বিকেলেই একটা তোড়া ফুল নিয়ে এসেছে সে, উপরে লেখা তাতে "আমরা তোমাদের ভুলবো না"। লাল রং দিয়ে লেখা রয়েছে কথাটা। সন্ধ্যার একটু পর রাহাত ফোন আসলো-
- ড্যুড! মিটআপ, হয়্যেন? হয়্যার??
- টাইমিং প্লানিং তো সব ফাহিম করছে ড্যুড, আস্ক হিম..
- ওকে, ওকে দেন বেরুচ্ছি কখন
- মে বি ৯টার পর, ফার্স্ট ফাহিমের বাসায় মিটআপ দেন ওর গাড়িতে করেই..
- থ্যাংস ড্যুড, সি ইউ সুন

কথা শেষ করে শুভ নীচে নামলো। ডাইনিং রুমে মা'য়ের সাথে দেখা-
- মম ফাহিম আর রাহাতের সাথে আজ শহীদ মিনারে যাবো।
- রাতে বাড়ি ফিরবে না?
- নো মম, ফুল দিতে দিতে তো অনেক সময় লেগে যাবে। তারপর একটু ঘুরবো। ফিরতে ফিরতে মর্নিং। ড্যাডকে কিছু বলো না প্লিজ।
- আচ্ছা, দ্রুত করে ফিরে আসিস তাহলে তোর বাবা উঠার আগেই।
- ওকে মম, থ্যাংকস।
- বেরুবি কখন? রাতে ডিনার করে না তার আগেই।
- ফাহিম তো শার্প এইট'ও ক্লক তার বাড়িতে থাকতে বলল। ডিনার নাকি ওর ওখানেই হবে। আমি এখুনি বেরুবো।
- আচ্ছা, সাবধানে থাকিস।

রুমে এসে গত পরশু কেনা ফতুয়া টা বের করলো শুভ। ফতুয়ার উপরে রক্ত ঝরা লাল রঙ। মাঝে কালো দেখতে গুলির চিহ্নের মত আর পাশে অ আ ক খ বর্ণমালা খচিত আছে। চমৎকার ডিজাইন, শুধু আজকের কথা চিন্তা করেই সে এটা কিনেছিল। আটটা বাজতে এখনো অনেক দেরি, ল্যাপটপটা কোলের উপর নিয়ে টুইটার চেক করলো। নতুন কোন নিউজ নেই তার জন্যে। তাই ফেসবুকে চলে আসলো টুইটার বাদ দিয়ে। সবাই যার যার প্রোফাইলে নিজেদের নামের প্রথম অক্ষর লাগিয়েছে। সেও লাগিয়েছে সবার মত করে। নাহ, ঐরকম এক্সাইটমেন্ট নিয়ে দেখার মত কিছু নেই এখানেও। বালিশের উপর মাথা এলিয়ে দিয়ে কিছু একটা চিন্তা করছিল।

তারপর ঘড়ির দিকে তাকাতেই চোখ কপালে তার। এত দ্রুত আটটা দশ কিভাবে হল, মাত্রই তো সে দেখল সন্ধ্যা ছয়টা চল্লিশের কাছাকাছি। দৌড়ে প্যান্ট পাল্টে, ফতুয়াটা গলিয়ে মোবাইল, মানিব্যাগ চাদর আর তোড়াটা নিয়ে নিচে নামলো সে। আশ্চর্য! এই সময় তো বাড়ি এত নিঝুম থাকে না আজকের মত। মা'কি তবে এখুনি শুয়ে পড়লো? যাক তাও ভালো কিছু বলে আর সময় নষ্ট করতে হল না, দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেল সে। ফাহিমের বাড়ি বেশি দূর না, হেটেই যাওয়া যায়। তবে আজ দেরি করে ফেলেছে, তাই রিক্সা নিতে হবে। সামনেই রিক্সা পাওয়ার কথা তবে আজ কেমন যেন রাস্তাটা ফাকা এই সময়েই, মোড়ের চা'য়ের দোকানটাও বন্ধ। ছুটি পেয়ে মনে হয় আজ সবাই আগেই গন্তব্যে পৌঁছে গেছে, রিক্সাটা পেলেই হয় এখন। নাহ! একটা রিক্সা আছে দেখা যায়, ভাড়া বেশি চাইবে বুঝতে পারছে শুভ কিন্তু কি করার, যত দ্রুত সম্ভব তাকে ফাহিমের বাসায় যেতেই হবে। রিক্সা ওয়ালা হুড তুলে তার ভেতর বসেছে, বেশ আয়েশি ভঙ্গীতে পা দু'টো চালকের সিটে তুলে আরাম করছে।

শুভ রিক্সার সামনে দাড়িয়ে, কিন্তু কিছু একটা সমস্যা হয়েছে তার। ঠাণ্ডায় গলা দিয়ে আওয়াজ বেরুচ্ছে না তার। আজ ঠাণ্ডাও লাগছে বেজায় রকম। গায়ে চাদর জড়ানো, কিন্তু সেটা ঠাণ্ডা থামাতেই পারছেনা যেন। গলা চিড়ে যে একটা আওয়াজ করবে তার জো নেই। কিন্তু এ কি! একেবারেই যে আওয়াজ বের করতে পারছে না সে। কাশি দিয়ে নিজের গলায় হাত রেখে নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছে না সে। চিৎকার করে চলেছে মনের ভেতর কিন্তু আওয়াজ করে এতটুকু শক্তি যেন তার নেই।

হুডের ভেতর থেকে রিকশাওয়ালা বলে উঠলো-
কি মামা, কথা আটাকায় গেছে? হাতের ফুল আর আর ফতুয়া পইড়া আর কত দিন এইভাবে ভাষার লাঞ্ছনা করবেন মামা? তারচেয়ে এই ভালা, কথা কওনের শক্তি আপনেগোর বন্ধ হইয়্যা যাক এক্কেরে। ঐরকম আধা বাঙ্গালি হওনের চেয়ে অবাঙ্গালি হইয়্যা যান আর নাইলে এইরকম কইরা বোবা হইয়্যা যান। তাতে অন্তত আমাগোর "বাংলা" শান্তি পাইব।
তারপর হুট করে পা নামিয়ে রিক্সার হুডের ভেতর থেকে লোকটা তার দু'হাত বের করে শুভ'র গলায় চেপে ধরল। শুভ চিৎকার করে দু'হাত ধরে রিক্সা ওয়ালার হাত তার গলা থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু, কোন লাভ হচ্ছে বলে মনে হল না। উল্টো লোকটার হাতের চাপ বাড়তে থাকলো। দম যেন ফুরিয়ে আসছে শুভ'র.......




একবারে ঘেমে নেয়ে ঘুম ভাঙ্গল শুভর। পরনের টি'শার্টটা একেবারেই ভিজে জবজব অবস্থা। ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই দেখল সময় মাত্র সাড়ে সাতটা। গলায় হাত বুলিয়ে কাশি দিলো শুভ। কি ভয়ানক স্বপ্ন দেখল সে এটা। ধুর এমন কিছু হয় নাকি? আজকের দৌড়াদৌড়িটা মনে হয় একটু বেশি হয়ে গেছে। তার উপর বাংলা ভাষা নিয়ে স্যরের ল্যাকচারটাই এমন করেছে। ফাহিমকে বললে নির্ঘাত সে এটা সবাইকে বলে বলে জ্বালিয়ে মারবে। ধুর! এত ভাবার সময় নেই। এবার উঠতে হবে, দ্রুত রেডি হয়ে ফাহিমের বাসা তারপর শহীদ মিনার আর শেষে বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি....





রবিবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০১৪

সম্প্রতি দেখা মুভি : Secondhand Lions

Secondhand Lions 

(2003)


গত কয়েকদিনে অনেক গুলি মুভি দেখলাম। নাম হিসেবে বলতে বললে কোনটার নামই এখন মনে পড়ছে না এই মুহূর্তে। কিন্তু একটা মুভি মাথায় ঢুকে আছে। খুব সাধারণ একটা ছেলের জীবন নিয়ে শুরু কিন্তু আবার অতটাই সাদামাটা নয়। ছেলের মা তখনো জীবনকে স্থায়ী রূপ দিতে পারে নি তাই রূপায়নের লক্ষ্যে তার ছেলেকে দূর সম্পর্কের মামাদের কাছে রেখে আসতে চায়। আবার সেই দূর সম্পর্কের মামা দুইজনও যুবা বয়সের ৩০ বছর কোথায় কাটিয়েছে এসেছে তার হদিস কারো জানা নেই। তবে যা জানে তা হল, মামাদের কাছে অনেক টাকা রয়েছে। কিন্তু তারা তা কোথায় রেখেছে তা কেউ বলতে পারে না। তার উপর মামা দুইজনই উদ্ভট আচরণের মানুষ উপরন্তু অবিবাহিত তাই সেই সম্পদের পুরোটা লোভ তাদের আত্মীয়দের ঘিরে রেখেছে। ছেলেটির মা'ও কিন্তু সেই আশা মনে রেখে ছেলেকে এখানে ছেড়ে যাচ্ছেন।

সমস্যা হল সবাই অদ্ভুত বললেও ছেলেটা কিন্তু তাদের সেই অদ্ভুত আচরণে একটা কোমলতা খুঁজে পায়। একটা দুর্বলতা সে ঠিকই তৈরি করে দেয় সেই অদ্ভুত আচরণ করা মামাদের মাঝে। কিছু বোঝার আগেই তাদের মনে বসতি গড়ে তোলে ছেলেটি। আর সাথে আবিষ্কার লুকানো সেই ৩০ বছরের ঘটনাকে। জানতে পারে "প্রকৃত ভালবাসার কোন মৃত্যু নেই"। রোমাঞ্চিত হয় মামাদের সব কল্প-কাহিনীর মত বাস্তবতায়। অভিভূত হয় তাদের কার্যক্ষমতায়। হারিয়ে যায় তাদের মাঝে অন্য এক ভুবনে। যেখানে মাছ ধরতে শটগান আর পালতু জন্তু হিসেবে কুকুর বিড়ালের সাথে সিংহও থাকে।

আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না। তবে যা শিখেছি সেটা না বললেই না। ভালবাসা যে বিশ্বাস এনে দেয়, যেভাবে আপন করে নেয় তার শক্তি দিয়ে তা পুরো পৃথিবীর সম্পদের দ্বারা কেউ উদ্ধার করে দিতে পারবে না। Haley Joel Osment, Michael Caine, Robert Duvall অভিনীত মুভিটার নাম হচ্ছে Secondhand Lions