বৃহস্পতিবার, আগস্ট ০৭, ২০১৪

এভাবে আর কতকাল ঠকে আসবে তারা..??

একটা সময় ছিল যখন পরিবারের পুরুষ মানুষটাই আয়ের উৎস হিসেবে গণ্য হতো। যদিও তখন পরিবারের বাকি সদস্যেরা, বিশেষ করে মহিলা সদস্যেরা তাদের পরিবার গোছানোর পাশাপাশি গবাদি পশু পালন কিংবা তাতে সহায়তা, বিভিন্ন শাক সবজি ফলাত নিজেদের আঙ্গিনাতেই। নকশি কাঁথা আর হাতে তৈরি আরও অনেক জিনিষ ছিলই। তবুও সেগুলি আয়ের উৎস হিসেবে গণ্য করতো না আমাদের সমাজ। আবার দরিদ্রতা দূর করার রাস্তা কিন্তু তারা দেখিয়ে দেয়নি।
অগত্যা ঘরের নারী পেটের প্রয়োজনে রাস্তায় নামে উপার্জনের জন্যে। তখন তাদের রাস্তায় উপার্জনের উৎস হিসেবে আসে “গার্মেন্টস সেক্টর”। নারীও কর্মী এটা হারে হারে বুঝতে পারে সমাজ। তাই আর বেধে রাখতে পারেনি, ছাড় দিতেই হয়েছে নারীকেও উপার্জন করার জন্যে।

তারপর শুধু নারীই নয়, নারী-পুরুষ উভয়েই পরিবারের আয়ের উৎস হয়ে উঠলো।

কি ভাবছেন? নিশ্চই তাদের খুব আর্থিক উন্নতি ঘটেছে ইতোমধ্যে। তারা নিশ্চই সুখের সমুদ্রে ভেসে চলেছে।

কিন্তু ঘটনা তো এখানেই উল্টো। উন্নতি এই সব খেটে খাওয়া শ্রমিকদের হয়নি বরং হয়েছে শিল্প মালিকদের। কারণ তারা কত কম দিয়ে কত পরিশ্রম করানো যায় তার সূক্ষ্ম হিসেব অনেক আগেই করে ফেলেছিল। তাদের শিল্পের পেছনে শ্রম দেয়া মানুষ গুলিকে তারা কোনদিন মানুষ হিসেবে কল্পনাই করেনি, করেছে উৎপাদন যন্ত্র হিসেবে। আর যন্ত্র নিয়ে এত ভাবার সময় কোথায়। একটা বিকল হয়েছে তো অন্য আরেকটা তো তার জায়গায় পূরণ করার জন্য, আর সেটাও খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। তাই কোনরকম খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্যে কিছু পারিশ্রমিকের নামে ভিক্ষা দিয়ে চালাচ্ছিল এতকাল।

কিন্তু তাতেও মনে শান্তি হয় নি তাদের। এবার সেই পারিশ্রমিক বন্ধ করে দিয়ে শুধুই খাটাতে উদ্ভূত হয়েছে তারা। আর এটার বিরোধিতা করতে গেলেও দুনিয়ার সব বিপত্তি তৈরি করে দেয়।

আপনি তাদের হয়ে কিছু করতে যাবেন?
তারা আপনাকেও ছেড়ে কোন কথা বলবে না। লাঠিপেটা করে আপনাকে এলাকা ছাড়া করবে।

এভাবে কতকাল ধরে ঠকে আসবে এরা? এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথ কি কারো জানা নেই??



Outlook.com এ Alias মেইল তৈরি এবং তার ব্যবহার পদ্ধতি



আমাদের অনেক প্রয়োজনেই ২য় একটি মেইল এড্রেস এর প্রয়োজন দেখা দেয়। চাইলেই হুট করে আমরা ২য় আরও একটি মেইল আইডি খুলে নিতে পারি। কিন্তু কিছুদিন বাদেই দেখা যায় যে সেটা নিয়মিত ব্যবহার না করার কারণে কিংবা অন্যকোন সমস্যায় অথবা পাসওয়ার্ড ভুলে গিয়ে আর একসেস করতে পারি না।

এই ধরণের সমস্যার হাত থেকে সমাধানের জন্যে জনপ্রিয় মেইল সার্ভিস প্রোভাইডর গুলি বিভিন্ন উপায়ে দ্বিতীয় কিংবা প্রয়োজন সংখ্যক মেইল Alias ব্যবহার করার সুবিধা দিচ্ছে। এদের মধ্যে Outlook.com একটি যা পূর্বে Hotmail.com এবং Live.com নামে পরিচিত ছিল, তারাও এই সুবিধাটি দিচ্ছে। আর তাদের সুবিধার আলতায় আপনার বর্তমান মেইল এড্রেসটির সাথে মিল না রেখে সম্পূর্ণ নতুন নামের এড্রেস ব্যবহার করতে পারবেন আপনার বর্তমানের নিয়মিত Outlook একাউন্টের মাধ্যমে।

ধরুন আপনার বর্তমান মেইল এড্রেসটি হচ্ছে "mailmenow001@outlook.com" কিন্তু আপনি চাইছেন আপনার মেইল এড্রেস হবে "contactmenow@outlook.com"। এখন কেউ যদি পূর্বেই এই নতুন এড্রেসটি রেজিস্ট্রেশন না করে থাকে তবে সহজেই আপনি এই এড্রেসটি আপনার বর্তমান মেইল একাউন্টের মাধ্যমেই ব্যবহার করতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন শেষে মেইল পাঠাতে কিংবা মেইল গ্রহণ করতে ২টি এড্রেসই ব্যবহার করতে পারবেন।

তো চলুন, ঝটপট করে জেনে নেই কিভাবে এই দ্বিতীয় মেইল এড্রেস কিংবা Alias টি সেটআপ করবো আমরা।
তবে এই ক্ষেত্রে দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে-

১ |  আপনার Recovery মেইল একাউন্টটি সচল থাকতে হবে। (যেটা একাউন্ট তৈরির সময় Recovery মেইল হিসেবে সেট করেছিলেন)

২ | আপনার Outlook মেইল একাউন্টটি মোবাইল ভেরিফিকেশন করা থাকতে হবে। (মোবাইল ভেরিফাই করা না থাকলে Alias মেইল কাজ করবে না, আর তৈরির পূর্বেই আপনাকে ভেরিফাই করে নিতে হবে)





Outlook / Hotmail / Live মেইল এর Alias তৈরির পদ্ধতি



  • ধাপ ১ : আপনার Outlook / Live / Hotmail একাউন্টে লগইন করুন। পেইজ লোডিং শেষে গিয়ার বাটনে ক্লিক করে মেনু থেকে Option সিলেক্ট করুন।




  • ধাপ ২ : "Managing your account" এর আলতায় থাকা "Create an Outlook.com alias" লিংকটিতে ক্লিক করুন।



পুনরায় আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড প্রদান করতে বলবে। পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর আপনার একাউন্টটি মোবাইল ভেরিফাই করা থাকলে Recovery মেইল এড্রেসে একটি কনফার্মেশন কোড সহকারে মেইল পাঠাবে এই ধাপে। আর মোবাইল ভেরিফাই করা না থাকলে মোবাইল ভেরিফাই করতে বলবে। মোবাইল ভেরিফাই করে এবং মেইলে পাওয়া কনফার্মেশন কোড বক্সে বসিয়ে পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন।



  • ধাপ ৩ : বক্সে আপনি যেই নাম দিয়ে Alias মেইলটি চালু করতে চান সেটি লিখতে হবে। উদাহরণ হিসেবে আমি প্রথমে "mail2oliver" লিখে "Create an alias" বাটনে ক্লিক করলাম। কিন্তু দেখুন এই মেইল আইডিটি পূর্বেই কেউ রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছে। তাই আর আমি সেটা ব্যবহার করতে পারবো না।



এভাবে আপনিও চেক করে দেখুন যে আপনার কাঙ্ক্ষিত মেইল এড্রেসটি পূর্বেই কেউ রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছে কি না। যদি নিয়ে থাকে তবে ভিন্ন নামে চেষ্টা করতে হবে কিংবা নামের শেষে সংখ্যা বসিয়ে ও কাজ করতে পারবেন। আমি ভিন্ন নামে চেষ্টা করলাম, "oliverblog2" লিখে "Create an alias" ক্লিক করলাম। যেহেতু এই নামে কেউ পূর্বেই আইডি রেজিস্ট্রেশন করে নি তাই এটি আমি ব্যবহার করতে পারবো।



  • ধাপ ৪ : কাঙ্ক্ষিত মেইল Alias গ্রহণ করার পর এই Pop-up মেসেজটি দেখাবে। যেখানে আপনাকে জানানো হবে যে আপনার কাঙ্ক্ষিত মেইল এড্রেস টি তৈরি সম্পন্ন হয়েছে এবং আপনি চাইলে এই মেইলে আসা প্রতিটা মেইল একটি নির্দিষ্ট ফোল্ডার কিংবা ইন বক্সেই জমা রাখতে পারবেন। এখন আপনি যদি এই মেইলে আসা মেইল গুলিকে Inbox এ না রেখে অন্য কোন ফোল্ডার কিংবা নতুন একটি ফোল্ডারে রাখতে চান তা করতে পারবেন। আমার ক্ষেত্রে আমি "Oliver Blog" নামে নতুন একটি ফোল্ডারের নাম লিখে Done বাটনে ক্লিক করলাম। এখন "oliverblog2@outlook.com" এ আসা প্রতিটা মেইল ইন-বক্সে না এসে আমার তৈরি Oliver Blog নামের ফোল্ডারে জমা হবে।




আমাদের নূতন Mail Alias তৈরি করা সম্পন্ন হয়েছে। এবার একে টেস্ট করার পালা-


  • প্রথমে মেইল বক্সের উপরের বার থেকে New তে ক্লিক করুন।




  • উপরের বাম কর্নারে ড্রপ-ডাউন লিস্ট থেকে নতুন Alias মেইলটি সিলেক্ট করুন। এরপর যাকে মেইল করতে চান তার মেইল এড্রেসটি ২য় বক্সে লিখুন। মেইলের সাবজেক্ট এবং মেইল বডিতে মেইল লিখে Send বাটনে ক্লিক করুন।




  • কিছুক্ষণের মধ্যেই মেইলটি আপনার কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় গিয়ে পৌছবে।



*** অনেকের ক্ষেত্রে ঘণ্টা খানিক সময় লাগতে পারে মেইল Alias টি সচল হতে। তাই তৈরির পরপরই যদি ব্যবহার করতে সমস্যা হয় তাহলে ঘণ্টা খানিক পর চেষ্টা করুন। 




Alias মেইলকে Primary Mail হিসেবে সেট করার পদ্ধতি

এবার আপনি চাইলে Outlook.com এর একাউন্ট সেটিং থেকে নতুন তৈরি করা Alias মেইলটিকে Primary Mail হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। এটি করতে প্রথমে মেইল বক্সের ডান কোনায় আপনার নামের উপর ক্লিক করুন। এরপর মেনু থেকে Accounts Settings লেখাটার উপর ক্লিক করুন।


এরপর পাসওয়ার্ড দিয়ে আবার লগইন করলেই Microsoft Account এর ড্যাশ বোর্ডে নিয়ে যাবে। এখান থেকে Aliases অপশনে ক্লিক করলেই আপনার বর্তমান মেইল Alias গুলি দেখতে পারবেন। এখন যেই Alias মেইলটিকে Primary Mail হিসেবে ব্যবহার করতে চান সেটির নিচে লেখা "Make primary" তে ক্লিক করে কনফার্ম করুন।


কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার Alias মেইলটি প্রাইমারি মেইলে পরিবর্তিত হয়ে যাবে।







মঙ্গলবার, আগস্ট ০৫, ২০১৪

হিজিবিজি ভাবনাঃ সময়ের কাছে ছোট্ট চাওয়া.....



সময় তাদের জন্যে ধীর, যারা অপেক্ষা করে। যারা ভয় করে, তাদের জন্যে দ্রুত। তাদের জন্যে খুব দীর্ঘ, যারা শোক করে। যারা আনন্দ করে, তাদের জন্যে ক্ষুদ্র। কিন্তু যারা ভালোবাসে, তাদের জন্যে সময় অমর।
— হেনরি ভ্যান ডাইক


আমি অমরত্ব চাই না, চাই সময়টাকে উপভোগ করতে। দ্রুত কিংবা ধীর গতিতে নয়, ঠিক যতটুকু গতিতে সময়টাকে সুস্থভাবে পার করে যেতে পারবো ঠিক অতটুকু দ্রুতিতে। হিংসা কিংবা ভালোবাসায় সিক্ত জীবনও চাই না আমি, চাই নির্জনতা....



রবিবার, আগস্ট ০৩, ২০১৪

তুমিও কি..... বন্ধু!



○ তুমি কে?
● আমি মানুষ।

○ এর বাইরে?
● এর বাইরে একটা মন আছে আমার, যা সব মানুষেরই থাকে।

○ আর তার বাইরে?
● তার বাইরে আমার চিন্তা করার শক্তি আছে। মুক্তচিন্তা,বদ্ধ-চিন্তা, ভাল চিন্তা, খারাপ চিন্তা সব ধরনের চিন্তা করতে পারি আমি। এখানে আমি স্বাধীন। আমার চিন্তায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে কেউ কেউ তার প্রতিচ্ছবি ফেলতে পারে মাত্র।

○ তারও বাইরে কিছু আছে কি?
● হ্যাঁ! তারও বাইরে আরও একটা জিনিষ আছে। একটা শক্তি আছে। শক্তিটা হচ্ছে অন্যকে আপন করে নেবার কিংবা তাদের সবার আপন হয়ে যাবার। যে শক্তির বলে মানুষ মানুষের আপন হয়, বন্ধুত্ব তৈরি হয়, হয় ভাল কিছু সম্পর্কের।

আচ্ছা, এবার আমকে তুমি বল তো,
তোমার ভেতরেও কি আছে এই বৈশিষ্ট্য গুলি??
তুমিও কি আমারই মত মানুষ?
তোমার মনটাও কি প্রায় আমারই মতন করে চিন্তা করতে পারে??
বন্ধু হবার আর সেই বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখার মত প্রচণ্ড রকমের মানুষিক শক্তি কি আছে তোমার ভেতরে??



বন্ধু দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর শুভকামনা সকলের জন্যে…..



বৃহস্পতিবার, জুলাই ৩১, ২০১৪

হিজিবিজি ভাবনাঃ মনের শান্তির জন্যে প্রার্থনা.....


মানুষ ভিন্ন, অবস্থান ভিন্ন আর অবস্থানের প্রেক্ষিতে তার আকাঙ্ক্ষায়ও থাকে ভিন্নতা। আর এই ভিন্নতার কারণেই তার দৃষ্টিভঙ্গিরও পার্থক্য দেখা যায়। কেউ কেউ ছেড়া কাঁথা নিয়ে ঘুমোতে পেরেও সুখী, আবারমনে মনে ভালো একটা কাঁথারও আকাঙ্ক্ষা থাকে। অন্যদিকে মোটা কম্বল গায়ে চড়িয়েও কেউ কেউ ছটফট করতে করতে নির্ঘুম কাটায়। আর এইসবই আমাদের বাস্তবতা, আমাদেরকেই ঘিরে।

তবুও প্রার্থনা, সুখে থাকুক সবাই। জীবনের গল্প যেমনই হোক না কেন, শান্তির পরশ যেন সবার অন্তর ছুঁয়ে যায়....





বুধবার, জুলাই ৩০, ২০১৪

হিজিবিজি ভাবনাঃ সেঁকল বন্দী



আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। কিন্তু এখনো মন থেকে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি নাই।

জন্মটাই শুধু আমাদের স্বাধীন ভাবে হয়। আর জন্মানোর সাথে সাথেই আমাদের এক পায়ে ধর্মের সেঁকল আর অন্য পায়ে তথাকথিতপ্রগতিশীলতার সেঁকল পড়িয়ে দেয়া হয়।

তারপর এই দুই পায়ের সেঁকলের দুইদিক থেকে যে যেদিকে বেশি টানতে পারে আমরা ঐ দিকেই এগুতে থাকি। নিজের পছন্দ কিংবা ইচ্ছেতে আপন পথ বাছাই করার কোন সুযোগই প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেয়া হয় না।



মঙ্গলবার, জুলাই ২২, ২০১৪

অদৃশ্য সুতোর টানে অদ্ভুত ঐ লাইনটার দিকে এগিয়ে চলা....



কে জানি একজন! কিছু বোঝার আগেই একটা অদৃশ্য সুতো হাতটায় বেধে দিল। সুতোটা সারাক্ষণ আমায় সামনের দিকে টেনে নিয়ে চলেছে। মাঝে মাঝে যখন সুতো টানে এগিয়ে চলায় বিরক্ত হয়ে দাড়িয়ে পড়তে চাই তখন বুঝতে পারি, এই সুতোটার টানের ক্ষমতা। আমার সর্বশক্তির প্রয়োগের পরও সে সেটা উপেক্ষা করে সে তার দিকে আমাকে টেনে হেঁচড়ে ঠিকই নিয়ে যায়। এর বিরুদ্ধে টানাটানিকরতে করতেক্লান্ত হয়ে এখন এর টানেই সামনে এগিয়ে চলেছি।

এই টানাটানির মাঝেই পথের বেশ কিছু জিনিষ দেখার বাকি থেকে যায়। অনেক প্রয়োজনীয় জিনিষও হাতছাড়া হয়ে তার টানের তাল সামলাতে গিয়ে। একটু দাড়িয়ে কোথাও বিশ্রাম নিয়ে নিবো, সেই অবস্থাটাও থাকে না। কত প্রিয়জনকে এই টানের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে যেতে দেখেছি। কত মানুষকে দেখেছি এর কাছে হার মেনে নিতে। কিন্তু কি জানেন? খুব ভয়ানক পরিস্থিতি দেখেও এই সুতোর টান এক বিন্দু পরিমাণ পর্যন্ত কমে না।

আবার কেউ কেউ আছে এই অদৃশ্য সুতোর টান সইতে না পেরে এর থেকে পরিত্রাণের রাস্তা খুঁজে বেড়ায়। জানি না, তারা কিভাবে চিন্তাও করতে পারে এই অসম্ভব কাজটার কথা। যা দেখা যায় না, যার কোন অস্তিত্ব নেই, তাকে ঠিক কোন উপায়ে বাধা দেব? পিছুই বা ছুটবো কেমন করে?

শেষে না পেরে তারা ভিন্ন উপায় খুঁজে বের করে। তারা তাদের সকল আক্ষেপ সুতোর উপর না দেখিয়ে নিজের উপর দেখানো শুরু করে। কারো কারো আক্ষেপের পরিমাণ এত বেশি থাকে যে, সুতোটা শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে তাকে ঐ লাইনটাকে পার করিয়ে দেয়।

ওহ! বলা তো হয়নি। সুতোটা কিন্তু সবাইকে ঐ লাইনের দিকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে। লাইনটা বড়ই অদ্ভুত। সবার জন্যে এক সমান নয়। কারো কারো দু’কদম এগুতেই লাইনের দেখা মিলছে তো আবার কারো কারো কদমের পর কদম ছুটে চলেছে, লাইনের দেখা আর মিলছে না। তবে লাইন ঠিকই আছে।

কেউ কেউ আবার এই লাইনের দিকে ছুটে চলার ভীতিকে বিভিন্ন উপায়ে পিছু ছাড়াতে ব্যস্ত। হরেক রকম পদ্ধতি তারাও প্রয়োগ করে যাচ্ছে। কিন্তু লাভের লাভ কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। সুতো ঠিকই তাদেরকেও ঐ লাইন বরাবর ছুটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

সুতোটার মত এই লাইনটাও আরেক রহস্য। এদিক থেকে লাইনটাকে কেউ যতই দ্রুত কিংবা দেরিতে পার করার চেষ্টা করুক না কেন, এই সুতোর টানের সাহায্য ছাড়া কেউ লাইনটাকে পার করতে পারে না। আবার কেউ একবার লাইনটাকে অতিক্রম করলে, তাকে এই ছুটে চলার পথটায় দেখাও যায় না। একেবারে অদৃশ্য হয়ে যায় লাইনটা অতিক্রম করার পরপরই।

মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে। লাইনটা পেরুনোর পরও কি এই অদৃশ্য সুতোর টানে টানে এগিয়ে চলে তারা? নাকি মুক্তি মেলে এই টান থেকে??

জানা হয় না...

এই প্রশ্নের জবাব সবাই একমাত্র আর কেবল মাত্র জানতে পারবে অদ্ভুত ঐ লাইনটাকে অতিক্রম করার পরেই.....








রবিবার, জুলাই ২০, ২০১৪

গল্পঃ শহুরে প্রশান্তির গল্পের খোঁজে…



সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে আর সবার মত আমার রাত হয় না। আমার খোঁজের শুরুটাই হয় ঐ সময়টাতে। আমি প্রশান্তির গল্প গুলি খুঁজে বেড়াই এই শহরের কোলাহলের ভীরে। পরিচিত মুখ গুলি যখন আপন আলয়ে ফিরে যাবার জন্যে ব্যাকুল হয়ে ছুটাছুটি লাগায় তখন আমি তাদের মাঝেই দাড়িয়ে সময় কাটাই। আমার তো আপন আলয় বলতে কিছু নেই। যা আছে তাকে বড়জোর একটা মাথা গোজার ঠাই বলা চলে। অবশ্য আমার মত অনেকেই সেই মাথা গোজার ঠাইয়ের দিকেই ছুট লাগায়। আমি তাদেরও ব্যস্ততা দেখি। একবার কোনোমত আপন ঠিকানায় পৌছাতে পারলেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচে এরা।

সন্ধ্যার পর রাতটা কেউ আর উপভোগ করে না। সবাই সেই সময়টাতে বিশ্রাম জিনিষটাকে খুঁজে বেড়ায় নিজ নিজ ঘুমের দেশে। যদিও এই শহরে কেউ সত্যিকার অর্থে ঘুমাতে পারে কি না তা নিয়ে আমর যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি এদের ঘুম নামের সেই অভিনয়। যে অভিনয় করে এরা নিজেকে বুঝ দেয় যে, এরাও শান্তিতে রয়েছে।

মাস শেষে যখন সবাই যখন হিসেব করতে ব্যস্ত সময় পার করে, আমি তখনও তাদের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখি। কি নিপুণ ভাবে কষ্ট সহ্য করে এরা সঞ্চয় করে চলেছে। আধ বেলা খেয়ে পূর্ণ এক বেলার শান্তি কি করে যোগায়! তা দেখলে আশ্চর্য হওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না। যখন আপনজনদের সাথে দূরালাপনিতে তারা যোগাযোগ করে, তাদের আবদার আর বায়না গুলি শোনে, তা নিয়ে কথা বলে। তখন কিন্তু তাদের চোখে মুখে একটা বিরক্তির ছাপ দেখা যায়। তবে সেই বিরক্তিটাকেও আমি তাদের উপভোগ করতে দেখি। এরা প্রতিটা জিনিষই উপভোগ করার এক অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।

এরপর যাদের এই শহরে একটা ছোট্ট হলেও আপন ঠিকানা বলতে কিছু আছে, আমি তাদেরও দেখে সময় পার করি। ক্লান্তিতে পরিশ্রান্ত হয়েও এরা আপন আলয়ে প্রবেশ করে সেই বিশাল একটা করে হাসি দেয়। সেই হাসির মূল্য এদের আজীবন কষ্টের পারিশ্রমিক থেকেও বেশি মনে হয়। ছোট্ট ছেলেটা কিংবা মেয়েটাকে কোলে জড়িয়ে সকল ক্লান্তি থেকে কেমন করে যেন পিছু ছাড়িয়ে নেয় এরা। চোখের পলকে যেন এদের শক্তি ফিরে আসে। নতুন উদ্যম নিয়ে এরা আনন্দে মেতে উঠে সেই ছোট্ট আলটার মধ্যে।

আমি চেয়ে চেয়েই দেখি। হাজারও ঝঞ্ঝা পেরিয়ে যখন কোন অপরিচিত রিকশাওয়ালা তার ছাউনিতে ফিরে যায়। আধো অন্ধকার আধো আলোর ঘরগুলিতে কেমন যেন একটা খুশির আমেজ ফিরে আসে। আমি দেখি তার সাত কি আট বছরের মেয়েটা কেমন করে তাকে জড়িয়ে ধরে। তার জন্যে কিছু একটা বোধয় আনার কথা বলেছিল, সেটা নিয়ে এসেছে কিনা তা জানতে চায়। রিকশাওয়ালা ক্লান্তির চেহারায় উজ্জ্বলতা ভরে সেই কাঙ্ক্ষিত বস্তুটা মেয়েটার হাতে তুলে দেয়। আর মেয়েটা সেই বস্তু নিয়ে ছুটে গিয়ে মা কিংবা পরিচিত কাউকে দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর রিকশাওয়ালা সেই ছুটাছুটি দেখেই কেমন করে যেন তার ক্লান্তিকে ভুলে যায়।

আমি দেখতে দেখতে সামনে এগিয়ে যাই। কোন এক ক্রসিঙের সামনে কিছু সময় অপেক্ষা করে দেখি পাশের ছাউনিটাতে লাইন ম্যান টেবিলটাতে মাথা রেখে ঘুমানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। আর সেখানেও এক প্রশান্তির ছাপ। যেন এভাবে ঘুমিয়েই শ্রেষ্ঠ ঘুমটা অর্জন করা যায়। তারপর যখনই একটা হুইসিল কিংবা ঘণ্টার শুনতে পায় ওমনি ছুট লাগায় ক্রসিঙের দিকে। আশে পাশে চেয়ে দেখে নেয় কোন লাইনটা থেকে ট্রেনটা ছুটে আসছে। কি বিরক্তিটাই না থাকে তার চেহারাটায় তখন। কিন্তু যখনই আবার ফুরসুত পায় সেই টেবিলটাতে মাথা রাখার। ওমনি তার সকল বিরক্তি কোথায় যেন ঢাকা পড়ে যায়।

আমি ক্রসিং পেড়িয়ে সামনে এগিয়ে চলি। এবার মাথা উঁচু কোন বিল্ডিং এর ছোট্ট বারান্দায় চোখ আটকে যায় আমার। সেখানে কেউ একজন জ্বলন্ত সিগার হাতে নিয়ে দোল কেদারায় বসে আছে। একটু একটু দুলছে আর একটু একটু করে আগুনে সিগার পুরিয়ে নিচ্ছে। আমি তার চেহারা দেখতে পাই না, শুধুমাত্র একটা ছায়া চোখে পড়ে। কিন্তু সেই ছায়াটাতে কোন প্রশান্তির ছাপ খুঁজে পাই না। আমি অপেক্ষা করি, অপেক্ষা করতেই থাকি একটা প্রশান্তি সেই ছায়ামূর্তিটাতে দেখার জন্যে। ওদিকে ভোর প্রায় হয়ে আসে। মসজিদের মুয়াজ্জিন “আল্লাহু আঁকবার” বলে মুসুল্লিদের ডাকতে শুরু করে। কিন্তু ঐ ছায়ামূর্তিটার ছায়ায় আমি প্রশান্তির ছাপ দেখতে পাই না......