- এই ছেলে এখানে কিভাবে আসলে? কাকে চাও?
কোন উত্তর নেই। একটু তাকিয়ে আবার তার দৃষ্টি মাটিতে নিয়ে গেল।
- এই ছেলে! আমি তোমাকে কি জিজ্ঞাস করলাম??
এইবার ছেলেটা ভাল করে তাকাল আর একটু হাসি দিল; যেন এটাই তার উত্তর।
- এখানে দাড়িয়ে আছো কেন?? কাকে চাই?? সমস্যা কি তোমার, কথার জবাব দিচ্ছ না কেন??
ছেলেটা কিছু না বলে পকেট থেকে ছোট্ট এতটা নোটবই আর একটা পেন্সিল বের করলো। তারপর নোটবই টা খুলে তাতে কিছু একটা লিখে বাড়িয়ে দিল। তাতে লিখা "দুঃখিত, আমি কথা বলতে পারি না। তবে শুনতে আর লিখতে পারি।"
এটা দেখে রাকিব সাহেবের হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেল। রাজপুত্রের মত একটা ছেলে, কিন্তু কত বড় অন্যায় করেছে বিধাতা তার সাথে। মনের কথা গুলি মুখে নিয়ে আসতে পারে না বেচারা। এটা ভাবতে ভাবতেই অন্য একটা ছেলের কথাও মনে পরে গেল। তার নিজের ছেলে, আবির। আবিরও কথা বলতে পারতো না এই ছেলেটির মত। ঠিক এই ছেলেটির মতই কথা শুনতে আর বুঝতে পারতো। হাসির শব্দ করতে পারতো না। তবুও মুখে সবসময় একটা মায়া-মাখানো হাসি ঝুলিয়ে রাখতো।
আবিরের কথা মনে পরেনা সেই কবে থেকে। হঠাৎ করেই খুব জ্বর হল। ঐ সময় ছেলেকে ডাক্তার পর্যন্ত দেখানোর সামর্থ্য ছিল না তার। দুইদিন ভোগার পর হঠাৎ করেই জ্বর ভাল হয়ে গেল। খুব দুষ্টামি করলো সারাদিন। সন্ধ্যায় ক্লান্ত হয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও পড়লো। কিন্তু রাতে ঘুমিয়ে ছেলেটা আর সকালে উঠলো না, ঘুমিয়েই থাকলো। কত ডাকাডাকি করলো কিন্তু ছেলেটা তার ডাক যেন গা'ই করলো না। ঘুমিয়েই থাকলো নিজের মত করে।
ঐদিন থেকে বিধাতার উপর একটা আক্রোশ জন্মে গেছে মনে। আক্রোশ জন্মেছে দারিদ্রতার প্রতি। তার আক্রোশ তাকে এখন পাজেরো গাড়িতে চলার মত অবস্থা করে দিয়েছে। বিরাট এসি রুমে বসে বসে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিয়েছে। এখন ইচ্ছে করলেই দেশের বাইরে চেকআপের জন্যে যেতে পারে সে।
ভুল করেও এত বছর সে আবিরের কথা মনে করে নি। কিন্তু আজ মনে হয়েই গেল। সাথে মেজাজটাও খারাপ হয়ে গেল তার। একটু রুক্ষ স্বরেই জিজ্ঞাস করলো ছেলেটিকে,
- তা এখানে দাড়িয়ে আছো কেন? কাকে চাই??
ছেলেটি আবারও একটা হাসি দিয়ে নোটবইটাতে লিখে তাকে দেখালো। সেখানে লেখা আছে, "আপনার সাথে"
রাকিব সাহেব এইবার আরো একটু বিরক্তি নিয়ে বললেন
- আমার সাথে মানে কি? তুমি কি জানতে আমি এই সময়ে এখানে আসবো? আর এখানে কেন আমার জন্যে অপেক্ষা করতে হবে?
ছেলেটা আবারও নোটবইতে লিখে দেখালো "আমি এখানে প্রতিদিন অপেক্ষা করছি, গত ২মাস ধরে আপনার জন্যে"
এইবার রাকিব সাহেব একটু অবাক হয়ে বললেন
- টানা দুইমাস ধরে অপেক্ষা করছো আমার জন্যে? তাও আমার গ্যারেজের আড়ালে? ঠিক কি কারণে জানতে পারি?
ছেলেটা আবারও লিখলো, আর আস্তে করে তার চোখের সামনে ধরলো নোটবইটা। সেখানে স্পষ্ট করে লিখা
"বাবা আমি আবির"
রাকিব সাহেব এতটুকু পড়েই জ্ঞান হারালেন।
পরের দিন পেপারে একটা শোকবার্তা ছাপা হলো। সেটা স্বনামধন্য শিল্পপতি রাকিব সাহেবের মৃত্যু সংবাদ। সন্ধ্যায় তার ড্রাইভার তাকে গ্যারেজের পাশে মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় আবিস্কার করে। সাথে সাথে হাসপাতালেও নেয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবাই ধারনা করলো হঠাৎ করেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন তিনি। কিন্তু কেউ জানতে পারলো নিঃশব্দ ঐ ছেলেটির কথা।
কোন উত্তর নেই। একটু তাকিয়ে আবার তার দৃষ্টি মাটিতে নিয়ে গেল।
- এই ছেলে! আমি তোমাকে কি জিজ্ঞাস করলাম??
এইবার ছেলেটা ভাল করে তাকাল আর একটু হাসি দিল; যেন এটাই তার উত্তর।
- এখানে দাড়িয়ে আছো কেন?? কাকে চাই?? সমস্যা কি তোমার, কথার জবাব দিচ্ছ না কেন??
ছেলেটা কিছু না বলে পকেট থেকে ছোট্ট এতটা নোটবই আর একটা পেন্সিল বের করলো। তারপর নোটবই টা খুলে তাতে কিছু একটা লিখে বাড়িয়ে দিল। তাতে লিখা "দুঃখিত, আমি কথা বলতে পারি না। তবে শুনতে আর লিখতে পারি।"
এটা দেখে রাকিব সাহেবের হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেল। রাজপুত্রের মত একটা ছেলে, কিন্তু কত বড় অন্যায় করেছে বিধাতা তার সাথে। মনের কথা গুলি মুখে নিয়ে আসতে পারে না বেচারা। এটা ভাবতে ভাবতেই অন্য একটা ছেলের কথাও মনে পরে গেল। তার নিজের ছেলে, আবির। আবিরও কথা বলতে পারতো না এই ছেলেটির মত। ঠিক এই ছেলেটির মতই কথা শুনতে আর বুঝতে পারতো। হাসির শব্দ করতে পারতো না। তবুও মুখে সবসময় একটা মায়া-মাখানো হাসি ঝুলিয়ে রাখতো।
আবিরের কথা মনে পরেনা সেই কবে থেকে। হঠাৎ করেই খুব জ্বর হল। ঐ সময় ছেলেকে ডাক্তার পর্যন্ত দেখানোর সামর্থ্য ছিল না তার। দুইদিন ভোগার পর হঠাৎ করেই জ্বর ভাল হয়ে গেল। খুব দুষ্টামি করলো সারাদিন। সন্ধ্যায় ক্লান্ত হয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও পড়লো। কিন্তু রাতে ঘুমিয়ে ছেলেটা আর সকালে উঠলো না, ঘুমিয়েই থাকলো। কত ডাকাডাকি করলো কিন্তু ছেলেটা তার ডাক যেন গা'ই করলো না। ঘুমিয়েই থাকলো নিজের মত করে।
ঐদিন থেকে বিধাতার উপর একটা আক্রোশ জন্মে গেছে মনে। আক্রোশ জন্মেছে দারিদ্রতার প্রতি। তার আক্রোশ তাকে এখন পাজেরো গাড়িতে চলার মত অবস্থা করে দিয়েছে। বিরাট এসি রুমে বসে বসে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিয়েছে। এখন ইচ্ছে করলেই দেশের বাইরে চেকআপের জন্যে যেতে পারে সে।
ভুল করেও এত বছর সে আবিরের কথা মনে করে নি। কিন্তু আজ মনে হয়েই গেল। সাথে মেজাজটাও খারাপ হয়ে গেল তার। একটু রুক্ষ স্বরেই জিজ্ঞাস করলো ছেলেটিকে,
- তা এখানে দাড়িয়ে আছো কেন? কাকে চাই??
ছেলেটি আবারও একটা হাসি দিয়ে নোটবইটাতে লিখে তাকে দেখালো। সেখানে লেখা আছে, "আপনার সাথে"
রাকিব সাহেব এইবার আরো একটু বিরক্তি নিয়ে বললেন
- আমার সাথে মানে কি? তুমি কি জানতে আমি এই সময়ে এখানে আসবো? আর এখানে কেন আমার জন্যে অপেক্ষা করতে হবে?
ছেলেটা আবারও নোটবইতে লিখে দেখালো "আমি এখানে প্রতিদিন অপেক্ষা করছি, গত ২মাস ধরে আপনার জন্যে"
এইবার রাকিব সাহেব একটু অবাক হয়ে বললেন
- টানা দুইমাস ধরে অপেক্ষা করছো আমার জন্যে? তাও আমার গ্যারেজের আড়ালে? ঠিক কি কারণে জানতে পারি?
ছেলেটা আবারও লিখলো, আর আস্তে করে তার চোখের সামনে ধরলো নোটবইটা। সেখানে স্পষ্ট করে লিখা
"বাবা আমি আবির"
রাকিব সাহেব এতটুকু পড়েই জ্ঞান হারালেন।
পরের দিন পেপারে একটা শোকবার্তা ছাপা হলো। সেটা স্বনামধন্য শিল্পপতি রাকিব সাহেবের মৃত্যু সংবাদ। সন্ধ্যায় তার ড্রাইভার তাকে গ্যারেজের পাশে মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় আবিস্কার করে। সাথে সাথে হাসপাতালেও নেয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবাই ধারনা করলো হঠাৎ করেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন তিনি। কিন্তু কেউ জানতে পারলো নিঃশব্দ ঐ ছেলেটির কথা।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন