বুধবার, ডিসেম্বর ০১, ২০২১

শীত ও বিয়ে! শীতকালীন বিয়ে এবং হিজিবিজি

 


শীত এবং বিয়ে, সম্ভবত এই টপিকটা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বছরের পর বছর সবচেয়ে বেশি ট্রল হয়ে আসছে। অবশ্য শুধুমাত্র ট্রলকারীদের এককভাবে দোষারোপ কারও উচিৎ হবে না। শীতের এই সময়টাতে সত্যি-সত্যিই বিয়ের ধুম পড়ে যায় দেশজুড়ে। এমনও হয় যে এই মৌসুমটাতে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করতে গিয়ে সম্ভাব্য তারিখ গুলোতে মেকআপ আর্টিস্ট বা পার্লার, ক্যামেরাম্যান, বাবুর্চি এমনকি কম্যুনিটি সেন্টারটি গ্রহনসাধ্য হবে কি না কিংবা অন্য কোন আত্নীয়দের একই দিনে ঠিক করে রাখা কোন অনুষ্ঠান আছে কি না -- এই সবকিছুর উপর নির্ভর করতে হয়! এমনও হয় যে কম্যুনিটি সেন্টারে একই দিনে একই ফ্লোরে দুটি অনুষ্ঠান বুক করতে হয়, সেক্ষেত্রে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একজনের জন্য বরাদ্দ হলে সন্ধ্যা থেকে রাত বরাদ্দ পায় অন্যজন। এক অনুষ্ঠানের অতিথিরা কম্যুনিটি সেন্টার ত্যাগ করবার আগেই অন্য অনুষ্ঠানের অতিথিরা এসে অপেক্ষা শুরু করে। আবার একই দিনে দু'জন আত্নীয়ের অনুষ্ঠান পড়ে গেলে মেহমান কোনটি রেখে কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবে তা মনস্থির করতে দ্বিধা-দন্দে পড়ে যায়। 

সে যেমনই হোক, "শীত এবং বিয়ে"-র এই মেলবন্ধন কিন্তু অযৌক্তিক নয়। বরং হিসেব করলে দেখা যাবে এর পেছনে যৌক্তিক কারণটাই মূখ্য বিষয়। আজ সেইসব বিষয় নিয়েই একটু বলা যাক। 


মেহমানদের উপস্থিতি

যে কোন অনুষ্ঠানের জন্যেই মেহমানদের উপস্থিতি বিশেষরকম গুরুত্ব বহন করে। দেখা যায় যে আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতের এই সময়টাতে একটু ঢিলেঢালা ভাব থাকে। বার্ষিক ছুটি, পরীক্ষার ছুটি, মিড বা সেমিষ্টার ফাইনাল এক্সাম শেষ হয়ে নতুন সেশন শুরু হয় এই সময়টাতে, তাই ইচ্ছে হলেই ২/৪ দিনের জন্যে কোন অনুষ্ঠানে সে সময়টাতে উপস্থিত হওয়া যায়। তাছাড়া বেশিরভাগ প্রবাসীদের এই সময়টাতে দেশে আসবার সুযোগ ঘটে, তাই পরিবার নিয়ে এমন একটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া এবং প্রায় বাকি সকল আত্নীয়দের সাথে দেখা করবার দারুণ একটা সুযোগ পায় তারা। সেই সুবাদে বিয়ের অনুষ্ঠানে মেহমানদের উপস্থিতি বছরের অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি থাকে। 

মুখরোচক খাবার

আপনি স্বীকার করুন চাই না করুন, বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ হয় খাবার! বছরের অন্য সময়ে বিয়ের আয়োজন করলে খাবারের গুণগত মান ও স্বাদ ঠিক রাখতে যতটা কাঠখর পোড়াতে হয় তা শীতের মৌসুমে অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। অতিরিক্ত বা একটু লম্বা সময় নিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে এই সময়টাতে ঝাক্কিঝামেলা অনেক কম পোহাতে হয়। শুধু মূল অনুষ্ঠান নয়, বরং এই সময়টাতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে মেহমানদের জন্যে নানা পদের সুস্বাদু খাবার রান্না হয়ে থাকে। অন্য দিকে শীতের এই মৌসুমে প্রচুর সবজি পাওয়ার কারণে নানান আইটেমের খাবার পরিবেশন সহজ ও খরচ সহায়কও হয়ে থাকে। গ্রামের দিকে দেখা যায় হলুদ অনুষ্ঠান কিংবা মূল অনুষ্ঠানের সকলের দিকে মেহমানদের খিচুরি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। আর সেই খিচুরিতেও ব্যবহার হয় নানান ধরনের মৌসুমী সবজি। অন্যদিকে শীতের এই সময়টাতেই চলে পিঠা উৎসব। বিয়ের এই আনুষ্ঠানিকতায় বিশেষ অতিথি এবং উভয় পক্ষ একে অপরকে বাহারি রকম আঞ্চলিক পিঠা উপহার হিসেবে দিয়ে থাকে। আর সত্যি বলতে কিনে খাওয়া পিঠার চেয়ে এইসব পিঠার স্বাদ হাজারগুণ ভালো হয়। ছোটবেলায় দেখতাম বিয়ের আগে বেয়াই বাড়িতে পিঠা উপহার দেয়ার জন্যে বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হবার দিন পনের আগে থেকেই চাল ভাঙ্গানো কিংবা চাচী-ফুপুরা সবাই মিলে নকশী পিঠা তৈরী করছে মহোৎসবে। 

আবহাওয়া ও পরিবেশ 

আবহাওয়া বিয়ের আনুষ্ঠানিতকায় কত বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে তা যে নিজে এমন বিরূপ অবস্থায় না পড়েছে সে অনুধাবনও করতে পারবে না। সুন্দর সাজগোজ করে বিয়েতে উপস্থিত হলেন, এর মাঝে শুরু হলো বৃষ্টি কিংবা দারুন তাপদাহ। অবস্থাটা ভাবুন একবার। সুন্দর পরিহীত পোষাকটা তখন সাপটে থাকবে আপনার সাথে; চুপচুপে ঐ পোষাকে থাকলে যতই দারুন আপ্যায়ন কিংবা খাবার হোক না কেন, কোনটাই আপনাকে স্বস্তি দিতে পারবে না। তাছাড়া শেরওয়ানি কিংবা সুট আর দামী দামী ভারী সব বিয়ের শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গাতে বর-কনে‌'র যে কি অবস্থা হয়, তা একমাত্র তারাই বলতে পারবে। এর সাথে যুক্ত হয় ক্যামেরার অসহনীয় উজ্জ্বল ও তপ্ত লাইট; ঐ সময়টা মনে হয় প্রখর রৌদ্রে কেউ জোর করে গাড়ি থেকে উত্তপ্ত পিচের রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। 

এছাড়া এই সময়টাতে মেহমানদের ম্যানেজ করাও কিছুটা সহজ হয়। অন্য সময়টাতে একত্রে অনেক মানুষ জমায়েত হলে দেখা যায় কয়েকটি ফ্যান কিংবা এসিও সেখানে পর্যাপ্ত ভাবে তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পারে না। সেদিক থেকে শীতের এই সময়টা অনেকটাই সুবিধা প্রদান করে। এমনও হয় যে হোষ্টের বাড়ির বিছানা সরিয়ে সেখানে ঢালাও ভাবে ফ্লোরে বিছানা পাতা হয়। আর আমন্ত্রিত অতিথিরাও আনন্দ চিত্তে সেই বিছানা দখল করে নিচ্ছে। যদিও লেপ কিংবা কম্বল ভাগে পাওনা নিয়ে অনেকেই অনেক অভিযোগ তোলেন। কিন্তু এই একত্রে ঢালাও বিছানায় সবাই মিয়ে শুয়ে শুয়েও রাতভর গল্প করবার একটা দারুন সুযোগ পেয়ে বসে। আর অনেকের কাছে এই সুযোগটাও একটা গোল্ডেন মেমরি হয়ে রয়।

কনের সাজ

পাড়া-প্রতিবেশী আর বেশ কিছু আত্নীয়-স্বজন যে বিয়ের দিনে কনের সাজ‌'টা কেমন হলো তা নিয়ে জাজ করে তা আশা করি আপনাদের আর নতুন করে বলতে হবে না। কিন্তু এই সাজ বা মেকআপ ধরে রাখা কিন্তু সহজ কোন বিষয় না। এমনকি শীতের এই সময়টাতেও মেকআপ নিয়ে স্টেজে বসলে দেখা যায় পাশ কনের এই মেকআপ ঠিক রাখতে একজন হেল্পিং হ্যান্ড প্রয়োজন পড়ছে। গরমে তো সেই ঘটনাটা হয় আরও ভয়াবহ। 

বাহারি রকম ফুল

শীতে নানান সবজীর মত দেখা মেলে বাহারি রকম ফুলের। বছরের অন্য সময়টাতে প্রয়োজন মত ফুল পাওয়া না গেলেও এই মৌসুমটাতে প্রচুর ফুল পাওয়া যায়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় এটি মেজর কোন ইস্যু না হলেও এটি একটি একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার বিয়ের আনুষ্ঠানিক সাজসজ্জার ব্যাপারে। 

পরিশ্রম ও ক্লান্তি

একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে এত এত কাজ থাকে যে সময়মত একটু বিশ্রামেরও ফুরসত মেলে না। আগে দাদী-নানীরা বলতো 'বিয়ে করা আর ঘর করা সমান খাটনি'; মানে একটা ঘর বা বাড়ি বানাতে যে ইফোর্ট দিতে হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ঠিকঠাক চালিয়ে যেতেও সেই একই ইফোর্টের প্রয়োজন পড়ে। এখানে মূল অনুষ্ঠানের মাস খানিক আগে থেকেই শুরু হয় ছোটাছুটি। আর তা শেষও হয় বিয়ের মূল অনুষ্ঠানের অন্তত ৫‌/৭ দিন পরে। আর এই সময়টাতে টানা চলতে থাকে একটা না একটা কাজ। বাড়ির মহিলারা সেই ভোর থেকে ভোররাত পর্যন্ত ঘরের মেহমান সামলাবার কাজ করে, আর পুরুষরা আনুষ্ঠানিকতার বাকি সব দেখভাল করতে করতেই সময় পার করে। বছরের অন্য সময়টাতে অনেকেই এত লম্বা সময় সমানতালে কাজ করতে পারে না, কিংবা অনেকেই কাজের মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে তুলনায় শীতের এই ঠাণ্ডা সহজেই এই পরিশ্রমের ক্লান্তিকে কমিয়ে নিয়ে আসে, আর ক্লান্তিও দূর করে নিমিষে। 



'শীত এবং বিয়ে' নিয়ে মানুষ যতই হাসাহাসি করুক, ট্রল করুক, কৌতুক বলুক দিন শেষে উপরোল্লিখিত বিষয় গুলো আপনি মোটেই অগ্রাহ্য করতে পারবেন না। যে বা যারা ট্রল করছে, হাসাহাসি করছে তাদেরও যদি জিজ্ঞাস করা হয় তার স্মৃতিতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিয়ের অনুষ্ঠান কোনটি, তাহলে দেখা যাবে সেটিও কোন এক শীতে অনুষ্ঠিত বিয়ের অনুষ্ঠান। অথবা জিজ্ঞাস করলে তাদের মধ্যে অবিবাহিত বড় একটা সংখ্যাই হয়তো শীতেই বিয়ে করতে চাইবে। 

সে যাই হোক, 'বিয়ে' এবং বিয়ের 'অনুষ্ঠান'টি হোক সকলের জন্যে আনন্দদায়ক উপভোগ্য একটি ঘটনা সমৃদ্ধ স্মৃতি। বিয়ে হোক নতুন ও পুরাতন সকল আত্নার আপন আত্নীয়দের মিলনমেলা। এই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করে আজকে এখানে ইতি টানলাম। 

শনিবার, জুলাই ১৮, ২০২০

ডেবিয়ান ১০ এক্সএফসিই ইন্সটলের পর করণীয়


    ডেবিয়ানকে বলা হয়ে থাকে লিনাক্সের সবচেয়ে স্ট্যাবল ডিস্ট্রো। সফটওয়্যার কালেকশনে একটু পুরাতন হলেও আপডেটের পরপর ক্রাশ করা, কিংবা প্যাকেজ আপগ্রেডের পর সিস্টেমে ঝামেলা তৈরি হওয়ায় ঘটনা তুলনামূলক ভাবে সবচেয়ে কম ঘটে থাকে এই সলিড রক ডেবিয়ান ডিস্ট্রোতে। ডেবিয়ানের স্ট্যাবিলিটিকে কাজে লাগিয়ে এর থেকেই তৈরি হয়েছে আরও অনেক অনেক ডিস্ট্রো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ডিস্ট্রো হচ্ছে - Ubuntu, MX Linux, Linux Mint Debian Edition বা LMDE, Endless OS, antiX প্রভৃতি।

তো যাই হোক, ধরে নিলাম আপনি আপনার পিসিতে ডেবিয়ান এর সর্বশেষ ভার্সন Debian 10 (Buster) টি XFCE ডেক্সটপ এনভায়রনমেন্ট বা DE সহ ইন্সটল করে নিয়েছেন। এখন তারপর কি করা যায়?

এরপর কিছু কাজ করে নিলে আপনার ডেবিয়ান এক্সপেরিয়েন্স হবে আরও দারুন। চলুন দেখে নেয়া যাক সেই কাজের স্টেপ গুলো।

১) user কে sudoers ফাইলে যুক্ত করাঃ

    সিস্টেমের পরিবর্তন সহ সফটওয়্যার বা প্যাকেজ ইন্সটলেশন করার জন্যে সকল পাওয়ার ডিফল্ট ভাবে দেয়া থাকে root ইজজারের কাছে। সেক্ষেত্রে সাধারণ ইউজার এই ধরণের কাজ গুলো করতে পারে না। কিন্তু এখন কাজের জন্যে root ইউজারের পাওয়ারটুকু আমরা আমাদের সাধারণ ইউজারকে প্রদাণ করবো। এতে সে সিস্টেমের এডমিনিসট্রিটিভ পাওয়ার পাবে। এটি করার জন্যে Terminal চালু করে প্রথমে এই কমান্ড টি লিখে এন্টার দিন-

 $ sudo nano /etc/sudoers

এখন আপনার root ইউজারের পাসওয়ার্ডটি দিয়ে এন্টার চাপুন।

এতে টার্মিনালের nano টেক্সট এডিটরে sudoers ফাইলটি সচল হবে। এই ফাইলটি থেকে ‘root  ALL=(ALL:ALL) ALL’ লেখাটি খুজে বের করুন। তারপর লাইনটির শেষে এন্টার কী-প্রেস করে নতুন লাইনে লিখুন ‘{username}  ALL=(ALL:ALL) ALL’। এখানকার {username} অংশটি আপনার সিস্টেমের বর্তমান ইউজারের ইউজারনেম দিয়ে পরিবর্তন করে নিন। যেমন oliver  ALL=(ALL:ALL) ALL


এখন কিবোর্ড থেকে প্রথমে Ctrl+O একত্রে চেপে এন্টার দিয়ে পরিবর্তন গুলো ফাইলে সেভ করুন। তারপর Ctrl+X চেপে nano এডিটরটি বন্ধ করুন।


২) লোকাল মিরর এবং non-free রিপোজিটরি এড করাঃ

    লোকাল মিরর ব্যবহার করলে প্রয়োজনীয় প্যাকেজগুলো খুব দ্রুত ডাওনলোড করা যায়। বাংলাদেশে ডেবিয়ানের ২টি নির্ভরযোগ্য রিপোজিটরি মিরর রয়েছে। এগুলো হলো-

  • http://mirror.amberit.com.bd/debian/
  • http://mirror.xeonbd.com/debian/
এদের মধ্য থেকে AmberIT বেশ প‌ুরাতন। আমি এখন পর্যন্ত এই মিররটিই ব্যবহার করছি। পাশাপাশি XeonBD’র মিররটিও ভালো।

এছাড়া প্রয়োজনীয় কিছু non-free সফটওয়্যার বা প্যাকেজ (যেমন কিছু মিডিয়া কোডেক, ফন্ট, ফ্লাশ সাপোর্ট প্রভৃতি) ব্যবহার করার জন্যে ‘contrib’ এবং ‘non-free’ রিপোজিটরিতে যুক্ত করতে হবে। এটি করার জন্যে টার্মিনালে গিয়ে লিখুন-

 $ sudo nano /etc/apt/sources.list

এরপর nano এডিটরে ছবির মত পরিবর্তন করে নিন-



সম্পূর্ণ source.list ফাইলটি এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

এখন কিবোর্ড থেকে প্রথমে Ctrl+O একত্রে চেপে এন্টার দিয়ে পরিবর্তন গুলো ফাইলে সেভ করুন। তারপর Ctrl+X চেপে nano এডিটরটি বন্ধ করুন।


৩) সিস্টেম আপডেট করাঃ

    পূর্বের পরিবর্তন গুলো ঠিকঠাক হয়ে থাকলে এখন আমাদের প্যাকেজ লিস্ট নতুন করে সিনক্রোনাইজ করতে হবে। এবং প্রয়োজনীয় আপডেটেট প্যাকেজ গুলো ইন্সটল করে নিতে হবে। এর জন্যে টার্মিনাল চালু করে নিচের কমান্ডটি লিখে এন্টার চাপুন-

 $ sudo apt update && sudo apt upgrade -y

এরপর আপনার পাসওয়ার্ড টাইপ করে আবার এন্টার চাপুন। ইন্টারনেট কানেকশন সচল থাকলে কিছুক্ষন সময় নিয়ে সিস্টেমটি আপডেট চেক করবে। এরপর কোন আপডেট পেলে তা নিজে নিজেই ইন্সটল করে নিবে। কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।


৪) build-essential প্যাকেজ ইন্সটল করাঃ

    বেশ কিছু প্যাকেজ কম্পাইল কিংবা সিস্টেমের অভ্যন্তরীন কিছু কাজের প্রয়োজনে কয়েকটি প্যাকেজ ইন্সটল করা খুবই প্রয়োজন। তেমন কিছু প্যাকেজ ইন্সটল করতে টার্মিনালে নিচের কোড গুলো লিখে এন্টার প্রেস করুন-

 $ sudo apt install -y build-essential dkms linux-headers-$(uname -r) firmware-linux firmware-linux-nonfree

এরপর আপনার পাসওয়ার্ড টাইপ করে আবার এন্টার চাপুন। এরপর প্যাকেজগুলো ইন্সটল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।


৫) microcode প্যাকেজ ইন্সটল করাঃ

    আপনার সিস্টেমের ধরন অনুযায়ী microcode প্যাকেজ ইন্সটল করুন। যে কম্পানির প্রসেসর দিয়ে আপনার সিস্টেমটি তৈরি হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা মাইক্রোকোড রয়েছে।

আপনার সিস্টেমটি Intel এর হয়ে থাকলে টার্মিনাল চালু করে তাতে লিখুন-
 $ sudo apt install intel-microcode

কিংবা আপনার সিস্টেমটি AMD-র হয়ে থাকলে টার্মিনাল চালু করে তাতে লিখুন-
 $ sudo apt install amd64-microcode

এরপর আপনার পাসওয়ার্ড টাইপ করে আবার এন্টার চাপুন। এরপর প্যাকেজগুলো ইন্সটল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।


৬) Synaptic প্যাকেজ ম্যানেজার ইন্সটলঃ

 ডেবিয়ানের জন্যে একটি জনপ্রিয় গ্রাফিকাল প্যাকেজ ম্যানেজার হচ্ছে Synaptic। এখানে  synaptic এর সাথে আরও দুইটি প্যাকেজ ইন্সটল করা হবে। apt-xapian-index প্যাকেজটি প্যাকেজ ইনডেক্সের ডাটাবেসে সংরক্ষন করে এবং প্রয়োজনে দ্রুততর সময়ে কোন প্যাকেজ খুঁজে বের করতে সহায়তা করে। policykit-1-gnome প্যাকেজটি বিভিন্ন প্যাকেজের পলিসির কনফিগ গুলোর কাঠামো তৈরি করার কাজটি করে থাকে।


প্যাকেজ গুলো ইন্সটল করতে টার্মিনাল চালু করে তাতে লিখুন-
 $ sudo apt install -y synaptic apt-xapian-index policykit-1-gnome

এরপর আপনার পাসওয়ার্ড টাইপ করে আবার এন্টার চাপুন। এরপর প্যাকেজগুলো ইন্সটল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।


৭) ফায়ারওয়াল ইন্সটল ও তা সচল করাঃ

    লিনাক্সের জন্যে চমৎকার একটি ফায়ারওয়াল প্রোগ্রাম হলো Uncomplicated Firewall বা ufw। এটি ইন্টারনেট এবং আপনার হার্ডওয়্যারের মধ্যকার একটি সুরক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করে। ufw ইন্সটল করার জন্যে টার্মিনাল চালু করে তাতে লিখুন-

 $ sudo apt install -y ufw

এরপর আপনার পাসওয়ার্ড দিয়ে প্যাকেজ ইন্সটল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

প্যাকেজ ইন্সটল হয়ে গেলে ফায়ারওয়াল সচল করার জন্যে টার্মিনালে লিখুন-

 $ sudo ufw enable

মুহুর্তের মধ্যেই ফায়ারওয়ালটি সচল হয়ে যাবে। এখন ফায়ারওয়ালটি সচল অবস্থা পরীক্ষা করার জন্যে টার্মিনালে  লিখুন-

 $ sudo ufw status verbose

কমান্ড টাইপ করে এন্টার প্রেস করলে এমন আউটপুট দেখা যাবে-


এখানে লক্ষ্য করুন Status: active রয়েছে। এর মানে ফায়ারওয়ালটি সচল রয়েছে। যদি ফায়ারওয়াল সচল না থাকতো তাহলে এখানে Status: inactive লেখা আউটপুট আসতো।


৮) বুট টাইমকে তরান্বিত করাঃ

     প্রতিবার সিস্টেম চালু করার সময় Grub লোডারে ৫ সেকেন্ড করে অপেক্ষা করতে হয়। অবশ্য আপনি যদি ডুয়েল বুটে উইন্ডোজ এবং লিনাক্স ২টি অপারেটিং সিস্টেমই চালিয়ে থাকেন তাহলে এই অপেক্ষাটা অনেকের কাছেই প্রয়োজনীয়। তবুও ৫ সেকেন্ড করে অপেক্ষাটা কারও কারও কাছে একটু বেশি মনে হতে পারে। আমরা এখন এই ৫ সেকেন্ডের অপেক্ষাটা ২ সেকেন্ডে কমিয়ে নিয়ে আসবো। তো চলুন করে ফেলা যাক।

প্রথমে টার্মিনালে চালু করে তাতে টাইপ করে এন্টার চাপুন-

 $ sudo nano /etc/default/grub

পাসওয়ার্ড দিয়ে এন্টার দিলেই grub কনফিগারেশন ফাইলটি nano এডিটরে চালু হয়ে যাবে। এখন কনফিগ ফাইলটি থেকে GRUB_TIMEOUT=5 লাইনটি খুজে বের করুন। এখন 5 এর স্থানে 2 লিখুন, অথবা আপনার সুবিধামত সময় নির্ধারণ করুন। মনে রাখবেন, এখানে সময়টা সেকেন্ডের হিসেবে লিখতে হবে। পরিবর্তনের পর কনফিগ ফাইলটি দেখতে এমন হবে-


এখন কিবোর্ড থেকে প্রথমে Ctrl+O একত্রে চেপে এন্টার দিয়ে পরিবর্তন গুলো ফাইলে সেভ করুন। তারপর Ctrl+X চেপে nano এডিটরটি বন্ধ করুন। এরপর টার্মিনালে নিচের কমান্ডটি লিখে এন্টার প্রেস করুন-

 $ sudo update-grub

grub আপডেট কমপ্লিট হলে টার্মিনাল বন্ধ করে সিস্টেম রিস্টার্ট দিয়ে পরিবর্তনটুকু চেক করে আসুন।


৯) lightDM কে একটু টুইকঃ

    lightDM ডিসপ্লে ম্যানেজারটি xfce ডেক্সটপ এনভায়রনমেন্টের ডিফল্ট লগইন ম্যানেজার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু ডেবিয়ানে লগইন স্ক্রিনে এসে প্রতিবার username এবং password দিয়ে তারপর লগইন করতে হয়। এখন আমরা চাচ্ছি লগইন স্ক্রিনে username আগে থেকেই সয়ংক্রিয় লেখা থাকবে, আমরা শুধু পাসওয়ার্ডটা টাইপ করে লগইন করবো। চলুন করে ফেলা যাক কাজটুকু।
টার্মিনাল চালু করে প্রথমে এই কমান্ডটি লিখে এন্টার প্রেস করুন-

 $ sudo nano /usr/share/lightdm/lightdm.conf.d/01_my.conf

তারপর আপনার পাসওয়ার্ড চাইলে পুনরায় সেটি দিয়ে আবার এন্টার চাপুন। কনফিগ ফাইলটি চালু হবে। প্রাথমিক অবস্থায় ফাইলটিতে কোন কিছু লেখা নাও থাকতে পারে। আপনি এখানে নিচে দেয়া কনফিগ কমান্ড লিখুন-

[SeatDefaults]
greeter-hide-users=false


এখন কিবোর্ড থেকে প্রথমে Ctrl+O একত্রে চেপে এন্টার দিয়ে পরিবর্তন গুলো ফাইলে সেভ করুন। তারপর Ctrl+X চেপে nano এডিটরটি বন্ধ করুন। এরপর লগ-আউট হয়ে নতুন করে লগইন করুন। তারপর থেকে লগইনের সময় আপনাকে আর আপনার username-টি লিখতে হবে না, সেটি পূর্বে থেকেই লগইন ম্যানেজারে লিখা থাকবে।


১০) Restricted-extras প্যাকেজ সমূহ ইন্সটল করাঃ

    অডিও কিংবা ভিডিও প্লে করার জন্যে আমাদের কিছু কোডেক প্রয়োজন। কিন্তু কোডেক গুলো মুক্ত লইসেন্সের আলতাভুক্ত না হবার কারণে এদের সরাসরি ডেবিয়ান ডিস্ট্রোতে সরবরাহ করা হয় না, আপনাকে মেনুয়াললি সেসব ইন্সটল করে নিতে হবে।

Restricted-extras প্যাকেজ ইন্সটল করবার জন্যে প্রথমে টার্মিনালে গিয়ে লিখুন-

 $ sudo apt install -y ttf-mscorefonts-installer rar unrar libavcodec-extra gstreamer1.0-libav gstreamer1.0-plugins-ugly gstreamer1.0-vaapi

তারপর আপনার পাসওয়ার্ড চাইলে পুনরায় সেটি দিয়ে আবার এন্টার চাপুন। ইন্সটল শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।


১১) বাংলা ফন্ট সমূহ ইন্সটল এবং সিস্টেমওয়াইড বাংলা ফন্ট কনফিগ করাঃ

    ইউনিকোড ভিত্তিক বাংলা ফন্ট সমূহ আপনার সিস্টেমে ইন্সটল করার জন্যে নিচের কমান্ডটি আপনার টার্মিনালে লিখে এন্টার চাপুন-

 $ sudo cd /tmp;wget --no-check-certificate https://github.com/r-not/unibnfonts/archive/master.tar.gz -O ubf.tar.gz;sudo tar -xvf ubf.tar.gz -C /usr/share/fonts/;rm ubf.tar.gz

এরপর আপনার পাসওয়ার্ডটি দিয়ে পুনরায় এন্টার চাপুন। সয়ংক্রিয়ভাবে ইউনিকোড বাংলা ফন্ট গুলো ইন্সটল হয়ে যাবে।

এখন সিস্টেমওয়াইড ঝকঝকে বাংলা দেখার জন্যে নিচের পদ্ধতিটি ফলো করুন-

  • প্রথমে আপনার হোম ডিরেক্টরির .config ফোল্ডারে প্রবেশ করুন। এরপর fontconfig ডাইরেক্টরিটি খুজে বের করুন। যদি পূর্বে থেকে fontconfig ডাইরেক্টরিটি না থেকে থাকে তাহলে সেটি তৈরি করে নিন। fontconfig ডাইরেক্টরিটি তৈরি করতে টার্মিনালে ধারাবাহিক ভাবে নিচের কমান্ডগুলো লিখুন-
         $ cd .config
         $ mkdir fontconfig
         $ cd fontconfig


  • এরপর fontconfig ডিরেক্টরিতে fonts.conf নামে একটি ফাইল তৈরি করুন। fonts.conf তৈরি করতে লিখুন-
 
        $ touch fonts.conf

  • এরপর nano এডিটরে ফাইলটি চালু করুন। nano এডিটর দিয়ে ফাইলটি চালু করার জন্যে টার্মিনালে লিখুন-
            $ nano fonts.conf

  • পূর্বে থেকে কনফিগ ফাইলে কিছু লিখা থাকলে ডাওন এ্যারো-কী চেপে ফাইলটির একদম শেষে চলে আসুন। তারপর নিচে উল্লেখিত কোড কিংবা এই লিংক থেকে প্রাপ্ত কোড গুলি fonts.conf ফাইলের একদম শেষে গিয়ে পেস্ট করে দিন।
<?xml version="1.0"?>
<!DOCTYPE fontconfig SYSTEM "fonts.dtd">
<fontconfig>
    <match target="font">
        <edit mode="assign" name="hinting" >
            <bool>true</bool>
        </edit>
        <edit mode="assign" name="autohint" >
            <bool>true</bool>
        </edit>
        <edit mode="assign" name="hintstyle" >
            <const>hintslight</const>
        </edit>
        <edit mode="assign" name="rgba" >
            <const>rgb</const>
        </edit>
        <edit mode="assign" name="antialias" >
            <bool>true</bool>
        </edit>
        <edit mode="assign" name="lcdfilter">
            <const>lcddefault</const>
        </edit>
    </match>

<!-- Set preferred serif, sans serif, and monospace fonts. →
    <alias>
        <family>serif</family>
        <prefer>
            <family>Kalpurush</family>
        </prefer>
    </alias>
    <alias>
        <family>sans-serif</family>
        <prefer>
            <family>Kalpurush</family>
        </prefer>
    </alias>
    <alias>
        <family>sans</family>
        <prefer>
            <family>Kalpurush</family>
        </prefer>
    </alias>
    <alias>
        <family>monospace</family>
        <prefer>
            <family>Kalpurush</family>
        </prefer>
    </alias>
    <alias>
        <family>mono</family>
        <prefer>
            <family>Kalpurush</family>
        </prefer>
    </alias>

</fontconfig>
 


fonts.conf

এখন কিবোর্ড থেকে প্রথমে Ctrl+O একত্রে চেপে এন্টার দিয়ে পরিবর্তন গুলো ফাইলে সেভ করুন। তারপর Ctrl+X চেপে nano এডিটরটি বন্ধ করুন। এরপর লগ-আউট হয়ে নতুন করে লগইন করুন।
আপনি চাইলে  fonts.conf ফাইলটি এখান থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন।


১২) প্রয়োজনীয় কিছু প্যাকেজ ইন্সটল করাঃ

    এখন আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু প্যাকেজ ইন্সটল করবো। সিস্টেম ব্লোটিং এর চিন্তা করলে কিংবা মিনিলাম সিস্টেমে একদম আপনার পছন্দসই প্যাকেজ ইন্সটল করার কথা ভাবলে করলে এই ধাপটি আপনি ইচ্ছা হলে স্কিপ করতে পারেন। কিন্তু যারা প্রয়োজনীয় সফটও্যার গুলো সিস্টেমে ইন্সটল করে রাখতে চান তারা ধাপটি ফলো করুন।

প্রথমে টার্মিনাল চালু করে নিচের কমান্ডটি কপি-পেস্ট করে এন্টার চাপুন-

 $ sudo apt install -y xfce4-taskmanager xfce4-power-manager xfce4-terminal xfce4-xkb-plugin xfce4-screenshooter xfce4-clipman xfce4-panel-dev thunar-archive-plugin mousepad ristretto network-manager-gnome network-manager xserver-xorg-input-synaptics rsync debian-keyring gnome-disk-utility gparted p7zip-full p7zip unzip xarchiver build-essential libreoffice libreoffice-impress libreoffice-writer libreoffice-calc mythes-en-us hunspell hunspell-en-us aspell aspell-en fonts-noto-mono fonts-dejavu-extra ttf-dejavu fonts-liberation ttf-bitstream-vera fonts-dejavu fonts-droid-fallback ttf-dejavu-extra fonts-freefont-ttf ttf-mscorefonts-installer ttf-dejavu-core fonts-opensymbol vlc audacious mplayer mpv pavucontrol qpdfview bleachbit menulibre gimp gimp-data gimp-data-extras gimp-gmic gimp-gutenprint gimp-plugin-registry gimp-ufraw flameshot arc-theme faenza-icon-theme

 
 
 
আপাতত এখানেই ইতি টানছি। লেখায় কিছু ভুল থাকা স্বাভাবিক। নজরে পড়লে সংশোধনের চেষ্টা থাকবে। তাছাড়া আমিও মোটামুটি লিনাক্সে নতুন ইউজারদের একজন। তথ্যগত ভুল চোখে পড়লে কেউ যদি তা দয়া করে অবহিত করেন, তাহলে সেটিও সুধরে নেবার চেষ্টা করবো।

Debian XFCE desktop


ডেবিয়ান লিনাক্সের সাথে আপনার পথচলা হোক আনন্দময়।

বুধবার, জুলাই ১৫, ২০২০

ফিরে যায় আলোর মশাল



শয়তানের দোসর হয়ে ওরা এসেছিলো সর্স্তপণে
মুঠি মুঠি শাপ-সন্দেশ বিলিয়েছিলো সমাগমে
কেউ হাত বাড়িয়ে নিয়েছিলো, তো কেউ লুকিয়ে
আর বাকিরা নিয়েছিলো অজান্তে, অনিচ্ছায় আর অসতর্কে

অতঃপর সবাই মিলে সন্দেশের মিঠাই চেটেপুটে খেয়েছিলো।

যতক্ষণে ঐ সন্দেশ তাদের পেটে পাক ধরিয়েছিলো
ততক্ষণে ওরা বিনিময়ের বিপণি খুলে বসেছিলো
হাজার হাজার বিনিময় ছিলো সেখানে,
রূপ, যৌবন, বিত্ত কিংবা বৈভব --কোনটারই কমতি ছিলো না

ওরা জনে জনে, আর গুনে গুণে এইসবই বিনিময় করে যাচ্ছিলো।

এরমাঝেই এক সাধু ধ্যান ভেঙ্গে ফিরেছিলো
উচ্ছাসে, উশৃঙ্খলে, আর অহংকারে অন্ধ অমানুষ সে দেখেছিলো
পড়ে থেকে গলে যাওয়া ভাববাদীর লাশ সে পেয়েছিলো
মোড়ে মোড়ে ডেকে যাওয়া খাদিমের আহ্বান সে শুনেছিলো

সাবধানে, নিঃশব্দে আর নিস্তব্দে সাধু ঐ লোকালয় ছেড়েছিলো।

এরা সব অন্তর পচে যাওয়া অর্ধমৃত নরকের পোকা
এরা সব ধর্ম-পিতার অন্তর খুবলে খাওয়া লোভী কীড়া
এরা সব পয়গম্বরকে নিজ পায়ে পিষে মারা পাপী
এরা সব মুন্ড ছাড়া লাফিয়ে চলা বোকচন্দর জাতী

আর এদের কৃতকর্মে ত্যাক্ত হয়েই আলোর মশাল সেবারে আলো না ছড়িয়েই ফিরেছিলো।
 
  

বুধবার, অক্টোবর ২৩, ২০১৯

ড্রিম মডুলার


অসম্ভব সুন্দর একটা ঘুম ভেঙ্গে উঠলাম। দারুন কোন সপ্ন দেখছিলাম হয়তো। কিন্তু স্বপ্নে কি দেখছিলাম ছিটেফোটাও মনে পড়ছেনা এই মুহুর্তে। কিন্তু তা নিয়ে কোন আফসোস হচ্ছে না মোটেই। আগামি রাতেও নিশ্চই দারুন কোন স্বপ্ন দেখবো, তাই মনে না পড়া স্বপ্ন নিয়ে বিন্দু মাত্র আফসোস হচ্ছে না।

পাঁচ দশক এর কিছু পূর্বে সপ্ন দেখার কিংবা নিয়ন্ত্রণের এক যুগান্তকারী মেশিন মানুষ আবিস্কার করেছে। শুরুতে অনেকেই এর ব্যবহার নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছিল, যুক্তি-তর্কে একে মানব সভ্যতার দারুণ ক্ষতির সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছিলো। কিন্তু সকল প্রশ্ন আর যুক্তি-তর্ককে পেছনে ফেলে মানুষ একে গ্রহন করেছে। আর শুধু গ্রহন করেছে বললে ভুল হবে, কারণ দিনে দিনে তারা এটিকে তাদের জীবনের সাথে ওতপ্রেত ভাবে জড়িয়ে নিয়েছে।

এখন আর কেউ অধরা-অস্পর্শী স্বাভাবিক স্বপ্ন দেখে না। সবাই যার যার ড্রিম মডুলারে পছন্দসই সপ্ন দেখে, কিংবা তাদের প্রোফাইল আর প্রতিদিনকার একটিভিটি মনিটর করে তাদের সমন্বয়ে সেন্ট্রাল ড্রিম ক্লাউডের নিয়ন্ত্রনাধীন প্রিসেটেড সপ্ন দেখে। আর এতে করে সস্তির পাশাপাশি অপরাধের মাত্রাও দারুণভাবে কমে এসেছে। ফলে যারা শুরুতে ড্রিম মড্যুলারের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলো, কিংবা এ নিয়ে যাদের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছিলো তারাও একে একে চুপ করতে শুরু করে। উল্টো শিশু থেকে বুড়ো সকলেই এর ব্যবহারে নিয়মিত হয়ে উঠে।

এখন আর শিশুরা রাতে স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়ে জেগে উঠে না, বরং ঘুমের মাঝেই তারা নানান জিনিষ শেখে, দর্শনীয় আর ঐতিহাসিক স্থান সমূহ ভ্রমন করে, বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি বিষয় গুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শেখে। বয়স্ক মানুষেরাও এখন আর নির্ঘুম রাত কাটায় না, ড্রিম মড্যুলারের বদৌলতে তারাও ঘুমে ঘুমে দারুণ সব স্বপ্ন দেখতে দেখতে রাত পার করে দেয়। কর্মব্যস্ত যুবক-যুবতী কিংবা মধ্যবয়স্করা আর সোস্যাল মিডিয়াতে মেতে উঠে না, তাদের একটা বড় অংশই নিজ নিজ চাহিদামত কিংবা নির্ধারিত প্রিসেট অনুসারে ড্রিম মডুলারে ডুবে গিয়ে স্বপ্নে স্বপ্নে সময় পার করে।

আমার অবস্থাও তার ব্যতিক্রম কিছু না। দিনভর কাজ করে যে ইউনিট সংগ্রহ করি, তার বড় একটা অংশ খাবার আর লিভিং রেন্টালে খরচ করে অবশিষ্ট যা থাকে তার কিছুটা খরচ করে ড্রিম মডুলারের ভিন্ন ভিন্ন আপগ্রেড সাব‍্‍সক্রাইব করি। আর তারপর শরীর আর মনের প্রশান্তি লাভের আশায় ড্রিম মডুলার সচল করে ঘুমের অতলে ডুবে যেতে শুরু করি। তারপর ফের সকালে ঠিক নির্দিষ্ট সময় জেগে উঠি। আর এভাবেই আমার দিন গুলো কেটে যাচ্ছে।‌

সেদিন সন্ধ্যায় কাজ শেষে ফিরে কি মনে করে যেন নিউজ আর্কাইভ ব্রাউস করতে শুরু করলাম। অবস্য সেসব জুড়ে কেবল উন্নতি, সম্ভৃদ্ধি আর নানান মাইল ফলক স্পর্শ করার গদবাধা নিউজ দিয়েই ভর্তি। এইসব নিউজের কারনেই এখন আর কেউ নিউজ আর্কাইভ ঘাটে না। বোরিং নিউজ গুলো স্ক্রল করতে করতে বেখেয়ালে একটি লিংকে ক্লিক লেগে যায়। পর পর কয়েকটি উইন্ডো পর্যায়ক্রমে চালু-বন্ধ-চালু হয়ে একটি নিউজ উইন্ডোতে গিয়ে স্থির হয়। নিউজটড অটো-প্লে মুডেই ছিলো, তাই সয়ংক্রিয় নিজেই সংবাদ উপস্থাপন করতে শুরু করলো।

একজন ব্যক্তি বলে যাচ্ছে-
    আপনি যখন এই নিউজটি শুনছেন ঠিক সে সময়ের নিরীক্ষা অনুযায়ী গোটা পৃথিবীতে মানুষের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ শূন্যের ঘরে অবস্থান করছে। একজন সাধারন মানুষের মস্তিস্কের একটিভিটি আর একটি ডেটা রেকর্ডেট নিন্ম স্তরের বি-২৫২ টাইপের গৃহস্থলির কাজের রোবটের একটিভিটি এক সমপর্যায়ের। আর এই সমীক্ষাটি কেবল গত ১৫ বছরের মধ্যে যারা জন্মগ্রহণ করেছে তাদের জন্যে নির্ভুল ভাবে প্রমাণিত। আর যদি এই ধারা অব্যহত থাকে তবে আগামি ৭০ থেকে ৯০ বছর পর বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন জীবিত মানুষের সংখ্যা দাড়াবে শূণ্যের কোঠায়। যদিও ভবিষ্যতকে একদম নির্ভুল বলা সম্ভব না, কিন্তু সমীক্ষা অনুসারে ৭০ থেকে ৯০ বছর পর মানুষ আর একটি রেকর্ডেড মিডিয়া প্লেয়ারের মাঝে কোন পার্থক্য থাকবে না। তারা হবে আদি গুহা মানবের আধুনিকে রূপান্তরিত গৃহবাসী বুদ্ধিহীন মানব সন্তান।

    আর এই ঘটনাটির জন্যে যে জিনিষটি অবদান রেখেছে, সেটি হলো- আমাদের অতি প্রিয় 'ড্রিম মডুলার'। ড্রিম মডুলার কেবল আমাদের স্বপ্ন দেখাকে নিয়ন্ত্রনই করছে না, বরং আমাদের স্বপ্ন দেখবার স্বাভাবিক ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিয়েছে। আর একই সাথে প্রকৃতিও আমাদের এই অবিবেচিত কার্জক্রমটির প্রতিশোধ তুলে নিয়েছে। সে মানুষের মস্তিস্কের বির্বতনকে রূখে দিয়ে ছুড়ে ফেলেছে একদম বিবর্তনের শুরুর পূর্বের অবস্থানে।

    এই সত্যটি উৎঘাটনের পর যখন তা উপলদ্ধি করতে পারলাম, ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবাই এখন এই ড্রিম মডুলার নামক দুঃস্বপ্নটাতে বন্দি পড়ে গেছে। তবুও নিজেকে স্বান্তনা দেবার উদ্দেশ্যে ভাবি- হয়তো দুনিয়ার কোন এক কোণে কোন এক গোষ্ঠি এখনো এই দুঃস্বপ্ন হতে নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেছে। গড্ডালিকার এই প্রবাহে আমাদের মত গা ভাসিয়ে দেয় নি। হয়তো তারাই বিবর্তনের ধারাকে অক্ষুন্ন রেখে মানুষের মত মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকবে।

যদিও সেই আশাটি একদম ক্ষীণ।




নিউজ পোর্টালটার নিউজ শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে তা বন্ধ করে দিলাম। তারপর আমার ড্রিম মডুলারটি চালু করে ঘুমের অতলে নিমজ্জিত হতে শুরু করলাম। স্বপ্নের মাঝেই আমার ড্রিম মডুলারটি এমন বিচলিত করার মত স্মৃতিটি ঢেকে দিয়ে সকালে আমাকে একটি ফুরফুরে মেজাজ দিয়ে জাগিয়ে তুলবে।






বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯

এলোমেলো ভাবনাঃ হারাবার সীমাবদ্ধতা...


টুক করে সব ছেড়ে ছুড়ে হুস করে সময়ের স্রোতে হারিয়ে যেতে খুব ইচ্ছা করে। নিকষ অন্ধকারে আপন স্বত্তাকে গুলিয়ে তাতে গলে যেতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে নিঃশব্দের নিঝুমে নিজেকে বিনিময় করে কোন এক শুনশানে নিজেকে পুনরায় আবিস্কার করতে। ইচ্ছে করে গালের গহ্‌বরে গিয়ে ছোট কোন এক কণার গতিপথ পাল্টে দিয়ে নিজের অস্বিত্বের অবস্থানকে গুড়িয়ে দিতে।

কিন্তু এই সবই অলীক কল্পনা। এখানে কেউ হারায় না। এখানে মিছিমিছি হারাবার অভিনয় করা যায়। এখানে কেউ পথ ভুলে পথিক হতে পারে না। কারণ পথই তাকে নতুন পথের দিশা দিয়ে যায়। কারণ এখানে সবাই এক অদৃশ্যের সুতোতে বাঁধা। এমন এক বিস্বয়কর এই অদৃশ্যের সুতো যে কেউ একজন নিজের অস্তিত্ব জানান দেবার আগেই সবাই নিজ নিজ স্মৃতির সুতোর সাথে তার অদৃশ্য সুতোটাকে কষে বেধে নেয়। তাই এখানে কেবল ব্যক্তির অবস্থান পরিবর্তন হয়। সে দূরে, কাছে, একেবারেই সন্নিকটে কিংবা আত্মবিলাসী অভিমানি হয়ে দৃষ্টির আড়াল হতে পারে। কিন্তু তার সেই অদৃশ্য সুতো তার অবস্থানের ঠিকানা ঠিকই পৌছে দেয় তার পরিচিতের কাছে।

আর তাই সে সুগভীর খালে নিপতিত হয়েও ঢুবে থাকতে পারে না। সুউচ্চ পর্বতের কোণে বরফে জমে গিয়ে কিংবা প্রচণ্ড খরাতাপে তৃষ্ণা বুকে নিয়ে চোখ বুঁজে পড়ে থাকলেও হারিয়ে যায় না। তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে ডাস্টবিনে ফেলে রাখলেও সেই অস্বিত্বকে মন থেকে মুছে ফেলতে পারে না। নিপিড়নে কিংবা লালসায় গলা টিপে মারলেও মস্তিস্কের গোপন অংশ থেকে তার অস্তিত্ব মুছে যায় না। কিংবা নীল নদে কিংবা কোন মালভূমির খুব গভীরে হাজার বছর আগে দেবে গিয়ে থাকলেও তার অদৃশ্য সেই সুতো তাকে মুক্তি দেয় না।

তার সৃষ্ট হওয়াই তাকে অবিনশ্বর করে রাখে। গোপনে, প্রকাশ্যে কিংবা লাখো-কোটি সৃষ্টির ভিন্ন রূপের অন্তরালে অথবা কারও কল্পনায়...
  
   
    
    
          
           

রবিবার, আগস্ট ১১, ২০১৯

মজার ছবি-ব্লগঃ ভাস্কর্যের সাথে তাহারা! (দ্বিতীয় পর্ব)

জীবনে আনন্দের সঙ্গা ব্যক্তি  ভেদে ভিন্ন। কেউ আনন্দে জীবনটাই কাটায়, তাকে বাইরে আর নতুন কিছুর খোঁজ করতে হয় না। আর কেউ আনন্দের অপেক্ষায় জীবনটা পার করে দেয়। আর কেউ কেউ নিজের আনন্দটাকে নিজেই তৈরি করে নেয়। এমনই কিছু ব্যক্তি যারা নিজেদের আনন্দ নিজেরাই খুঁজে নিতে জানে তাদের কিছু ছবি ছড়িয়ে আছে আর্ন্তজালিকার নানা কোন জুড়ে। আজকের আয়োজন তেমনি কিছু আনন্দময় দুষ্টামিতে ভরপুর ছবি নিয়ে। ভালোকথা, এই মানুষগুলোর সাথে ছবিতে অংশগ্রহণ করেছে বেশ কিছু ভাস্কর্য। চলুন দেখে নেয়া যাক তাদের সম্মিলিত দুষ্টুমি যুক্ত প্রতিভা...

চলো আমরা আমাদের ডান্স মুভ দেখিয়ে দেই!

ফের যদি স্কুল ফাঁকি দিয়ে পার্কে বসতে দেখি, তোমার আম্মুকে একদম পুরো ঘটনা বলে দিবো। হুহ্‌

জিগরি দোস্ত! কত্ত দিন পর তোর সাথে দেখা!! আয় বুকে আয় ভাই... 

দেখলা দেশের অবস্থা! দেশটা পুরোই রসাতলে যাচ্ছে...

অনেক ফাঁকিবাজি করেছিস। বাসায় চল, আজ তোর একদিন কি আমার একদিন...

আইনস্টাইন সাহেব, চলেন একটা সেল্ফি নেই। কাল ইন্সটাগ্রামে আপলোড দিবো!

দুষ্ট মেয়েদের সাথে আর মিশবি? বল! মিশবি?

উম্ম্ম্ম্ম্ম্ম্ম্মআ! 😝

প্লিজ! প্লিজ!! আমি আর কোনদিন ডিম খাবো না, প্লিজ! আমাকে ছাড়ো!!

প্রিয়তমা, কেবল তোমার অপেক্ষায় অপেক্ষায় পাথর বনেছি...

এরপর থেকে পপকর্ণ গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে না ফেলে এক জায়গায় ফেলবি,
আর আমার ভাগে যেন ভুলেও কম না পড়ে...

চল, তোমাকে শপিং-এ নিয়ে যাই...

দূরবিনে খুঁজে লাভ নেই, আমি এখানেই, তোমার পাশে...

বুঝলে! ঐ যে দিনের ঘটনাটা বললাম না। তারপর কি হয়েছে জানো....

লেটস্‌ ফাইট! ভিসুম...!

লেডিস, আই ক্যান হোল্ড ইয়্যু বোথ ইন মাই আর্ম!

তারপর দাদু, তারপর কি হয়েছিলো..?

আআআআআআআআআআ.........

না! তোমাকে ওদের সাথে যেতে হবে না। তুমি আমার সাথেই খেলা কর!

হা হা হা ‍হা! আজ পেয়েছি বাগে....!

এই যে, এইভাবে জোড়ে ঘুসি দিবা একদম

আই লাভ চিকেন 😁

হাই ফাইভ!!










 ………………………………………………………
পিক কার্টেসিঃ স্ব-স্ব ফটোগ্রাফার
পিক সোর্সঃ Google Image Search
Pinterest.com
imgur.com

শুক্রবার, আগস্ট ০৯, ২০১৯

লিনাক্স মিন্ট ১৯.২ ‘টিনা’ – ফিচারপূর্ণ আরো একটি রিলিজ


লিনাক্সের স্ট্যাবল ডিস্ট্রো গুলোর তালিকা করলে যে নামটি শুরুর দিকে আসবে তার একটি হচ্ছে ‘লিনাক্স মিন্ট’। মুক্ত অপারেটিং সিস্টেমের স্বাদ নিতে যে কয়েকটি ডিস্ট্রোর সাজেশন মানুষ দিয়ে থাকে, সেখানেও একটা সম্মানজনক অবস্থান গড়ে নিয়েছে এই ‘লিনাক্স মিন্ট’। সাধারণ ব্যবহারকারীর ডেস্কটপ থেকে শুরু করে মধ্যম মানের ব্যবহারকারী কিংবা একজন ডেভেলপারের জন্যে জুতসই একটা অপারেটিং সিস্টেম চিন্তা করলেও ‘লিনাক্স মিন্ট’-কে তালিকাতে রাখতেই হয়।

যদিও লিনাক্স মিন্ট সরাসরি লিনাক্সের কোর লেভেল থেকে ডেভেলপ হয় না। আরেকটি লিনাক্সের ডিস্ট্রিবিউশন ‘উবুন্টু’ থেকে এটি ডেভেলপ করা হয়ে থাকে। অবশ্য এর আরও শাখা একটি ডিস্ট্রিবিউশন আছে, যা সরাসরি ডেবিয়ান থেকে ডেভেলপ করা হয়। তবে জনপ্রিয়তার এগিয়ে আছে উবুন্টু হতে ডেভেলপ করা ডিস্ট্রোটি।

লিনাক্স মিন্ট – সিনামন ডেক্সটপ পরিবেশ
লিনাক্স মিন্টের আরও রয়েছে আকর্ষণীয় একটি ডেক্সটপ এনভায়রনমেন্ট, যা ‘সিনামন’ নামে পরিচিত। লিনাক্স মিন্টের তত্বাবধায়নেই এই ডেক্সটপ পরিবেশ বা এনভারনমেন্টটি ডেভেলপ হয়ে থাকে। আর সত্যি বলতে লিনাক্স মিন্ট ব্যবহারের আসল স্বাদ আসলে সিনামন ডেক্সটপ পরিবেশেই পাওয়া যায়। যদিও মিন্টের অফিসিয়াল আরও দুইটি ডেক্সটপ পরিবেশ রয়েছে।

যাই হোক, লিনাক্স মিন্টের পরিচয় আপাতত এখানেই ইতি টানছি। পরে কোন এক সময় লিনাক্স কিংবা লিনাক্স মিন্ট নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে(অনিশ্চিত)। আপাতত চলে যাচ্ছি এর নতুন রিলিজ ‘টিনা’-র (Tina) বন্দনায়।

যদিও ডেভেলপার লোকজনকে মানুষ কাঠখোট্টা হিসেবেই চেনে। তারপরও লিনাক্স মিন্ট এর ডেভেলপারদের সেই ক্যাটাগরিতে ফেলে দেয়া সম্ভব না। তারা দারুণ রস-কস যুক্ত ডেভেলপার, তাই তো প্রতিটা ডিস্ট্রিবিউশনের নামকরণে তারা কোন না কোন একটা মেয়ের নামে ব্যবহার করে থাকে (ডেভ গুলু মনে হয় একটু ইয়ে। এদের মাথা শুধু মেয়েদের চিন্তায় বিভোর থাকে। তাই প্রতি রিলিজই এরা মেয়েদের নামে উৎসর্গ করে 😜 )।
    
 
    
 

নতুন কি পেলাম ‘টিনা’র নামে?

পর্ব অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলতে হয় তবে বলবো- লিনাক্স মিন্ট প্রতি রিলিজেই আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্রত্যেকটি রিলিজ ছিলো এর পূর্বেরটির তুলনায় আরও উন্নত, আরও শক্তিশালী। মিন্ট যেন প্রতি রিজিলেই তার পূর্বের রিলিজকে টক্কর দিয়ে ডেভেলপ করে থাকে। এছাড়া নতুন এই রিলিজ মানে ১৯.২ সংস্করণটি অফিসিয়াল সাপোর্ট পাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। সে হিসেবে যারা লং টার্মে একটি ডিস্ট্রোতে থাকতে চান, তারা অবশ্যই এটিকে নিজ নিজ তালিকায় রাখতে পারেন।

» উন্নত আপডেট ম্যানেজার

নতুন রিলিজের যে দুটো ব্যাপার আমার দারুণ ভালো লেগেছে তার মধ্যে একটি এই আপডেট ম্যানেজার। পূর্বের রিলিজ গুলোতে একটি নির্দিষ্ট কার্নেলের উপর ভিত্তি করে একে তৈরি এবং রিলিজ করা হতো। পরবর্তী রিলিজে কার্নেল আপডেট হবার আগ পর্যন্ত ঐ একই কার্নেল ব্যবহার করতে হতো। অন্যথায় নিজেকে পুরো কার্নেল কম্পাইল/বিল্ড করে ব্যবহার করা লাগতো। অনেকের জন্যে হয়তো এটি তেমন বড় ব্যাপার নয়। কিন্তু যারা নতুন কার্নেলসের সুবিধা আদায় করতে চায় তাদের কাছে এতদিন বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল এই সমস্যাটি। এখন চাইলে যে কেউ খুব সহজেই নতুন কার্ণেলটি আপডেট ম্যানেজার ব্যবহার করে ইন্সটল ও ব্যবহার করতে পারবে।

আপডেট ম্যানেজারের আরও একটা নতুন ফিচার ‘ব্লাকলিস্ট’। যারা লিনাক্স ব্যবহার করেছেন তারা সবাই লিনাক্সের সফটওয়্যার রিপো অথবা সফটওয়্যার ম্যানেজারের সাথে পরিচিত। যখন কেউ পুরো সিস্টেমটি আপডেট দেয় তখন সিস্টেমে ইন্সটল করা সকল সফটওয়্যারও একই সাথে আপডেট হয়ে যায়। কিন্তু এতে অনেক সময় কিছু কিছু সফটওয়্যার কম্পাবিলিটি ইস্যুতে পড়ে ইউজারকে নাজেহাল করে। ধরুন আপনি Darktable এর ২.৬.১ ভার্সনটি ব্যবহার করছিলেন। এর মধ্যেই এটির ২.৬.২ ভার্সন আসলো। কিন্তু তাতে কোন একটা বাগ বা সমস্যা থাকায় কাজের সমস্যা হচ্ছিলো। তাই আপনি আপডেট ভার্সনটি বাদ দিয়ে পুনরায় ২.৬.১ এ ফিরে গেলেন। কিন্তু যখন পুরো সিস্টেমটি আপডেট করতে দিবেন তখন Darktable পুনরায় আপডেট হয়ে ২.৬.২ তে আপডেট হয়ে গেলো।

এই সমস্যাটিরই সমাধান এসেছে এই নতুন আপডেট ম্যানেজারে। এখন আপনি চাইলে কোন একটা প্যাকেজ বা সফটওয়্যারের নির্দিষ্ট কোন ভার্সনকে ইচ্ছে হলে আপডেট হতে বাধা দিতে পারবেন এই ব্লাক লিস্ট ফিচার ব্যবহার করে।

তাছাড়া আপডেট ম্যানেজারকে আপডেট করার জন্যেও নতুন একটা ইন্টারফেস তৈরি করা হয়েছে!

» কার্যকর ‘রেসপন্স টাইম’

আপনি যদি লিনাক্স মিন্ট ১৯.১ ব্যবহার করে থাকেন আর, এখন ১৯.২ ব্যবহার করতে বসেন তাহলে এই ব্যাপারটি আপনার নজরে আসবেই। নতুন রিলিজে মিন্টের রেসপন্স টাইম অনেকটাই ইফেক্টিভ হয়েছে। আগের তুলনায় সফটওয়্যার লোড কিংবা সফটওয়্যার গুলো আরও দ্রুত গতি সম্পন্ন হয়েছে। এটা এই রিলিজের আরও একটি বিশাল প্লাস পয়েন্ট হিসেবে আমি ধরেছি।

» সফটওয়্যার সনাক্তকরণ পদ্ধতি

লিনাক্স মিন্ট -এ সফটওয়্যার সেন্টার থেকে সরাসরি এ্যাপ ইন্সটল করার পাশাপাশি ফ্লাট এ্যাপ গুলো ইন্সটল করার সুবিধা রয়েছে। লিনাক্স মিন্ট এর বিল্ট-ইন সফটওয়্যার ম্যানেজার হতে সরাসরি মূল এ্যাপ এবং সেই একই এ্যাপের ফ্লাটপ্যাক এ্যাপ ইন্সটল ও ব্যবহার করা যায়। কিন্তু মিন্ট-মেন্যুতে আগে এই দুটো গ্যাটাগরির এ্যাপ আলাদা করা যেতো না। কিন্তু বর্তমান রিলিজে ফ্লাট এ্যাপ গুলোকে এক ধরণের রঙ্গে রাঙ্গানো হয়, আর অর্গানিক এ্যাপ গুলো তার নিয়মিত ঢং-এই থাকে। তাছাড়া ফ্লাট এ্যাপ গুলোর নামের সাথেই ফ্লাটপ্যাক লিখা থাকে। তাই ফ্লাটপ্যাক এ্যাপ আর অর্গানিক এ্যাপ নিয়ে এখন আর তেমন জটিলতা পোহাতে হবে না। এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজের জেনারিক নামও এখন মিন্ট মেন্যুতে আলাদা করেই দেখানো হবে।

» লাইভ মুডেই থাকছে বুট রিপেয়ার


পূর্ববর্তী লাইভ মুড থেকে বুট রিপেয়ার করাটা দারুণ ঝামেলাপূর্ণ ছিলো। সেই ঝামেলা এই রিলিজে সমাপ্ত হলো। নতুন এই রিলিজ ‘টিনা’র লাইভ মুডেই এখন দেয়া হয়েছে বুট রিপেয়ার সফটওয়্যারটি। যারা ডুয়েল বুটে লিনাক্স চালাচ্ছেন তাদের যে কত বড় উপকার হয়েছে এই ফিচারটি যুক্ত হওয়ায় তা বোধ করি আলাদা করে আর বলার অপেক্ষায় থাকে না।


» ডুপ্লিকেট সোর্স রিমোভ অপশন

যারা অতিরিক্ত রেপো থেকে প্যাকেজ/সফটওয়্যার ইন্সটল করে থাকেন তাদের জন্যে এই সুবিধাটি দারুণ কাজের হবে। এবারে কোন রেপো একের অধিকবার যুক্ত হলে কিংবা রেপো ডুপ্লিকেট হবার কারণে আপডেটে ঝামেলা হলে খুব সহজেই সোর্স কনফিগার অপশন থেকে ডুপ্লিকেট রেপো গুলো রিমুভ করার সুযোগ পাবেন।

» গোছানো সিস্টেম রিপোর্ট

নতুন রিলিজ টিনার সাথে আসছে নতুন করে ডিজাইন করা সিস্টেম রিপোর্ট। পূর্বের তুলনায় এটি বেশ গোছানো সিস্টেম রিপোর্ট ভিউ তৈরি করা হয়েছে। অন্তত এখন দেখে কিছুটা মনে হয় সিস্টেম রিপোর্টটা আসলে মানুষের পড়ার যোগ্য কিছু একটা জিনিষ।

আরও আপডেট হয়েছে সিস্টেমের আর্টওয়ার্ক। অবশ্য এটা বরাবরই আমার কাছে বোনাস বলেই মনে হয়।




লিনাক্স মিন্ট ১৯.২ ‘টিনা’-র জন্য আবশ্যক হার্ডওয়্যার

  • অন্তত ১ গিগাবাইট র‍্যাম (২ গিগাবাইট র‍্যাম হলে মোটামুটি পর্যায়ে চালানো সম্ভব)
  • ইন্সটল করার জন্যে ১৫ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস (২০ গিগাবাইট হলে ভালো হবে)
  • ১০২৪×৭৬৮ রেজ্যুলুশনের ডিসপ্লে সিস্টেম


ডাওনলোড

নতুন রিলিজটি অফিসিয়াল ISO ইমেজটি এই লিংক থেকে সংগ্রহ করা যাবে। তবে আপনি যদি বাংলাদেশে অবস্থান করেন, আর আপনার যদি একটি ব্রডব্যান্ড কানেকশন থাকে, তাহলে ঢাকাকম লিমিটেড বা জিওনবিডি উচ্চগতির-সার্ভার থেকেও নতুন রিলিজটি সংগ্রহ করতে পারবেন।

আর আপনি যদি লিনাক্স মিন্টের পুরাতন রিলিজ হতে নতুন রিলিজে আপগ্রেড করাতে চান, তাহলে অফিসিয়াল এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করে দেখুন।







আপাতত এতটুকুই। এক রাতে এই জিনিষ গুলোই ডিসকোভার করলাম লাইভ মুডে। তবে কথা হচ্ছে কোন রিলিজই একদম সয়ংসম্পূর্ণ রিলিজ হবে না, এটিও নয়। এখনও কোন কোন ব্যাপারে এই রিলিজটি সমস্যা করতে পারে। কোন কারণে আপনার কাঙ্খিত আউটপুট হয়তো পেতে ব্যর্থ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিস্টেম রিপোর্ট খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। এতে পরবর্তী আপডেটে এটি ফিক্স হবার সম্ভাবনা বহুগুন বেড়ে যায়। কেউ যদি সত্যিই নতুন ডিস্ট্রো কিংবা লিনাক্স সম্পর্কে ধারণা পেতে চান তাহলে অবশ্যই লিনাক্স মিন্ট একটি আদর্শ ডিস্ট্রো। তবে আমার পরামর্শ থাকবে- হুট করে সিস্টেমে ইন্সটল করার আগে তা লাইভ মুডে ব্যবহার করে দেখুন। এরপর মোটামুটি একটা ধারণা হয়ে গেলে সাহস করে সিস্টেমে ইন্সটল করে দেখতে পারেন।

 
 
 
 
 
    

Creative Commons License 
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ০৮, ২০১৯

লেখার ফরম্যাট নষ্ট না করেই ব্লগে লেখা কপি-পেস্ট করা


ব্লগে একটা লেখা পড়ছিলাম। লেখার কন্টেন্ট চমৎকার হলেও লেখাটা পড়ার সময় বিরক্ত বোধ হচ্ছিলো। আর বিরক্তির উৎপত্তি করছিলো ব্লগের বডিতে থাকা অক্ষরগুলোর বিন্যাস আর অবস্থা দেখে। যারা ব্লগ লিখেন কিংবা ব্লগ পড়েন তাদের অনেকের অনেকেই এই ব্যাপারটি লক্ষ করেছেন। কিছু কিছু ব্লগে কোন একটা লেখা পড়তে গেলে দেখা বাকি সব লেখার তুলনায় এই লেখাটির অক্ষরগুলো বেশ ছোট বা কিম্ভুতকিমাকার আকৃতির। আবার অন্য সকল লেখা ঝকঝকে-তকতকে হলেও নির্দিষ্ট কয়েকটি লেখা কেমন যেন এলোমেলো। মাঝ থেকে লাইন ভাঙ্গা, কিংবা লাইনের মাঝে হঠাৎই বিশাল আকারের গ্যাপ। তা ছাড়া আরও একটা বড় সমস্যা হলো লেখার ব্যাকগ্রাউন্ড কালার(রঙ)। দেখা যায় বাকি সকল লেখার পেছনে ব্লগের যে সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মেইনটেইন করছিল, এই লেখাটির বেলায় তেমন না। লেখাটির পেছনে ভিন্ন রকমের রঙ এর জন্যে দেখতে বিচ্ছিরি লাগছে, বিরক্তির উদ্রেক হচ্ছে।

মূলত অবস্থা হয় যখন কেউ কোন একটা লেখা কোথাও থেকে কপি করে সরাসরি ব্লগে পোষ্ট করে। আমাদের মাঝে অনেকেই নিজেদের ড্রাফট লেখা গুলো কোন একটা ওয়ার্ড প্রসেসর যেমন মাইক্রসফট ওয়ার্ড, লিব্রে অফিস রাইটার, ওপেন অফিস রাইটার কিংবা কোরাল ওয়ার্ড পার্ফেক্ট সহ ভিন্ন ভিন্ন ওয়ার্ড প্রসেসর প্রোগ্রামে লিখে সংরক্ষণ করে থাকেন। আর ব্লগে পোষ্ট করবার সময় সেখান থেকে কপি করে ব্লগের টেক্সট ইনপুট বডিতে পেস্ট করে দেন।

আবার অনেকেই রয়েছে যারা বেশ কয়েকটি ব্লগ মেইনটেইন করে। একাধিক ব্লগে লেখালেখির সময় যে কোন একটি ব্লগে প্রথমে লেখাটি সাজিয়ে তারপর বাকি ব্লগ গুলোতে সরাসরি ঐ সাজানো লেখাটি কপি-পেস্ট করে পোষ্ট করে থাকেন।

এরকম পরিস্থিতি গুলোতে ব্লগের নিয়মিত ভঙ্গি (স্টাইল) বাদ দিয়ে লেখা গুলো ভিন্ন রকম ভঙ্গিতে প্রদর্শিত হচ্ছে। হয়তো ব্যাকগ্রাউন্ডের রঙ ভিন্ন রকম কিংবা লেখাটির বর্ণের আকারগত সমস্যা। কিংবা লেখাটি যেভাবে প্যারাগ্রাফ আকারে দেখানোর কথা তা সেভাবে না দেখিয়ে অযথাই মাঝ থেকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেখাচ্ছে।

আর এমন হবার কারণ ঐ দুষ্ট ‘কপি-পেস্ট’ নামক ফিচারটির। মূলত ওয়ার্ড-প্রসেসর কিংবা ফরম্যাটেড কোন টেক্সট বা ইলিমেন্ট যখন আমরা কপি করি তখন শুধুমাত্র ঐ ইলিমেন্ট বা লেখা গুলো কপি না হয়ে লেখাটি যে ভঙ্গিমাতে (স্টাইলে) লেখা আছে ঐ ভঙ্গীমা সহকারে আমাদের সিস্টেম (ডেক্সপট, ল্যাপটপ, কিংবা স্মার্টফোন) কপি করে নেয়। আর যখন আমরা তা কোথাও পেষ্ট করি তখন সরাসরি লেখাগুলো ঐ ভঙ্গিমা সহকারে পেস্ট করে ফেলে।

মূলত এটি আধুনিক কম্পিউটিং এর একটি ফিচার। যারা প্রকাশনার কাজ করেন কিংবা ওয়ার্ড প্রসেসিং এ একই ধরণের কাজ যেখানে বার বার করে করতে হয় (যেমন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির নামে সনদপত্র ছাপানো, জন্মনিবন্ধন, অফিসের নির্দিষ্ট ফরম্যাটে কাজ করা, অথবা একই স্টাইল মেইনটেইন করে এসাইনমেন্ট করা) সেই সব ক্ষেত্রে লেখার এই ভঙ্গি সহ পেস্ট করার ব্যাপারটি একটি ফিচার হিসেবে কাজ করে থাকে।

কিন্তু আপনি চাইলে এই ফিচারটি ব্যবহার না করেও শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কন্টেন্ট বা লেখা ব্লগে ‘কপি-পেস্ট’ করতে পারবেন। আর এটি করার দু’টি উপায় রয়েছে। আসুন উপায় গুলো জেনে নেয়া যাক-






সহজ কার্যকর পদ্ধতি

  • যে সোর্স হতে লেখাটি কপি করবেন তার সম্পূর্ণ কন্টেন্ট টুকু প্রথমে সিলেক্ট করুন। এরপর তার উপর মাউসের রাইট ক্লিক করে কপি করুন অথবা কিবোর্ড হতে Ctrl + C চাপুন।
  • এরপর যেখানে আপনার লেখাটি পেষ্ট করতে চান সেখানে টেক্সট ইনপুট নেবার জায়গায় ক্লক করে কিবোর্ড হতে Ctrl + Shift + V একত্রে চাপুন।দেখবেন লেখার ফরম্যাট কপি না হয়ে সরাসরি যে লেখাগুলো সিলেক্ট করেছেন তা প্লেইন টেক্সট হিসেবে চলে এসেছে।





ব্লগে (ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে নির্মিত ব্লগ) কপি-পেস্ট করার পদ্ধতি

উপরে বর্ণিত পদ্ধতি ব্যবহার করেও আপনি ওয়ার্ডপ্রেস নির্ভর ব্লগে কপি-পেস্ট করতে পারবেন। কিন্তু শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস তাদের ব্যবহারকারীদের কথা চিন্তা করে তাদের এডিটরে অতিরিক্ত একটি ফিচার যুক্ত করে দিয়েছে। 
  • আপনার ব্লগ একাউন্টে লগইন করে ‘নতুন ব্লগ লিখুন’ বা ‘নতুন এ্যাড করুন’ লেখাটিতে ক্লিক করুন। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওয়ার্ডপ্রেস এডিটর চালু হয়ে যাবে।
  • এখন ওয়ার্ডপ্রেস এডিটরের ভিজ্যুয়াল মুড এর টুলসেট থেকে ‘Paste as text’ বা বোর্ডের মধ্যে ইংরেজী T বর্ন লেখা আইকনটিতে ক্লিক করুন।

    এতে স্ক্রিনে একটি মেসেজ দেখা যাবে। যেখানে লেখা থাকবে-
    পেস্ট এখন প্লেইন টেক্সট মোডে আছে। সবকিছু এখন প্লেইন টেক্সড মোডে পেস্ট হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি এই আপশনটি টগল করে বন্ধ করেন। If you’re looking to paste rich content from Microsoft Word, try turning this option off. The editor will clean up text pasted from Word automatically.
      
  • ডিসপ্লে বক্সটির ক্রসে ক্লিক করে আপনি আপনার এডিটরে ক্লিক করুন। এরপর সোর্স ফাইল থেকে টেক্স বা যা কপি করা প্রয়োজন তা কপি করে এডিটরের এই লেখার বক্সে সাধারণ নিয়মে পেস্ট করে দিন।এতে কেবলমাত্র আপনার কপিকৃত সোর্স হতে শুধুমাত্র টেক্সট কপি হয়ে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এডিটরে পেস্ট হবে।
      
  • এরপর পেস্ট করা শেষে পুনরায় ঐ বোর্ডের উপর ইংরেজী T অঙ্কিত আইকনে ক্লিক করে ফিচারটি বন্ধ করে নিন।



উপরে বর্ণিত যে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে যে কোন সোর্স থেকে আপনি আপনার পছন্দসই লেখা খুব সহজেই ঝামেলা এড়িয়ে আপনার ব্লগে কপি-পেস্ট করতে পারবেন। এতে ব্লগে আপনার লেখার গঠন এবং সৌন্দর্য উভয়ই তার নিয়মিত ভঙ্গি (স্টাইল) অনুসরণ করবে। আর আপনার লেখাটি পড়বার সময় ব্লগ পাঠকেরও এধরণের সমস্যা নিয়ে কোন বিরক্তির উদ্রেক ঘটবে না।
  
  
  

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরের লেখা নিজের ব্লগে কপি-পেস্ট বা আরও সহজ করে বললে চুরি করা থেকে বিরত থাকুন। ব্লগের প্রতিটি লেখা বা কন্টেন্টই লেখকের মেধাস্বত্ত সম্পত্তি। একান্তই যদি কারও লেখা নিজের ব্লগে প্রকাশ করতে হয় তবে লেখাটি প্রকাশের পূর্বেই লেখকের কাছে অনুমতি আদায় করে নিন। অন্যথায় লেখক প্রয়োজন অনুভব করলে আপনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল এক্ট এর আলতায় আইন-আনুগ ব্যবহস্থা গ্রহণ করতে পারবে। তাতে আপনার ও ব্লগের উপভয়ের সম্মানই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

 
 
 
 
   
 
  




Creative Commons License 
লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্‌স এর CC BY-NC-SA 4.0 আন্তর্জাতিক লাইসেন্স এর আলতায় প্রকাশিত।