বুধবার, জুন ২৬, ২০১৯

Firefox-এ দেখুন ঝকঝকে বাংলা


ওয়েবের জগতে যে কয়েকটি ব্রাউজার দাপটের সাথে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ব্রাউজার হচ্ছে Firefox । বর্তমানে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন লোক ফায়ারফক্স ব্রাউজারটি তাদের প্রধান ব্রাউজার হিসেবে ব্যবহার করছে। নিরাপত্তা, মেমরি-ম্যানেজমেন্ট আর এর দারুণ সব Ad-ons এর কারণে এটি বেশ জানপ্রিয়। তাছাড়া এটি সম্পূর্ণ ওপেন-সোর্স ওয়েব ব্রাউজার হবার কারণে অনেক ওয়েব ডেভেলপারদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ফায়ারফক্স

চমৎকার সব ফিচারে পরিপূর্ণ হলেও বাংলা ফন্ট দেখানোর কিছু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে এই জনপ্রিয় ব্রাউজারটিতে। যদিও বর্তমান অপারেটিং সিস্টেম গুলোতে বাংলা'র জন্যে চমৎকার সব সাপোর্ট তৈরি হয়েছে। তারপরও কিছু কিছু ওয়েব সাইট ব্রাউজ করতে গেলে এখনো বাংলা ফন্ট ভেঙ্গে যায় কিংবা লেখা গুলো অতিরিক্ত ছোট কিংবা বড় দেখায়। আর এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যেই আজকের এই লেখাটি।

বাংলায় কোন সাইট দেখার জন্যে প্রাথমিক যে জিনিষটির প্রয়োজন তা হচ্ছে 'বাংলা ফন্ট'। পুরাতন অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে বাংলা ফন্টের সাপোর্ট খুবই নিন্মপর্যায়ে রয়েছে। তবে আশার ব্যাপার হচ্ছে আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম গুলোতে দারুণ সব বাংলা ফন্ট দেয়া আছে। তারপরও ঝকঝকে আর পরিস্কার ফন্ট হিসেবে যে সব বাংলা ফন্ট রয়েছে তাদের মধ্যে 'কালপুরুষ' কিংবা 'সোলাইমান লিপি' ফন্ট দুটো উল্লেখযোগ্য।

আপনার অপারেটিং সিস্টেমটি যদি Windows XP হয়ে থাকে তাহলে সিস্টেমে বাংলা সাপোর্ট এর জন্যে প্রথমে আপনি iComplex ইন্সটল করে নিন। Windows 7, 8 কিংবা 10 এর জন্যে iComplex ইন্সটল করার প্রয়োজন নেই।

বাংলা লেখবার জন্যে জনপ্রিয় বাংলা সফটওয়্যার অভ্র ইন্সটল করে নিতে পারেন। অভ্র ইন্সটল করার সাথে সাথে আপনার সিস্টেমে কয়েকটি বাংলা ইউনিকোড ফন্ট ইন্সটল হয়ে যাবে। তারপরও 'কালপুরুষ' কিংবা 'সোলাইমান লিপি' ফন্ট দুটো আলাদা করে ডাওনলোড করে আপনার সিস্টেমে ইন্সটল করে নিন।

ফন্ট ইন্সটল করতে উক্ত ফন্ট দুটো windows অপারেটিং সিস্টেমে " C:\Windows\Fonts\ " ফোল্ডারে কপি-পেস্ট করুন। Linux মেশিনে " ~/.local/share/fonts " ফোল্ডারে কপি-পেস্ট করুন।


পদ্ধতি -১ (সহজ পদ্ধতি)

ধাপ-১: Firefox ব্রাউজারটি চালু করুন। এরপর Menu থেকে Preference এ ক্লিক করুন।

ধাপ-২: Preference লোড হলে এর General ট্যাব থেকে Language and Appearance এ আসুন। এখানে 'Fonts and Colors' এর পাশে থাকা 'Advanced...' বাটনে ক্লিক করুন। 

ধাপ-৩: Fonts সেটিং বক্স আসলে এখানে -
- Fonts for এর লিস্ট থেকে 'Bengali'  সিলেক্ট করুন।
- Serif ফন্ট এর ড্রপডাওন লিস্ট হতে 'Kalpurush' সিলেক্ট করুন।
- Sans-serif ফন্ট এর ড্রপডাউন লিস্ট হতে 'Kalpurush' সিলেক্ট করুন।
- Monospace ফন্ট এর ড্রপডাওন লিস্ট হতে 'Kalpurush' সিলেক্ট করুন।

পরিবর্তনের পর Font সেটিং-টি দেখতে এমন হবে।

এখন নিচে থাকা OK বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনি আপনার ফায়াফক্স ব্রাউজারটি বন্ধ করে পুনরায় চালু করুন।

পুরো প্রকৃয়াটি এখানে দেখুন-



পদ্ধতি -২ (ঝামেলাপূর্ণ পদ্ধতি)

ধাপ-১: Firefox ব্রাউজারটি চালু করুন। এরপর ব্রাউজারের এড্রেসবারে about:config লিখে এন্টার চাপুন।

ধাপ-২: পর্দায় একটি সতর্কতাসূচক বিজ্ঞপ্তি ভেসে উঠবে। এখন এখান থেকে 'I accept the risk!' লেখা বাটনটিতে ক্লিক করুন।

ধাপ-৩: নতুন একটি পেইজ লোড হবে। এখানে অসংখ্য ফিচারের লিস্ট আর তাদের অবস্থা দেখতে পাবেন। ফিচার লিস্টের উপরের দিকেই Search bar রয়েছে। সেই Search bar এর বক্সে লিখুন 'beng'

ধাপ-৪: সার্চ বারে beng লেখার সাথে সাথেই নিচের লিস্টে বাংলা ফন্টের ফিচার কনফিগ চলে আসবে। এখন এই ভেল্যু গুলোর পরিবর্তন করতে হবে।

যেমন আমি font.default.x-beng এ ডাবল ক্লিক করলাম। নতুন যে ইনপুট বক্স এসেছে তাতে  Kalpurush লিখে Ok বাটনে ক্লিক করলাম।

এমন করে আরও কিছু ভেল্যু পরিবর্তন করতে হবে। নিচে ঐসব প্রিফারেন্সের নাম দেয়া হলো-
font.default.x-beng
font.name-list.monospace.x-beng
font.name-list.sans-serif.x-beng
font.name-list.serif.x-beng
font.name.cursive.x-beng
font.name.monospace.x-beng
font.name.sans-serif.x-beng
font.name.serif.x-beng
     

পরিবর্তনের পর দেখতে কিছুটা এমন হবে।

এরপর আপনি আপনার ফায়াফক্স ব্রাউজারটি বন্ধ করে পুনরায় চালু করুন।

পুরো প্রকৃয়াটি এখানে দেখুন-


এখন যে কোন বাংলা সাইট ব্রাউজ করে দেখুন পরিস্কার ঝকঝকে বাংলা লেখা!

 
 
 
 
 

  

শুক্রবার, জুন ২১, ২০১৯

চাঁদের পথে...



চাঁদের সাথে পথ ধরে হেটে যেতে নেই কোন বাধা। বরং যুগে যুগে বহু মানুষ এই চাঁদের মায়ায় ডুবে সংসার ছেড়ে পথ হেঁটেছে চাঁদের পেছনে পেছনে। কেউ হয়েছে বৈরাগি, কেউ সন্যাসী আবার কেউ গিয়ে ঠেকেছে নির্জনে-মৃত্যুতে। গল্পে, কবিতায়, ভালোবাসা কিংবা অক্ষমতার আক্ষেপের বিক্ষিপ্ত বহিঃপ্রকাশে চাঁদ বরাবরই মানুষকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে। সেই অনাদিকাল থেকে এখন অব্দি মানুষ চাঁদকে দেখে নিজের ভেতরকার উদাসীনতা অনুভব করে। নিজের মনের কোমলতাকে চাঁদের কোমল আলোর সাথে তুলনায় মেপে দেখে। ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৮৫৫ মাইল দূরে থেকেও কি অদ্ভুত মায়াতেই না চাঁদ আমাদের বিমুগ্ধ করে রেখেছে।

সবার মত আমিও চাঁদের সাথে পথ হেটে হারাতে চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম চাঁদের মায়ায় ডুবে লোকান্তর ত্যাগ করে সন্যাসী হতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, চাঁদ তার নেশা ধরিয়ে তার পিছু পিছু হাটিয়ে নিলেও কখনো হারিয়ে যাবার পথ বলে দেয় না। সে যেখানে নিয়ে যায় তারও একটা না একটা পরিচয় থাকে। সেখানেও কোন না কোন ভাবে অন্য কারও পৌছবার পথ জানা থাকে। ভিন পথে হাটিয়ে ভিন্ন করেও শেষ পর্যন্ত আবারও মিলের খাতায় ঠিকই জুড়ে দেয় সে। চাই তার ঠিকানা হোক মরু কিংবা মেরুতে। কেউ না কেউ ঠিকই সেখানে পৌছে যাবে। এই ভেবেই আর শেষ পর্যন্ত চাঁদের পেছনে আমার হারানো হয়নি।

তবে কি তাই ভেবে চাঁদের পিছু ছোটায় মানুষ খ্যান্ত দিবে? না, তা মোটেই হবার নয়। চাঁদে যে পথে হাটিয়ে নিয়ে যায় সে পথ সে প্রতিটা মানুষের জন্যেই আলাদা করে রাখে। দু'জন মানুষ একই পথে চাঁদের পিছু হেঁটেও কখনো এক পথের পথিক হয় না। তার প্রতিটি পথেই দেখা মেলে নতুন কোন নক্ষত্রের, যার প্রজ্বলনে মুসাফিরের অন্তর প্রজ্জলিত হয়। পথের প্রতিটা মোড়েই কোন না কোন কৃষ্ণগহবর তার গল্প নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। যারা শোনার, তারা ঠিকই সেই গল্প শুনতে পায়। সেই গল্পের ভাব তাদের অন্তরকে আরও প্রসস্ত করে, করে তোলে আরও গভীরতর।  আর ঐ গল্প ঐ একটি মাত্র মানুষ ছাড়া দ্বিতীয় কেউ কোনদিন কোনকালে শুনতে পায় না।

এখানেই কি শেষ? না, এখানেও তাদের অন্তর তৃষ্ণা তৃপ্ত হয় না। তারা ছুটে যায় চাঁদের কাছে। খুব কাছ থেকে, একদম নিবিড় ভাবে তারা অনুভব করতে চায় চাঁদকে। কিন্তু সেখানেও নিয়েও চাঁদ মুচকি হাসে। তারা তো চাঁদে ছুয়ে দেখে ঠিকই, কিন্তু তার কোমলতার পেছনে যে রহস্য, তার আকর্ষণের পেছনে যে হাতছানি; তার হিসেব তারা কোন ক্যালকুলেশনেই মিলাতে পারে না। শেষ পর্যন্ত মনে আরও বেশি আক্ষেপ নিয়ে, অভিমানে মনকে পূর্ণ করে ফিরে আসে ধরণীর বুকে। অথচ নিজের বুকের মাঝে তখনও চাঁদের পিছুনে ছুটে যাবার ইচ্ছাকে দমন রাখতে পারে না।

তবুও আমি কিংবা আমরা বেহায়াপনার চুড়ান্ত করে বারংবার চাঁদের পিছনে হেঁটেছি। চাঁদের পূর্ণতায় নিজের পূর্ণতার রূপ খুঁজেছি, চাঁদের হারিয়ে যাওয়ায় নিজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেখেছি। ফের যখন গোস্বা ছেড়ে চাঁদ আবারও আকাশের বুকে উঁকি দিয়েছে, আমরাও আমাদের মাঝে হারিয়ে ফেলা আসল আমিটাকে খুঁজে ধরে আবারও চাঁদের সাথে মিলিয়ে দেখেছি। আর বারংবারই নতুন চাঁদের মত নিজের মধ্যে নতুন কিছুই খুঁজে পেয়েছি। অবাক হয়েছি, যেমন করে প্রতিবারই পুরানো চাঁদকে নতুন করে দেখেও কিছু দেখা অপূর্ণ রয়ে গেছে, তেমনি নিজের মধ্যে নিজেকে আবিস্কার করতে গিয়ে প্রতিবারই বুঝতে শিখেছি আমার মধ্যে আমাকে দেখাও এখনো অপূর্ণই রয়ে গেছে।

তারপর? তারপর চাঁদের কাছে শিখেছি জীবনটার জোয়ার-ভাটার প্রয়োজনীয়তা। চাঁদ যেমন করে জোড়ারে দুনিয়ার সবকিছু নিজের দিকে টেনে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তেমনি আমরাও আনন্দ আর উল্লাসের তিব্রতায় আমাদের সবকিছু নিয়েই ব্যাকুল হয়ে পড়ি। আমাদের জোয়ারের ঐ সময়টাতে সবচেয়ে তুচ্ছ ব্যাপারও আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। অযথাই হাসি ঠাট্টায় সব দুরুত্ব ঘুচিয়ে কাছে টেনে নিতে থাকি প্রিয়জনদেরকে। আবার ঠিক ভাটার মত করে তার উল্টোটাও করতে থাকি। তখন মনের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা বিদ্বেষে সব দূর-দূর করে তাড়িয়ে দিতে থাকে। গোছানো সব জিনিষই তখন ছুড়ে দিয়ে তছনছ করার ইচ্ছে জেগে উঠে। হয়তো মাঝে মাঝে মনের ভাটার পরিমানও বেড়ে যায়। আর তখন ইচ্ছেটা কেবল ইচ্ছেতে সীমাবদ্ধ থাকে না, তখন সেই ইচ্ছে আমাদের রাগ, আমাদের বদমেজাজ রূপে প্রকাশ পেতে থাকে। ছুড়ে ছিটিয়ে কটু কথার বানে দূর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় প্রিয় মুখ গুলোকে।

এরপর? এরপর হয়তো কোনদিন সকল পিছুটান উপেক্ষা করে একদিন চাঁদের পিছু তার পথে হেঁটে বেড়াবো। কিংবা বাকি সবার মতই আমৃত্যু আক্ষেপ নিয়ে সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাবো...



বৃহস্পতিবার, জুন ১৩, ২০১৯

ইমেজ অপটিমাইজেশন এর জন্যে ওয়েব এ্যাপ


আমরা সকলেই নিজ নিজ গল্প, কবিতা, ছন্দ, ভাব কিংবা লেখার সাথে মিল রেখে অন্তত একটি ছবি পোষ্টের সাথে জুড়ে দেই। এই ছবি জুড়ে দেয়ার ব্যাপারটির গুরুত্ব আশা করি নতুন করে বলতে হবে না। এটি একাধারে যেমন আপনার লেখাটিকে নতুন একটি মাত্রা প্রদাণ করে তেমনি লেখাটির গ্রহণযোগ্যতা আর তার আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। অনেক সময় দেখা যায় পাশাপাশি কয়েকটি লেখা। কিন্তু একটি লেখার সাথে ছবি জুড়ে দেবার কারণে সেই পোষ্টটিই মানুষকে বেশি আকর্ষণ করছে বাকি গুলোর তুলনায়; যদিও বাকি লেখা গুলোও বেশ মানসম্মত। তাছাড়া আমাদের সবজান্তা গুগল মামারও এই ছবি সম্বলিত পোষ্টের দিকে বিশেষ দূর্বলতা আছে বলেই গোপন এক সংবাদে জেনেছি। 

কিন্তু কথা সেটা নয়। আমরা একটু চেষ্টা করলেই নিজের লেখার সাথে মিল রেখে ব্লগ পোষ্টে ছবি আপলোড করতেই পারি। সমস্যাটা হচ্ছে আমাদের আপলোড করতে চাওয়া ছবির 'সাইজ'। আসলে এইখানে সাইজ শব্দটাকে দুই ভাবে উপস্থাপন করা যায়। এক হচ্ছে এর দৈর্ঘ-প্রস্থের মাপ যাকে আমরা সহজ ভাবে রেজুল্যুশন বলেই চিনি। আর অন্যটি হলো ঐ ছবির ফাইলটির দখল করা মেমরি স্পেস। 

ব্যাপারটা আরও একটু সহজ করে বলার চেষ্টা করি। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আমাদের প্রায় সকলের হাতে রয়েছে একটি করে স্মার্টফোন। এখন আপনি আপনার স্মার্টফোনটির ক্যামেরা এ্যাপ চালু করে তার সেটিংস এ গেলেই দেখতে পাবেন আপনার ক্যামেরায় ছবি তোলার জন্যে কয়েক ধরণের সুবিধা রয়েছে। এই যেমন আপনার স্মার্টফোনটির ক্যামেরা ১২ মেগাপিক্সেল হলেও চাইলে আপনি সেটি দিয়ে ৮ মেগাপিক্সেল কিংবা ৫ মেগাপিক্সেল সেট করেও ছবি তুলতে পারবেন। এখন আপনি ৫ মেগাপিক্সেলে ছবি তুললে তার দৈর্ঘ  হবে ২৫৬০ এবং প্রস্থ হবে ১৯২০ পিক্সেল। আবার ৮ মেগাপিক্সেল সেট করে ছবি তুললে তার দৈর্ঘ হবে ৩২৬৪ এবং প্রস্থ হবে ২৪৪৮ পিক্সেল। সাধারণ ভাবেই বোঝা যাচ্ছে ৫ মেগাপিক্সেল এর তুলনায় ৮ মেগাপিক্সেল দিয়ে ছবি তুললে তাতে বেশি পরিমাণ ডেটা সংরক্ষিত হবে আর ছবিটি ৫ মেগাপিক্সেলের তুলনায় আরও বেশি স্পষ্ট থাকবে। সেক্ষেত্রে ৫ মেগাপিক্সেলে তোলা ছবিটি যদি ২.৫ মেগাবাইট মেমরি স্পেস দখল করে তবে ৮ মেগাপিক্সেল ছবিটি দখল করবে ৩ থেকে ৫ মেগাবাইট পর্যন্ত মেমরি স্পেস। 

এখন চলুন একটি হিসেব করি। ধরলাম আপনি আপনার মোবাইলে ৮ মেগাপিক্সেল দিয়ে তোলা একটি ছবি আপনার পোষ্টের সাথে জুড়ে দিয়েছেন। আরও ধরে নিলাম ছবিটি ব্লগ সাইটের ৫ মেগাবাইট মেমরি দখল করল। এখন কেউ যখনই আপনার পোষ্টটি পড়বে কিংবা ব্রাউজারে লোড করবে তখনই ব্লগ এর ব্যান্ডউইথ থেকে ৫ মেগাবাইট খরচ হতে থাকবে। এখন যদি আপনার পোষ্টটি ১০০ জন পাঠক পড়ে থাকে কিংবা ১০০ বার আপনার পোষ্টটি হিট হয় তাহলে গড়পড়তা আপনার পোষ্টের জন্যে ব্লগের ব্যান্ডউইথ খরচ হবে ৫ x ১০০ = ৫০০ মেগাবাইট। এটা শুধুমাত্র একটি  নির্দিষ্ট পোষ্টের নির্দিষ্ট ছবির হিসেব। এখন চিন্তা করুন এমন ১০০টি ছবি যদি কোন ব্লগে আপলোড করা থাকে তাহলে সবগুলো ছবি মিলিয়ে ব্লগ স্পেস থেকে দখল থাকবে ৫০০ মেগাবাইট আর তার বিপরীতে ১০০ জন ভিজিটর ছবি গুলো দেখলে গড়পড়তা ব্যান্ডউইথ খরচ হবে প্রায় ৫০০ x ১০০ = ৫০০০০ বা  প্রায় ৫০ গিগাবিট। পাবলিক ব্লগে ৫০ গিগাবিট ব্যান্ডউইথ কিন্তু একদম ফেলে দেবার মত হিসেব না। 

তো এর থেকে পরিত্রাণের উপায়? ছবি বিহীন পোষ্ট??

না, আমি মোটেই সে কথা বলছি না। বরং আমি অবশ্যই আপনাদের ছবি সম্বলিত পোষ্ট দেবার জন্যে উৎসাহিত করবো। তার বিপরীতে আমরা কিছু টেকনিক ব্যবহার করলেই এই বিষাল(!) ব্যান্ডউইথ কমিয়ে আনতে পারি। আর সেই টেকনিকটির নাম ইমেজ অপটিমাইজেশন। 

ইমেজ অপটিমাইজেশন নিয়ে লিখতে বসলে সেটা নিয়েই বেশ বিষাল আকারের একটা পোষ্ট করা যাবে। হয়তো চেষ্টা করলে পোষ্টের সিরিজও তৈরি করা সম্ভব এই টপিকে। আপাতত আমি সেই দিকে গেলাম না (কিংবা বলা যায় ইচ্ছে করে চেপে গেলাম, কারণ বলতে গেলেই খালি কলসির ঢ‍ং ঢং আওয়াজ বের হয়ে আসবে কি না 😋)।




ইমেইজ আপটিমাইজ আসলে দু ভাবে করা যায়। মূল ছবির দৈর্ঘ আর প্রস্থের পিক্সেলের পরিমাণ (রেজুল্যুশন) কমিয়ে এনে অপটিমাইজ করা কিংবা ছবির সাইজ ঠিক রেখে একে কিছুটা কমপ্রেস করা। অনেক ধরণের টুল কিংবা সফটওয়্যার ব্যবহার করে কাজটি করা যায়। চাইলে আপনি Adobe Photoshop দিয়েও যেমন কাজটি করতে পারেন তেমনি আবার ফ্রি ওপেন-সোর্স সফটওয়্যার GIMP দিয়েও ইমেজ কমপ্রেস করে নিতে পারেন। তবে আপাতত আমি ডেক্সটপ ভিত্তিক সফটওয়্যারের দিকে না গিয়ে আরও একটু সহজ আর কম টোকাটুকিতে কাজ সাড়া যায় এমন পদ্ধতির দিকে আপনাদের মনযোগ টেনে নিচ্ছি। 

ডেক্সটপ, ল্যাপটপ কিংবা স্মার্টফোন যে কোন ডিভাইসেই আপনি আপনার ব্রাউজারের সহায়তা নিয়ে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে পারবেন। অনলাইনে বেশ কিছু ইমেজ অপটিমাইজ করার ওয়েব এ্যাপ রয়েছে। আমরা এগুলোর সহায়তা নিয়ে খুব সহজেই ছবির ক্ষতি না করে (ঘোলা কিংবা অতিরিক্ত ছোট করে পিক্সেল নষ্ট করা) ছবির সাইজ কমিয়ে আনতে পারি। 

সাধারণত ব্লগ পোষ্টের জন্যে ছবির আদর্শ মাপ ধরা যায় দৈর্ঘে ১২০০ পিক্সেল এবং লম্বায় ৬৭৫ পিক্সেল (রেশিও ১৬:৯)। কিংবা ছবির ছোট আকারের জন্যে দৈর্ঘে ৬০০ পিক্সেল এবং লম্বায় ৩৩৫ পিক্সেল। এই মাপটিকে আদর্শ বলার কারণ হল, এই মাপের ছবি যে কোন সোস্যাল নেটওয়ার্ক (ফেসবুক, টুইটার, গুগলপ্লাস, লিংক্‌ডইন প্রভৃতি)-এ শেয়ার করার জন্যেই আদর্শিক। এই মাপের ছবি সোস্যাল নেটওয়ার্ক গুলোর পোষ্ট হিসেবে ঠিকঠাক মপেই দেখা যায়। তাছাড়া বড় আকারের ছবি ব্যবহার করলে তা প্রায়ই ব্লগের বডি ব্লকের সাইজ মেইনটেইন করতে গিয়ে ছোট আকারে চলে আসে, তখন অনেক সময় সেটি দেখতে আর ততটা আকর্ষণীয় মনে হয় না। এছাড়াও বেশি বড় সাইজের ইমেজ সাইজ হলে তা লোড হতেও অনেক সময় লাগায়, যা ব্লগ রিডারদের মনযোগ নষ্ট করে কিংবা পোষ্ট বিমুখী করে দেয়। 

আপনি চাইলে এর মাপের বাইরেও ছবি ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেটি নির্ভর করবে আপনার পোষ্টের বিষয়বস্তু, আর পোষ্ট সাজানোর উপর ভিত্তি করে।


১২০০ x ৬৭৫ পিক্সেলের মূল ছবি - সাইজ ৪৯৯.৬ কিলোবাইট
তুলনা করার জন্যে আমরা একটি ছবি নিলাম। যেটির মাপ দৈর্ঘে ১২০০ পিক্সেল এবং লম্বায় ৬৭৫ পিক্সেল, ছবিটির ফাইল সাইজ ৪৯৯.৬ কিলোবাইট। এই ছবিটি এখন আমরা কয়েকটি অনলাইন ইমেজ অটপিমাইজার টুল দিয়ে অপটিমাইজ করে দেখবো কি অবস্থা হয়। 



Compressor.io

এই সাইটটি থেকে খুব সহজেই আপনি আপনার ছবি অপটিমাইজ করতে পারবেন। সাইটটি JPG, JPEG, PNG, GIF এবং SVG ফাইল নিয়ে কাজ করতে পারে। সাধারণত ছবির কোন ক্ষতি না করেই এর ফাইল সাইজ কমিয়ে আনার ব্যাপারে এটি দারুণ কাজ করে থাকে। তবে এই সাইটটি একই সময় কেবল একটি ছবি অপটিমাইজ করার সুবিধা প্রদাণ করে। আপনার অনেক গুলো ছবি থাকলে একটি একটি করে আপলোড করে তা অপটিমাইজ করে নিয়ে ডাওনলোড করতে হবে। 



TinyJPG

ইমেজ অপটিমাইজেশনের সাজেশন চাইলে গুগলে যে কয়েকটি রেজাল্ট পাওয়া যায় তার প্রথম ২/৩ এর মধ্যেই এই সাইটটির অবস্থান। এটি মোটামুটি পুরনো ও নির্ভরযোগ্য একটি সাইট, পাশাপাশি ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগিং করার জন্যে এদের আলাদা প্লাগ-ইন রয়েছে। সাইটটি কেবল JPEG এবং PNG ফরম্যাটের ছবি নিয়ে কাজ করতে পারে। ফাইল সাইজ কমিয়ে আনবার ব্যাপারে সেও খুব দারুণ কাজ করে। ছবির ক্ষতি না করে যতটুকু সম্ভব, ততটুকুই কমিয়ে নিয়ে আসে ফাইল সাইজ। পাশাপাশি আপনি একই সাথে ৫ মেগাবাইট করে ২০ টি ছবি একই সাথে এই ওয়েব এ্যাপের মাধ্যমে প্রসেস করতে পারবেন। 



Optimizilla

Optimizilla আপনার ছবিটির যথাসম্ভব সাইজ কমিয়ে আনে ছবির প্রকৃতি নষ্ট না করেই। পাশাপাশি আপনি চাইলে আপনি আপনার ছবিটি কতটুকু কমপ্রেস করতে চান তা নির্ধারণ করে দিতে পারেন এই ওয়েব এ্যাপটিতে। সাইটটি JPEG এবং PNG ফরম্যাটের ছবি নিয়ে কাজ করতে পারে। আর একই সাথে এ্যাপটি ২০ টি ছবিকে অপটিমাইজ করার কাজ করতে সক্ষম। 



ShortPixel

ShortPixel ওয়েব এ্যাপের মাধ্যমে আপনি ১০ মেগাবাইট ফাইল সাইজের ৫০ টি ছবি একসাথে অপটিমাইজ করার সুযোগ পাবেন। সাইটটি JPEG, PNG এবং নন-এনিমেটেড GIF ফাইল অপটিমাইজ করতে পারবে। অপটিমাইজেশন শেষে ডাওনলোডের পূর্বেই ইচ্ছে হলে আপনি ছবির হাল খুব সহজেই তুলনার অনুপাতে দেখে নিতে পারবেন। 



লেখাটি অনেক লম্বা হয়ে গেলো, তারপরও যদি কেউ এটি থেকে বিন্দুমাত্র উপকৃত হয় তাহলে কিস্ট্রোক গুলো সার্থক হবে। 




শনিবার, জুন ০১, ২০১৯

Telegram - ফিচারে পরিপূর্ণ একটি নিরাপদ ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার


চলুন পরিচিত হওয়া যাক নতুন একটি এ্যাপের সাথে। শিরোনাম দেখেই সবাই জেনে গেছেন, যে এ্যাপটি নিয়ে আজকের আলোচনা তার নাম হচ্ছে টেলিগ্রাম (Telegram)। আপনি আমি যখন এই এ্যাপটি নিয়ে কথা বলছি সেই সময়টাতে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২ কোটি লোক এটি ব্যবহার করছে।

টেলিগ্রাম একটি অবানিজ্যিক প্রকল্প যেটি ২০১৩ সালে নিকোলাই এবং পাভেল ড্যুরভ এর হাত ধরে শুরু হয়েছিল। এই এ্যাপটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি সকল ডিভাইসেই ব্যবহারের সুবিধা পায়। আইফোন, এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন, উইন্ডোজফোন কিংবা আপনার উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম, ম্যাক অথবা লিনাক্সের জন্যে এর আলাদা আলাদা এ্যাপ রয়েছে। আপনি যে কোন প্লার্টফর্মে থেকেই একে ব্যবহার করতে পারবেন। কিংবা কোন ক্লায়েন্ট এ্যাপ ছাড়াই এর ওয়েব এ্যাপ এর সহায়তায় আপনার ব্রাউজারের মাধ্যমেই এর ব্যবহার করা সম্ভব।



আপনি হয়তো ভাবছেন মেসেঞ্জার, ভাইবার কিংবা হয়াট্‌সএ্যাপ থাকতে কেন এই এ্যাপ নিয়ে এত কথাবার্তা হচ্ছে! কি এমন ফিচার রয়েছে যেটি বাকি গুলোতে নেই?

হ্যাঁ, প্রাথমিক দর্শনে আপনি একে সাধারণ মেসেঞ্জার হিসেবেই দেখবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাকি সব এ্যাপ থেকেও এটি ভিন্ন। সেটিও বলছি ধীরে ধীরে... 

টেলিগ্রাম এ্যাপ সরাসরি ক্লায়েন্ট এনক্রিপশন সার্ভার ব্যবহার করে ক্লাউড ভিত্তিক বার্তা আদান প্রদাণ করে থাকে। সহজ করে বললে একে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে সরাসরি সার্ভার থেকে কিংবা Man-in-the-middle (MITM) এ্যাটাক পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনার পাঠানো বার্তাটি কেউ দেখে নিতে না পারে। আরও একটু সহজ করে বুঝাতে গেলে উদাহরণ হিসেবে বলবো, যারা নিয়মিত সোস্যাল সাইট গুলো ব্যবহার করেন তারা প্রায়ই শুনে থাকবেন যে ওমুক-তমুকের কথপোকথন কেউ তাদের অগোচরেই হ্যাক করে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই ক্ষেত্রে ভিক্টিমের ডিভাইস বা একাউন্টের কোন ক্ষতি না করেই তাদের মধ্যকার কথপোকথন চোর(হ্যাকার) চুরি করে বের করে আনে। আর টেলিগ্রাম সেখানেই আপনাকে নিরাপত্তা প্রদাণ করছে। আপনার ডিভাইস থেকে আপনার বন্ধুকে যখন আপনি কোন বার্তা পাঠানোর জন্যে Send বাটনে ক্লিক করছেন তখনই আপনার ঐ বার্তাটি টেলিগ্রাম এ্যাপের একটি গোপন এনক্রিপশন কী (যার তথ্য টেলিগ্রাম কম্পানি নিজেও জানে না) এর মাধ্যমে বার্তাটিকে এনক্রিপ্ট (নিরাপত্তা বিষয়ক একটি ব্যাপার) করে তারপর সেটি প্রাপকের কাছে পৌছে দিচ্ছে। এখন এর মাঝে বসে যদি কেউ আপনার পাঠানো বার্তাটি পড়তেও যায় তাহলে সে ঐ নির্দিষ্ট 'এনক্রিপশন কী' জানা না থাকবার কারণে বার্তাটি সরাসরি পড়তে বা বুঝতে ব্যার্থ হবে। কারণ হিসেবে বললে বলতে হবে, ঐ অবস্থায় মেসেজটি দেখতে কিছুটা হিজিবিজি কিছু অক্ষর ছাড়া আর কিছুই মনে হবে না। 


যেমন আপনি মেসেজে লিখলেন - Hi there!
আর এনক্রিপশনের পর মেসেজটি খুঁজে পেলে দেখা হবে সেখানে লেখা রয়েছে - LQCIGFOG8VxNPW1qapkFWLpz
এখন এই 'LQCIGFOG8VxNPW1qapkFWLpz' এর মাঝে কি লেখা রয়েছে তা কেবল আপনার টেলিগ্রাম একাউন্টের সাথে গোপন চাবি হিসেবে যুক্ত 'এনক্রিপশন কী' এর সহায়তা নিয়েই পড়া যাবে, নচেৎ এই অক্ষরের আড়ালে লুকায়িত বার্তা উদ্ধার করতে বছরের পর বছর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। 

আবার আপনি যদি চান আপনার আর আপনার বন্ধুর মধ্যকার কথপোকথন আপনি তাদের সার্ভারেও জমা রাখবেন না, তাহলে খুব সহজেই টেলিগ্রাম এ্যাপের 'Secret Chat' ফিচার ব্যবহার করে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা সেড়ে নিতে পারেন। এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র আপনার আর আপনার বন্ধুর ডিভাইস ছাড়া এই মেসেজ আর কোথাও সংরক্ষন করা হবে না। আর যখনই আপনারা আপনাদের ঐ Secret Chat সেশন শেষ করবেন তখনই ঐসব মেসেজ আপনাদের ডিভাইস থেকেও চিরতরে মুছে যাবে। আরও রয়েছে মেসেজকে 'Self-destruct' করার সুবিধা। প্রয়োজনে আপনার বার্তা পড়ার সময় আপনি নির্ধারণ করে দিতে পারেন। বার্তা পাঠানোর পর নির্ধারিত ঐ সময়ের পর নিজে নিজেই সেটি সব জায়গা থেকে নিজেকে মুছে ফেলবে। 


ভাইবার কিংবা হয়াটস্‌এ্যাপ ব্যবহার করে কারও সাথে যোগাযোগ করতে গেলে আপনার ফোন নম্বরটি সরাসরি এক্সপোজ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কেউ আপনার ফোন নম্বরটির অপব্যবহার করার সুযোগ পেয়ে থাকে। টেলিগ্রামে আপনি আপনার নম্বরটি কাউকে না জানিয়েও টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারবেন। আপনি যখন টেলিগ্রামে আপনার username টি সেট করে নিবেন তারপর থেকে যাদের মোবাইলে আপনার ফোন নম্বরটি সরাসরি সংরক্ষণ করা নেই তারা ব্যতিত ভিন্ন কেউ আপনার নম্বরটি আর দেখতে পাবে না। 

আরও একটি বিশেষ সুবিধা হচ্ছে এটি একই সাথে আপনার সকল ডিভাইসে মেসেজ সিনক্রোনাইজ করতে থাকে। ধরুন আপনার একটি এন্ড্রয়েড ফোন, একটি আইফোন, একটি ট্যাব আর একটি পিসি রয়েছে। আপনি পিসি থেকে কোন বার্তা কাউকে পাঠালে কিংবা কারও কাছে থেকে আপনি কোন বার্তা পেলে সেটি একই সাথে সকল ডিভাইসেই আপডেট হয়ে যাবে। আবশ্য সে ক্ষেত্রে আপনার সবগুলো ডিভাইসই ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে। 



এছাড়াও আপনি আপনার বন্ধুর সাথে এ যাবৎকালে যত মেসেজ পাঠিয়েছেন কিংবা যত ছবি শেয়ার করেছেন অথবা যত ফাইল আদান প্রদাণ করেছেন তার পুরোটাই আপনি যে কোন সময় যে কোন ডিভাইস থেকে এক্সেস করতে পারবেন। 

ফাইল প্রেরণের কথা যখন আসলো তখন যেটা না বললেই না। টেলিগ্রাম ব্যবহার করে আপনি আপনার বন্ধুকে যত খুশি তত ছবি, গান, ভিডিও কিংবা অন্য যে কোন ফাইল পাঠাতে পারবেন। আবার যে কোন সময় সে সব ফাইল সরাসরি ডাওনলোড করে নিতে পারবেন। আর ফাইল সাইজের লিমিট হিসেবে আপনি সরাসরি ১ গিগাবাইট পর্যন্ত সাইজের ফাইল কোন লিমিট ছাড়াই পাঠাতে কিংবা ডাওনলোড করে নিতে পারবেন। আর এই ফাইল আপনি নিজে থেকে ডিলিট না করলে আপনার একাউন্টের বিপরীতে টেলিগ্রাম সার্ভারেই জমা হয়ে থাকবে। 

রয়েছে গ্রুপ এবং চ্যানেল ব্যবহারের সুবিধা। বন্ধুদের নিয়ে খুব সহজেই আড্ডা দেবার জন্যে এখানে গ্রুপ তৈরি করা যায়। আর চ্যানেল এর ব্যাপারটা তুলনা করলে করা যায় ফেসবুক পেইজ -এর সাথে। রয়েছে বন্ধুদের সাথে সরাসরি ভয়েস কল করার সুবিধা। পছন্দ মত থিম ব্যবহারের স্বাধীনতা, ইন-এ্যাপ Emoticon, GIF এবং Sticker ইনসার্ট সুবিধা, কাস্টম প্রাইভেসি ফিচার সহ রয়েছে আরও নানান সুবিধা। 



তা ছাড়া ফেসবুক, মেসেঞ্জার কিংবা গুগলের মত টেলিগ্রাম আপনার তথ্য বিক্রি করার চেষ্টা করে না। তাদের ফিলোসফি হচ্ছে- যদি টেলিগ্রাম সার্ভার মেইনটেইন করার খরচ তাদের সাধ্যের বাইরে চলেই যায় তাহলে তারা টেলিগ্রামের বিশেষ কিছু ফিচার (যা সকলের প্রয়োজন পড়বে  না, এমন) তারা সাবস্ক্রিপশন হিসেবে ব্যবহারকারীর নিকট বিক্রি করবে। তবুও কখনো ব্যবহারকারীর তথ্য তারা নিজেরা ব্যবহার করবে না, কিংবা তৃতীয় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করবে না। 

সবশেষে বলছি রেপন্স টাইমের কথা। ব্যক্তিগত ভাবে হয়াটস্‌এ্যাপ আমার পছন্দের তালিকায় না থাকলেও কিছু সময় এটি ব্যবহার করেছি। যদি মেসেঞ্জার, হয়াটস্‌এ্যাপ এবং টেলিগ্রাম তুলনা করি তাহলে অন্তত আমার দৃষ্টিতে টেলিগ্রাম এ্যাপ বাকি দুইটি এ্যাপের তুলনায় এগিয়ে থাকবে। বাকি দুইটি এ্যাপের বিপরীতে এটি বরাবরই যথেষ্ট দ্রুত কাজ করেছে আমার ডিভাইস গুলোতে। ইমেজ লোডিং এবং কোয়ালিটি মেইনটেইন করে ইমেজ পাঠাবার ব্যাপারেও বাকিদের তুলনায় একে এগিয়ে রাখছি।


আপাতত যে ফিচার গুলো আমার ভালো লেগেছে তার বর্ননা করলাম। এর বাইরেও যদি কিছু জানবার থাকে তাহলে নির্দিদ্ধায় জিজ্ঞাস করতে পারেন। আর সেটি করতে না চাইলে গুগল তো রয়েছেই আপনার সহায়তায়। 

আশা করছি ইতোমধ্যে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে থাকলে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন। আর আপনি যদি এই পোষ্ট পড়বার পর টেলিগ্রাম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ব্যবহারের পর কতটুকু সন্তুষ্ট বা অসুন্তুষ্ট হলে তা জানাতে ভুলবেন না।