সোমবার, অক্টোবর ১৭, ২০১৬

রম্যঃ বিল আর জব্‌স এর গোপন কথোপকথন


স্টিভ জব্‌স গত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর হল। প্রযুক্তির মানুষ, তার উপর প্রতিভাবান। শান্তির ঘুম ঘুমিয়েও ওপারে শান্ত ছেলের মত বসে থাকতে পারেন নি। ওপারে গিয়েই সকলের খোজ খবর নিতে আর প্রিয় বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যে একটা স্পেশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেললেন। তারপর সেই গোপন নেটওয়ার্কের অতি গোপন এক চ্যানেল দিয়ে যোগাযোগ করলেন প্রাণপ্রিয়(!) বন্ধু বিল গেট্‌সের সাথে। কিন্তু আমাদের দুষ্টু হ্যাকারেরা ঠিকই সেই অতি গোপন চ্যানেলের খোঁজ পেয়ে যায়। আর সেখানেই কান পেতে শুনে নেয় দুই বন্ধুর কথোপকথন...

রিং রিং টিং....রিং রিং... টিং...

বিল গেট্‌সঃ হ্যালো!

স্টিভ জব্‌সঃ কি হে বন্ধু! কেমন আছো?

বিল গেট্‌সঃ আরে! জব্‌স নাকি? কি খবর ভায়া?

স্টিভ জব্‌সঃ খবর তো সব তোমাদের কাছে, আমি তো সব খবরের বাইরে চলে এলাম। ভুলে গেলে?

বিল গেট্‌সঃ আরে কি যে বল না। তোমাকে কি আর চাইলেই ভোলা যায়? শুধু আমিই নই, বরং তোমার আবিষ্কার গুলির বদৌলতে মানুষ আমার চেয়ে বেশি তোমাকেই নিয়ে আলোচনা করে।

স্টিভ জব্‌সঃ হা হা! তাই নাকি? তাহলে নিশ্চই খুব বাজে অবস্থা চলছে দুনিয়াতে।

বিল গেট্‌সঃ তা যা বলেছ। তুমিই ভালো করেছো। নিজের নামের সাথে সম্মানটাকে নিয়ে আগেই কেটে পড়েছ। আর আমরা রয়ে গেলাম বদনামের সকল কোটা পূরণ করার জন্যে।

স্টিভ জব্‌সঃ আরেহ্‌ নাহ! দেখছি তো কি অবস্থা চলছে ওখানে। সেদিন দেখলাম আমার কোম্পানি iPhone 7 রিলিজ করেছে। আহাম্মক গুলি নিজে থেকে এখনো কিছুই করতে পারছে না। আমার হ্যান্ড স্কেচ গুলি উল্টো পাল্টা কোনরকম বুঝে iPhone এর নামটাকে বদনাম করছে দিন দিন। আর সেই বদনামের ভাগীদার এপারে বসে আমিও হচ্ছি সমান তালে।

বিল গেট্‌সঃ আচ্ছা, বাদ দাও ওসব কথা। তোমার কথা বল। তোমার ওদিকে সময় কেমন কাটছে? আচ্ছা ওপারের ব্যাপার স্যাপার কেমন, একটু বল তো শুনি।

স্টিভ জব্‌সঃ এপারের ব্যাপার স্যাপার একদম মন্দ না। তবে তোমার জন্যে খুব বড় একটা দুঃসংবাদ আছে বন্ধু।

বিল গেট্‌সঃ দুঃসংবাদ! বল কি? এখনো তো ওপারে গেলামই না, তার আগেই দুঃসংবাদ! তা কি দুঃসংবাদ একটু বলবে?

স্টিভ জব্‌সঃ হ্যাঁ, বিরাট দুঃসংবাদ বলতে পারো। এপারে সবই আছে, কিন্তু কোন বাউন্ডারি নেই।

বিল গেট্‌সঃ এ্যা! তা এটা কেমন দুঃসংবাদ হল?

স্টিভ জব্‌সঃ আহা! বুঝছো না কেন? সৃষ্টিকর্তা খুব চালাকির সাথে এই কাজটা করেছেন। তিনি কোন বাউন্ডারিই রাখেন নি কোথাও। আর তাই এপারে করাও কারও windows (জানালা) কিংবা Gates (দরজা) এরও প্রয়োজন হয় না।

বিল গেট্‌সঃ ওহো! তবে বিরাট দুঃসংবাদই বলতে হয়। তবে আমার মনে হয় কি জানো? দুঃসংবাদ আমার জন্যে যেমনই হোক, তোমার দুঃখ বোধ কিন্তু এপারের তুলনায় ওপারেই বেশিই।

স্টিভ জব্‌সঃ কেন? কেন?? আমার দুঃখ বোধ বেশি হবে কেন?

বিল গেট্‌সঃ না, মানে..। আসলে সৃষ্টিকর্তা তো সৃষ্টির শুরুতেই Apple(আপেল) ধরা-ছোঁয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। আর তার উপর তুমি ওপারে যাবার আগেই সবাইকে বুঝিয়ে-পড়িয়ে দিয়েছিলে যে Apple এর দাম কেমন চড়া হতে পারে। তাই বোধ করি ওপারে Apple প্রোডাক্ট কেউ লোভে পড়েও ধরে ছুঁয়ে দেখবার ইচ্ছে করবে না।

স্টিভ জব্‌সঃ তা অবশ্য খারাপ বল নি। তবে কি জানো? এপারে কিন্তু Apple এর জন্যে কিন্তু কোন Bill করা হয় না, একদম ফ্রি। এখানে-সেখানে ঝুলে আছে। আর ভয়েস কমান্ড আর মাইন্ড রিডিং সিস্টেম এত উন্নত যে, কারও ইচ্ছে হলে ওগুলি না ছুঁয়েই নিজেদের কাজ অনায়াসে করে নিতে পারে।

বিল গেট্‌সঃ তাহলে তো ব্যাপারটা তোমার জন্যে ব্যালেন্স হল মনে হচ্ছে।

স্টিভ জব্‌সঃ কেমন? কেমন??

বিল গেট্‌সঃ মানে এপারে তোমার কোম্পানিটা তোমাকে ছাড়া Jobs Less, আর ওপারে তুমি নিজে Jobs Less। তবে তুমি তাতে খুব বেশি বিচলিত হয়ো না। যেভাবে আইফোনের ডেভেলপমেন্ট এগুচ্ছে তাতে অচিরেই তোমার কর্মীরাও Steve-এর শূন্যতা মানে Jobs Less অবস্থাটা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারবে।

স্টিভ জব্‌সঃ হা হা হা! আচ্ছা বন্ধু, উঠতে হচ্ছে এখন। গার্ডটা সম্ভবত এই নেটওয়ার্কের খবর টের পেতে শুরু করেছে। পাই পাই করে এদিক সেদিক খোঁজা খুঁজি করছে।

বিল গেট্‌সঃ আচ্ছা যাও, তবে সময় পেলে আবার যোগাযোগ করো কিন্তু।

স্টিভ জব্‌সঃ করবো করবো! অবশ্যই করবো। আর সেটা সম্ভব না হলে তোমাকেই এপারে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবো 😉





0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন