প্রীতম, কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ভার্সিটিতে অবস্থান। পাবলিকে কোথাও হয়নি তাই সময় নষ্ট না করে প্রাইভেটেই নাম লিখিয়েছে। বাবা-মার আদরের সন্তান তাই সবসময় প্রাপ্তি গুলি চাহিদা তৈরির আগেই পূর্ণতা পেয়ে গেছে। তবে বাবা মায়ের কড়া নজর, ছেলে যাতে বাইরে আড্ডা না জমায়। কারণ, আজকাল তো আড্ডা দিতে গিয়েই সিগারেট, হেরোইনের আর ফেন্সিডিলের মত নেশার কবলে পড়ে ছেলেপেলে। তাই প্রয়োজনের বাইরে যাতে বাইরে সময় না দেয় সেদিকে খুব কড়াকড়ি অবস্থান।
কি আর করার? ভার্সিটি ক্লাস শেষে সোজা বাসায় অবস্থান নেয় প্রীতম। গান শুনে, বই পড়ে আর টুকটাক এক্সপেরিমেন্টের নামে কাগুজে তৈরি বিদঘুটে জিনিষ পত্র তৈরি করে দিন ভালোই কাটছিল তার। একদিন তার ক্লাসমেট পরিচয় করিয়ে দিল আরো একটা সময় কাটানো মাধ্যমের সাথে, পরিচয় করিয়ে দিলো “ফেসবুক” এর সাথে। যেখানে সে ঘরে বসেও দুনিয়ার অপর প্রান্তে অবস্থান নেয়া বন্ধুটার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। পারবে আড্ডা দিতে একা ঘরে বসে হাজার বন্ধুদের সাথে।
প্রথম কদিন এটা সেটা বুঝে সময় কাটালেও খুব দ্রুতই সে ফেসবুক কে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসলো। এখন আর গান শুনে বা বই পড়ে সময় কাটাতে হয় না তার। চেয়ারে বসে বা খাটে শুয়ে ল্যাপটপটা কোলে নিয়েই সে সময় কাটাতে পারে ফেসবুকে। এখানে কদিনেই তার অনেক পরিচিতি হয়ে গেছে। মাস তিনের মধ্যেই কয়েকটা বড় গ্রুপে তার ভালো একটা অবস্থান তৈরি করেছে আর ফ্রেন্ড-লিস্টে পরিচিত অপরিচিত সহ প্রায় দু’হাজার বন্ধু জোগাড় করে ফেলেছ। এখন প্রায় প্রতি রাতেই ক’জন মিলে সেই আড্ডা জমে এখানে।
ইলার সাথে এখানেই কোথাও পরিচয় হয় প্রীতমের সাথে। আড্ডায় আড্ডায় খুব ভালো বন্ধুত্বও তৈরি হয়। আর তারপর আড্ডার পাশাপাশি চলে ইন-বক্সে কথোপকথন। আড্ডা গড়ায়, সাথে বেড়ে চলে ইন-বক্সের মেসেজের সংখ্যা। অবস্থা এমন যে আড্ডায় কেউ থাকুক বা না থাকুক ইন-বক্সে অন্তত একজনের ‘হাই’ বলতেই হবে। কদিন বাদে ইন-বক্সের আলাপ দূরালাপনিতে গিয়ে বসে। কি হয় না সেখানে? কোথায় আছে, কি করছে, পড়ছে নাকি টিভি দেখছে সব আলাপই চলে এখন। সমস্যা কি? বন্ধু তো, বলতেই পারে। খারাপ তো কিছু করছে না….
সমস্যা হল প্রীতমের। এতদিন সে আসলে ঐ অর্থে মেয়েদের সাথে সরাসরি এভাবে যোগাযোগের সুযোগ পায়নি কখনো। বয়েজ স্কুল, তারপর বয়েজ কলেজ আর শেষে তার ভার্সিটির ডিপার্টমেন্টে হাতে গোনা ক’জন মেয়ে থাকায় সে আসলে ঐ অর্থে তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের কোন মাধ্যম পায়নি এর আগে। এর আগে মানে এই ইলার সাথে পরিচয় হবার আগে। মেয়েদের নিয়ে আগে যেটা ফ্যান্টাসি ছিল এখন তার অনেক কিছুই বুঝতে পারে এই ইলার মাধ্যমেই। কিন্তু প্রীতমের মন ইলাকে বন্ধু থেকেও বেশী কিছু মনে করতে শুরু করেছে এখন। কিন্তু ভয় হয়, ইলা যদি এটা জেনে তার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কটা নষ্ট করে দেয়। এই ভেবে সে আর ইলাকে কিছু বলার সাহস করে না।
গতরাতে হঠাৎ করে ফেসবুকের কল্যাণে জনতে পারলো যে “প্রপোজ ডে” নামেও একটা আলাদা দিন আছে। দিনভর খুব চিন্তা করলো প্রীতম। বলবে, বলবে-না, করবে, করবে-না করতে করতে যখন দিন গড়িয়ে বিকেল তখন ঝোঁকের চোটেই ইলাকে ইন-বক্সে বলল “ইলা, ভালবাসি, তোমাকেই ভালবাসি”। লিখেই ফেসবুক বন্ধ করে দিল। প্রচণ্ড টেনশন হচ্ছে তার ইলা এই মেসেজ দেখে কি বলবে, তার রি-একশন কি হবে, আর প্রতি-উত্তরটা কি প্রত্যাখ্যানের হবে; নাকি সম্মতির। ভাবতে ভাবতেই সন্ধ্যা পার হয়ে গেল। আচ্ছা ভালো কথা, এত সময় পার হয়ে গেল নিশ্চয় এর মাঝে ইলা মেসেজটা পড়েছে। তাহলে ফোন দিচ্ছে না কেন? তাহলে কি……
অবশেষে অনেক আকাঙ্ক্ষা আর টেনশন নিয়ে ফের ফেসবুকে লগইন করলো প্রীতম। সবার আগেই ঢুকল মেসেজ বক্সে। ইলার মেসেজটাই সবার উপরে। তবে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। ক্লিক করলো তাকে প্রীতম। ইলা একটা লম্বা মেসেজ দিয়ে গেছে তাকে। আর মেসেজটা দেবার পর ইলা তার আইডি বন্ধ করে দিয়েছে। হ্যাঁ, প্রীতম ইলার দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ইলার অত বড় মেসেজটা বার ৩ পড়ার পর যেটা প্রীতম বুঝল, ইলা আসলে সত্যিকার অর্থেই তাকে বন্ধু ভেবে তার কথা গুলি শেয়ার করেছিল এতদিন। ইলাও তার মত বদ্ধ ঘরে মানুষ। তবুও সে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায়নি। আর প্রীতমও যে তার নিয়ন্ত্রণ হারাবে তা কল্পনা করতে পারেনি। এটা নয় যে ইলা এটাই প্রথম কারো কাছ থকে প্রপোজাল পেয়েছে। কিন্তু প্রীতম এটা করবে সে তা কল্পনাও করতে পারে নি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই প্রপোজালের রাস্তাটাই বন্ধ করে দিবে। আর তাই সে তার পুরাতন মোবাইল নাম্বার পাল্টে নিবে আর তার এই ভার্চুয়াল পরিচয়টাকে মুছে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হ্যাঁ, ইলার মেসেজের যে স্থানে এতদিন ইলার ছবিটা দেখা যেত সেটা এখন মেয়ে আকৃতির একটা এভাটারে রূপ নিয়েছে। আর তার নামটা নীল অক্ষর থেকে কালো অক্ষরে পরিণত হয়েছে। প্রীতমের মাত্র একটা লাইন তার বিশ্বাসকে নষ্ট করেছে এই ভার্চুয়াল জগত থেকে.....
কি আর করার? ভার্সিটি ক্লাস শেষে সোজা বাসায় অবস্থান নেয় প্রীতম। গান শুনে, বই পড়ে আর টুকটাক এক্সপেরিমেন্টের নামে কাগুজে তৈরি বিদঘুটে জিনিষ পত্র তৈরি করে দিন ভালোই কাটছিল তার। একদিন তার ক্লাসমেট পরিচয় করিয়ে দিল আরো একটা সময় কাটানো মাধ্যমের সাথে, পরিচয় করিয়ে দিলো “ফেসবুক” এর সাথে। যেখানে সে ঘরে বসেও দুনিয়ার অপর প্রান্তে অবস্থান নেয়া বন্ধুটার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। পারবে আড্ডা দিতে একা ঘরে বসে হাজার বন্ধুদের সাথে।
প্রথম কদিন এটা সেটা বুঝে সময় কাটালেও খুব দ্রুতই সে ফেসবুক কে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসলো। এখন আর গান শুনে বা বই পড়ে সময় কাটাতে হয় না তার। চেয়ারে বসে বা খাটে শুয়ে ল্যাপটপটা কোলে নিয়েই সে সময় কাটাতে পারে ফেসবুকে। এখানে কদিনেই তার অনেক পরিচিতি হয়ে গেছে। মাস তিনের মধ্যেই কয়েকটা বড় গ্রুপে তার ভালো একটা অবস্থান তৈরি করেছে আর ফ্রেন্ড-লিস্টে পরিচিত অপরিচিত সহ প্রায় দু’হাজার বন্ধু জোগাড় করে ফেলেছ। এখন প্রায় প্রতি রাতেই ক’জন মিলে সেই আড্ডা জমে এখানে।
ইলার সাথে এখানেই কোথাও পরিচয় হয় প্রীতমের সাথে। আড্ডায় আড্ডায় খুব ভালো বন্ধুত্বও তৈরি হয়। আর তারপর আড্ডার পাশাপাশি চলে ইন-বক্সে কথোপকথন। আড্ডা গড়ায়, সাথে বেড়ে চলে ইন-বক্সের মেসেজের সংখ্যা। অবস্থা এমন যে আড্ডায় কেউ থাকুক বা না থাকুক ইন-বক্সে অন্তত একজনের ‘হাই’ বলতেই হবে। কদিন বাদে ইন-বক্সের আলাপ দূরালাপনিতে গিয়ে বসে। কি হয় না সেখানে? কোথায় আছে, কি করছে, পড়ছে নাকি টিভি দেখছে সব আলাপই চলে এখন। সমস্যা কি? বন্ধু তো, বলতেই পারে। খারাপ তো কিছু করছে না….
সমস্যা হল প্রীতমের। এতদিন সে আসলে ঐ অর্থে মেয়েদের সাথে সরাসরি এভাবে যোগাযোগের সুযোগ পায়নি কখনো। বয়েজ স্কুল, তারপর বয়েজ কলেজ আর শেষে তার ভার্সিটির ডিপার্টমেন্টে হাতে গোনা ক’জন মেয়ে থাকায় সে আসলে ঐ অর্থে তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের কোন মাধ্যম পায়নি এর আগে। এর আগে মানে এই ইলার সাথে পরিচয় হবার আগে। মেয়েদের নিয়ে আগে যেটা ফ্যান্টাসি ছিল এখন তার অনেক কিছুই বুঝতে পারে এই ইলার মাধ্যমেই। কিন্তু প্রীতমের মন ইলাকে বন্ধু থেকেও বেশী কিছু মনে করতে শুরু করেছে এখন। কিন্তু ভয় হয়, ইলা যদি এটা জেনে তার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কটা নষ্ট করে দেয়। এই ভেবে সে আর ইলাকে কিছু বলার সাহস করে না।
গতরাতে হঠাৎ করে ফেসবুকের কল্যাণে জনতে পারলো যে “প্রপোজ ডে” নামেও একটা আলাদা দিন আছে। দিনভর খুব চিন্তা করলো প্রীতম। বলবে, বলবে-না, করবে, করবে-না করতে করতে যখন দিন গড়িয়ে বিকেল তখন ঝোঁকের চোটেই ইলাকে ইন-বক্সে বলল “ইলা, ভালবাসি, তোমাকেই ভালবাসি”। লিখেই ফেসবুক বন্ধ করে দিল। প্রচণ্ড টেনশন হচ্ছে তার ইলা এই মেসেজ দেখে কি বলবে, তার রি-একশন কি হবে, আর প্রতি-উত্তরটা কি প্রত্যাখ্যানের হবে; নাকি সম্মতির। ভাবতে ভাবতেই সন্ধ্যা পার হয়ে গেল। আচ্ছা ভালো কথা, এত সময় পার হয়ে গেল নিশ্চয় এর মাঝে ইলা মেসেজটা পড়েছে। তাহলে ফোন দিচ্ছে না কেন? তাহলে কি……
অবশেষে অনেক আকাঙ্ক্ষা আর টেনশন নিয়ে ফের ফেসবুকে লগইন করলো প্রীতম। সবার আগেই ঢুকল মেসেজ বক্সে। ইলার মেসেজটাই সবার উপরে। তবে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। ক্লিক করলো তাকে প্রীতম। ইলা একটা লম্বা মেসেজ দিয়ে গেছে তাকে। আর মেসেজটা দেবার পর ইলা তার আইডি বন্ধ করে দিয়েছে। হ্যাঁ, প্রীতম ইলার দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ইলার অত বড় মেসেজটা বার ৩ পড়ার পর যেটা প্রীতম বুঝল, ইলা আসলে সত্যিকার অর্থেই তাকে বন্ধু ভেবে তার কথা গুলি শেয়ার করেছিল এতদিন। ইলাও তার মত বদ্ধ ঘরে মানুষ। তবুও সে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায়নি। আর প্রীতমও যে তার নিয়ন্ত্রণ হারাবে তা কল্পনা করতে পারেনি। এটা নয় যে ইলা এটাই প্রথম কারো কাছ থকে প্রপোজাল পেয়েছে। কিন্তু প্রীতম এটা করবে সে তা কল্পনাও করতে পারে নি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই প্রপোজালের রাস্তাটাই বন্ধ করে দিবে। আর তাই সে তার পুরাতন মোবাইল নাম্বার পাল্টে নিবে আর তার এই ভার্চুয়াল পরিচয়টাকে মুছে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হ্যাঁ, ইলার মেসেজের যে স্থানে এতদিন ইলার ছবিটা দেখা যেত সেটা এখন মেয়ে আকৃতির একটা এভাটারে রূপ নিয়েছে। আর তার নামটা নীল অক্ষর থেকে কালো অক্ষরে পরিণত হয়েছে। প্রীতমের মাত্র একটা লাইন তার বিশ্বাসকে নষ্ট করেছে এই ভার্চুয়াল জগত থেকে.....